চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম (আলিফ) হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে অনিয়ম ও গ্রেপ্তার–বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। একই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক উসকানি এবং হরিজন পল্লিতে হামলার ঘটনায়ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি এই অভিযোগ ও উদ্বেগ তুলে ধরে। “চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ড–পরবর্তী পরিস্থিতি সরেজমিন পরিদর্শন: পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাব” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
সংগঠনটি জানায়, সাইফুল হত্যার ঘটনায় ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৩৯০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং প্রায় ২ হাজার ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এই বিশাল সংখ্যক অজ্ঞাতনামা আসামি রাখায় গ্রেপ্তার–বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘অজ্ঞাতনামা আসামির মধ্যে যে কেউ পরতে পারে, সুতরাং একটা ব্যাপক হয়রানি শুরু হয়েছে। পুলিশের যে গ্রেপ্তার–বাণিজ্য এবং যারা কোনো না কোনোভাবে ক্ষমতাধর ব্যক্তি, তারা যেকোনো ব্যক্তিকে এটার জন্য হয়রানি করতে পারে, হুমকি দিতে পারে, টাকা আদায় করতে পারে। এগুলো হাসিনা আমলে চলেছে। বিষয়টি পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, ‘ধর্মীয় পরিচয়ের নামে বৈষম্য তৈরির রাজনীতি ও উসকানিমূলক তৎপরতা সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, সাইফুল হত্যাকাণ্ডের দিন হরিজন পল্লির দুটি মন্দির ও আটটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এর দুই দিন পর (২৯ নভেম্বর) জুমার নামাজের পর আরও ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া অভিযোগ করেন, ‘স্থানীয় থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা হরিজন পল্লিতে গিয়ে তাদের হুমকি দিয়ে বলেছেন, প্রকৃত অপরাধীদের ধরিয়ে দিলে যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবেন। হিন্দুধর্মাবলম্বী সাধারণ মানুষও গ্রেপ্তার–আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।’
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি জানায়, ঘটনাস্থল এবং এর আশপাশে ২০–২৫টি সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও ঘাতকদের শনাক্তে এই ফুটেজগুলো ব্যবহার করা হয়নি। সংগঠনটি প্রশ্ন তোলে, কেন এই গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ উপেক্ষা করা হচ্ছে।
সংগঠনটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের জন্য পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেছে: আইনজীবী সাইফুল হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, আদালত প্রাঙ্গণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও ভাঙচুরের ঘটনার সঠিক তদন্ত, এই ঘটনায় উসকানিদাতাদের খুঁজে বের করা। একই সঙ্গে ঘটনার সময়ে সেবকপল্লিতে ও পাশের আরেকটি হিন্দুপল্লিতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা করে বিচার নিশ্চিত করারও দাবি করা হয়।
যারা এ পরিস্থিতিকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার দিকে নিয়ে যেতে চাইছিল, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলা হয় প্রস্তাবে।
প্রস্তাবে বলা হয়, অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে বান্ডেল রোডের সেবকপল্লির হরিজনদের হয়রানি ও সেখানে যে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে, সেটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। গণগ্রেপ্তার ও গ্রেপ্তার–বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজগুলো পরীক্ষা করতে হবে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতীত কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।
এ ছাড়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ সব অভিযুক্ত ও আটক ব্যক্তির বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিতেরও দাবি করা হয়।
রোববার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম (আলিফ) হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে অনিয়ম ও গ্রেপ্তার–বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। একই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক উসকানি এবং হরিজন পল্লিতে হামলার ঘটনায়ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি এই অভিযোগ ও উদ্বেগ তুলে ধরে। “চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ড–পরবর্তী পরিস্থিতি সরেজমিন পরিদর্শন: পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাব” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
সংগঠনটি জানায়, সাইফুল হত্যার ঘটনায় ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৩৯০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং প্রায় ২ হাজার ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এই বিশাল সংখ্যক অজ্ঞাতনামা আসামি রাখায় গ্রেপ্তার–বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘অজ্ঞাতনামা আসামির মধ্যে যে কেউ পরতে পারে, সুতরাং একটা ব্যাপক হয়রানি শুরু হয়েছে। পুলিশের যে গ্রেপ্তার–বাণিজ্য এবং যারা কোনো না কোনোভাবে ক্ষমতাধর ব্যক্তি, তারা যেকোনো ব্যক্তিকে এটার জন্য হয়রানি করতে পারে, হুমকি দিতে পারে, টাকা আদায় করতে পারে। এগুলো হাসিনা আমলে চলেছে। বিষয়টি পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, ‘ধর্মীয় পরিচয়ের নামে বৈষম্য তৈরির রাজনীতি ও উসকানিমূলক তৎপরতা সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, সাইফুল হত্যাকাণ্ডের দিন হরিজন পল্লির দুটি মন্দির ও আটটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এর দুই দিন পর (২৯ নভেম্বর) জুমার নামাজের পর আরও ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া অভিযোগ করেন, ‘স্থানীয় থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা হরিজন পল্লিতে গিয়ে তাদের হুমকি দিয়ে বলেছেন, প্রকৃত অপরাধীদের ধরিয়ে দিলে যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবেন। হিন্দুধর্মাবলম্বী সাধারণ মানুষও গ্রেপ্তার–আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।’
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি জানায়, ঘটনাস্থল এবং এর আশপাশে ২০–২৫টি সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও ঘাতকদের শনাক্তে এই ফুটেজগুলো ব্যবহার করা হয়নি। সংগঠনটি প্রশ্ন তোলে, কেন এই গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ উপেক্ষা করা হচ্ছে।
সংগঠনটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের জন্য পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেছে: আইনজীবী সাইফুল হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, আদালত প্রাঙ্গণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও ভাঙচুরের ঘটনার সঠিক তদন্ত, এই ঘটনায় উসকানিদাতাদের খুঁজে বের করা। একই সঙ্গে ঘটনার সময়ে সেবকপল্লিতে ও পাশের আরেকটি হিন্দুপল্লিতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা করে বিচার নিশ্চিত করারও দাবি করা হয়।
যারা এ পরিস্থিতিকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার দিকে নিয়ে যেতে চাইছিল, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলা হয় প্রস্তাবে।
প্রস্তাবে বলা হয়, অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে বান্ডেল রোডের সেবকপল্লির হরিজনদের হয়রানি ও সেখানে যে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে, সেটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। গণগ্রেপ্তার ও গ্রেপ্তার–বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজগুলো পরীক্ষা করতে হবে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতীত কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।
এ ছাড়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ সব অভিযুক্ত ও আটক ব্যক্তির বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিতেরও দাবি করা হয়।