alt

জাতীয়

নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে ক্রেতাদের দগ্ধ হওয়ার বছর

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫

নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন ছিল সারা বছরই। সেই আগুনে দগ্ধ হয়ে সবচেয়ে বেশি ধুকতে হয়েছে সাধারণ নিম্নœ আয়ের মানুষদের। এ সময় দফায় দফায় বেড়েছে চাল-তেল, ব্রয়লার মুরগি-ডিম-আলু-পেঁয়াজ-রসুন, জিরা মসলা-সবজিসহ অনেক নিত্যপণ্যের দাম। হয়েছে নতুন নতুন দামের রেকর্ড। এক রেকর্ড ভেঙে হয়েছে আরেক রেকর্ড। গত নভেম্বর সয়াবিন তেল ও পামওয়েলে ছিল তেলেসমাতি। সরবরাহ সংকটের মধ্যে ডিসেম্বর মাসে দাম বাড়ায় সরকার, তারপরও মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) পর্যন্ত সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বভাবিক হয়নি। আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে বছর শেষ হয়।

দামবৃদ্ধির প্রভাবে সার্বিকভাবেই ক্রয়ক্ষমতা কমে মানুষের। দিশেহারা হয়ে পড়ে ক্রেতাসাধারণ। নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে পুড়তে থাকা মানুষদের পরিত্রাণের জন্য ছুটতে হয় টিসিবির ট্রাকের পিছনে। পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় তাতেও মুক্তি মেলেনি।

বাজারের এই পরিস্থিতির জন্য ঘুরেফিরেই সিন্ডিকেটের প্রসঙ্গ আলোচনায় আসে। কিন্তু কঠোর হয়েও ভাঙা সম্ভব হয়নি সেসব সিন্ডিকেট।

গত আগস্ট মাসে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সরকারের প্রতি দেশের জনগণের আশা ছিল এবার ‘সিন্ডিকেট’ ভাঙবে নিত্যপণ্যের দাম কমবে।

সরকার সংস্থার টিসিবির ১০টি পণ্যের তথ্য নিয়ে গত নভেম্বরে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাসে পণ্যের দাম নিয়ে রিপোর্ট করে সংবাদ পত্রিকা। পণ্যগুলো হলো চাল-আলু-দেশি পেঁয়াজ-দেশি রসুন-ছোলা-ফার্মের মুরগির ডিম-ব্রয়লার মুরগি- খোলা চিনি এবং খোলা আটা। তাতে পণ্যের দাম না কমে উল্টো দামবৃদ্ধির তথ্যই উটে আসে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসেবে, জানুয়ারিতে খাদ্যে ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ, অন্যখাতে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৮৬। ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যে ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশে দাঁড়ায়, অন্যখাতে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। মার্চে তা খাদ্যে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে ওঠে, অন্য খাতে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশে দাড়ায়। এপ্রিলে খাদ্য খাতে বেড়ে ডাবল ডিজিটে অর্থাৎ ১০ দশমিক ২২ শতাংশে ওঠে এবং সাধারণ খাতে সামান্য কমে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশে নামে । মে মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে সাধারণ খাতে ডাবল ডিজিট ছুঁইছুঁই অর্থাৎ ৯ দশমিক ৯৯ এবং খাদ্যে ১০ দশমিক ৭৩ শতাংশে ওঠে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে জুন পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করে গিয়েছিল। ওই মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ এবং খাদ্যে ১০ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

বিবিএস সর্বশেষ হিসাবে, গত ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। এটি গত সাড়ে ১৩ বছরের মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হার। নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়ার পাশাপাশি সার্বিক মূল্যস্ফীতিও বেড়ে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশে উঠেছে। গত অক্টোবরে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, ‘বিবিএস এখন যে পদ্ধতিতে মূল্যস্ফীতি গণনা করে, তাতে গরিব মানুষ মূল্যস্ফীতির চাপ কতটা অনুভব করেন, তা ঠিকমতো উঠে আসে না। সার্বিকভাবে জাতীয় গড় হিসাবে মূল্যস্ফীতির হিসাব আসে। বিবিএস যে পরিসংখ্যান দেয়, তার চেয়ে গরিব মানুষের ওপর খাদ্য মূল্যস্ফীতির চাপ অনেক বেশি। তাই গরিব মানুষ ভোগ করে এমন পণ্য ও সেবার ওপর ভিত্তি করে একটি আলাদা মূল্যস্ফীতির সূচক প্রকাশ করলে প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে।’

সাধারণত ২ থেকে ৫ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি থাকলে সেটাকে সহনীয় বলা যায়। ৭ থেকে ১০ শতাংশ হলে মধ্য ও নিম্নœবিত্ত আয়ের মানুষের কষ্ট বেড়ে যাবে। এবং এর চাইতে বেশি মুদ্রাস্ফীতি পুরো দেশের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

বাংলাদেশের বাজারে অব্যাহতভাবে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি ও নতুন টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়াতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। গত ১৯ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইএমএফ প্রতিনিধি দলটি তাদের মিশন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধিদলের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও এসব কথা বলেন। গত ৩ থেকে ১৮ ডিসেম্বর আইএমএফের ১৩ সদস্যসের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে। সফরে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ও বিদ্যমান ঋণের চতুর্থ কিস্তির কাঠামোগত সংস্কারের শর্ত পালন নিয়ে পর্যালোচনা করে দলটি।

সংস্থাটির প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, ‘বাংলাদেশের বাজারে অব্যাহতভাবে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইএমএফ। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রব্যমূল্য কমাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।’

সংস্থাটি মনে করে, মূল্যস্ফীতির চাপে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এজন্য প্রবৃদ্ধি কমবে। রাজস্ব আদায়ও কমেছে। রিজার্ভের অবস্থাও চাপের মুখে রয়েছে বলে মনে করে আইএমএফ। নতুন টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়াতেও সংস্থাটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে আইএমএফ বিশ্বাস করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, তারা যে টাকাটা নতুন করে বাজারে ছেড়েছে সেটা তারা দ্রুত বাজার থেকে তুলেও নেবে। তবে সেটা যদি না করে তাহলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে যা দেশের সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়াবে।

চিত্র নায়িকা অঞ্জনা মারা গেছেন

মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে ‘অনভিজ্ঞ, অদক্ষরা’, পরিবর্তন চায় ২৫ ক্যাডার

ছবি

শৈত্যপ্রবাহ ১৩ জেলায়, শীতের অনুভূতি কমার আভাস

ছবি

প্রথম ধাপের ছয় সংস্কার কমিশনের মেয়াদ বাড়ল

ছবি

দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প, রিখটার স্কেলে মাত্রা ৫

রাঙামাটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক সন্ত্রাসী নিহত

চিন্ময়ের জামিন আবেদন নাকচ

৪৩তম বিসিএসে ২২৭ প্রার্থী ‘গোয়েন্দা প্রতিবেদনে’ বাদ’ পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারবেন

হালনাগাদ খসড়া তালিকা: নতুন ভোটার ১৮ লাখের বেশি

এলপি গ্যাসের দামে ডলারের প্রভাব, সুফল নেই দেশে

ছবি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সেনাপ্রধান

ছবি

অবশেষে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিতে জাতীয় কবি হলেন কাজী নজরুল ইসলাম

ছবি

বাংলা‌দেশি-ভারতীয় আটক জেলেদের হস্তান্তর ৫ জানুয়া‌রি

ছবি

৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া ২২৭ জনের ‘পুনর্বিবেচনার’ সুযোগ

ছবি

ভ্যাট বাড়লেও নিত্যপণ্যের দামে প্রভাব পড়বে না: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ও ‘মুজিব কিল্লা’ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করবে দুদক

ছবি

বিএফআইইউর সাবেক প্রধানের বিরুদ্ধে ১.৪৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে দুদকের মামলা

ছবি

শুধু ব্যক্তি নয়, জনস্বার্থে ব্যবসা করা উচিত : প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়ের জামিন আবেদন জজ আদালতেও খারিজ

ছবি

আইএমএফের চাপে পণ্য ও সেবায় বাড়তি ভ্যাটের খড়্গ

ছবি

হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ: দেশে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৩৬ লাখ

ছবি

আজ রাজবাড়ী যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

রাজধানীতে বেড়েছে শীতের অনুভূতি

হলো না বই উৎসব, অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন, বই ওয়েবসাইটে

ছবি

৪৩তম বিসিএস: বাদপড়া প্রার্থীদের সচিবালয়ে অবস্থান, জনপ্রশাসন সচিবের কাছে আবেদন

ছবি

জুলাই ফাউন্ডেশনের টাকা পেতে অনেকে ‘জালিয়াতির আশ্রয়’ নেন : সারজিস আলম

ছবি

২০২৪ সালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতার নির্মম চিত্র: আহতদের সংগ্রাম ও পুনর্বাসনের চ্যালেঞ্জ

ছবি

ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত আনা ও স্বার্থের ইস্যু পাশাপাশি চলবে: তৌহিদ

ডেঙ্গু ঃ ২ বছরে আক্রান্ত ৪ লাখ ও মৃত্যু-২২শ

ছবি

শীত জনিত রোগে আক্রান্ত দেড় লাখ ও মৃত্যু- ৫১ জন

ছবি

৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া ২৬৭ জনের সচিবালয়ে অবস্থান, অন্তর্ভুক্তির দাবি

ছবি

ইউনূসকে নিয়ে জিনিউজের প্রতিবেদন সম্পূর্ণ বানোয়াট: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

ছবি

পাঠ্যবই ছাপাটা এবার যুদ্ধের মতো, কবে সব দিতে পারবো জানি না : শিক্ষা উপদেষ্টা

ছবি

মে থেকে ফিটনেসবিহীন বাস থাকবে না : বিআরটিএ চেয়ারম্যান

ছবি

বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

গণপিটুনিতে ২০২৪ সালে নিহতের সংখ্যা গত বছরের দ্বিগুণের বেশি: আসক

tab

জাতীয়

নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে ক্রেতাদের দগ্ধ হওয়ার বছর

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫

নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন ছিল সারা বছরই। সেই আগুনে দগ্ধ হয়ে সবচেয়ে বেশি ধুকতে হয়েছে সাধারণ নিম্নœ আয়ের মানুষদের। এ সময় দফায় দফায় বেড়েছে চাল-তেল, ব্রয়লার মুরগি-ডিম-আলু-পেঁয়াজ-রসুন, জিরা মসলা-সবজিসহ অনেক নিত্যপণ্যের দাম। হয়েছে নতুন নতুন দামের রেকর্ড। এক রেকর্ড ভেঙে হয়েছে আরেক রেকর্ড। গত নভেম্বর সয়াবিন তেল ও পামওয়েলে ছিল তেলেসমাতি। সরবরাহ সংকটের মধ্যে ডিসেম্বর মাসে দাম বাড়ায় সরকার, তারপরও মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) পর্যন্ত সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বভাবিক হয়নি। আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে বছর শেষ হয়।

দামবৃদ্ধির প্রভাবে সার্বিকভাবেই ক্রয়ক্ষমতা কমে মানুষের। দিশেহারা হয়ে পড়ে ক্রেতাসাধারণ। নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে পুড়তে থাকা মানুষদের পরিত্রাণের জন্য ছুটতে হয় টিসিবির ট্রাকের পিছনে। পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় তাতেও মুক্তি মেলেনি।

বাজারের এই পরিস্থিতির জন্য ঘুরেফিরেই সিন্ডিকেটের প্রসঙ্গ আলোচনায় আসে। কিন্তু কঠোর হয়েও ভাঙা সম্ভব হয়নি সেসব সিন্ডিকেট।

গত আগস্ট মাসে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সরকারের প্রতি দেশের জনগণের আশা ছিল এবার ‘সিন্ডিকেট’ ভাঙবে নিত্যপণ্যের দাম কমবে।

সরকার সংস্থার টিসিবির ১০টি পণ্যের তথ্য নিয়ে গত নভেম্বরে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাসে পণ্যের দাম নিয়ে রিপোর্ট করে সংবাদ পত্রিকা। পণ্যগুলো হলো চাল-আলু-দেশি পেঁয়াজ-দেশি রসুন-ছোলা-ফার্মের মুরগির ডিম-ব্রয়লার মুরগি- খোলা চিনি এবং খোলা আটা। তাতে পণ্যের দাম না কমে উল্টো দামবৃদ্ধির তথ্যই উটে আসে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসেবে, জানুয়ারিতে খাদ্যে ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ, অন্যখাতে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৮৬। ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যে ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশে দাঁড়ায়, অন্যখাতে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। মার্চে তা খাদ্যে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে ওঠে, অন্য খাতে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশে দাড়ায়। এপ্রিলে খাদ্য খাতে বেড়ে ডাবল ডিজিটে অর্থাৎ ১০ দশমিক ২২ শতাংশে ওঠে এবং সাধারণ খাতে সামান্য কমে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশে নামে । মে মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে সাধারণ খাতে ডাবল ডিজিট ছুঁইছুঁই অর্থাৎ ৯ দশমিক ৯৯ এবং খাদ্যে ১০ দশমিক ৭৩ শতাংশে ওঠে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে জুন পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করে গিয়েছিল। ওই মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ এবং খাদ্যে ১০ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

বিবিএস সর্বশেষ হিসাবে, গত ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। এটি গত সাড়ে ১৩ বছরের মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হার। নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়ার পাশাপাশি সার্বিক মূল্যস্ফীতিও বেড়ে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশে উঠেছে। গত অক্টোবরে দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, ‘বিবিএস এখন যে পদ্ধতিতে মূল্যস্ফীতি গণনা করে, তাতে গরিব মানুষ মূল্যস্ফীতির চাপ কতটা অনুভব করেন, তা ঠিকমতো উঠে আসে না। সার্বিকভাবে জাতীয় গড় হিসাবে মূল্যস্ফীতির হিসাব আসে। বিবিএস যে পরিসংখ্যান দেয়, তার চেয়ে গরিব মানুষের ওপর খাদ্য মূল্যস্ফীতির চাপ অনেক বেশি। তাই গরিব মানুষ ভোগ করে এমন পণ্য ও সেবার ওপর ভিত্তি করে একটি আলাদা মূল্যস্ফীতির সূচক প্রকাশ করলে প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে।’

সাধারণত ২ থেকে ৫ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি থাকলে সেটাকে সহনীয় বলা যায়। ৭ থেকে ১০ শতাংশ হলে মধ্য ও নিম্নœবিত্ত আয়ের মানুষের কষ্ট বেড়ে যাবে। এবং এর চাইতে বেশি মুদ্রাস্ফীতি পুরো দেশের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

বাংলাদেশের বাজারে অব্যাহতভাবে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি ও নতুন টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়াতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। গত ১৯ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইএমএফ প্রতিনিধি দলটি তাদের মিশন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধিদলের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও এসব কথা বলেন। গত ৩ থেকে ১৮ ডিসেম্বর আইএমএফের ১৩ সদস্যসের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে। সফরে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ও বিদ্যমান ঋণের চতুর্থ কিস্তির কাঠামোগত সংস্কারের শর্ত পালন নিয়ে পর্যালোচনা করে দলটি।

সংস্থাটির প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, ‘বাংলাদেশের বাজারে অব্যাহতভাবে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইএমএফ। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রব্যমূল্য কমাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।’

সংস্থাটি মনে করে, মূল্যস্ফীতির চাপে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এজন্য প্রবৃদ্ধি কমবে। রাজস্ব আদায়ও কমেছে। রিজার্ভের অবস্থাও চাপের মুখে রয়েছে বলে মনে করে আইএমএফ। নতুন টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়াতেও সংস্থাটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে আইএমএফ বিশ্বাস করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, তারা যে টাকাটা নতুন করে বাজারে ছেড়েছে সেটা তারা দ্রুত বাজার থেকে তুলেও নেবে। তবে সেটা যদি না করে তাহলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে যা দেশের সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়াবে।

back to top