দুদক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা
ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ, দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্র প্রণয়ন, ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠা, এবং কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিলসহ ৪৭টি সুপারিশ প্রণয়ন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশন। বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এদিন দুদক ছাড়াও নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ এবং সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং দুদককে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান এককভাবে কোনো দেশেই দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এজন্য রাষ্ট্র এবং সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “আমাদের সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদে ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি নেই। এটি সংশোধন করে এমন সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি যোগ করতে হবে, যা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহারে অপব্যবহার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”
বাংলাদেশে এখনো কোনো জাতীয় দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্র নেই উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আমরা সুপারিশ করছি একটি জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করতে। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কাঠামোয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। এই কৌশল বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়নের জন্যও উপযুক্ত ব্যবস্থা প্রয়োজন।”
দুর্নীতির প্রতিরোধে ন্যায়পালের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, “সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ন্যায়পালের একটি কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই কার্যালয়ের দায়িত্ব হবে দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্রের বাস্তবায়ন ও কার্যকারিতা নিয়মিত মূল্যায়ন করা।”
কালো টাকা সাদা করার বৈধতা বাতিলের সুপারিশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের দেশে কালো টাকা বৈধ করার একটি বাৎসরিক রীতি গড়ে উঠেছে, যা রাষ্ট্রীয় নৈতিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এই প্রক্রিয়া স্থায়ীভাবে বন্ধ করা প্রয়োজন।”
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন তৈরিতে গবেষণা, মতামত সংগ্রহ এবং অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আমরা সাধ্যমতো মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করেছি। প্রতিবেদন প্রণয়নে যথাযথ গবেষণা ও জনসম্পৃক্ততার ওপর জোর দিয়েছি।”
৩ অক্টোবর প্রথম ধাপে গঠিত নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রস্তুতের সময়সীমা বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় ধাপে গঠিত গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী বিষয়ক এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন এখনও প্রক্রিয়াধীন।
প্রথম ধাপের চারটি কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এ সময় কমিশনগুলো অংশীজনদের মতামত সংগ্রহ, জরিপ পরিচালনা, এবং লিখিত প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে সুপারিশমালা প্রস্তুত করেছে।
এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমে একটি কার্যকর কাঠামো প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা
বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ, দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্র প্রণয়ন, ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠা, এবং কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিলসহ ৪৭টি সুপারিশ প্রণয়ন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশন। বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এদিন দুদক ছাড়াও নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ এবং সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং দুদককে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান এককভাবে কোনো দেশেই দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এজন্য রাষ্ট্র এবং সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “আমাদের সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদে ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি নেই। এটি সংশোধন করে এমন সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি যোগ করতে হবে, যা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহারে অপব্যবহার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”
বাংলাদেশে এখনো কোনো জাতীয় দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্র নেই উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আমরা সুপারিশ করছি একটি জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করতে। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কাঠামোয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। এই কৌশল বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়নের জন্যও উপযুক্ত ব্যবস্থা প্রয়োজন।”
দুর্নীতির প্রতিরোধে ন্যায়পালের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, “সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ন্যায়পালের একটি কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই কার্যালয়ের দায়িত্ব হবে দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্রের বাস্তবায়ন ও কার্যকারিতা নিয়মিত মূল্যায়ন করা।”
কালো টাকা সাদা করার বৈধতা বাতিলের সুপারিশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের দেশে কালো টাকা বৈধ করার একটি বাৎসরিক রীতি গড়ে উঠেছে, যা রাষ্ট্রীয় নৈতিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এই প্রক্রিয়া স্থায়ীভাবে বন্ধ করা প্রয়োজন।”
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন তৈরিতে গবেষণা, মতামত সংগ্রহ এবং অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আমরা সাধ্যমতো মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করেছি। প্রতিবেদন প্রণয়নে যথাযথ গবেষণা ও জনসম্পৃক্ততার ওপর জোর দিয়েছি।”
৩ অক্টোবর প্রথম ধাপে গঠিত নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রস্তুতের সময়সীমা বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় ধাপে গঠিত গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী বিষয়ক এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন এখনও প্রক্রিয়াধীন।
প্রথম ধাপের চারটি কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এ সময় কমিশনগুলো অংশীজনদের মতামত সংগ্রহ, জরিপ পরিচালনা, এবং লিখিত প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে সুপারিশমালা প্রস্তুত করেছে।
এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমে একটি কার্যকর কাঠামো প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।