টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের দায়ে ৪,৫১৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ড
বহুল আলোচিত ডেসটিনি গ্রুপের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদসহ ১৯ জনকে ১২ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাঁদের ৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪–এর বিচারক রবিউল আলম বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী বেলাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রায়ে দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রফিকুল আমীন, মোহাম্মদ হোসেন এবং এম হারুন-অর-রশীদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি ১৬ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
অন্যান্য দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, মোহাম্মদ গোফরানুল হক, মোহাম্মদ সাঈদ-উর-রহমান, মেজবাহ উদ্দিন, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আহমেদ, ফারাহ দিবা, জামসেদ আরা চৌধুরী, শেখ তৈয়েবুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জসীম উদ্দিন, জাকির হোসেন, এস এম আহসানুল কবির, জুবায়ের সোহেল, মোসাদ্দেক আলী, আবদুল মান্নান এবং আবুল কালাম আজাদ।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলাগুলোর তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৪ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ট্রি প্ল্যান্টেশনের মামলায় ১৯ জন এবং মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়, যার মধ্যে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এতে সাড়ে আট লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন।
অন্যদিকে, ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশনের মাধ্যমে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আত্মসাৎ করা অর্থের একটি অংশ এলসি (ঋণপত্র) আকারে এবং কিছু সরাসরি বিদেশে পাচার করা হয়।
দুদকের করা মামলার অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার পর আদালত দোষীদের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ দেন।
দুদকের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, “রায়ে বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও সুদৃঢ় হবে। দীর্ঘদিন ধরে চলা একটি মামলার যথাযথ সমাপ্তি হয়েছে।”
আত্মসাৎ করা বিপুল পরিমাণ অর্থের কারণে বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে একজন বলেন, “আমরা প্রতারণার শিকার হয়েছি। এ রায় আমাদের কিছুটা হলেও সান্ত্বনা দেবে।”
ডেসটিনি মামলার এই রায় দেশের আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের দায়ে ৪,৫১৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ড
বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
বহুল আলোচিত ডেসটিনি গ্রুপের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদসহ ১৯ জনকে ১২ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাঁদের ৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪–এর বিচারক রবিউল আলম বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী বেলাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রায়ে দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রফিকুল আমীন, মোহাম্মদ হোসেন এবং এম হারুন-অর-রশীদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি ১৬ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
অন্যান্য দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, মোহাম্মদ গোফরানুল হক, মোহাম্মদ সাঈদ-উর-রহমান, মেজবাহ উদ্দিন, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আহমেদ, ফারাহ দিবা, জামসেদ আরা চৌধুরী, শেখ তৈয়েবুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জসীম উদ্দিন, জাকির হোসেন, এস এম আহসানুল কবির, জুবায়ের সোহেল, মোসাদ্দেক আলী, আবদুল মান্নান এবং আবুল কালাম আজাদ।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলাগুলোর তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৪ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ট্রি প্ল্যান্টেশনের মামলায় ১৯ জন এবং মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়, যার মধ্যে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এতে সাড়ে আট লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন।
অন্যদিকে, ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশনের মাধ্যমে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আত্মসাৎ করা অর্থের একটি অংশ এলসি (ঋণপত্র) আকারে এবং কিছু সরাসরি বিদেশে পাচার করা হয়।
দুদকের করা মামলার অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার পর আদালত দোষীদের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ দেন।
দুদকের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, “রায়ে বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও সুদৃঢ় হবে। দীর্ঘদিন ধরে চলা একটি মামলার যথাযথ সমাপ্তি হয়েছে।”
আত্মসাৎ করা বিপুল পরিমাণ অর্থের কারণে বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে একজন বলেন, “আমরা প্রতারণার শিকার হয়েছি। এ রায় আমাদের কিছুটা হলেও সান্ত্বনা দেবে।”
ডেসটিনি মামলার এই রায় দেশের আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।