মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটায় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় নির্বাচিত ১৯৩ জনের ফল স্থগিত করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রয়োজনীয় সনদ ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) ডা. রুবীনা ইয়াসমীন জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১৯ জানুয়ারি রোববার ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে। দেশের ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে পাঁচ হাজার ৩৭২ জন নির্বাচিত হয়, যাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটার ১৯৩ জন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মোট আসন রয়েছে ২৬৯টি। এর মধ্যে ১৯৩ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। যাদের কারো কারো প্রাপ্ত নম্বর ৪০-৪৬। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও মাহিন সরকার। এরপর শিক্ষার্থীরাও ক্ষোভ জানাতে থাকেন।
ফল বাতিলের দাবিতে আন্দোলন:
ফল প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। কেউ কেউ দাবি করেন, অনেকে ৪০-৪২ নম্বর পেয়েও ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে। আবার কেউ কেউ ৭০ নম্বর পেয়েও নির্বাচিত হয়নি।
প্রকাশিত ফলকে ‘বৈষম্যমূলক’ দাবি করে রোববার রাতেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের একদল শিক্ষার্থী। তারা ফল বাতিলের দাবিও জানান। সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে ফের শহীদ মিনারের বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তারা পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিলসহ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুরোপুরি বাতিলের দাবিও করেন। এ সময় মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাবি শিক্ষার্থীরাও। তারা ভর্তি পরীক্ষা ও চাকরিসহ সব পরীক্ষা থেকে ‘অযৌক্তিক কোটা চিরতরে’ বাতিলের দাবি জানান।
শহীদ মিনারে কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয় মাহিন সরকার বলেন, ছাত্র আন্দোলনের শুরুটাই হয়েছিল কোটাবিরোধী আন্দোলন দিয়ে। জুলাই আন্দোলনের পরে আবারও শিক্ষার্থীদের কোটা বাতিলের বিষয় নিয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে।
শুধু মেডিকেল নয় ঢাবিসহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অযৌক্তিক’ কোটা বাতিল করতে হবে দাবি করে মাহিন সরকার বলেন, ‘তা না হলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচিতে বাধ্য হবো। ৭৫ এর বেশি মার্ক পেয়ে একজন শিক্ষার্থী চান্স পায়নি, একজন ৪১ মার্ক পেয়েও মেডিকেল চান্স পেয়ে গেছে।’
এখন কোনো মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছে কী না-প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘যারা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আছেন তারা অনেক আগেই মেডিকেলের পরীক্ষা দিয়েছেন। এখন কারা এই কোটা সুবিধা ভোগ করছেন? চেতনা ব্যবসা বাংলাদেশে আর চলবে না। চেতনা ব্যবসা দিয়ে কেউ আর রাজনীতি করতে পারবে না বা ক্ষমতার মসনদে বসতে পারবে না।’
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি জানিয়ে সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘আমাদের যে উপদেষ্টা পরিষদ বসে আছেন, নাহিদ ভাই-আসিফ ভাই আছেন, উনারা উপদেষ্টা পরিষদে থাকার পরেও কেনো আমাদের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামতে হলো? আমাদের দাবি মেনে নিন নইলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’
১৯৩ জনের ফলাফল আপাতত স্থগিত :
মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটায় মেডিকেলে ভর্তির জন্য নির্বাচিত ১৯৩ জনের ফলাফল আপাতত স্থগিত থাকবে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের কাগজপত্র যাচাই করবে। সেজন্য কমিটি করে দেয়া হয়েছে। ২৭, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি- এই তিনদিন তারা সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আসবে।
তিনি আরও জানান, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ছাড়া অন্য কেউ এই তালিকায় রয়ে গেছে কি না সেটি তারা যাচাই করবেন। যদি সন্তান ছাড়া অন্য কেউ লিস্টে থাকে, তাহলে তার ‘স্থান পাওয়ার’ কোনো সুযোগই নেই।
শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অবহিত জানিয়ে অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমিন বলেন, ‘তবে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনার কারণে কোটা বহাল রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে অধিদপ্তরের কিছু করার নেই।’
মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চান্সপ্রাপ্তদের মধ্যে নাতি-নাতনি কোটায় অনেকে আবেদন করেছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ব্যতীত কোটায় কেবলমাত্র মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনার সন্তানরা ভর্তির সুযোগ পাবেন। মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা বাদ পড়ে যাবেন। এজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চান্স প্রাপ্তদের তথ্য যাচাই করে থাকে। এই তথ্য প্রতিবছর সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজ যাচাই করে থাকে। এবার স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি টিম তথ্য যাচাই করবেন। ফলে খুব অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির সুযোগ পাবেন।
মুক্তিযোদ্ধা কোটায় শূন্য হওয়া আসনগুলো কীভাবে পূরণ করা হবে-জানতে চাইলে রুবীনা ইয়াসমিন বলেন, ফাঁকা হওয়া আসনগুলো মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হবে। এজন্য শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের একটু ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।
কোটা থাকবে কী না সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রের :
এর আগে সোমবার দুপুরে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোটা বাতিলের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আদালত থেকে যে রায় দেয়া হয়েছিল, সেখানে মূল পরিবর্তন হলো- নাতি-নাতনির পরিবর্তে সন্তানের কথা বলা হয়েছে। অতএব কোটার বিষয়টিতে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে এটা একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষাও প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী হয়েছে। তার পরও এটা স্ক্রুটিনি করা হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমবিবিএস পরীক্ষায় মূল কোটা থাকবে কি থাকবে না- এই নীতিগত সিদ্ধান্তটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়, এটি রাষ্ট্রের। আগামী ২৭, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি বিষয়টি যাচাই করা হবে।’
বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান বলেন, ‘ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের ১৯৩ জনের মধ্যে খুবই আনইউজুয়াল হবে, যাদের বয়স ৬৭-৬৮ এবং যাদের সন্তান থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। সেখানে যদি কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে তাহলে সেটা দেখা হবে।’
গত ১৭ জানুয়ারি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবছর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অনলাইনে মোট এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৬৫টি আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে এক লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে মোট ৬০ হাজার ৯৫ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। ভর্তি পরীক্ষার পাস নম্বর ৪০। এবছর পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ।
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটায় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় নির্বাচিত ১৯৩ জনের ফল স্থগিত করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রয়োজনীয় সনদ ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) ডা. রুবীনা ইয়াসমীন জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১৯ জানুয়ারি রোববার ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে। দেশের ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে পাঁচ হাজার ৩৭২ জন নির্বাচিত হয়, যাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটার ১৯৩ জন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মোট আসন রয়েছে ২৬৯টি। এর মধ্যে ১৯৩ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। যাদের কারো কারো প্রাপ্ত নম্বর ৪০-৪৬। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও মাহিন সরকার। এরপর শিক্ষার্থীরাও ক্ষোভ জানাতে থাকেন।
ফল বাতিলের দাবিতে আন্দোলন:
ফল প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। কেউ কেউ দাবি করেন, অনেকে ৪০-৪২ নম্বর পেয়েও ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে। আবার কেউ কেউ ৭০ নম্বর পেয়েও নির্বাচিত হয়নি।
প্রকাশিত ফলকে ‘বৈষম্যমূলক’ দাবি করে রোববার রাতেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের একদল শিক্ষার্থী। তারা ফল বাতিলের দাবিও জানান। সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে ফের শহীদ মিনারের বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তারা পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিলসহ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুরোপুরি বাতিলের দাবিও করেন। এ সময় মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাবি শিক্ষার্থীরাও। তারা ভর্তি পরীক্ষা ও চাকরিসহ সব পরীক্ষা থেকে ‘অযৌক্তিক কোটা চিরতরে’ বাতিলের দাবি জানান।
শহীদ মিনারে কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয় মাহিন সরকার বলেন, ছাত্র আন্দোলনের শুরুটাই হয়েছিল কোটাবিরোধী আন্দোলন দিয়ে। জুলাই আন্দোলনের পরে আবারও শিক্ষার্থীদের কোটা বাতিলের বিষয় নিয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে।
শুধু মেডিকেল নয় ঢাবিসহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অযৌক্তিক’ কোটা বাতিল করতে হবে দাবি করে মাহিন সরকার বলেন, ‘তা না হলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচিতে বাধ্য হবো। ৭৫ এর বেশি মার্ক পেয়ে একজন শিক্ষার্থী চান্স পায়নি, একজন ৪১ মার্ক পেয়েও মেডিকেল চান্স পেয়ে গেছে।’
এখন কোনো মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছে কী না-প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘যারা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আছেন তারা অনেক আগেই মেডিকেলের পরীক্ষা দিয়েছেন। এখন কারা এই কোটা সুবিধা ভোগ করছেন? চেতনা ব্যবসা বাংলাদেশে আর চলবে না। চেতনা ব্যবসা দিয়ে কেউ আর রাজনীতি করতে পারবে না বা ক্ষমতার মসনদে বসতে পারবে না।’
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি জানিয়ে সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘আমাদের যে উপদেষ্টা পরিষদ বসে আছেন, নাহিদ ভাই-আসিফ ভাই আছেন, উনারা উপদেষ্টা পরিষদে থাকার পরেও কেনো আমাদের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামতে হলো? আমাদের দাবি মেনে নিন নইলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’
১৯৩ জনের ফলাফল আপাতত স্থগিত :
মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটায় মেডিকেলে ভর্তির জন্য নির্বাচিত ১৯৩ জনের ফলাফল আপাতত স্থগিত থাকবে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের কাগজপত্র যাচাই করবে। সেজন্য কমিটি করে দেয়া হয়েছে। ২৭, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি- এই তিনদিন তারা সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আসবে।
তিনি আরও জানান, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ছাড়া অন্য কেউ এই তালিকায় রয়ে গেছে কি না সেটি তারা যাচাই করবেন। যদি সন্তান ছাড়া অন্য কেউ লিস্টে থাকে, তাহলে তার ‘স্থান পাওয়ার’ কোনো সুযোগই নেই।
শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অবহিত জানিয়ে অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমিন বলেন, ‘তবে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনার কারণে কোটা বহাল রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে অধিদপ্তরের কিছু করার নেই।’
মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চান্সপ্রাপ্তদের মধ্যে নাতি-নাতনি কোটায় অনেকে আবেদন করেছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ব্যতীত কোটায় কেবলমাত্র মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনার সন্তানরা ভর্তির সুযোগ পাবেন। মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা বাদ পড়ে যাবেন। এজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চান্স প্রাপ্তদের তথ্য যাচাই করে থাকে। এই তথ্য প্রতিবছর সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজ যাচাই করে থাকে। এবার স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি টিম তথ্য যাচাই করবেন। ফলে খুব অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির সুযোগ পাবেন।
মুক্তিযোদ্ধা কোটায় শূন্য হওয়া আসনগুলো কীভাবে পূরণ করা হবে-জানতে চাইলে রুবীনা ইয়াসমিন বলেন, ফাঁকা হওয়া আসনগুলো মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হবে। এজন্য শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের একটু ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।
কোটা থাকবে কী না সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রের :
এর আগে সোমবার দুপুরে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোটা বাতিলের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আদালত থেকে যে রায় দেয়া হয়েছিল, সেখানে মূল পরিবর্তন হলো- নাতি-নাতনির পরিবর্তে সন্তানের কথা বলা হয়েছে। অতএব কোটার বিষয়টিতে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে এটা একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষাও প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী হয়েছে। তার পরও এটা স্ক্রুটিনি করা হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমবিবিএস পরীক্ষায় মূল কোটা থাকবে কি থাকবে না- এই নীতিগত সিদ্ধান্তটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়, এটি রাষ্ট্রের। আগামী ২৭, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি বিষয়টি যাচাই করা হবে।’
বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান বলেন, ‘ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের ১৯৩ জনের মধ্যে খুবই আনইউজুয়াল হবে, যাদের বয়স ৬৭-৬৮ এবং যাদের সন্তান থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। সেখানে যদি কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে তাহলে সেটা দেখা হবে।’
গত ১৭ জানুয়ারি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবছর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অনলাইনে মোট এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৬৫টি আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে এক লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে মোট ৬০ হাজার ৯৫ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। ভর্তি পরীক্ষার পাস নম্বর ৪০। এবছর পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ।