একদিনে দ্বিতীয় দফায় পাওয়া বোমার হুমকির পরেও তল্লাশি চালিয়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু মেলেনি।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সেখানে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি এসব ‘তথ্যদাতাকেও’ খোঁজা হচ্ছে।
তবে এসব হুমকি কাজ বাড়িয়েছে বিমানবন্দরে কর্মরত নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর। এরকম তথ্য পেলে নিয়ম অনুযায়ী যে তল্লাশি চালাতে হয়- তা সময় ও শ্রমসাধ্য ব্যপার।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলছেন, “যেকোনো রকম থ্রেট পেলে আমরা তল্লাশি চালাতে বাধ্য। এটা প্রটোকলের মধ্যে রয়েছে।”
তিনি বলছেন, “কে বা কারা এই (হুমকির) তথ্য দিচ্ছে- তা খোঁজা হচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপে যে কেউই বাংলাদেশে বসেও পাকিস্তানের নম্বর ব্যবহার করতে পারেন। তবে এ ধনেরর হুমকি দাতাদের যাবজ্জীবন পর্যন্ত সাজার আইন রয়েছে বাংলাদেশে।”
বুধবার ভোরে বিমানবন্দরে কর্মরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডিউটি অফিসারের সরকারি মোবাইল ফোনের হোয়াটসঅ্যাপে পাকিস্তানি একটি নম্বর থেকে বার্তা আসে। সেখানে বলা হয়, রোম থেকে ছেড়ে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটের একটি লাগেজে ৩৪ কেজি বিস্ফোরক রয়েছে। এরপর নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে উড়োজাহাজটিকে অবতরণ করানো হয়। যাত্রীদের নামানোর পর উড়োজাহাজে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়। শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি কিছুই।
এর রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার রাত ১১টার দিকে এপিবিএনের ডিউটি অফিসারের একই ফোনে মালয়েশিয়ার একটি নম্বর থেকে আরেকটি বার্তা আসে। সেখানে একটি লাগেজের ছবি দিয়ে বলা হয়, বিমানবন্দরে এরকম লাগেজে বিস্ফোরক থাকতে পারে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী আরেক দফা তল্লাশি চালায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বিমান বন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সকালে জানান, নিরাপত্তা তল্লাশি করে কোথাও কিছু পাওয়া যায়নি। রাত আড়াইটায় তল্লাশি কার্যক্রম সমাপ্ত (থ্রেট ক্লিয়ার) ঘোষণা করা হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বুধবার রোম থেকে আসা বিমানের ফ্লাইটটি সকাল ৯টা ২০ মিনিটে নামার পর সেটিকে থার্ড টার্মিনালের সামনে একটু ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়; যাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে মূল এয়ারপোর্টে কার্যক্রম চালানো যায়। উড়োজাহাজটি অবতরণ করার আগ পর্যন্ত যাত্রীদের এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।
যাত্রীদের নিজেদের হাতব্যাগ রেখেই বোর্ডিং পাস নিয়ে নেমে আসতে বলা হয়। তাদেরকে কয়েকটি বাসে তুলে টার্মিনালে নেওয়া হয়। সেখানে বিমানের পক্ষ থেকে তাদের খাবার-পানিসহ আনুষঙ্গিক সেবা দেওয়া হয়।
ওই কর্মকর্তা বলেন, “উড়োজাহাজের ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, যাত্রীদের অনেকেই সিটের ওপর পাসপোর্ট-ফোন ফেলে গেছেন। ভেতরে কিছুটা এলোমেলো অবস্থা। তখন কয়েকশ বড় পলিব্যাগ নিয়ে আসা হয়।
“কেবিনের সিটের ওপর লকার থেকে যাত্রীদের প্রত্যেকটি ব্যাগ নামিয়ে তল্লাশি শেষে সিট নম্বর অনুযায়ী পলিথিনে প্যাক সেখানেই রেখে দেওয়া হয়।”
ওই কর্মকর্তা বলেন, “ইউরোপ থেকে আসা যাত্রীরা হাতব্যাগে প্রচুর মালামাল ক্যারি করেন। এর মধ্যে একটা দুশ্চিন্তা ছিল কোনো যাত্রীর মালামাল যেন না হারায়। কেউ যেন বলতে না পারেন তার মোবাইল কিংবা অন্য কিছু খোয়া গেছে।”
বিমানবন্দরের ওই কর্মকর্তা জানান, উড়োজাহাজের কার্গো হোল্ডে ছোট ছোট কনটেইনারে ও প্যালেটে রাখা ব্যাগ ও অন্যান্য মালামালও নামানো হয়। এর মধ্যেই পুলিশের ‘স্নিফার ডগ’ চলে আসে। প্রত্যেকটা ব্যাগ বের করে সারি করে সাজিয়ে রাখা হয়।
প্রথমে সেগুলো বোম ডিসপোজাল ইউনিটের স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করা হয়। পরে সেগুলো কুকুর দিয়ে শোঁকানো হয়। অনেক ব্যাগ খুলেও পরীক্ষা করা হয়। কিছু ব্যাগ এক্সরে করেও দেখা হয়। পরে কিছু না পেয়ে বেলা দেড়টার দিকে তল্লাশি শেষ করে ‘থ্রেট ক্লিয়ার’ ঘোষণা করা হয়।
ওই কর্মকর্তা বলেন, তল্লাশি শেষ হওয়ার পর বোর্ডিং কার্ড অনুযায়ী সিট নম্বর ধরে ২০-৩০ জন যাত্রীকে বাসে করে এনে উড়োজাহাজে তুলে তাদের মালামাল সংগ্রহের জন্য বলা হয়। এরপর যাত্রীরা মালামাল নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যান।
তল্লাশি কার্যক্রমে বিমানবন্দরে কর্মরত সংস্থাগুলো ছাড়াও পুলিশ-র্যাবের সদস্যরাও অংশন।
বেবিচক চেয়ারম্যান মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, “বিমান বাহিনী, পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ সবগুলো সংস্থার সদস্যরা এই কার্যক্রমে অংশ নেন। পুলিশের কুকুরগুলোকে কাজে লাগানো হয়।”
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫
একদিনে দ্বিতীয় দফায় পাওয়া বোমার হুমকির পরেও তল্লাশি চালিয়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু মেলেনি।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সেখানে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি এসব ‘তথ্যদাতাকেও’ খোঁজা হচ্ছে।
তবে এসব হুমকি কাজ বাড়িয়েছে বিমানবন্দরে কর্মরত নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর। এরকম তথ্য পেলে নিয়ম অনুযায়ী যে তল্লাশি চালাতে হয়- তা সময় ও শ্রমসাধ্য ব্যপার।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলছেন, “যেকোনো রকম থ্রেট পেলে আমরা তল্লাশি চালাতে বাধ্য। এটা প্রটোকলের মধ্যে রয়েছে।”
তিনি বলছেন, “কে বা কারা এই (হুমকির) তথ্য দিচ্ছে- তা খোঁজা হচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপে যে কেউই বাংলাদেশে বসেও পাকিস্তানের নম্বর ব্যবহার করতে পারেন। তবে এ ধনেরর হুমকি দাতাদের যাবজ্জীবন পর্যন্ত সাজার আইন রয়েছে বাংলাদেশে।”
বুধবার ভোরে বিমানবন্দরে কর্মরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডিউটি অফিসারের সরকারি মোবাইল ফোনের হোয়াটসঅ্যাপে পাকিস্তানি একটি নম্বর থেকে বার্তা আসে। সেখানে বলা হয়, রোম থেকে ছেড়ে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটের একটি লাগেজে ৩৪ কেজি বিস্ফোরক রয়েছে। এরপর নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে উড়োজাহাজটিকে অবতরণ করানো হয়। যাত্রীদের নামানোর পর উড়োজাহাজে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়। শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি কিছুই।
এর রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার রাত ১১টার দিকে এপিবিএনের ডিউটি অফিসারের একই ফোনে মালয়েশিয়ার একটি নম্বর থেকে আরেকটি বার্তা আসে। সেখানে একটি লাগেজের ছবি দিয়ে বলা হয়, বিমানবন্দরে এরকম লাগেজে বিস্ফোরক থাকতে পারে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী আরেক দফা তল্লাশি চালায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বিমান বন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সকালে জানান, নিরাপত্তা তল্লাশি করে কোথাও কিছু পাওয়া যায়নি। রাত আড়াইটায় তল্লাশি কার্যক্রম সমাপ্ত (থ্রেট ক্লিয়ার) ঘোষণা করা হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বুধবার রোম থেকে আসা বিমানের ফ্লাইটটি সকাল ৯টা ২০ মিনিটে নামার পর সেটিকে থার্ড টার্মিনালের সামনে একটু ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়; যাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে মূল এয়ারপোর্টে কার্যক্রম চালানো যায়। উড়োজাহাজটি অবতরণ করার আগ পর্যন্ত যাত্রীদের এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।
যাত্রীদের নিজেদের হাতব্যাগ রেখেই বোর্ডিং পাস নিয়ে নেমে আসতে বলা হয়। তাদেরকে কয়েকটি বাসে তুলে টার্মিনালে নেওয়া হয়। সেখানে বিমানের পক্ষ থেকে তাদের খাবার-পানিসহ আনুষঙ্গিক সেবা দেওয়া হয়।
ওই কর্মকর্তা বলেন, “উড়োজাহাজের ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, যাত্রীদের অনেকেই সিটের ওপর পাসপোর্ট-ফোন ফেলে গেছেন। ভেতরে কিছুটা এলোমেলো অবস্থা। তখন কয়েকশ বড় পলিব্যাগ নিয়ে আসা হয়।
“কেবিনের সিটের ওপর লকার থেকে যাত্রীদের প্রত্যেকটি ব্যাগ নামিয়ে তল্লাশি শেষে সিট নম্বর অনুযায়ী পলিথিনে প্যাক সেখানেই রেখে দেওয়া হয়।”
ওই কর্মকর্তা বলেন, “ইউরোপ থেকে আসা যাত্রীরা হাতব্যাগে প্রচুর মালামাল ক্যারি করেন। এর মধ্যে একটা দুশ্চিন্তা ছিল কোনো যাত্রীর মালামাল যেন না হারায়। কেউ যেন বলতে না পারেন তার মোবাইল কিংবা অন্য কিছু খোয়া গেছে।”
বিমানবন্দরের ওই কর্মকর্তা জানান, উড়োজাহাজের কার্গো হোল্ডে ছোট ছোট কনটেইনারে ও প্যালেটে রাখা ব্যাগ ও অন্যান্য মালামালও নামানো হয়। এর মধ্যেই পুলিশের ‘স্নিফার ডগ’ চলে আসে। প্রত্যেকটা ব্যাগ বের করে সারি করে সাজিয়ে রাখা হয়।
প্রথমে সেগুলো বোম ডিসপোজাল ইউনিটের স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করা হয়। পরে সেগুলো কুকুর দিয়ে শোঁকানো হয়। অনেক ব্যাগ খুলেও পরীক্ষা করা হয়। কিছু ব্যাগ এক্সরে করেও দেখা হয়। পরে কিছু না পেয়ে বেলা দেড়টার দিকে তল্লাশি শেষ করে ‘থ্রেট ক্লিয়ার’ ঘোষণা করা হয়।
ওই কর্মকর্তা বলেন, তল্লাশি শেষ হওয়ার পর বোর্ডিং কার্ড অনুযায়ী সিট নম্বর ধরে ২০-৩০ জন যাত্রীকে বাসে করে এনে উড়োজাহাজে তুলে তাদের মালামাল সংগ্রহের জন্য বলা হয়। এরপর যাত্রীরা মালামাল নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যান।
তল্লাশি কার্যক্রমে বিমানবন্দরে কর্মরত সংস্থাগুলো ছাড়াও পুলিশ-র্যাবের সদস্যরাও অংশন।
বেবিচক চেয়ারম্যান মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, “বিমান বাহিনী, পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ সবগুলো সংস্থার সদস্যরা এই কার্যক্রমে অংশ নেন। পুলিশের কুকুরগুলোকে কাজে লাগানো হয়।”