alt

জাতীয়

স্বাস্থ্য সংকট জাদুবলে পরিবর্তন সম্ভব নয়: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, দেশে এখনো বেশিরভাগ সন্তান প্রসব হয় বাড়িতে, সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রসবের হার কম। হাসপাতালগুলোর চিত্র উদ্বেগজনক, চিকিৎসক সংকট প্রকট।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ‘গ্রামীণ নারীদের মাতৃস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও দাইমাদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। উবিনীগ ও নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার আয়োজনে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, “মাতৃস্বাস্থ্যের দিক বিবেচনায় আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থা শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে। সরকারি হাসপাতালে বেলা ১টা–২টার পর চিকিৎসক পাওয়া যায় না। যেখানে ৫০ জন মায়ের শয্যা রয়েছে, সেখানে ১০০ মাকে রাখা হচ্ছে। এক শয্যায় তিনজন শিশুকে রাখা হচ্ছে। চিকিৎসক সংকট প্রচণ্ড। প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসক নেই, অনেকেই দেশে অবস্থান করেন না, পড়াশোনা ও প্রাইভেট প্র্যাকটিসের কারণে বিদেশে চলে যান।”

তিনি আরও বলেন, “সরকারের কাছে এমন কোনো মেকানিজম নেই, যে জাদুবলে পরিবর্তন করে দেওয়া সম্ভব। সমস্যা চিনি, কিন্তু সমাধানের হাতিয়ার আমার হাতে নেই। আমি চাইলেই ডাক্তার নিয়োগ দিতে পারব না। তবে কিছু সুপারিশ রেখে যাব, যাতে পরবর্তী সরকার তা গ্রহণ করে।”

প্রসবকালীন জটিলতা ও বিপদ চিহ্নিত করতে দাইমাদের প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেন তিনি। বলেন, “মায়ের অবস্থা জটিল বুঝতে পারলে দাইমারা যেন প্রসবের চেষ্টা না করে, হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।”

সভায় অংশ নেওয়া দাইমারা জানান, তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে গর্ভকালীন ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবং সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে প্রসব করানোর পরিবর্তে মাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

পাবনার ঈশ্বরদী থেকে আসা দাইমা মমতাজ বেগম বলেন, “গর্ভবতী মায়ের যদি হঠাৎ রক্তপাত শুরু হয়, মাথাব্যথা ও চোখে ঝাপসা দেখা দেয়, অতিরিক্ত জ্বর বা খিঁচুনি হয় কিংবা প্রসব বিলম্বিত হয়—এসব বিপদের লক্ষণ হিসেবে শিখেছি। তখন আমরা হাসপাতালে যেতে বলি।”

আলোচনায় বক্তারা জানান, চিকিৎসকেরা অনেক সময় স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা না করে অস্ত্রোপচারের (সি-সেকশন) ব্যবস্থা নেন, যা একদিকে অযাচিত সিজারিয়ান বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে রোগীদের আর্থিকভাবে চাপে ফেলছে।

ওজিএসবি’র সাবেক সভাপতি অধ্যাপক সামিনা চৌধুরী বলেন, “গ্রামে ৫৩ শতাংশ প্রসব দাইমাদের হাতে হয়। বাড়িতে প্রসবের ফলে মাতৃমৃত্যুর হার বেড়ে যাচ্ছে। ২২ শতাংশ প্রসূতি মা রাস্তায় হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা যান। প্রতি ১০০টি স্বাভাবিক প্রসবের মধ্যে ১৫টিতে জটিলতা থাকে। করোনার সময় চিকিৎসকরা না থাকলেও দাইমারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।”

তিনি আরও বলেন, “দাইমাদের প্রশিক্ষণ বাড়ানো দরকার, যেন তারা অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ পরীক্ষা করতে পারেন এবং প্রসবকালীন সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।”

নারীপক্ষের প্রকল্প পরিচালক সামিয়া আফরিন বলেন, “প্রসবব্যথা যেকোনো সময় উঠতে পারে, কিন্তু সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক সবসময় পাওয়া যায় না। দাইমারা নিঃস্বার্থভাবে মায়েদের পাশে দাঁড়ান, তাদের অবদানকে অস্বীকার করা যাবে না। তাই দাইমাদের আরও প্রশিক্ষণ ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করতে হবে।”

তিনি দাইমাদের জন্য সম্মানী ভাতা চালুর সুপারিশ করেন।

আলোচনা সভায় সঞ্চালনা করেন নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার পরিচালক সীমা দাস সীমু।

২ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪

ছবি

চার মাসে ১৭৪টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, নিহত ২৩: ঐক্য পরিষদ

ছবি

সাত কলেজের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়, নাম হতে পারে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’

ছবি

অমর একুশে বইমেলা ২০২৫: বাড়ল আয়তন, বেড়েছে প্রকাশক সংখ্যাও

ছবি

মেয়েদের ফুটবল ম্যাচে বাধা, ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ অন্তর্বর্তী সরকারের

ছবি

চায়ের আমন্ত্রণ পাওয়া বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের পদত্যাগ

ছবি

দেশের সবচেয়ে দরিদ্র জেলা মাদারীপুর, উপজেলা ডাসার

ছবি

ভোটারদের আস্থা ফেরাতে বলেছে ইইউ : ইসি সচিব

ছবি

বইমেলায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বই: বাংলা একাডেমির ‘কোনও নির্দেশনা নেই’, জানালেন মহাপরিচালক

ছবি

কাল থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা, আসতে শুরু করেছেন মুসল্লিরা

পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের সহায়তা চান প্রধান উপদেষ্টা

রাজনীতি করতে হলে আওয়ামী লীগে ‘ক্লিন’ নেতৃত্ব আসতে হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

বিশ্ববিদ্যালয় : ৭ কলেজের জন্য একটি নাকি তিতুমীরের জন্য আলাদা

ছবি

ধর্মঘট প্রত্যাহার, ট্রেন চলাচল শুরু

ছবি

প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালায় আসছে পরিবর্তন, নতুন কার্ডের মেয়াদ হবে তিন বছর

ছবি

নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হবে সংস্কারের অগ্রগতি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

ছবি

সাত কলেজের ভবিষ্যৎ: শিগগিরই ফলাফল প্রকাশ করবে সরকার, জানালেন প্রেস সচিব

ছবি

ব্যাংকখাতে চুরি সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে উৎসাহিত করা হয়েছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ম্যানচেস্টার রুটে সাময়িকভাবে ফ্লাইট স্থগিত

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকার কর্মসংস্থান বাড়াতে ব্যর্থ: সিপিডি

ছবি

বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহার না করলে ফল আমদানি বন্ধের হুমকি

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকার খুনিদের মিছিল বরদাশত করবে না : প্রেস সেক্রেটারি

ছবি

দুই পক্ষই ইজতেমা করবেন, সবই মাথায় আছে : আইজিপি

ছবি

তিন বিভাগীয় কমিশনারসহ ৮ জনকে হাইকোর্টে তলব

ছবি

এবার সীমান্ত সম্মেলনে ভারতের সঙ্গে কথার ‘টোনটা’ আলাদা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

কর্মবিরতির পর রেল চলাচল শুরু, সূচিতে বিপর্যয়

ছবি

গভীর রাতে রেলের কর্মবিরতি প্রত্যাহার, ট্রেন চলাচল শুরু

ছবি

৩১ জানুয়ারি থেকে ৩ পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শুরু, প্রস্তুতির ৯৭ ভাগ সম্পন্ন

সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জামাতিকরণ করা হয়েছে, এটা অত্যন্ত ভয়ংকর : রিজভী

ছবি

ধর্মঘটে অচল রেলপথ, ভোগান্তিতে মানুষ

জৈন্তা হরিপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১

ছবি

‘ডিপ্লোম্যাটিক এক্সিলেন্স’ পদক পেলেন সৌদি রাষ্ট্রদূত

ছবি

হাই কোর্টের রায়: গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক

ছবি

১৫১৯টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার জাতীয়করণের ঘোষণা, শিক্ষকরা আন্দোলন প্রত্যাহার

ছবি

রেলপথে অচলাবস্থা: সমঝোতা ছাড়াই বৈঠক শেষ

ছবি

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন করতে সহযোগিতা করবে ইইউ : মিলার

tab

জাতীয়

স্বাস্থ্য সংকট জাদুবলে পরিবর্তন সম্ভব নয়: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, দেশে এখনো বেশিরভাগ সন্তান প্রসব হয় বাড়িতে, সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রসবের হার কম। হাসপাতালগুলোর চিত্র উদ্বেগজনক, চিকিৎসক সংকট প্রকট।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ‘গ্রামীণ নারীদের মাতৃস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও দাইমাদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। উবিনীগ ও নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার আয়োজনে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, “মাতৃস্বাস্থ্যের দিক বিবেচনায় আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থা শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে। সরকারি হাসপাতালে বেলা ১টা–২টার পর চিকিৎসক পাওয়া যায় না। যেখানে ৫০ জন মায়ের শয্যা রয়েছে, সেখানে ১০০ মাকে রাখা হচ্ছে। এক শয্যায় তিনজন শিশুকে রাখা হচ্ছে। চিকিৎসক সংকট প্রচণ্ড। প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসক নেই, অনেকেই দেশে অবস্থান করেন না, পড়াশোনা ও প্রাইভেট প্র্যাকটিসের কারণে বিদেশে চলে যান।”

তিনি আরও বলেন, “সরকারের কাছে এমন কোনো মেকানিজম নেই, যে জাদুবলে পরিবর্তন করে দেওয়া সম্ভব। সমস্যা চিনি, কিন্তু সমাধানের হাতিয়ার আমার হাতে নেই। আমি চাইলেই ডাক্তার নিয়োগ দিতে পারব না। তবে কিছু সুপারিশ রেখে যাব, যাতে পরবর্তী সরকার তা গ্রহণ করে।”

প্রসবকালীন জটিলতা ও বিপদ চিহ্নিত করতে দাইমাদের প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেন তিনি। বলেন, “মায়ের অবস্থা জটিল বুঝতে পারলে দাইমারা যেন প্রসবের চেষ্টা না করে, হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।”

সভায় অংশ নেওয়া দাইমারা জানান, তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে গর্ভকালীন ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবং সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে প্রসব করানোর পরিবর্তে মাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

পাবনার ঈশ্বরদী থেকে আসা দাইমা মমতাজ বেগম বলেন, “গর্ভবতী মায়ের যদি হঠাৎ রক্তপাত শুরু হয়, মাথাব্যথা ও চোখে ঝাপসা দেখা দেয়, অতিরিক্ত জ্বর বা খিঁচুনি হয় কিংবা প্রসব বিলম্বিত হয়—এসব বিপদের লক্ষণ হিসেবে শিখেছি। তখন আমরা হাসপাতালে যেতে বলি।”

আলোচনায় বক্তারা জানান, চিকিৎসকেরা অনেক সময় স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা না করে অস্ত্রোপচারের (সি-সেকশন) ব্যবস্থা নেন, যা একদিকে অযাচিত সিজারিয়ান বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে রোগীদের আর্থিকভাবে চাপে ফেলছে।

ওজিএসবি’র সাবেক সভাপতি অধ্যাপক সামিনা চৌধুরী বলেন, “গ্রামে ৫৩ শতাংশ প্রসব দাইমাদের হাতে হয়। বাড়িতে প্রসবের ফলে মাতৃমৃত্যুর হার বেড়ে যাচ্ছে। ২২ শতাংশ প্রসূতি মা রাস্তায় হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা যান। প্রতি ১০০টি স্বাভাবিক প্রসবের মধ্যে ১৫টিতে জটিলতা থাকে। করোনার সময় চিকিৎসকরা না থাকলেও দাইমারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।”

তিনি আরও বলেন, “দাইমাদের প্রশিক্ষণ বাড়ানো দরকার, যেন তারা অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ পরীক্ষা করতে পারেন এবং প্রসবকালীন সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।”

নারীপক্ষের প্রকল্প পরিচালক সামিয়া আফরিন বলেন, “প্রসবব্যথা যেকোনো সময় উঠতে পারে, কিন্তু সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক সবসময় পাওয়া যায় না। দাইমারা নিঃস্বার্থভাবে মায়েদের পাশে দাঁড়ান, তাদের অবদানকে অস্বীকার করা যাবে না। তাই দাইমাদের আরও প্রশিক্ষণ ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করতে হবে।”

তিনি দাইমাদের জন্য সম্মানী ভাতা চালুর সুপারিশ করেন।

আলোচনা সভায় সঞ্চালনা করেন নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার পরিচালক সীমা দাস সীমু।

back to top