তাবলীগ জামাতের বিবাদমান দু’টি গ্রুপের মধ্যে সমঝোতা হওয়ার পর, কড়া নিরাপত্তায় গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের (টঙ্গী নদী) তীরে শুরু হয়েছে এবারের ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
বৃহস্পতিবার ৩০শে জানুয়ারি বাদ মাগরিব আম বয়ানের মধ্যদিয়ে শুরু এই ইজতেমায় তাবলীগ জামাতের শুরায়ে নেজামের (যোবায়ের) অনুসারী তাবলীগের সাথীরা প্রথম পর্বের আয়োজক।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবারের ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরায়ী নেজামের অধীনে দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। আর দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে ৩ ফেব্রুয়ারি। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
প্রথম পর্বের প্রথম ধাপের বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণের জন্য বিভিন্ন খিত্তা ও পয়েন্টের জিম্মাদার মুসল্লিরা বাস, ট্রাক, কার, পিকআপ ট্রেনসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে দলে দলে এরই মধ্যে ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। তারা কাঁধে-পিঠে প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে ইজতেমাস্থলে এসে নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিয়েছেন। দেশ, বিদেশের লাখো মুসুল্লীর পদভারে মুখর হয়ে ওঠেছে টঙ্গীর তীর। আশা করা হচ্ছে, ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাবে ইজতেমা ময়দান। ময়দানের ভিতরে চলছে বয়ান জিকির তালিম আর মাশোআরা।
বিশ্ব ইজতেমার মুসুল্লীদের সেবার জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে তাবলিগের মুরুব্বীগণ, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আট হাজারের অধিক সদস্য দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা বলয়।
তাবলীগ জামাতের শুরায়ি নেজাম মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান সংবাদকে বলেন, গতকাল বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে এবারের ৫৮তম টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা। শুক্রবার বাদ ফজর বয়ান করবেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়া উল হক। শুক্রবার সকাল ১০টায় বিভিন্ন খিত্তায় খিত্তায় তালিমের আমল হবে। তিনি আরও জানান, প্রথম পর্বে অংশ গ্রহণ করবে গাজীপুর, টঙ্গী, ধামরাই, গাইবান্ধা, মিরপুর, কাকরাইল, নাটোর, মৌলভীবাজার, রাজশাহী, দোহার, ডেমরা, কাকরাইল, নড়াইল, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নবাবগঞ্জ, নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, নেত্রকোনা, শেরপুর, ফরিদপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফেনী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, ঝিনাইদহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পিরোজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, রাজবাড়ী জেলা। এই ধাপে ঢাকার একাংশসহ মোট ৪১টি জেলা অংশগ্রহণ করছে।
বৃহস্পতিবার ৩০শে জানুয়ারি ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্ব ইজতেমার ১৬০ একর আয়তনের সুবিশাল প্যান্ডেলের কোথাও ঠাঁই নেই। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে ইজতেমা ময়দান। মুসুল্লীদের পদচারণায় ইজতেমা ময়দান ও তার আশপাশ এখন মুখুরিত। ময়দানের ভিতরে চলছে বয়ান, জিকির, তালিম আর মাশোআরা। ময়দানের ভিতরে জেলা ভিত্তিক খিত্তা অনুযায়ী ইজতেমা ময়দানে সমবেত মুসুল্লিগণ কেউ নিজেদের প্রয়োজনীয় কাজ সারছেন। অনেকে নিজ নিজ দলের আমীরের দেওয়া দীনের বয়ান শুনছেন। নিজ দলের আমীরের মাধ্যমে ইজতেমার যাবতীয় ইমান, আদব, আখলাক ও শৃংখলা নিয়ে কথা বলছেন। ইজতেমায় তাদের দলের সদস্যদের কার কী কাজ, কে কী দায়িত্ব পালন করবে তা ভাগ করে দেয়া হচ্ছে।
তাবলীগ জামাতের শুরায়ি নেজাম মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান আরও জানান, শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে দেশের সর্ববৃহৎ জুম্মার নামাজের জামাত। এতে প্রায় ৫ লাখ মুসল্লি এক জামাতে শরিক হয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইজতেমার মুসুল্লীরা ছাড়াও রাজধানী ও গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা এবং আশপাশের জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি এ বৃহৎ জুম্মার নামাজে শরিক হবেন। জুমার নামাজে ইমামতি করবেন শুরায়ে নেজামের শীর্ষ মুরুব্বী ও কাকরাইল মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা জুবায়ের।
ইজতেমা মাঠের মুরুব্বিরা জানান, তাবলীগ জামাতের উদ্যোগে প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। মাঠের সব কাজ করা হচ্ছে পরামর্শের মাধ্যমে। এখানে বিদ্যুৎ, পানি, প্যান্ডেল তৈরি, গ্যাস সরবরাহ প্রতিটি কাজই আলাদা আলাদা গ্রুপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তাবলীগ জামাতের অনুসারী মুসলমানরা অংশ নেন। তারা এখানে তাবলীগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শোনেন এবং ইসলামের দাওয়াতী কাজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান।
গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করীম খান সংবাদকে বলেন, ইজতেমা ময়দানকে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তায় রাখতে সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ। ইজতেমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকছে প্রায় সাড়ে সাত হাজার পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। কয়েকটি স্তরের এ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ইজতেমা ঢেকে রাখা হবে। নিরাপত্তার জন্য সাদা পোশাকে নজরদারী ও প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারীর ওপর জোর দেয়া হয়েছে। ডিএমপির বোম্ব পিসপোজেল টিম, সোয়াট টিম, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্য, সিসি টিভি, ওয়াচ টাওয়ার, রুফটপ থেকে মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ, আগত মুসুল্লীদের লাগেজ ও দেহ তল্লাশি, সাদা পোশাকে নিরাপত্তার বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারী অব্যাহত রাখা হবে। এছাড়াও প্রায় ১০ হাজার তাবলীগ জামাতের স্বেচ্ছাসেবী ময়দানে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসো আরেফিন জানান, জেলা প্রশাসন বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কর্মকান্ড সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিভাগের কাজের সমন্বয় করে থাকে। বিদেশি মেহমানদের আবাসস্থল নির্মাণের জন্য টিন সরবরাহ, বিভিন্ন দপ্তরের কন্ট্রোল রুমের স্থান নির্ধারণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা বিভাগীয় প্রশাসনের দিক-নির্দেশনায় বিভিন্ন কার্যাদি তদারকি করা হচ্ছে। সর্বোপরি বিশ্ব ইজতেমার সব দিক জেলা প্রশাসন পর্যবেক্ষণ করছে, যখন যেখানে যা প্রয়োজন সেগুলোর ব্যবস্থা করছে।
তিনি আরও বলেন, ইজতেমা এলাকায় অবৈধ দখল উচ্ছেদ, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও মহাসড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার লক্ষে পর্যাপ্ত সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। ময়দানের আশপাশের সড়কগুলোতে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রথম পর্বের দুই ধাপের ইজতেমা শেষে, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। শেষ হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে। দ্বিতীয় পর্ব আয়োজন করবেন তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরুব্বী ভারতের মাওলানা সাদ অনুসারী সাথীরা। তবে সাদ অনুসারীদের ইজতেমা আয়োজনে সরকারের দেয়া একটি শর্ত মানা নিয়ে উভয় পক্ষে ভিন্ন মত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫
তাবলীগ জামাতের বিবাদমান দু’টি গ্রুপের মধ্যে সমঝোতা হওয়ার পর, কড়া নিরাপত্তায় গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের (টঙ্গী নদী) তীরে শুরু হয়েছে এবারের ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
বৃহস্পতিবার ৩০শে জানুয়ারি বাদ মাগরিব আম বয়ানের মধ্যদিয়ে শুরু এই ইজতেমায় তাবলীগ জামাতের শুরায়ে নেজামের (যোবায়ের) অনুসারী তাবলীগের সাথীরা প্রথম পর্বের আয়োজক।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবারের ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরায়ী নেজামের অধীনে দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। আর দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে ৩ ফেব্রুয়ারি। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
প্রথম পর্বের প্রথম ধাপের বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণের জন্য বিভিন্ন খিত্তা ও পয়েন্টের জিম্মাদার মুসল্লিরা বাস, ট্রাক, কার, পিকআপ ট্রেনসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে দলে দলে এরই মধ্যে ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। তারা কাঁধে-পিঠে প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে ইজতেমাস্থলে এসে নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিয়েছেন। দেশ, বিদেশের লাখো মুসুল্লীর পদভারে মুখর হয়ে ওঠেছে টঙ্গীর তীর। আশা করা হচ্ছে, ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাবে ইজতেমা ময়দান। ময়দানের ভিতরে চলছে বয়ান জিকির তালিম আর মাশোআরা।
বিশ্ব ইজতেমার মুসুল্লীদের সেবার জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে তাবলিগের মুরুব্বীগণ, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আট হাজারের অধিক সদস্য দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা বলয়।
তাবলীগ জামাতের শুরায়ি নেজাম মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান সংবাদকে বলেন, গতকাল বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে এবারের ৫৮তম টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা। শুক্রবার বাদ ফজর বয়ান করবেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়া উল হক। শুক্রবার সকাল ১০টায় বিভিন্ন খিত্তায় খিত্তায় তালিমের আমল হবে। তিনি আরও জানান, প্রথম পর্বে অংশ গ্রহণ করবে গাজীপুর, টঙ্গী, ধামরাই, গাইবান্ধা, মিরপুর, কাকরাইল, নাটোর, মৌলভীবাজার, রাজশাহী, দোহার, ডেমরা, কাকরাইল, নড়াইল, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নবাবগঞ্জ, নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, নেত্রকোনা, শেরপুর, ফরিদপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফেনী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, ঝিনাইদহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পিরোজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, রাজবাড়ী জেলা। এই ধাপে ঢাকার একাংশসহ মোট ৪১টি জেলা অংশগ্রহণ করছে।
বৃহস্পতিবার ৩০শে জানুয়ারি ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্ব ইজতেমার ১৬০ একর আয়তনের সুবিশাল প্যান্ডেলের কোথাও ঠাঁই নেই। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে ইজতেমা ময়দান। মুসুল্লীদের পদচারণায় ইজতেমা ময়দান ও তার আশপাশ এখন মুখুরিত। ময়দানের ভিতরে চলছে বয়ান, জিকির, তালিম আর মাশোআরা। ময়দানের ভিতরে জেলা ভিত্তিক খিত্তা অনুযায়ী ইজতেমা ময়দানে সমবেত মুসুল্লিগণ কেউ নিজেদের প্রয়োজনীয় কাজ সারছেন। অনেকে নিজ নিজ দলের আমীরের দেওয়া দীনের বয়ান শুনছেন। নিজ দলের আমীরের মাধ্যমে ইজতেমার যাবতীয় ইমান, আদব, আখলাক ও শৃংখলা নিয়ে কথা বলছেন। ইজতেমায় তাদের দলের সদস্যদের কার কী কাজ, কে কী দায়িত্ব পালন করবে তা ভাগ করে দেয়া হচ্ছে।
তাবলীগ জামাতের শুরায়ি নেজাম মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান আরও জানান, শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে দেশের সর্ববৃহৎ জুম্মার নামাজের জামাত। এতে প্রায় ৫ লাখ মুসল্লি এক জামাতে শরিক হয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইজতেমার মুসুল্লীরা ছাড়াও রাজধানী ও গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা এবং আশপাশের জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি এ বৃহৎ জুম্মার নামাজে শরিক হবেন। জুমার নামাজে ইমামতি করবেন শুরায়ে নেজামের শীর্ষ মুরুব্বী ও কাকরাইল মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা জুবায়ের।
ইজতেমা মাঠের মুরুব্বিরা জানান, তাবলীগ জামাতের উদ্যোগে প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। মাঠের সব কাজ করা হচ্ছে পরামর্শের মাধ্যমে। এখানে বিদ্যুৎ, পানি, প্যান্ডেল তৈরি, গ্যাস সরবরাহ প্রতিটি কাজই আলাদা আলাদা গ্রুপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তাবলীগ জামাতের অনুসারী মুসলমানরা অংশ নেন। তারা এখানে তাবলীগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শোনেন এবং ইসলামের দাওয়াতী কাজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান।
গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করীম খান সংবাদকে বলেন, ইজতেমা ময়দানকে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তায় রাখতে সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ। ইজতেমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকছে প্রায় সাড়ে সাত হাজার পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। কয়েকটি স্তরের এ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ইজতেমা ঢেকে রাখা হবে। নিরাপত্তার জন্য সাদা পোশাকে নজরদারী ও প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারীর ওপর জোর দেয়া হয়েছে। ডিএমপির বোম্ব পিসপোজেল টিম, সোয়াট টিম, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্য, সিসি টিভি, ওয়াচ টাওয়ার, রুফটপ থেকে মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ, আগত মুসুল্লীদের লাগেজ ও দেহ তল্লাশি, সাদা পোশাকে নিরাপত্তার বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারী অব্যাহত রাখা হবে। এছাড়াও প্রায় ১০ হাজার তাবলীগ জামাতের স্বেচ্ছাসেবী ময়দানে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসো আরেফিন জানান, জেলা প্রশাসন বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কর্মকান্ড সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিভাগের কাজের সমন্বয় করে থাকে। বিদেশি মেহমানদের আবাসস্থল নির্মাণের জন্য টিন সরবরাহ, বিভিন্ন দপ্তরের কন্ট্রোল রুমের স্থান নির্ধারণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা বিভাগীয় প্রশাসনের দিক-নির্দেশনায় বিভিন্ন কার্যাদি তদারকি করা হচ্ছে। সর্বোপরি বিশ্ব ইজতেমার সব দিক জেলা প্রশাসন পর্যবেক্ষণ করছে, যখন যেখানে যা প্রয়োজন সেগুলোর ব্যবস্থা করছে।
তিনি আরও বলেন, ইজতেমা এলাকায় অবৈধ দখল উচ্ছেদ, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও মহাসড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার লক্ষে পর্যাপ্ত সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। ময়দানের আশপাশের সড়কগুলোতে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রথম পর্বের দুই ধাপের ইজতেমা শেষে, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। শেষ হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে। দ্বিতীয় পর্ব আয়োজন করবেন তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরুব্বী ভারতের মাওলানা সাদ অনুসারী সাথীরা। তবে সাদ অনুসারীদের ইজতেমা আয়োজনে সরকারের দেয়া একটি শর্ত মানা নিয়ে উভয় পক্ষে ভিন্ন মত রয়েছে।