অমর একুশে বইমেলায় বই প্রকাশের আগে পাণ্ডুলিপি যাচাই প্রসঙ্গে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, বই ছাপানোর আগে পুলিশ বা বাংলা একাডেমিকে অনুমোদনের জন্য দেওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তা হাস্যকর এবং সরকারের নীতিমালার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।

শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে জাতীয় কবিতা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ফারুকী বলেন, "সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। সেটা যদি আমাকে গালাগাল করেও হয়, এতে কিছু যায় আসে না। আর বই প্রকাশ সেন্সর করা হবে—এটা হাস্যকর। অন্তর্বর্তী সরকারের বই সেন্সরের কোনো পরিকল্পনা নেই।"

তিনি জানান, পুলিশের এক কর্মকর্তার বই প্রকাশের আগে অনুমোদনের বিষয়ে যে মন্তব্য গণমাধ্যমে এসেছে, তা সরকারের নীতি নয়, বরং ব্যক্তিগত মতামত। তাই বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করেছে এবং তা এখানেই দূর করা দরকার।

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ বাংলা একাডেমির সিদ্ধান্ত, মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এর কোনো সরাসরি যোগাযোগ নেই। তবে স্বায়ত্তশাসনের সুযোগ নিয়ে কিছু ব্যক্তি একাডেমির পুরস্কার প্রক্রিয়ায় স্বজনপ্রীতি ও প্রভাব বিস্তার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি আরও বলেন, "পুরস্কার কমিটির সভাতেই স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয় এবং কীভাবে সমস্যা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হয়। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক আমাকে সেই সিদ্ধান্ত জানালে আমি তা জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় ফেসবুকে প্রকাশ করি। তার মানে, আমি সিদ্ধান্ত দিইনি।"

পুরস্কার প্রক্রিয়ার দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি জানান, পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নির্বাচনের নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ফেলো ও সদস্যদের একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শের গোষ্ঠী হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "নমিনেশনে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কেউ কেউ ছড়ার নামে প্রোপাগান্ডা লিখেছেন, কিন্তু সেই বই পড়ারও সুযোগ দেওয়া হয়নি।"

তিনি জানান, বাংলা একাডেমির পরিচালনপদ্ধতি ও নীতিমালায় সংস্কার আনার জন্য একটি ইনক্লুসিভ কমিটি গঠন করা হবে, যা প্রতিষ্ঠানটিকে নতুন চিন্তার সঙ্গে যুক্ত করবে।

জাতীয় কবিতা পরিষদের উদ্যোগে ৩৬তম জাতীয় কবিতা উৎসব আজ শুরু হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ‘শহীদ’ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম কবিতা উৎসব উদ্বোধন করেন। বক্তব্য দেন কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক মোহন রায়হান, সদস্যসচিব রেজাউদ্দিন স্টালিন প্রমুখ।