বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ভিত্তিক ক্যান্সারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বৃহত্তর গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে। শনিবার ১লা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ভার্সিটির সুপার স্পেশাল হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে ক্যান্সারের বোঝা জনসংখ্যা ভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি শীর্ষ এক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান গবেষক পাবলিক হেলথ্ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস্ বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান বলেছেন, ক্যান্সার বিশ্বে মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর একটি।
বাংলাদেশে জনসংখ্যা ভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি বা নিবন্ধন (পিবিসিআর) না থাকায় প্রতিবেশী দেশগুলোর তথ্য ব্যবহার করে ক্যান্সারের পরিস্থিতি অনুমান করতে হয়।
এর ফলে বাংলাদেশে ক্যান্সারের সঠিক পরিস্থিতি জানার ব্যাপারে সীমাবদ্ধতা আছে। তাই জনসংখ্যা ভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বা বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর মধ্যে একটি জনসংখ্যা ভিত্তিক ক্যান্সার নিবন্ধন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ক্যান্সারের পরিস্থিতি নির্ণয় করা জরুরি হয়ে পড়েছিল। এই জন্য এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় ২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে এ গবেষণাটি পরিচালিত হয়ে আসছে। এই গবেষণায় প্রতিটি বাড়িতে বিশেষ ভাবে তৈরি করা ইন্টারনেট ভিত্তিক ক্যান্সার নিবন্ধন সফটওয়্যার করে সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এক বছর পূর্তিতে একই পরিবারের ফলোআপ পরিদর্শন ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়েছে।
অনুষ্ঠানে খালেকুজ্জামান জানান, দেশে ২ লাখ মানুষের ওপর এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। দেশে ৩৮ ধরনের ক্যান্সারের রোগী পাওয়া গেছে। তার মধ্যে প্রতি লাখে ১০৬ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। শতকরা ৯৩ ভাগ রোগীর বয়স ১৮ থেকে ৭৫ বছর।
ক্যান্সার রোগীর মধ্যে ২ দশমিক ৪ ভাগ শিশু রয়েছে। আর ৫ দশমিক ১ শতাংশ রোগীর বয়স ৭৫ বছরের বেশি। ৫টি প্রধান ক্যান্সার হলো. স্তন, মুখ, পাকস্থলি,শ্বাসনালী এবং জরায়ু মুখের ক্যান্সার।
পুৃরুষের ৫টি প্রধান ক্যান্সার হলো, শ্বাসনালী, পাকস্থলি, ফুসফুস, মুখ ও খাদ্যনালীর ক্যান্সার।
নারীদের ৫টি প্রধান ক্যান্সার হলো- স্তন, জরায়ুমুখ, মুখ, থাইরয়েড এবং ওভারি। পুুরুষ ক্যান্সার রোগীদের ৭৫ দশমিক ৮ শতাংশ ধুমপায়ী এবং ধোঁয়াহীন পান, জর্দা, তামাক সেবনকারী ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ।
ক্যান্সার রোগীর মধ্যে ৬০ দশমিক ৬ শতাংশ নারী ধোঁয়াহীন পান, জর্দ্দা, তামাক সেবনকারি। ৪৬ শতাংশ নারী রোগীর ক্যান্সারের সঙ্গেই তামাক সেবনের সম্পর্ক রয়েছে। ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৬০ শতাংশ কমবাইন্ড চিকিৎসা নিয়েছে। আর ৭ দশমিক ৪ শতাংশ রোগী কোন চিকিৎসাই নেয়নি।
দেশের মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশ ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী। মৃত্যু রোগীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ফুসফুস, শ্বাসনালী ও পাকস্থলির ক্যান্সার। প্রতি বছর নতুন করে লাখে ৫৩ জন রোগী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ফুসফুস, লিভার ও শ্বাসনালীর ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা বেশি।
গবেষণার ফলাফল : প্রাথমিক ভাবে ২০১,৬৬৮ জন অংশগ্রহণকারি ৪৬,৬৩১টি পরিবারের মধ্যে থেকে গবেষণার অন্তর্ভুক্ত হন, যার মধ্যে ৪৮ দশমিক ৪ ভাগ পুরুষ এবং ৫১ দশমিক ৬ ভাগ নারী। মোট ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ছিল ২১৪ (পুরুষের জন্য প্রতি এক লাখে ১১৮ এবং নারীদের জন্য প্রতি এক লাখে ৯৬ জন)।
গবেষণার জনসংখ্যা ৩৮টি বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার আক্রান্ত হতে চিহ্নিত হয়েছে। আর ৯২ দশমিক ৫ ভাগ রোগীর বয়স ১৮ থেকে ৭৫ বছর। ১৮ বছরের নিচে ২ দশমিক ৪ ভাগ এবং ৭৫ বছরের ঊর্ধ্বে ৫ দশমিক ১ ভাগ।
সর্বোচ্চ ৫টি ক্যান্সার ছিল : স্তন (১৬ দশমিক ৮ ভাগ) ঠোঁট, মৌখিত গহ্বর (৮ দশমিক ৪ ভাগ), পেট (৭ দশমিক শূন্য) গলা শতকরা ৭ ভাগ। এভাবে গবেষকরা ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর শ্রেণী বিন্যাস করছেন।
গবেষণা ও ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায়) ডা. সায়েদুর রহমান, সভাপতিত্ব করেন ভিসি ডা. শাহিনুল আলম, উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভিসি ডা. আবুল কালাম আজাম ও ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদার প্রমুখ।
শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ভিত্তিক ক্যান্সারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বৃহত্তর গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে। শনিবার ১লা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ভার্সিটির সুপার স্পেশাল হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে ক্যান্সারের বোঝা জনসংখ্যা ভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি শীর্ষ এক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান গবেষক পাবলিক হেলথ্ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস্ বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান বলেছেন, ক্যান্সার বিশ্বে মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর একটি।
বাংলাদেশে জনসংখ্যা ভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি বা নিবন্ধন (পিবিসিআর) না থাকায় প্রতিবেশী দেশগুলোর তথ্য ব্যবহার করে ক্যান্সারের পরিস্থিতি অনুমান করতে হয়।
এর ফলে বাংলাদেশে ক্যান্সারের সঠিক পরিস্থিতি জানার ব্যাপারে সীমাবদ্ধতা আছে। তাই জনসংখ্যা ভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বা বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর মধ্যে একটি জনসংখ্যা ভিত্তিক ক্যান্সার নিবন্ধন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ক্যান্সারের পরিস্থিতি নির্ণয় করা জরুরি হয়ে পড়েছিল। এই জন্য এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় ২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে এ গবেষণাটি পরিচালিত হয়ে আসছে। এই গবেষণায় প্রতিটি বাড়িতে বিশেষ ভাবে তৈরি করা ইন্টারনেট ভিত্তিক ক্যান্সার নিবন্ধন সফটওয়্যার করে সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এক বছর পূর্তিতে একই পরিবারের ফলোআপ পরিদর্শন ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়েছে।
অনুষ্ঠানে খালেকুজ্জামান জানান, দেশে ২ লাখ মানুষের ওপর এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। দেশে ৩৮ ধরনের ক্যান্সারের রোগী পাওয়া গেছে। তার মধ্যে প্রতি লাখে ১০৬ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। শতকরা ৯৩ ভাগ রোগীর বয়স ১৮ থেকে ৭৫ বছর।
ক্যান্সার রোগীর মধ্যে ২ দশমিক ৪ ভাগ শিশু রয়েছে। আর ৫ দশমিক ১ শতাংশ রোগীর বয়স ৭৫ বছরের বেশি। ৫টি প্রধান ক্যান্সার হলো. স্তন, মুখ, পাকস্থলি,শ্বাসনালী এবং জরায়ু মুখের ক্যান্সার।
পুৃরুষের ৫টি প্রধান ক্যান্সার হলো, শ্বাসনালী, পাকস্থলি, ফুসফুস, মুখ ও খাদ্যনালীর ক্যান্সার।
নারীদের ৫টি প্রধান ক্যান্সার হলো- স্তন, জরায়ুমুখ, মুখ, থাইরয়েড এবং ওভারি। পুুরুষ ক্যান্সার রোগীদের ৭৫ দশমিক ৮ শতাংশ ধুমপায়ী এবং ধোঁয়াহীন পান, জর্দা, তামাক সেবনকারী ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ।
ক্যান্সার রোগীর মধ্যে ৬০ দশমিক ৬ শতাংশ নারী ধোঁয়াহীন পান, জর্দ্দা, তামাক সেবনকারি। ৪৬ শতাংশ নারী রোগীর ক্যান্সারের সঙ্গেই তামাক সেবনের সম্পর্ক রয়েছে। ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৬০ শতাংশ কমবাইন্ড চিকিৎসা নিয়েছে। আর ৭ দশমিক ৪ শতাংশ রোগী কোন চিকিৎসাই নেয়নি।
দেশের মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশ ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী। মৃত্যু রোগীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ফুসফুস, শ্বাসনালী ও পাকস্থলির ক্যান্সার। প্রতি বছর নতুন করে লাখে ৫৩ জন রোগী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ফুসফুস, লিভার ও শ্বাসনালীর ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা বেশি।
গবেষণার ফলাফল : প্রাথমিক ভাবে ২০১,৬৬৮ জন অংশগ্রহণকারি ৪৬,৬৩১টি পরিবারের মধ্যে থেকে গবেষণার অন্তর্ভুক্ত হন, যার মধ্যে ৪৮ দশমিক ৪ ভাগ পুরুষ এবং ৫১ দশমিক ৬ ভাগ নারী। মোট ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ছিল ২১৪ (পুরুষের জন্য প্রতি এক লাখে ১১৮ এবং নারীদের জন্য প্রতি এক লাখে ৯৬ জন)।
গবেষণার জনসংখ্যা ৩৮টি বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার আক্রান্ত হতে চিহ্নিত হয়েছে। আর ৯২ দশমিক ৫ ভাগ রোগীর বয়স ১৮ থেকে ৭৫ বছর। ১৮ বছরের নিচে ২ দশমিক ৪ ভাগ এবং ৭৫ বছরের ঊর্ধ্বে ৫ দশমিক ১ ভাগ।
সর্বোচ্চ ৫টি ক্যান্সার ছিল : স্তন (১৬ দশমিক ৮ ভাগ) ঠোঁট, মৌখিত গহ্বর (৮ দশমিক ৪ ভাগ), পেট (৭ দশমিক শূন্য) গলা শতকরা ৭ ভাগ। এভাবে গবেষকরা ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর শ্রেণী বিন্যাস করছেন।
গবেষণা ও ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায়) ডা. সায়েদুর রহমান, সভাপতিত্ব করেন ভিসি ডা. শাহিনুল আলম, উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভিসি ডা. আবুল কালাম আজাম ও ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদার প্রমুখ।