দেশে বেসরকারি এলপি গ্যাসের (এলপিজি) দাম ১২ কেজি সিলিন্ডারে ১৯ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৭৮ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। যানবাহনে ব্যবহৃত এলপিজির (অটো গ্যাস) দাম প্রতি লিটারে ৮৯ পয়সা বাড়িয়ে ৬৭ টাকা ৭৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টা থেকেই নতুন দর কার্যকর করা হয়েছে।
বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ রোববার বিকেলে ঢাকার কারওয়ান বাজারে কমিশন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নতুন দাম ঘোষণা করেন। এ সময় বিইআরসির সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক মো. মিজানুর রহমান, সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শাহিদ সারওয়ার (অব.) উপস্থিত ছিলেন।
বিইআরসির নতুন দর অনুযায়ী বেসরকারি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক/ভ্যাট) দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ১২৩ টাকা ১৬ পয়সা, যা গত মাসে ছিল ১২১ টাকা ৫৬ পয়সা।
নতুন দর অনুযায়ী বিভিন্ন আকারের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারিত হবে।
বহুতল ভবনে কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবহৃত রেটিকুলেটেড পদ্ধতির (তরল অবস্থায়) এলপি গ্যাসের দাম মূসকসহ প্রতি কেজি ১১৯ টাকা ৪১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। জানুয়ারিতে দাম ছিল ১১৭ টাকা ৪৩ পয়সা।
আমদানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় সরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা এলপিজির সাড়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৬৯০ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
জানুয়ারির শুরুতে ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি এলপি গ্যাসের ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয় ১৪৫৫ টাকা। তবে ১৪ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন পণ্যে ভ্যাট-ট্যাক্স বৃদ্ধি করায় এলপিজির দাম ১২ কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪৫৯ টাকা।
একই কারণে, অটোগ্যাসের দামও প্রতি লিটারে ৬৬.৭৮ টাকা থেকে ৪৯ পয়সা বেড়ে ৬৭.২৭ টাকা হয়। এরপর, ২২ জানুয়ারি ৪২ পয়সা কমিয়ে অটোগ্যাসর দাম পুনঃনির্ধারণ করা হয় ৬৬ টাকা ৮৫ পয়সা।আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য
এলপিজি তৈরির মূল উপাদান (কাঁচামাল) প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এই দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এই সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি।
বিইআরসির মার্চের মূল্য ঘোষণা দেখা যায়, সৌদি আরামকোর মূল্য অনুযায়ী প্রোপেন ও বিউটেনের অনুপাত ৩৫:৬৫ অনুযায়ী জানুয়ারির জন্য প্রতি মেট্রিক টনে গড় মূল্য ধরা হয়েছে ৬২৮.৫০ মার্কিন ডলার; যা জানুয়ারিতে ৬১৮.৫০ মার্কিন ডলার ছিল। এ হিসেবে ফেব্রুয়ারিতে প্রতি টনে বেড়েছে ১০ ডলার।
আমদানিকারক কোম্পানির চালান (ইনভয়েস) মূল্য থেকে গড় করে পুরো মাসের জন্য ডলারের দামও হিসাব করে বিইআরসি।
রোববার সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ জানান, আন্তর্জাতিক কাঁচামালের দর বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হওয়ায় দেশে এলপি গ্যাসের দাম বেড়েছে।
*ভোক্তাদের অভিযোগ*
বাজারে বিইআরসি নির্ধারিত দামে এলপি গ্যাস পাওয়া যায় না, এমন অভিযোগ অধিকাংশ ভোক্তার। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করার ক্ষেত্রে গ্যাসের সিলিন্ডার কেনার সময় ক্রেতাকে রসিদ সংগ্রহের পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্রেতা এলপিজি ক্রয়ের রসিদ চাইলে দোকানদাররা বলেন, ‘রসিদ দেয়া যাবে না, গ্যাস না নিলে রেখে যান।’
*দেশীয় বাজার*
প্রায় দেড় দশক আগে সরকার যখন আবাসিক খাতে নতুন গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয় তারপর থেকে এলপি গ্যাসের ব্যবহার বাড়তে থাকে। বাসাবাড়ি, রেস্তোরাঁর মালিকরা গ্যাস সংযোগ না পেয়ে এলপিজি ব্যবহার শুরু করেন। ওই সময় সরকারি খাত থেকে মাত্র ২ শতাংশ এলপিজি সরবরাহ আসায় তখন থেকেই বাজার ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে। ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে ভোক্তা স্বার্থ ক্ষুণœ করে চলছিল এলপিজির বেসরকারি খাত। বর্তমানে সরকারি খাত থেকে সরবরাহ এক শতাংশ।
খাত সংশ্লিষ্ট অনেকের মতে, বাসায় রান্নার কাজে রাষ্ট্রীয় প্রাকৃতিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখা এবং একমাত্র রাষ্ট্রীয় এলপিজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এলপি গ্যাস লিমিটেডের সরবরাহ ক্ষমতা দীর্ঘদিন ধরে ১ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা প্রকৃতপক্ষে এ খাতের বেসরকারি ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেয়ার সামিল।
ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল দেশে প্রথমবারের মতো এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। এরপর থেকে প্রতি মাসে একবার দাম সমন্বয় করছে বিইআরসি।
রোববার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
দেশে বেসরকারি এলপি গ্যাসের (এলপিজি) দাম ১২ কেজি সিলিন্ডারে ১৯ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৭৮ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। যানবাহনে ব্যবহৃত এলপিজির (অটো গ্যাস) দাম প্রতি লিটারে ৮৯ পয়সা বাড়িয়ে ৬৭ টাকা ৭৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টা থেকেই নতুন দর কার্যকর করা হয়েছে।
বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ রোববার বিকেলে ঢাকার কারওয়ান বাজারে কমিশন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নতুন দাম ঘোষণা করেন। এ সময় বিইআরসির সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক মো. মিজানুর রহমান, সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শাহিদ সারওয়ার (অব.) উপস্থিত ছিলেন।
বিইআরসির নতুন দর অনুযায়ী বেসরকারি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক/ভ্যাট) দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ১২৩ টাকা ১৬ পয়সা, যা গত মাসে ছিল ১২১ টাকা ৫৬ পয়সা।
নতুন দর অনুযায়ী বিভিন্ন আকারের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারিত হবে।
বহুতল ভবনে কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবহৃত রেটিকুলেটেড পদ্ধতির (তরল অবস্থায়) এলপি গ্যাসের দাম মূসকসহ প্রতি কেজি ১১৯ টাকা ৪১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। জানুয়ারিতে দাম ছিল ১১৭ টাকা ৪৩ পয়সা।
আমদানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় সরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা এলপিজির সাড়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৬৯০ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
জানুয়ারির শুরুতে ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি এলপি গ্যাসের ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয় ১৪৫৫ টাকা। তবে ১৪ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন পণ্যে ভ্যাট-ট্যাক্স বৃদ্ধি করায় এলপিজির দাম ১২ কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪৫৯ টাকা।
একই কারণে, অটোগ্যাসের দামও প্রতি লিটারে ৬৬.৭৮ টাকা থেকে ৪৯ পয়সা বেড়ে ৬৭.২৭ টাকা হয়। এরপর, ২২ জানুয়ারি ৪২ পয়সা কমিয়ে অটোগ্যাসর দাম পুনঃনির্ধারণ করা হয় ৬৬ টাকা ৮৫ পয়সা।আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য
এলপিজি তৈরির মূল উপাদান (কাঁচামাল) প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এই দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এই সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি।
বিইআরসির মার্চের মূল্য ঘোষণা দেখা যায়, সৌদি আরামকোর মূল্য অনুযায়ী প্রোপেন ও বিউটেনের অনুপাত ৩৫:৬৫ অনুযায়ী জানুয়ারির জন্য প্রতি মেট্রিক টনে গড় মূল্য ধরা হয়েছে ৬২৮.৫০ মার্কিন ডলার; যা জানুয়ারিতে ৬১৮.৫০ মার্কিন ডলার ছিল। এ হিসেবে ফেব্রুয়ারিতে প্রতি টনে বেড়েছে ১০ ডলার।
আমদানিকারক কোম্পানির চালান (ইনভয়েস) মূল্য থেকে গড় করে পুরো মাসের জন্য ডলারের দামও হিসাব করে বিইআরসি।
রোববার সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ জানান, আন্তর্জাতিক কাঁচামালের দর বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হওয়ায় দেশে এলপি গ্যাসের দাম বেড়েছে।
*ভোক্তাদের অভিযোগ*
বাজারে বিইআরসি নির্ধারিত দামে এলপি গ্যাস পাওয়া যায় না, এমন অভিযোগ অধিকাংশ ভোক্তার। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করার ক্ষেত্রে গ্যাসের সিলিন্ডার কেনার সময় ক্রেতাকে রসিদ সংগ্রহের পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্রেতা এলপিজি ক্রয়ের রসিদ চাইলে দোকানদাররা বলেন, ‘রসিদ দেয়া যাবে না, গ্যাস না নিলে রেখে যান।’
*দেশীয় বাজার*
প্রায় দেড় দশক আগে সরকার যখন আবাসিক খাতে নতুন গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয় তারপর থেকে এলপি গ্যাসের ব্যবহার বাড়তে থাকে। বাসাবাড়ি, রেস্তোরাঁর মালিকরা গ্যাস সংযোগ না পেয়ে এলপিজি ব্যবহার শুরু করেন। ওই সময় সরকারি খাত থেকে মাত্র ২ শতাংশ এলপিজি সরবরাহ আসায় তখন থেকেই বাজার ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে। ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে ভোক্তা স্বার্থ ক্ষুণœ করে চলছিল এলপিজির বেসরকারি খাত। বর্তমানে সরকারি খাত থেকে সরবরাহ এক শতাংশ।
খাত সংশ্লিষ্ট অনেকের মতে, বাসায় রান্নার কাজে রাষ্ট্রীয় প্রাকৃতিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখা এবং একমাত্র রাষ্ট্রীয় এলপিজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এলপি গ্যাস লিমিটেডের সরবরাহ ক্ষমতা দীর্ঘদিন ধরে ১ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা প্রকৃতপক্ষে এ খাতের বেসরকারি ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেয়ার সামিল।
ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল দেশে প্রথমবারের মতো এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। এরপর থেকে প্রতি মাসে একবার দাম সমন্বয় করছে বিইআরসি।