বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলায় তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রি নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ‘তৌহিদী জনতা’ নামে একদল লোক সব্যসাচী প্রকাশনার স্টলে গিয়ে বিক্ষোভ দেখালে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ প্রকাশক শতাব্দী ভবকে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নিয়ে যায়।
পরে উত্তেজিত জনতা ওই নিয়ন্ত্রণকক্ষও ঘিরে ফেলে। তাদের অভিযোগ, প্রকাশক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসলামপন্থিদের কটাক্ষ করেছেন এবং মেলায় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে সব্যসাচী প্রকাশনার ১২৮ নম্বর স্টলটি বন্ধ রয়েছে। তবে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা স্টল বন্ধ করেনি।
জনতার বিক্ষোভের পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে প্রকাশক শতাব্দী ভবের ফেসবুক পোস্টকে দায়ী করা হচ্ছে। শামীম নামে একজন জানান, “প্রকাশক ফেসবুকে আমাদের মুসলমানদের ‘জঙ্গি’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তিনি মেলায় এসেও স্লোগান দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছেন।”
প্রকাশক শতাব্দী ভব আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, তাদের স্টলে হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। প্রকাশনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সানজানা মেহরিনও জানান, তসলিমা নাসরিনের বই রাখার কারণে তারা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন।
এ নিয়ে লেখক তসলিমা নাসরিন নিজেও সোমবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেন। তিনি বলেন, “মৌলবাদি সন্ত্রাসীরা সব্যসাচী স্টল গুঁড়িয়ে দিতে চেয়েছে। বইমেলা কর্তৃপক্ষের উচিত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আর যারা হুমকি দিয়েছে, তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা।”
বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা বই সরিয়ে নেওয়ার কোনো নির্দেশনা দেননি।
বইমেলা টাস্কফোর্স কমিটির আহ্বায়ক মো. সেলিম রেজা বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বইটি নিয়ে আলোচনার পর প্রকাশকরা নিজেরাই তা সরিয়ে নিয়েছেন। মেলা কমিটি কোনো নির্দেশনা দেয়নি।”
প্রকাশক শতাব্দী ভবকে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নেওয়ার পর উত্তেজিত জনতা সেখানে জড়ো হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, “প্রকাশককে আমরা নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়েছি এবং পরবর্তী আদেশের অপেক্ষায় আছি। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
সব্যসাচী প্রকাশক শতাব্দী ভবের স্ত্রী সানজানা জানান, “দুই দিন ধরেই হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। আমরা বিষয়টি পুলিশ ও বইমেলা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। তারা বই সরিয়ে নিতে বললে, আমরা তা সরিয়ে নিয়েছি। তারপরও হামলা হয়েছে।”
সোমবার বইমেলার দশম দিনে ৮৪টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে।
‘লেখক বলছি’ মঞ্চে কুদরত-ই-হুদা ও হিজল জোবায়ের তাদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘ড. মনিরুজ্জামানের সময়রেখা: ভাষাবিজ্ঞানের ত্রিকালদর্শী পরিব্রাজক’ শীর্ষক আলোচনা। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাশরুর ইমতিয়াজ, আর আলোচনা করেন সালমা নাসরীন ও মামুন অর রশীদ। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মনসুর মুসা।
সাংস্কৃতিক পর্বে পরিবেশনা করে ‘আরশিনগর বাউল সংঘ’, ‘নৃত্য সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং ‘বিরোহী শিল্পীগোষ্ঠী’। সংগীত পরিবেশন করেন আব্দুল লতিফ শাহ, বাউল সুভাষ বিশ্বাস, আবুল কালাম আজাদ, সাধিকা সৃজনী তানিয়া, এলাহী মাসুদ, কাজী দেলোয়ার হোসেন, এ টি এম গোলাম মোস্তফা, পিয়াল হাসান ও শামিমা সুলতানা।
মঙ্গলবার বইমেলার একাদশতম দিন শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
এদিন বিকেল ৪টায় মূলমঞ্চে ‘জীবন ও সাহিত্য: শাহেদ আলী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন শিবলী আজাদ, আর আলোচনায় অংশ নেবেন নাজিব ওয়াদুদ ও মোস্তাক আহমাদ দীন। সভাপতিত্ব করবেন চঞ্চল কুমার বোস।
সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলায় তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রি নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ‘তৌহিদী জনতা’ নামে একদল লোক সব্যসাচী প্রকাশনার স্টলে গিয়ে বিক্ষোভ দেখালে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ প্রকাশক শতাব্দী ভবকে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নিয়ে যায়।
পরে উত্তেজিত জনতা ওই নিয়ন্ত্রণকক্ষও ঘিরে ফেলে। তাদের অভিযোগ, প্রকাশক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসলামপন্থিদের কটাক্ষ করেছেন এবং মেলায় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে সব্যসাচী প্রকাশনার ১২৮ নম্বর স্টলটি বন্ধ রয়েছে। তবে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা স্টল বন্ধ করেনি।
জনতার বিক্ষোভের পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে প্রকাশক শতাব্দী ভবের ফেসবুক পোস্টকে দায়ী করা হচ্ছে। শামীম নামে একজন জানান, “প্রকাশক ফেসবুকে আমাদের মুসলমানদের ‘জঙ্গি’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তিনি মেলায় এসেও স্লোগান দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছেন।”
প্রকাশক শতাব্দী ভব আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, তাদের স্টলে হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। প্রকাশনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সানজানা মেহরিনও জানান, তসলিমা নাসরিনের বই রাখার কারণে তারা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন।
এ নিয়ে লেখক তসলিমা নাসরিন নিজেও সোমবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেন। তিনি বলেন, “মৌলবাদি সন্ত্রাসীরা সব্যসাচী স্টল গুঁড়িয়ে দিতে চেয়েছে। বইমেলা কর্তৃপক্ষের উচিত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আর যারা হুমকি দিয়েছে, তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা।”
বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা বই সরিয়ে নেওয়ার কোনো নির্দেশনা দেননি।
বইমেলা টাস্কফোর্স কমিটির আহ্বায়ক মো. সেলিম রেজা বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বইটি নিয়ে আলোচনার পর প্রকাশকরা নিজেরাই তা সরিয়ে নিয়েছেন। মেলা কমিটি কোনো নির্দেশনা দেয়নি।”
প্রকাশক শতাব্দী ভবকে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নেওয়ার পর উত্তেজিত জনতা সেখানে জড়ো হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, “প্রকাশককে আমরা নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়েছি এবং পরবর্তী আদেশের অপেক্ষায় আছি। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
সব্যসাচী প্রকাশক শতাব্দী ভবের স্ত্রী সানজানা জানান, “দুই দিন ধরেই হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। আমরা বিষয়টি পুলিশ ও বইমেলা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। তারা বই সরিয়ে নিতে বললে, আমরা তা সরিয়ে নিয়েছি। তারপরও হামলা হয়েছে।”
সোমবার বইমেলার দশম দিনে ৮৪টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে।
‘লেখক বলছি’ মঞ্চে কুদরত-ই-হুদা ও হিজল জোবায়ের তাদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘ড. মনিরুজ্জামানের সময়রেখা: ভাষাবিজ্ঞানের ত্রিকালদর্শী পরিব্রাজক’ শীর্ষক আলোচনা। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাশরুর ইমতিয়াজ, আর আলোচনা করেন সালমা নাসরীন ও মামুন অর রশীদ। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মনসুর মুসা।
সাংস্কৃতিক পর্বে পরিবেশনা করে ‘আরশিনগর বাউল সংঘ’, ‘নৃত্য সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং ‘বিরোহী শিল্পীগোষ্ঠী’। সংগীত পরিবেশন করেন আব্দুল লতিফ শাহ, বাউল সুভাষ বিশ্বাস, আবুল কালাম আজাদ, সাধিকা সৃজনী তানিয়া, এলাহী মাসুদ, কাজী দেলোয়ার হোসেন, এ টি এম গোলাম মোস্তফা, পিয়াল হাসান ও শামিমা সুলতানা।
মঙ্গলবার বইমেলার একাদশতম দিন শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
এদিন বিকেল ৪টায় মূলমঞ্চে ‘জীবন ও সাহিত্য: শাহেদ আলী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন শিবলী আজাদ, আর আলোচনায় অংশ নেবেন নাজিব ওয়াদুদ ও মোস্তাক আহমাদ দীন। সভাপতিত্ব করবেন চঞ্চল কুমার বোস।