alt

জাতীয়

নাগরিক ভোগান্তি কমাতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ

সেবার মান উন্নয়নে সৃজনশীল হওয়ার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দেশের বিভিন্ন খাত ডিজিটাইজ করা হলেও এখনো নাগরিক সেবা পেতে ভোগান্তির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে। এই বাস্তবতা মাথায় রেখে মাঠ প্রশাসনকে আরও কার্যকরভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে তিন দিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “শেষ বয়সে কোথাও যেতে হলে পাসপোর্ট দরকার হয়। কিন্তু জন্ম নিবন্ধন না থাকলে পাসপোর্ট পাওয়া যায় না। অথচ টাকা দিলে ঠিকই ব্যবস্থা হয়ে যায়। টাকা দিলে যদি পাওয়া যায়, তাহলে টাকা ছাড়া কেন পাওয়া যাবে না? এটা তো নাগরিকের অধিকার।”

তিনি বলেন, “এই সিস্টেম আমরা চালু করতে পারছি না কেন? নাগরিকের জন্মসনদ তার অবশ্যই প্রাপ্য। সরকার যদি এটি দিতে ব্যর্থ হয়, তবে সেটি কোনো অজুহাত হতে পারে না। এটি নিশ্চিত করতে হবে এবং এজন্য সৃজনশীল হতে হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা ডিজিটাল সেবাকে বাস্তবে কার্যকর করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “জন্মসনদ না থাকলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাওয়া যায় না, এনআইডি না থাকলে পাসপোর্ট মেলে না—এভাবে সব কিছু আটকে যাচ্ছে। অথচ এসব সেবা অনলাইনে পাওয়ার কথা ছিল। আমরা এখনো পুরোপুরি ই-পাসপোর্ট বাস্তবায়ন করতে পারিনি, এখনো মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দেওয়া হচ্ছে। এটি দ্রুত করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “অনলাইনে সেবা চালু হয়েছে বললেই তো হবে না, সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, সেটাই দেখার বিষয়। ভূমি মন্ত্রণালয় বলছে, সব অনলাইনে হয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। কেন এখনো জমির কাগজ অনলাইনে পাওয়া যায় না? কেন মানুষ এখনো হয়রানির শিকার হয়? ডিসিদের এসব বিষয়ে নজর দিতে হবে।”

মুহাম্মদ ইউনূস ডিসিদের মধ্যে নাগরিক সেবার প্রতিযোগিতা চান, যাতে তারা সেবাগুলো আরও দ্রুত ও কার্যকরভাবে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারেন। তিনি বলেন, “এক জেলা প্রথম হবে, কেউ দ্বিতীয়, কেউ তৃতীয়। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়ন আরও গতিশীল হবে। এক জেলা ঘোষণা দিতে পারে যে তারা এমআরপি বন্ধ করে পুরোপুরি ই-পাসপোর্টে চলে গেছে। এ ধরনের উদাহরণ তৈরি করতে হবে।”

তিনি বলেন, “অনলাইনের জন্য এক জেলা যদি সবার আগে ভূমি রেকর্ড ডিজিটাইজ করে, তাহলে অন্য জেলাগুলোও অনুসরণ করবে। একজন ডিসি চাইলে এসব পরিবর্তন আনতে পারেন।”

প্রধান উপদেষ্টা ডিসিদের জনগণের জন্য কাজ করার মানসিকতা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ছোট ছোট কাজ দিয়েই বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব। জেলা প্রশাসকরা যদি শুধু কয়েকটি স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন, তাহলে অনেক অনিয়ম দূর করা সম্ভব। এ ধরনের উদ্যোগ অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে।”

তিনি আরও বলেন, “একজন ডিসির ব্যক্তিগত উদ্যোগেও সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে, যা মানুষ কখনো ভোলে না। নাগরিকরা মনে রাখে, কোনো একজন ডিসি তার জেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছিলেন। এটি সরকারি নির্দেশনার বাইরেও একজন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতার পরিচয় দেয়।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে আছি। এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ। আমাদের হাতে অনেক কাজ আছে, যা কঠিন কিছু নয়, বরং সহজেই করা সম্ভব। আমি বলছি না, শতভাগ করতে হবে। কিন্তু অন্তত ১০-২০ শতাংশ হলেও পরিবর্তন আনতে হবে।”

তিনি ডিসিদের উদ্দেশে বলেন, “নিজেদের উদ্যোগে পরিবর্তন আনার আনন্দ আছে। ‘আমি এটি সবার আগে করে ফেলেছি’—এই তৃপ্তি যেন কেউ হাতছাড়া না করেন।”

ছবি

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর উদ্বেগ

ছবি

আমরা এখন যুদ্ধাবস্থায় আছি, ষড়যন্ত্রকারীরা এই সুযোগে শান্তি বিনষ্টের চেষ্টা করবে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

শিশু ধর্ষণের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন, আইন সংশোধন বৃহস্পতিবারের মধ্যে

ছবি

সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশে ভিন্নমত জানিয়ে ইসির চিঠি

ছবি

১৩ জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ, মঙ্গলবার থেকে কমতে পারে

প্রতারণা এড়াতে অ্যাপ থেকে টিকেট কেনার পরামর্শ রেল কর্তৃপক্ষের

‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ

সরকারি সাত কলেজ সমন্বয়ে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’

বাংলাদেশে ‘আন্তর্জাতিক মানের’ নির্বাচন চায় ইইউ, দেবে সহায়তা

এসএসসি চলাকালে ‘কোচিং সেন্টার বন্ধ’

ছবি

‘কড়াই বিলে’র ৫ শতাধিক গাছ কর্তন, জানে না বনবিভাগ

ছবি

বদলি ইস্যু : খামারবাড়িতে সড়ক অবরোধ, যানজটে ভোগান্তি

সংবাদ সম্মেলন ধর্ষণকে ‘ধর্ষণ’ই বলতে হবে

ছবি

‘ডিএমপি কমিশনার বাস্তবে ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন’

সেদিন যা ঘটেছিল

ছবি

দ্রুত রায় কার্যকর চায় পরিবার

ছবি

বাংলাদেশে ‘বিনিয়োগ ও কারখানা স্থাপন’ প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে গুরুত্ব পাবে

ছবি

আবরার হত্যার রায়: ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন

ছবি

ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আহ্বান ইউআইএফ’র

ছবি

প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন

ছবি

দণ্ড দ্রুত কার্যকর চান আবরারের বাবা

ছবি

চার দিনের সফর শেষে ঢাকা ছাড়লেন জাতিসংঘ মহাসচিব

ছবি

আবরার হত্যা মামলা: হাই কোর্টে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন বহাল

রবিবার আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে ঢাবিতে ছুটি ঘোষণা

খামারবাড়ির কর্মকর্তাদের সংবাদ সম্মেলন, চাকরি বিধিমালা ‘লঙ্ঘন’: কর্তৃপক্ষ

৯০ দিনের মধ্যে রায় কার্যকর করতে হবে: জামায়াতে আমির

ধর্ষণের প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশি হামলা: ২১০ নাগরিকের বিবৃতি

‘মার্কিন কর্মকর্তা রোহিঙ্গা সহায়তা বন্ধ করতে চেয়েছিলেন’

ছবি

ভোলায় অকালেই ঝরে যাচ্ছে মেধাবী শিক্ষার্থীর স্বপ্ন

আরাকান আর্মি থেকে ২৬ জেলেকে ফেরত আনলো বিজিবি

ছবি

ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ চলছে, বন্ধ হচ্ছে না ধর্ষণ-নির্যাতন

ছবি

ঈদযাত্রা: দ্বিতীয় দিনে ৩০ মিনিটে ৭৩ লাখ হিট!

ছবি

রাজশাহীতে পদ্মা ও বাংলাবান্ধা ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ

গণপরিবহনে নারীদের সুরক্ষায় ‘হেল্প’ অ্যাপ চালু

পুলিশ সংস্কার আইন: তল্লাশি, গ্রেপ্তার, জিজ্ঞাসাবাদে কঠোর হচ্ছে আইন

গণমিছিল ‘স্থগিত’ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ আট সংগঠনের

tab

জাতীয়

নাগরিক ভোগান্তি কমাতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ

সেবার মান উন্নয়নে সৃজনশীল হওয়ার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দেশের বিভিন্ন খাত ডিজিটাইজ করা হলেও এখনো নাগরিক সেবা পেতে ভোগান্তির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে। এই বাস্তবতা মাথায় রেখে মাঠ প্রশাসনকে আরও কার্যকরভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে তিন দিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “শেষ বয়সে কোথাও যেতে হলে পাসপোর্ট দরকার হয়। কিন্তু জন্ম নিবন্ধন না থাকলে পাসপোর্ট পাওয়া যায় না। অথচ টাকা দিলে ঠিকই ব্যবস্থা হয়ে যায়। টাকা দিলে যদি পাওয়া যায়, তাহলে টাকা ছাড়া কেন পাওয়া যাবে না? এটা তো নাগরিকের অধিকার।”

তিনি বলেন, “এই সিস্টেম আমরা চালু করতে পারছি না কেন? নাগরিকের জন্মসনদ তার অবশ্যই প্রাপ্য। সরকার যদি এটি দিতে ব্যর্থ হয়, তবে সেটি কোনো অজুহাত হতে পারে না। এটি নিশ্চিত করতে হবে এবং এজন্য সৃজনশীল হতে হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা ডিজিটাল সেবাকে বাস্তবে কার্যকর করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “জন্মসনদ না থাকলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাওয়া যায় না, এনআইডি না থাকলে পাসপোর্ট মেলে না—এভাবে সব কিছু আটকে যাচ্ছে। অথচ এসব সেবা অনলাইনে পাওয়ার কথা ছিল। আমরা এখনো পুরোপুরি ই-পাসপোর্ট বাস্তবায়ন করতে পারিনি, এখনো মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দেওয়া হচ্ছে। এটি দ্রুত করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “অনলাইনে সেবা চালু হয়েছে বললেই তো হবে না, সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, সেটাই দেখার বিষয়। ভূমি মন্ত্রণালয় বলছে, সব অনলাইনে হয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। কেন এখনো জমির কাগজ অনলাইনে পাওয়া যায় না? কেন মানুষ এখনো হয়রানির শিকার হয়? ডিসিদের এসব বিষয়ে নজর দিতে হবে।”

মুহাম্মদ ইউনূস ডিসিদের মধ্যে নাগরিক সেবার প্রতিযোগিতা চান, যাতে তারা সেবাগুলো আরও দ্রুত ও কার্যকরভাবে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারেন। তিনি বলেন, “এক জেলা প্রথম হবে, কেউ দ্বিতীয়, কেউ তৃতীয়। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়ন আরও গতিশীল হবে। এক জেলা ঘোষণা দিতে পারে যে তারা এমআরপি বন্ধ করে পুরোপুরি ই-পাসপোর্টে চলে গেছে। এ ধরনের উদাহরণ তৈরি করতে হবে।”

তিনি বলেন, “অনলাইনের জন্য এক জেলা যদি সবার আগে ভূমি রেকর্ড ডিজিটাইজ করে, তাহলে অন্য জেলাগুলোও অনুসরণ করবে। একজন ডিসি চাইলে এসব পরিবর্তন আনতে পারেন।”

প্রধান উপদেষ্টা ডিসিদের জনগণের জন্য কাজ করার মানসিকতা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ছোট ছোট কাজ দিয়েই বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব। জেলা প্রশাসকরা যদি শুধু কয়েকটি স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন, তাহলে অনেক অনিয়ম দূর করা সম্ভব। এ ধরনের উদ্যোগ অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে।”

তিনি আরও বলেন, “একজন ডিসির ব্যক্তিগত উদ্যোগেও সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে, যা মানুষ কখনো ভোলে না। নাগরিকরা মনে রাখে, কোনো একজন ডিসি তার জেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছিলেন। এটি সরকারি নির্দেশনার বাইরেও একজন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতার পরিচয় দেয়।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে আছি। এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ। আমাদের হাতে অনেক কাজ আছে, যা কঠিন কিছু নয়, বরং সহজেই করা সম্ভব। আমি বলছি না, শতভাগ করতে হবে। কিন্তু অন্তত ১০-২০ শতাংশ হলেও পরিবর্তন আনতে হবে।”

তিনি ডিসিদের উদ্দেশে বলেন, “নিজেদের উদ্যোগে পরিবর্তন আনার আনন্দ আছে। ‘আমি এটি সবার আগে করে ফেলেছি’—এই তৃপ্তি যেন কেউ হাতছাড়া না করেন।”

back to top