alt

জাতীয়

নাহিদের নেতৃত্বে আগামী সপ্তাহেই নতুন রাজনৈতিক দল, এরপর ছাত্র সংগঠন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আগামী সপ্তাহেই আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। দলের নাম চূড়ান্ত হতে পারে চলতি সপ্তাহে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করে দলটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন মো. নাহিদ ইসলাম। সদস্যসচিব পদে আলোচনায় আছে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের নাম। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পাশাপাশি একটি ছাত্রসংগঠনের কথাও ভাবছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। তবে সেটির নাম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামে হবে না। ছাত্রসংগঠনটি হবে ভিন্ন নামে। নাগরিক কমিটির একটি সূত্র বলছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটি যেহেতু গণ-অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম, তাই এটি এই নামেই থেকে যাবে। জাতীয় নাগরিক কমিটিও বহাল থাকবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে অনেকে নতুন দলে যোগ দেবেন, আর ছাত্রদের অনেকে যোগ দেবেন নতুন ছাত্রসংগঠনে। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম গতকাল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘চলতি মাসেই দেশে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা করা হবে। নতুন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিতে নাহিদ ইসলামকে আহ্বান জানানো হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সময় আমাদের সামনের সারিতে থেকে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মন্ত্রণালয় ছেড়ে জনতার কাতারে নেমে এসে শিগগিরই নতুন দলের দায়িত্ব নেবেন তিনি (নাহিদ)।’

নাগরিক কমিটির একটি সূত্র বলছে, নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পদ থেকে নতুন দলের দায়িত্ব নিলেও অন্তর্বর্তী সরকারে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া থাকবেন। তারা এখনই নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন না। সূত্র জানায়, নতুন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (সদস্যসচিব) পদে কে আসছেন, তা নিয়ে একধরনের প্রতিযোগিতা রয়েছে। এই পদের জন্য আলোচনায় আছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, আখতার হোসেন ও সারজিস আলম। শীর্ষ অন্য পদগুলোতে ‘পছন্দের নেতাদের’ বসাতে নাগরিক কমিটিতে থাকা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতারা বেশ সক্রিয় বলে জানা গেছে। নাগরিক কমিটিতে মধ্যপন্থি ও বামধারার নেতারা চান, প্রধান দুটি পদের বাইরে শীর্ষ পর্যায়ের অন্য পদগুলোতে নিজেদের ‘পছন্দের নেতারা’ থাকুক।

জনমত জরিপ

নতুন দলের বিষয়ে জনমত জরিপ করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই কর্মসূচির নাম ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’। এই জরিপ হচ্ছে অনলাইনে। এর পাশাপাশি জেলায়-জেলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত (প্রশ্নোত্তর) সংগ্রহ করা হচ্ছে। জরিপে মানুষ ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন বলে জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। জরিপে মানুষের কাছে পাঁচটি প্রশ্ন করা হয়েছে। এগুলো হলো- আপনার মতে কোন তিনটি কাজ করলে দেশ বদলে যাবে; নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে আপনার জীবনের কোন সমস্যার সমাধান চান; নতুন দলের কাছে আপনি কী প্রত্যাশা করেন; দলের নাম কী হতে পারে এবং দলের

মার্কা (প্রতীক) কী হতে পারে। এই জরিপে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ মানুষের সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানান নাগরিক কমিটির নেতারা। জরিপে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নতুন দলের জন্য বিভিন্ন নাম প্রস্তাব করছেন। নাম নিয়ে আলোচনা, যাচাই-বাছাই চলছে। তবে এখনও নাম চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান দুই সংগঠনের নেতারা।

*দলের নাম*

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এ (ফেব্রুয়ারি) মাসের মধ্যে যে কোনো দিন দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের কথা ভাবা হচ্ছে। দলের নামের প্রস্তাবের মধ্যে ‘গণতন্ত্র’, ‘নাগরিক’, ‘জাস্টিস’, ‘বৈষম্যবিরোধী’ এই শব্দগুলো বেশি এসেছে। বোঝা যাচ্ছে অনেকেই চান নতুন দলের নামের মধ্যে এ ধরনের শব্দ থাকুক। মানুষের মতামতের ভিত্তিতে দলের নাম চূড়ান্ত করা হবে।’

*আন্দোলনের শুরু*

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গত বছরের ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে টানা আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন একপর্যায়ে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার সেই অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এর আগে আন্দোলন পরিচালনায় গত ৮ জুলাই ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক টিম গঠন করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে গত ৩ আগস্ট তা বাড়িয়ে ১৫৮ সদস্য করা হয়। গত বছরের ২২ অক্টোবর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক টিম বিলুপ্ত করে চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তখন বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানার ফ্যাসিবাদের পতন ত্বরান্বিত করেছে। তাই দেশের মানুষ মনে করে, এই ব্যানারের কার্যক্রম এখানেই স্থগিত হওয়ার সুযোগ নেই। এরপর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি, নির্বাহী কমিটি ও বিভিন্ন সেল গঠনের পাশাপাশি জেলায় জেলায় ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অন্যদিকে অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংগঠিত করে দেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গত বছরের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। তারা এখন পর্যন্ত দেশের প্রায় ৩০০ থানায় কমিটি করেছে। নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

*বিএনপির মন্তব্য*

শিক্ষার্থীদের নতুন দল গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও দল গঠনে সরকার বা প্রশাসনের সহযোগিতা নেয়া হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে, এমন মন্তব্য অনেক আগেই করেছে বিএনপি।

এরপর, গত ১১ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে দেয়া চার পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যের এক জায়গায় বলা হয়েছে, ‘সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়ায় জড়িত রয়েছেন বলে জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করার নানা ধরনের লক্ষণ ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে। এটি দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য মোটেই সুখকর নয়। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী যথাযথ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যে কোনো দলের আত্মপ্রকাশকে আমরা স্বাগত জানাব।’

ছবি

কোভিড পরীক্ষার ফি কমাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

ছবি

স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ইভিএম বাদ, নতুন নীতিমালায় বড় পরিবর্তন

ছবি

হত্যাকারীদের বিচার না করে নির্বাচন নয়: নাহিদ

দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন মহামারীর পর্যায়ে: উপদেষ্টা

শ্রীপুরে বই আনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থী, শিক্ষক কারাগারে

ওসমানী হাসপাতালের বারান্দায় দুই নারীর সন্তান প্রসব, এক নবজাতকের মৃত্যু

বিএমইটির ৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে কেএনএফ কমান্ডারসহ নিহত ২

ছবি

সিলেটে পাথর কোয়ারী ‘দখল’: সবার স্বপ্ন এক

তাভেল্লা হত্যা: তিনজনের যাবজ্জীবন

ছবি

‘অপরাধকে লেবাস দিয়ে কালারিং করার প্রয়োজন নাই’

সরকারি কর্মচারীদের তদন্ত ছাড়া শাস্তি নয়, অধ্যাদেশ সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন

রোহিঙ্গা নাগরিক মোস্তফা ‘পাচ্ছেন জুলাই শহীদের স্বীকৃতি’

কলাবাগানে ভাঙচুর-চাঁদাবাজি: বরখাস্ত ওসি ও এসআইদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে সিআইডি

এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু

ভোটের আগে টেলিকম নীতিমালা নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ

ছবি

কুমিল্লার মুরাদনগরে এবার গণপিটুনি, দুই সন্তানসহ নিহত হলেন নারী

কোনো সেনা সদস্য ‘গুমে’ জড়িত থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা : সেনা সদর

স্থানীয় সরকার নির্বাচন: ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা প্রকাশ

রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিধান ও বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ ইস্যুতে ‘ঐকমত্য’

ছবি

বৃষ্টি ও ঝুঁকির কারণে কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে বলল পানি উন্নয়ন বোর্ড

ছবি

পটিয়ার ঘটনায় ওসির স্থায়ী অপসারণসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা

ছবি

উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগের বাছাই পরীক্ষার ফল প্রকাশ

ছবি

মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশিদের বিষয়ে জানতে চেয়েছে সরকার : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৫৮

ছবি

৯ কোটি টাকার অনুদান, পিচিং নিয়ে নির্মাতাদের অভিযোগ

ছবি

তাভেল্লা হত্যা: তিনজনের যাবজ্জীবন, বিএনপি নেতা কাইয়ুমসহ চারজন খালাস

ছবি

জুলাই স্মৃতি উদযাপনে ‘ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট’ কর্মসূচি বাতিল

ছবি

সংস্কার নিয়ে ৫৩ বছরে এমন আলোচনার সুযোগ হয়নি: আলী রীয়াজ

ছবি

জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগের ব্যাপকতা ও প্রভাবের মুখে শহর: ঝুঁকি হ্রাসে ঢাকায় আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন

ছবি

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের ‘পূর্ণ সমর্থন’ রয়েছে: রাষ্ট্রদূত

ছবি

সাবেক এমপি ও ক্রিকেট অধিনায়ক দুর্জয় গ্রেপ্তার

সাবেক সিইসি নূরুল হুদার জামিন নামঞ্জুর

‘দুর্নীতি করতে বিদেশে জনশক্তি পাঠানোর প্রক্রিয়া জটিল করা হয়’

ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১, আক্রান্ত ৪১৬ জন

ভুয়া তথ্য ঠেকাতে জাতিসংঘের উদ্যোগ চান প্রধান উপদেষ্টা

tab

জাতীয়

নাহিদের নেতৃত্বে আগামী সপ্তাহেই নতুন রাজনৈতিক দল, এরপর ছাত্র সংগঠন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আগামী সপ্তাহেই আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। দলের নাম চূড়ান্ত হতে পারে চলতি সপ্তাহে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করে দলটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন মো. নাহিদ ইসলাম। সদস্যসচিব পদে আলোচনায় আছে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের নাম। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পাশাপাশি একটি ছাত্রসংগঠনের কথাও ভাবছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। তবে সেটির নাম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামে হবে না। ছাত্রসংগঠনটি হবে ভিন্ন নামে। নাগরিক কমিটির একটি সূত্র বলছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটি যেহেতু গণ-অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম, তাই এটি এই নামেই থেকে যাবে। জাতীয় নাগরিক কমিটিও বহাল থাকবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে অনেকে নতুন দলে যোগ দেবেন, আর ছাত্রদের অনেকে যোগ দেবেন নতুন ছাত্রসংগঠনে। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম গতকাল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘চলতি মাসেই দেশে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা করা হবে। নতুন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিতে নাহিদ ইসলামকে আহ্বান জানানো হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সময় আমাদের সামনের সারিতে থেকে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মন্ত্রণালয় ছেড়ে জনতার কাতারে নেমে এসে শিগগিরই নতুন দলের দায়িত্ব নেবেন তিনি (নাহিদ)।’

নাগরিক কমিটির একটি সূত্র বলছে, নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পদ থেকে নতুন দলের দায়িত্ব নিলেও অন্তর্বর্তী সরকারে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া থাকবেন। তারা এখনই নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন না। সূত্র জানায়, নতুন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (সদস্যসচিব) পদে কে আসছেন, তা নিয়ে একধরনের প্রতিযোগিতা রয়েছে। এই পদের জন্য আলোচনায় আছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, আখতার হোসেন ও সারজিস আলম। শীর্ষ অন্য পদগুলোতে ‘পছন্দের নেতাদের’ বসাতে নাগরিক কমিটিতে থাকা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতারা বেশ সক্রিয় বলে জানা গেছে। নাগরিক কমিটিতে মধ্যপন্থি ও বামধারার নেতারা চান, প্রধান দুটি পদের বাইরে শীর্ষ পর্যায়ের অন্য পদগুলোতে নিজেদের ‘পছন্দের নেতারা’ থাকুক।

জনমত জরিপ

নতুন দলের বিষয়ে জনমত জরিপ করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই কর্মসূচির নাম ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’। এই জরিপ হচ্ছে অনলাইনে। এর পাশাপাশি জেলায়-জেলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত (প্রশ্নোত্তর) সংগ্রহ করা হচ্ছে। জরিপে মানুষ ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন বলে জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। জরিপে মানুষের কাছে পাঁচটি প্রশ্ন করা হয়েছে। এগুলো হলো- আপনার মতে কোন তিনটি কাজ করলে দেশ বদলে যাবে; নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে আপনার জীবনের কোন সমস্যার সমাধান চান; নতুন দলের কাছে আপনি কী প্রত্যাশা করেন; দলের নাম কী হতে পারে এবং দলের

মার্কা (প্রতীক) কী হতে পারে। এই জরিপে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ মানুষের সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানান নাগরিক কমিটির নেতারা। জরিপে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নতুন দলের জন্য বিভিন্ন নাম প্রস্তাব করছেন। নাম নিয়ে আলোচনা, যাচাই-বাছাই চলছে। তবে এখনও নাম চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান দুই সংগঠনের নেতারা।

*দলের নাম*

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এ (ফেব্রুয়ারি) মাসের মধ্যে যে কোনো দিন দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের কথা ভাবা হচ্ছে। দলের নামের প্রস্তাবের মধ্যে ‘গণতন্ত্র’, ‘নাগরিক’, ‘জাস্টিস’, ‘বৈষম্যবিরোধী’ এই শব্দগুলো বেশি এসেছে। বোঝা যাচ্ছে অনেকেই চান নতুন দলের নামের মধ্যে এ ধরনের শব্দ থাকুক। মানুষের মতামতের ভিত্তিতে দলের নাম চূড়ান্ত করা হবে।’

*আন্দোলনের শুরু*

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গত বছরের ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে টানা আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন একপর্যায়ে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার সেই অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এর আগে আন্দোলন পরিচালনায় গত ৮ জুলাই ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক টিম গঠন করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে গত ৩ আগস্ট তা বাড়িয়ে ১৫৮ সদস্য করা হয়। গত বছরের ২২ অক্টোবর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক টিম বিলুপ্ত করে চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তখন বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানার ফ্যাসিবাদের পতন ত্বরান্বিত করেছে। তাই দেশের মানুষ মনে করে, এই ব্যানারের কার্যক্রম এখানেই স্থগিত হওয়ার সুযোগ নেই। এরপর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি, নির্বাহী কমিটি ও বিভিন্ন সেল গঠনের পাশাপাশি জেলায় জেলায় ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অন্যদিকে অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংগঠিত করে দেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গত বছরের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। তারা এখন পর্যন্ত দেশের প্রায় ৩০০ থানায় কমিটি করেছে। নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

*বিএনপির মন্তব্য*

শিক্ষার্থীদের নতুন দল গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও দল গঠনে সরকার বা প্রশাসনের সহযোগিতা নেয়া হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে, এমন মন্তব্য অনেক আগেই করেছে বিএনপি।

এরপর, গত ১১ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে দেয়া চার পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যের এক জায়গায় বলা হয়েছে, ‘সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়ায় জড়িত রয়েছেন বলে জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করার নানা ধরনের লক্ষণ ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে। এটি দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য মোটেই সুখকর নয়। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী যথাযথ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যে কোনো দলের আত্মপ্রকাশকে আমরা স্বাগত জানাব।’

back to top