বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আগামী সপ্তাহেই আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। দলের নাম চূড়ান্ত হতে পারে চলতি সপ্তাহে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করে দলটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন মো. নাহিদ ইসলাম। সদস্যসচিব পদে আলোচনায় আছে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের নাম। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পাশাপাশি একটি ছাত্রসংগঠনের কথাও ভাবছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। তবে সেটির নাম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামে হবে না। ছাত্রসংগঠনটি হবে ভিন্ন নামে। নাগরিক কমিটির একটি সূত্র বলছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটি যেহেতু গণ-অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম, তাই এটি এই নামেই থেকে যাবে। জাতীয় নাগরিক কমিটিও বহাল থাকবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে অনেকে নতুন দলে যোগ দেবেন, আর ছাত্রদের অনেকে যোগ দেবেন নতুন ছাত্রসংগঠনে। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম গতকাল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘চলতি মাসেই দেশে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা করা হবে। নতুন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিতে নাহিদ ইসলামকে আহ্বান জানানো হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সময় আমাদের সামনের সারিতে থেকে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মন্ত্রণালয় ছেড়ে জনতার কাতারে নেমে এসে শিগগিরই নতুন দলের দায়িত্ব নেবেন তিনি (নাহিদ)।’
নাগরিক কমিটির একটি সূত্র বলছে, নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পদ থেকে নতুন দলের দায়িত্ব নিলেও অন্তর্বর্তী সরকারে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া থাকবেন। তারা এখনই নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন না। সূত্র জানায়, নতুন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (সদস্যসচিব) পদে কে আসছেন, তা নিয়ে একধরনের প্রতিযোগিতা রয়েছে। এই পদের জন্য আলোচনায় আছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, আখতার হোসেন ও সারজিস আলম। শীর্ষ অন্য পদগুলোতে ‘পছন্দের নেতাদের’ বসাতে নাগরিক কমিটিতে থাকা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতারা বেশ সক্রিয় বলে জানা গেছে। নাগরিক কমিটিতে মধ্যপন্থি ও বামধারার নেতারা চান, প্রধান দুটি পদের বাইরে শীর্ষ পর্যায়ের অন্য পদগুলোতে নিজেদের ‘পছন্দের নেতারা’ থাকুক।
জনমত জরিপ
নতুন দলের বিষয়ে জনমত জরিপ করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই কর্মসূচির নাম ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’। এই জরিপ হচ্ছে অনলাইনে। এর পাশাপাশি জেলায়-জেলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত (প্রশ্নোত্তর) সংগ্রহ করা হচ্ছে। জরিপে মানুষ ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন বলে জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। জরিপে মানুষের কাছে পাঁচটি প্রশ্ন করা হয়েছে। এগুলো হলো- আপনার মতে কোন তিনটি কাজ করলে দেশ বদলে যাবে; নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে আপনার জীবনের কোন সমস্যার সমাধান চান; নতুন দলের কাছে আপনি কী প্রত্যাশা করেন; দলের নাম কী হতে পারে এবং দলের
মার্কা (প্রতীক) কী হতে পারে। এই জরিপে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ মানুষের সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানান নাগরিক কমিটির নেতারা। জরিপে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নতুন দলের জন্য বিভিন্ন নাম প্রস্তাব করছেন। নাম নিয়ে আলোচনা, যাচাই-বাছাই চলছে। তবে এখনও নাম চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান দুই সংগঠনের নেতারা।
*দলের নাম*
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এ (ফেব্রুয়ারি) মাসের মধ্যে যে কোনো দিন দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের কথা ভাবা হচ্ছে। দলের নামের প্রস্তাবের মধ্যে ‘গণতন্ত্র’, ‘নাগরিক’, ‘জাস্টিস’, ‘বৈষম্যবিরোধী’ এই শব্দগুলো বেশি এসেছে। বোঝা যাচ্ছে অনেকেই চান নতুন দলের নামের মধ্যে এ ধরনের শব্দ থাকুক। মানুষের মতামতের ভিত্তিতে দলের নাম চূড়ান্ত করা হবে।’
*আন্দোলনের শুরু*
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গত বছরের ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে টানা আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন একপর্যায়ে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার সেই অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এর আগে আন্দোলন পরিচালনায় গত ৮ জুলাই ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক টিম গঠন করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে গত ৩ আগস্ট তা বাড়িয়ে ১৫৮ সদস্য করা হয়। গত বছরের ২২ অক্টোবর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক টিম বিলুপ্ত করে চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তখন বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানার ফ্যাসিবাদের পতন ত্বরান্বিত করেছে। তাই দেশের মানুষ মনে করে, এই ব্যানারের কার্যক্রম এখানেই স্থগিত হওয়ার সুযোগ নেই। এরপর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি, নির্বাহী কমিটি ও বিভিন্ন সেল গঠনের পাশাপাশি জেলায় জেলায় ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অন্যদিকে অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংগঠিত করে দেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গত বছরের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। তারা এখন পর্যন্ত দেশের প্রায় ৩০০ থানায় কমিটি করেছে। নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
*বিএনপির মন্তব্য*
শিক্ষার্থীদের নতুন দল গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও দল গঠনে সরকার বা প্রশাসনের সহযোগিতা নেয়া হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে, এমন মন্তব্য অনেক আগেই করেছে বিএনপি।
এরপর, গত ১১ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে দেয়া চার পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যের এক জায়গায় বলা হয়েছে, ‘সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়ায় জড়িত রয়েছেন বলে জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করার নানা ধরনের লক্ষণ ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে। এটি দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য মোটেই সুখকর নয়। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী যথাযথ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যে কোনো দলের আত্মপ্রকাশকে আমরা স্বাগত জানাব।’
রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আগামী সপ্তাহেই আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। দলের নাম চূড়ান্ত হতে পারে চলতি সপ্তাহে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করে দলটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন মো. নাহিদ ইসলাম। সদস্যসচিব পদে আলোচনায় আছে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের নাম। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পাশাপাশি একটি ছাত্রসংগঠনের কথাও ভাবছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। তবে সেটির নাম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামে হবে না। ছাত্রসংগঠনটি হবে ভিন্ন নামে। নাগরিক কমিটির একটি সূত্র বলছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটি যেহেতু গণ-অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম, তাই এটি এই নামেই থেকে যাবে। জাতীয় নাগরিক কমিটিও বহাল থাকবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে অনেকে নতুন দলে যোগ দেবেন, আর ছাত্রদের অনেকে যোগ দেবেন নতুন ছাত্রসংগঠনে। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম গতকাল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘চলতি মাসেই দেশে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা করা হবে। নতুন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিতে নাহিদ ইসলামকে আহ্বান জানানো হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সময় আমাদের সামনের সারিতে থেকে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মন্ত্রণালয় ছেড়ে জনতার কাতারে নেমে এসে শিগগিরই নতুন দলের দায়িত্ব নেবেন তিনি (নাহিদ)।’
নাগরিক কমিটির একটি সূত্র বলছে, নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পদ থেকে নতুন দলের দায়িত্ব নিলেও অন্তর্বর্তী সরকারে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া থাকবেন। তারা এখনই নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন না। সূত্র জানায়, নতুন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (সদস্যসচিব) পদে কে আসছেন, তা নিয়ে একধরনের প্রতিযোগিতা রয়েছে। এই পদের জন্য আলোচনায় আছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, আখতার হোসেন ও সারজিস আলম। শীর্ষ অন্য পদগুলোতে ‘পছন্দের নেতাদের’ বসাতে নাগরিক কমিটিতে থাকা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতারা বেশ সক্রিয় বলে জানা গেছে। নাগরিক কমিটিতে মধ্যপন্থি ও বামধারার নেতারা চান, প্রধান দুটি পদের বাইরে শীর্ষ পর্যায়ের অন্য পদগুলোতে নিজেদের ‘পছন্দের নেতারা’ থাকুক।
জনমত জরিপ
নতুন দলের বিষয়ে জনমত জরিপ করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই কর্মসূচির নাম ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’। এই জরিপ হচ্ছে অনলাইনে। এর পাশাপাশি জেলায়-জেলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত (প্রশ্নোত্তর) সংগ্রহ করা হচ্ছে। জরিপে মানুষ ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন বলে জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। জরিপে মানুষের কাছে পাঁচটি প্রশ্ন করা হয়েছে। এগুলো হলো- আপনার মতে কোন তিনটি কাজ করলে দেশ বদলে যাবে; নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে আপনার জীবনের কোন সমস্যার সমাধান চান; নতুন দলের কাছে আপনি কী প্রত্যাশা করেন; দলের নাম কী হতে পারে এবং দলের
মার্কা (প্রতীক) কী হতে পারে। এই জরিপে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ মানুষের সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানান নাগরিক কমিটির নেতারা। জরিপে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নতুন দলের জন্য বিভিন্ন নাম প্রস্তাব করছেন। নাম নিয়ে আলোচনা, যাচাই-বাছাই চলছে। তবে এখনও নাম চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান দুই সংগঠনের নেতারা।
*দলের নাম*
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এ (ফেব্রুয়ারি) মাসের মধ্যে যে কোনো দিন দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের কথা ভাবা হচ্ছে। দলের নামের প্রস্তাবের মধ্যে ‘গণতন্ত্র’, ‘নাগরিক’, ‘জাস্টিস’, ‘বৈষম্যবিরোধী’ এই শব্দগুলো বেশি এসেছে। বোঝা যাচ্ছে অনেকেই চান নতুন দলের নামের মধ্যে এ ধরনের শব্দ থাকুক। মানুষের মতামতের ভিত্তিতে দলের নাম চূড়ান্ত করা হবে।’
*আন্দোলনের শুরু*
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গত বছরের ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে টানা আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন একপর্যায়ে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার সেই অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এর আগে আন্দোলন পরিচালনায় গত ৮ জুলাই ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক টিম গঠন করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে গত ৩ আগস্ট তা বাড়িয়ে ১৫৮ সদস্য করা হয়। গত বছরের ২২ অক্টোবর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক টিম বিলুপ্ত করে চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তখন বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানার ফ্যাসিবাদের পতন ত্বরান্বিত করেছে। তাই দেশের মানুষ মনে করে, এই ব্যানারের কার্যক্রম এখানেই স্থগিত হওয়ার সুযোগ নেই। এরপর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি, নির্বাহী কমিটি ও বিভিন্ন সেল গঠনের পাশাপাশি জেলায় জেলায় ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অন্যদিকে অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংগঠিত করে দেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গত বছরের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। তারা এখন পর্যন্ত দেশের প্রায় ৩০০ থানায় কমিটি করেছে। নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
*বিএনপির মন্তব্য*
শিক্ষার্থীদের নতুন দল গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও দল গঠনে সরকার বা প্রশাসনের সহযোগিতা নেয়া হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে, এমন মন্তব্য অনেক আগেই করেছে বিএনপি।
এরপর, গত ১১ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে দেয়া চার পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যের এক জায়গায় বলা হয়েছে, ‘সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়ায় জড়িত রয়েছেন বলে জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করার নানা ধরনের লক্ষণ ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে। এটি দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য মোটেই সুখকর নয়। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী যথাযথ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যে কোনো দলের আত্মপ্রকাশকে আমরা স্বাগত জানাব।’