মঙ্গলবার তিস্তা নদীতে নেমে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানায় স্থানীয় জনতা -সংবাদ
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্যহিস্যার দাবিতে নদীপাড়ে দুই দিনের কর্মসূচির শেষ হয়েছে। কর্মসূচির শেষদিন মঙ্গলবার পদযাত্রায় মানুষের ঢল নামে। নদীতে নেমে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’র আয়োজনে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে এ কর্মসূচিতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ নদীপাড়ের মানুষ অংশ নেন।
তিস্তা বিস্তৃত রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের ১১টি পয়েন্টে এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। প্রথম দিনের মতো সমাপনী দিনেও সকাল থেকে এসব পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার পর গণপদযাত্রা শুরু হয়। কর্মসূচিটি লালমনিরহাটের তিস্তা ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গিয়ে শেষ হয়। সংবাদ প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা প্রতিনিধি জানান, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্যহিস্যা আদায়ের দাবিতে সোমবার থেকে রংপুরের পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে এই কর্মসূচি পালন করছে তিস্তাপাড়ের সর্বস্তরের মানুষ। এর আগে ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একত্বতা ঘোষণা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, ভারত শুকনো মৌসুমে পানি না দিয়ে বন্যা মৌসুমে পানি ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের ক্ষতি করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আমলে শুকনো মৌসুমে এক ফোঁটা পানিও বাংলাদেশকে দেয়া হয়নি। অসময় পানি ছেড়ে দিয়ে এদেশের কৃষকের হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি করে আসছেন।
তিস্তা নদীর পানির ন্যায্যহিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে মাঠে ছিল বিএনপিসহ বিএনপির সমোমনা দলগুলো। ‘জাগো বাহে তিস্তা বাছাই’ স্লোগানে তিস্তা নদীর কাউনিয়া সেতু, মহিপুর সেতু এবং ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজসহ ৫ জেলার ১১ পয়েন্টে নানা কর্মসূচি পালন করে তিস্তা নদীপাড়বাসী।
মঙ্গলবার রাত ৮টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আন্দোলনকারীদের সতেজ রাখার সংস্কৃতি মূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। এর মধ্যে ছিল নাটক, জারি
গান, যাত্রাপালা, গম্ভীরা গান পরিবেশন এবং মাঝে মোঝে কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য।
রংপুর গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রতিনিধি জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বীর বিক্রম বলেছেন, তিস্তা নদীর পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে ভারত। এই পানি আমাদের ন্যায্য অধিকার। এই কথাটি অতীতের ফ্যাসিস্ট সরকার বলিষ্ঠভাবে তুলে ধরতে পারেনি।
তিনি বলেন, পানির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একমাত্র সঠিক ভূমিকা নিয়েছেন আজ অবধি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ১৯৭৭ সালে গঙ্গা নদীর পানি যখন তারা একতরফাভাবে প্রত্যাহার করেছিল, তখন তিনি জাতিসংঘে গঙ্গার পানি বাংলাদেশের দাবির কথা বলিষ্ঠভাবে উত্থাপন করেছিলেন। যে কারণে ভারত বাধ্য হয়েছে সে বছর নদীর পানি বণ্টনে একটি চুক্তি করার জন্য।
মঙ্গলবার তিস্তার পানির ন্যায্যহিস্যা আদায়সহ তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির দুই দিনের কর্মসূচির শেষদিনে গঙ্গাচড়ায় মহিপুর তিস্তা সেতুর নিচে অনুষ্ঠিত সভায় এসব কথা বলেন।
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, পানি যতদিন না আসবে, ততদিন আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। মঙ্গলবার বিকেলে কু?ড়িগ্রা?মের উলিপুর উপ?জেলার থেতরাই পাকার মাথায় অব?স্থিত তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলন কমিটির অবস্থান কর্মসূচি?তে প্রধান অ?তি?থির বক্ত?ব্যে আমীর খসরু এসব কথা ব?লেন।
তিনি বলেন, ‘আজকের এই দাবি আমাদের প্রাণের দাবি। আন্তর্জাতিকভাবে ন্যায়নীতির ন্যায্য দাবি। যখন নদী বিভিন্ন দেশ দিয়ে প্রবাহিত হয়, সেখানে এগুলো পরিচালনার জন্য সবগুলো দেশের সমন্বয় হয় ও ব্যবস্থাপনা থাকে। আজকের সেই ব্যবস্থাপনা ব্যর্থ হয়েছে। দাবি হচ্ছে সব ব্যবস্থাপনা ফিরিয়ে আনার। তিস্তা নদীর পানি বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য দাবি। এই দাবি পূরণ করতে হবে।’
তিনি ব?লেন, ‘আমরা দেখেছি যখনই তিস্তার দাবি আসে তখনই পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে। অথচ ফেনী নদীতে সাতটি চুক্তি হয়েছে। সেখানে ভারতের লাভ হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে যেখানে পানি পাওয়ার কথা, সেখানে পিছিয়ে দিয়ে মরুভূ?মি করা হয়েছে। তিস্তা নদীকে ঘিরে মানুষের জীবন বাঁচার সংগ্রাম, সেখানে জীববৈচিত্র্য ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা হয়েছে।’
আমীর খসরু ব?লেন, ‘তিস্তা নদীতে পানি না থাকায় ১৫ লাখ টন চাল ও গম কম উৎপাদন হচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফল শুরু হয়ে গেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই ডাক বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছে। পানি যতদিন না আসবে ততদিন আন্দোলন অব্যাহত থাকবে, জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই।’
তিনি বলেন, ‘যে কোনো দাবি বাস্তবায়ন জনগণের সমর্থন ছাড়া সম্ভব নয়। বিএনপি জনগণের সমর্থন নিয়ে এই আন্দোলন শুরু করেছে। বিএনপি জনগণের সমর্থন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে, যা আমাদের আগামী দিনে কাজে লাগবে।’
লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, তিস্তা নদীর পানির ন্যায্যহিস্যা আদায় ও মহাপরিকল্পনা অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবিতে গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন নদী অববাহিকার হাজারো মানুষ। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় লালমনিরহাট সদরের তিস্তা সেতু থেকে শুরু হয়ে পদযাত্রাটি রংপুরের কাউনিয়া অভিমুখে রওনা হয়। পরে কাউনিয়া থেকে পদযাত্রাটি আবার তিস্তা সেতুতে এসেই শেষ হয়।
প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টা এ কর্মসূচি চলে। পদযাত্রা শেষে আন্দোলনকারীরা বেলা ১২টায় তিস্তা নদীর পানিতে নেমে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে সোমবার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেয় ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠন।
এদিন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিস্তা নদীবেষ্টিত পাঁচটি জেলার ১১টি স্থানে একসঙ্গে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি তিস্তা নদীপারের হাজারো বাসিন্দা কর্মসূচিতে অংশ নেন।
পদযাত্রা শুরুর আগে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবীব দুলু বলেন, “তিস্তা নদী আমাদের প্রাণ। এই নদী বাঁচলে উত্তরাঞ্চলের কৃষক বাঁচবে, অর্থনীতি বাঁচবে।
দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা চললেও এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি। নদী অববাহিকার বাসিন্দারা বলছেন, তিস্তা নদীর পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের কৃষি, জীববৈচিত্র্য ও সাধারণ মানুষের জীবিকা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।
মঙ্গলবার তিস্তা নদীতে নেমে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানায় স্থানীয় জনতা -সংবাদ
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্যহিস্যার দাবিতে নদীপাড়ে দুই দিনের কর্মসূচির শেষ হয়েছে। কর্মসূচির শেষদিন মঙ্গলবার পদযাত্রায় মানুষের ঢল নামে। নদীতে নেমে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’র আয়োজনে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে এ কর্মসূচিতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ নদীপাড়ের মানুষ অংশ নেন।
তিস্তা বিস্তৃত রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের ১১টি পয়েন্টে এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। প্রথম দিনের মতো সমাপনী দিনেও সকাল থেকে এসব পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার পর গণপদযাত্রা শুরু হয়। কর্মসূচিটি লালমনিরহাটের তিস্তা ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গিয়ে শেষ হয়। সংবাদ প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা প্রতিনিধি জানান, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্যহিস্যা আদায়ের দাবিতে সোমবার থেকে রংপুরের পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে এই কর্মসূচি পালন করছে তিস্তাপাড়ের সর্বস্তরের মানুষ। এর আগে ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একত্বতা ঘোষণা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, ভারত শুকনো মৌসুমে পানি না দিয়ে বন্যা মৌসুমে পানি ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের ক্ষতি করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আমলে শুকনো মৌসুমে এক ফোঁটা পানিও বাংলাদেশকে দেয়া হয়নি। অসময় পানি ছেড়ে দিয়ে এদেশের কৃষকের হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি করে আসছেন।
তিস্তা নদীর পানির ন্যায্যহিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে মাঠে ছিল বিএনপিসহ বিএনপির সমোমনা দলগুলো। ‘জাগো বাহে তিস্তা বাছাই’ স্লোগানে তিস্তা নদীর কাউনিয়া সেতু, মহিপুর সেতু এবং ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজসহ ৫ জেলার ১১ পয়েন্টে নানা কর্মসূচি পালন করে তিস্তা নদীপাড়বাসী।
মঙ্গলবার রাত ৮টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আন্দোলনকারীদের সতেজ রাখার সংস্কৃতি মূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। এর মধ্যে ছিল নাটক, জারি
গান, যাত্রাপালা, গম্ভীরা গান পরিবেশন এবং মাঝে মোঝে কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য।
রংপুর গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রতিনিধি জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বীর বিক্রম বলেছেন, তিস্তা নদীর পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে ভারত। এই পানি আমাদের ন্যায্য অধিকার। এই কথাটি অতীতের ফ্যাসিস্ট সরকার বলিষ্ঠভাবে তুলে ধরতে পারেনি।
তিনি বলেন, পানির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একমাত্র সঠিক ভূমিকা নিয়েছেন আজ অবধি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ১৯৭৭ সালে গঙ্গা নদীর পানি যখন তারা একতরফাভাবে প্রত্যাহার করেছিল, তখন তিনি জাতিসংঘে গঙ্গার পানি বাংলাদেশের দাবির কথা বলিষ্ঠভাবে উত্থাপন করেছিলেন। যে কারণে ভারত বাধ্য হয়েছে সে বছর নদীর পানি বণ্টনে একটি চুক্তি করার জন্য।
মঙ্গলবার তিস্তার পানির ন্যায্যহিস্যা আদায়সহ তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির দুই দিনের কর্মসূচির শেষদিনে গঙ্গাচড়ায় মহিপুর তিস্তা সেতুর নিচে অনুষ্ঠিত সভায় এসব কথা বলেন।
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, পানি যতদিন না আসবে, ততদিন আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। মঙ্গলবার বিকেলে কু?ড়িগ্রা?মের উলিপুর উপ?জেলার থেতরাই পাকার মাথায় অব?স্থিত তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলন কমিটির অবস্থান কর্মসূচি?তে প্রধান অ?তি?থির বক্ত?ব্যে আমীর খসরু এসব কথা ব?লেন।
তিনি বলেন, ‘আজকের এই দাবি আমাদের প্রাণের দাবি। আন্তর্জাতিকভাবে ন্যায়নীতির ন্যায্য দাবি। যখন নদী বিভিন্ন দেশ দিয়ে প্রবাহিত হয়, সেখানে এগুলো পরিচালনার জন্য সবগুলো দেশের সমন্বয় হয় ও ব্যবস্থাপনা থাকে। আজকের সেই ব্যবস্থাপনা ব্যর্থ হয়েছে। দাবি হচ্ছে সব ব্যবস্থাপনা ফিরিয়ে আনার। তিস্তা নদীর পানি বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য দাবি। এই দাবি পূরণ করতে হবে।’
তিনি ব?লেন, ‘আমরা দেখেছি যখনই তিস্তার দাবি আসে তখনই পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে। অথচ ফেনী নদীতে সাতটি চুক্তি হয়েছে। সেখানে ভারতের লাভ হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে যেখানে পানি পাওয়ার কথা, সেখানে পিছিয়ে দিয়ে মরুভূ?মি করা হয়েছে। তিস্তা নদীকে ঘিরে মানুষের জীবন বাঁচার সংগ্রাম, সেখানে জীববৈচিত্র্য ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা হয়েছে।’
আমীর খসরু ব?লেন, ‘তিস্তা নদীতে পানি না থাকায় ১৫ লাখ টন চাল ও গম কম উৎপাদন হচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফল শুরু হয়ে গেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই ডাক বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছে। পানি যতদিন না আসবে ততদিন আন্দোলন অব্যাহত থাকবে, জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই।’
তিনি বলেন, ‘যে কোনো দাবি বাস্তবায়ন জনগণের সমর্থন ছাড়া সম্ভব নয়। বিএনপি জনগণের সমর্থন নিয়ে এই আন্দোলন শুরু করেছে। বিএনপি জনগণের সমর্থন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে, যা আমাদের আগামী দিনে কাজে লাগবে।’
লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, তিস্তা নদীর পানির ন্যায্যহিস্যা আদায় ও মহাপরিকল্পনা অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবিতে গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন নদী অববাহিকার হাজারো মানুষ। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় লালমনিরহাট সদরের তিস্তা সেতু থেকে শুরু হয়ে পদযাত্রাটি রংপুরের কাউনিয়া অভিমুখে রওনা হয়। পরে কাউনিয়া থেকে পদযাত্রাটি আবার তিস্তা সেতুতে এসেই শেষ হয়।
প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টা এ কর্মসূচি চলে। পদযাত্রা শেষে আন্দোলনকারীরা বেলা ১২টায় তিস্তা নদীর পানিতে নেমে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে সোমবার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেয় ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠন।
এদিন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিস্তা নদীবেষ্টিত পাঁচটি জেলার ১১টি স্থানে একসঙ্গে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি তিস্তা নদীপারের হাজারো বাসিন্দা কর্মসূচিতে অংশ নেন।
পদযাত্রা শুরুর আগে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবীব দুলু বলেন, “তিস্তা নদী আমাদের প্রাণ। এই নদী বাঁচলে উত্তরাঞ্চলের কৃষক বাঁচবে, অর্থনীতি বাঁচবে।
দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা চললেও এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি। নদী অববাহিকার বাসিন্দারা বলছেন, তিস্তা নদীর পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের কৃষি, জীববৈচিত্র্য ও সাধারণ মানুষের জীবিকা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।