একাদশ সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করা তৎকালীন ৩৩ ডিসিকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে; যারা বর্তমানে যুগ্ম সচিব হিসেবে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন। বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পৃথক প্রজ্ঞাপনে তাদের ওএসডি করার আদেশ দিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মানসুর হোসেন বলেন, ৩৩ কর্মকর্তাকে বদলি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত এসব কর্মকর্তা ২০১৮ সালে উপ-সচিব ছিলেন। তারা ওই বছর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় ডিসি হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৪ সালের দশম ও ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-জামায়াত ও সমমনারা বর্জন করে। তবে ২০১৮ সালে তারা ভোটে এলেও আগের রাতেই সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ী হওয়ার অভিযোগ ওঠে। সরকারের পালাবদলের প্রেক্ষাপটে গত ৯ ডিসেম্বর দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তিনটি নির্বাচনে নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে ৩০ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ডেকেছিল নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
তখন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছিলেন, “উনারা (কর্মকর্তারা) ওনাদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেছেন। উনারা বলেছেন উনাদের তেমন কিছু করার ছিল না। ‘কলকাঠি’ অন্য জায়গা থেকে নাড়ানো হয়েছে।”
“এক অর্থে বলতে গেলে উনারা অসহায় ছিলেন। তবে যারা নিচের কর্মকর্তা, তারা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন। তারা মূল কথা বলেছেন আমাদের দেশ একটি ‘পুলিশি রাষ্ট্র’ হয়ে গিয়েছিল।”
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো.
সাজ্জাদ হোসেন, মিনিস্টার স্থানীয় (যুগ্ম সচিব) কাজী এমদাদুল ইসলাম এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত যুগ্ম সচিব এস এম মোস্তফা কামালকে ওএসডি করা হয়েছে।
এছাড়া ওএসডি হয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অঞ্জন চন্দ্র পাল, পরিকল্পনা বিভাগের যুগ্ম-প্রধান (সংযুক্ত) মোছা. সুলতানা পারভীন, একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের নির্বাহী সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. শহিদুল ইসলাম, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আলী আকবর।
এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. দাউদুল ইসলাম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মাজেদুর রহমান খান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব গোপাল চন্দ্র দাশকে ওএসডি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. মাহমুদুল আলম, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) হায়াত-উদ-দৌলা খাঁনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশালের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মঈন উল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্ম সচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এস, এম, আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্ম সচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম ওএসডি হয়েছেন।
একই সঙ্গে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কাজী আবু তাহের, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. মিজানুর রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্ম সচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মাহমুদুল কবীর মুরাদকে ওএসডি করা হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ওইদিন প্রধানমন্ত্রীর পর থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী এবং নানা অন্যায়-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওএসডি কিংবা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় অন্তর্বর্তী সরকার।
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
একাদশ সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করা তৎকালীন ৩৩ ডিসিকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে; যারা বর্তমানে যুগ্ম সচিব হিসেবে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন। বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পৃথক প্রজ্ঞাপনে তাদের ওএসডি করার আদেশ দিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মানসুর হোসেন বলেন, ৩৩ কর্মকর্তাকে বদলি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত এসব কর্মকর্তা ২০১৮ সালে উপ-সচিব ছিলেন। তারা ওই বছর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় ডিসি হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৪ সালের দশম ও ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-জামায়াত ও সমমনারা বর্জন করে। তবে ২০১৮ সালে তারা ভোটে এলেও আগের রাতেই সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ী হওয়ার অভিযোগ ওঠে। সরকারের পালাবদলের প্রেক্ষাপটে গত ৯ ডিসেম্বর দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তিনটি নির্বাচনে নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে ৩০ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ডেকেছিল নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
তখন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছিলেন, “উনারা (কর্মকর্তারা) ওনাদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেছেন। উনারা বলেছেন উনাদের তেমন কিছু করার ছিল না। ‘কলকাঠি’ অন্য জায়গা থেকে নাড়ানো হয়েছে।”
“এক অর্থে বলতে গেলে উনারা অসহায় ছিলেন। তবে যারা নিচের কর্মকর্তা, তারা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন। তারা মূল কথা বলেছেন আমাদের দেশ একটি ‘পুলিশি রাষ্ট্র’ হয়ে গিয়েছিল।”
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো.
সাজ্জাদ হোসেন, মিনিস্টার স্থানীয় (যুগ্ম সচিব) কাজী এমদাদুল ইসলাম এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত যুগ্ম সচিব এস এম মোস্তফা কামালকে ওএসডি করা হয়েছে।
এছাড়া ওএসডি হয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অঞ্জন চন্দ্র পাল, পরিকল্পনা বিভাগের যুগ্ম-প্রধান (সংযুক্ত) মোছা. সুলতানা পারভীন, একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের নির্বাহী সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. শহিদুল ইসলাম, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আলী আকবর।
এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. দাউদুল ইসলাম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মাজেদুর রহমান খান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব গোপাল চন্দ্র দাশকে ওএসডি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. মাহমুদুল আলম, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) হায়াত-উদ-দৌলা খাঁনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশালের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মঈন উল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্ম সচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এস, এম, আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্ম সচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম ওএসডি হয়েছেন।
একই সঙ্গে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কাজী আবু তাহের, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. মিজানুর রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্ম সচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মাহমুদুল কবীর মুরাদকে ওএসডি করা হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ওইদিন প্রধানমন্ত্রীর পর থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী এবং নানা অন্যায়-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওএসডি কিংবা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় অন্তর্বর্তী সরকার।