এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের আহত শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান রিয়াদ
কুয়েটে সংঘর্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে ‘মন্তব্য করায়’ সিলেটের এমসি কলেজের এক শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে শাখা ‘ছাত্রশিবিরের’ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে এমসি কলেজ ছাত্রশিবির।বুধবার রাত ১২টার দিকে নগরীর বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান রিয়াদকে লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয় বলে তিনি নিজেই জানিয়েছেন।
মারধরের শিকার মিজানুরের অভিযোগ, এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জওহর লোকমান মুসান্নার উপস্থিতিতে তাকে মারধর করা হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মিজানুর রহমান রিয়াদ। তিনি ‘বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার’ এমসি কলেজ শাখার তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক। ঘটনার বর্ণনায় মিজানুর বলছেন, ‘আমি বুধবার রাতের খাবার খেয়ে রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। রাত ১২টার দিকে দরজায় শব্দ শুনে আমার রুমমেট রবিউল দরজা খুলে দেয়। এ সময় ছাত্রশিবিরের ৮ থেকে ১০ জন রুমে ঢোকে। আর বাকিরা বাইরে ছিল।’
‘কুয়েটের ঘটনায় আমার ফেইসবুক কমেন্টের বিষয়ে জানতে চায় তারা। আমি উত্তর দেয়ার আগেই আমাকে মারধর শুরু করে। রুমের দরজা লাগিয়ে লোহার রড দিয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত আঘাত করছে। মারধরের সময় আমাকে লাথি মেরে রুমের পেছনের দরজা দিয়ে বাইরে ফেলে দেয়। তারপর আবার টেনে তুলে মারধর করে।’
ইংরেজি বিভাগের এ শিক্ষার্থীর ভাষ্য, ‘মারধরের শেষ পর্যায়ে এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জওহর লোকমান মুসান্না আমার রুমে আসেন। উনার সামনেও আমাকে মেরেছে। তারপর সেক্রেটারি তাদের বের করে দেন। আর আমাকেও রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। আমি আমার রুমমেটকে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর আমাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসা শেষে আমি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করব।’
তালামীযে ইসলামিয়া এমসি কলেজের সভাপতি মো. আলবাব হোসেন বলছেন, ‘কুয়েটে সংঘর্ষ নিয়ে ফেইসবুকে কমেন্ট করার জেরে বুধবার রাতে এমসি কলেজ শিবিরের নেতৃবৃন্দসহ ১০ থেকে ১৫ জন মিজানুরের রুমে যায়। মিজানুর কেন কমেন্ট করেছে; সে বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়।’
‘পরে এটি নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আটকে রেখে রুমে রড, জিআই পাইপ ও লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মিজানুরকে মারধর করা শুরু হয়। এরও এক পর্যায়ে এমসি কলেজ শিবিরের সেক্রেটারি এসে তাকে বলেছে রুম থেকে চলে যেতে।’
তিনি বলেন, ‘রাত ১টার দিকে আমরা মিজানুরকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার পায়ে সেলাই লেগেছে। পায়ের হাড় ফেটে গেছে বলে ডাক্তার জানিয়েছেন। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’
অভিযোগের বিষয়ে এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জওহর লোকমান মুসান্না বলেন, ‘মারামারির সময় আমি আমার রুমে ছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘটনাটি জানি। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা।’ এমসি কলেজ
ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইসমাইল খান বলছেন, ‘আমি একটু আগে আহত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে দেখে এসেছি। এই ঘটনায় ছাত্রশিবিরের কেউ জড়িত না। এটি তৃতীয় পক্ষের কাজ; যারা আমাদের জনপ্রিয়তা দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে অপপ্রচার করছে। এ ঘটনায় এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভুল বুঝাবুঝি নিয়ে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এতে কোনো সংগঠনের কেউ জড়িত না। যাদের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে তারা সাধারণ শিক্ষার্থী। আমরা হাসপাতালে গিয়ে আহত শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা ভালো।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্তে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দেবেন।’
এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের আহত শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান রিয়াদ
বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
কুয়েটে সংঘর্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে ‘মন্তব্য করায়’ সিলেটের এমসি কলেজের এক শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে শাখা ‘ছাত্রশিবিরের’ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে এমসি কলেজ ছাত্রশিবির।বুধবার রাত ১২টার দিকে নগরীর বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান রিয়াদকে লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয় বলে তিনি নিজেই জানিয়েছেন।
মারধরের শিকার মিজানুরের অভিযোগ, এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জওহর লোকমান মুসান্নার উপস্থিতিতে তাকে মারধর করা হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মিজানুর রহমান রিয়াদ। তিনি ‘বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার’ এমসি কলেজ শাখার তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক। ঘটনার বর্ণনায় মিজানুর বলছেন, ‘আমি বুধবার রাতের খাবার খেয়ে রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। রাত ১২টার দিকে দরজায় শব্দ শুনে আমার রুমমেট রবিউল দরজা খুলে দেয়। এ সময় ছাত্রশিবিরের ৮ থেকে ১০ জন রুমে ঢোকে। আর বাকিরা বাইরে ছিল।’
‘কুয়েটের ঘটনায় আমার ফেইসবুক কমেন্টের বিষয়ে জানতে চায় তারা। আমি উত্তর দেয়ার আগেই আমাকে মারধর শুরু করে। রুমের দরজা লাগিয়ে লোহার রড দিয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত আঘাত করছে। মারধরের সময় আমাকে লাথি মেরে রুমের পেছনের দরজা দিয়ে বাইরে ফেলে দেয়। তারপর আবার টেনে তুলে মারধর করে।’
ইংরেজি বিভাগের এ শিক্ষার্থীর ভাষ্য, ‘মারধরের শেষ পর্যায়ে এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জওহর লোকমান মুসান্না আমার রুমে আসেন। উনার সামনেও আমাকে মেরেছে। তারপর সেক্রেটারি তাদের বের করে দেন। আর আমাকেও রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। আমি আমার রুমমেটকে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর আমাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসা শেষে আমি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করব।’
তালামীযে ইসলামিয়া এমসি কলেজের সভাপতি মো. আলবাব হোসেন বলছেন, ‘কুয়েটে সংঘর্ষ নিয়ে ফেইসবুকে কমেন্ট করার জেরে বুধবার রাতে এমসি কলেজ শিবিরের নেতৃবৃন্দসহ ১০ থেকে ১৫ জন মিজানুরের রুমে যায়। মিজানুর কেন কমেন্ট করেছে; সে বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়।’
‘পরে এটি নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আটকে রেখে রুমে রড, জিআই পাইপ ও লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মিজানুরকে মারধর করা শুরু হয়। এরও এক পর্যায়ে এমসি কলেজ শিবিরের সেক্রেটারি এসে তাকে বলেছে রুম থেকে চলে যেতে।’
তিনি বলেন, ‘রাত ১টার দিকে আমরা মিজানুরকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার পায়ে সেলাই লেগেছে। পায়ের হাড় ফেটে গেছে বলে ডাক্তার জানিয়েছেন। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’
অভিযোগের বিষয়ে এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জওহর লোকমান মুসান্না বলেন, ‘মারামারির সময় আমি আমার রুমে ছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘটনাটি জানি। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা।’ এমসি কলেজ
ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইসমাইল খান বলছেন, ‘আমি একটু আগে আহত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে দেখে এসেছি। এই ঘটনায় ছাত্রশিবিরের কেউ জড়িত না। এটি তৃতীয় পক্ষের কাজ; যারা আমাদের জনপ্রিয়তা দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে অপপ্রচার করছে। এ ঘটনায় এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভুল বুঝাবুঝি নিয়ে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এতে কোনো সংগঠনের কেউ জড়িত না। যাদের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে তারা সাধারণ শিক্ষার্থী। আমরা হাসপাতালে গিয়ে আহত শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা ভালো।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্তে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দেবেন।’