এক সপ্তাহের মধ্যে যোগ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পদোন্নতি না দেওয়া হলে আগামী মাস থেকে সারাদেশে কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ’বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরামের’ নেতারা।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিরেক্টর কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ ঘোষণা দেয়।
সংগঠনের সদস্য সচিব মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, “এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে ৫ মার্চ থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হবে। এরপরও দাবি না মানলে ১১ মার্চ থেকে টানা কলম বিরতিতে যাবো।”
তিনি আরও জানান, কর্মসূচি চলাকালে তারা কোনো রোগী দেখবেন না, শুধু জরুরি সেবা চালু থাকবে।
পদোন্নতির জট কেন?
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি না দেওয়াকে ‘প্রশাসনিক জটিলতা’ উল্লেখ করে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুস্তাব মোসুমী বলেন,“দশ বছর আগে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন করেও আমি এখনো উপজেলা হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে আছি। অথচ একই ক্যাডারের অন্য অনেককে সরাসরি সহকারী অধ্যাপক করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “কোনো সাবজেক্টে সরাসরি সহকারী অধ্যাপক নেওয়া হয়, আবার কোনো ক্ষেত্রে জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে আটকে রাখা হয়। এর ফলে ক্যাডারের ভেতরেই বৈষম্য তৈরি হচ্ছে। এমনকি ডেন্টাল বিভাগের মতো কিছু বিষয়ে ৬ষ্ঠ গ্রেডের পর্যাপ্ত পদই নেই।”
সংগঠনের আরেক নেতা চিকিৎসক বশির আহম্মেদ খান বলেন, “বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের জন্য পদোন্নতি মানেই শুধু স্বীকৃতি, এর সঙ্গে কোনো বাড়তি অর্থ বরাদ্দ বা বেতন বৃদ্ধির বিষয় নেই। অথচ বছরের পর বছর আমরা প্রাপ্য স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।”
স্বাস্থ্যখাতে সংকট বাড়ছে
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, প্রতি বছর নতুন মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়লেও শিক্ষক বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে না। এর ফলে চিকিৎসা শিক্ষায় গুণগত মানও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
চিকিৎসক বশির বলেন, “দেশের প্রায় সাত হাজার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এক পদে ১০-১৫ বছর ধরে আটকে আছেন। সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক পদে যারা আছেন, তারাও পরবর্তী পদে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেও বছরের পর বছর অপেক্ষা করছেন।”
ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির দাবি
সংগঠনের নেতারা দাবি করেন, প্রচলিত পদসৃষ্টির নিয়ম মেনে চললে সংকট নিরসন সম্ভব নয়। তাই তারা বিদ্যমান জট কমাতে ভূতাপেক্ষ (ব্যাকডেটেড) সুপারনিউমারারি পদোন্নতির দাবি জানিয়েছেন।
চিকিৎসক মির্জা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যাতে যথাযথ স্বীকৃতি পান, সেজন্য দ্রুত পদোন্নতি দিতে হবে। আমরা আশাবাদী, সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।”
চিকিৎসকদের কলম বিরতির কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে স্বাস্থ্যসেবায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, “আমরা বারবার দাবি জানিয়েও শুধু আশ্বাস পেয়েছি, এবার আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।”
সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আগামী মাস থেকে দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ফলে স্বাস্থ্যসেবায় বড় ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
এক সপ্তাহের মধ্যে যোগ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পদোন্নতি না দেওয়া হলে আগামী মাস থেকে সারাদেশে কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ’বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরামের’ নেতারা।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিরেক্টর কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ ঘোষণা দেয়।
সংগঠনের সদস্য সচিব মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, “এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে ৫ মার্চ থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হবে। এরপরও দাবি না মানলে ১১ মার্চ থেকে টানা কলম বিরতিতে যাবো।”
তিনি আরও জানান, কর্মসূচি চলাকালে তারা কোনো রোগী দেখবেন না, শুধু জরুরি সেবা চালু থাকবে।
পদোন্নতির জট কেন?
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি না দেওয়াকে ‘প্রশাসনিক জটিলতা’ উল্লেখ করে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুস্তাব মোসুমী বলেন,“দশ বছর আগে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন করেও আমি এখনো উপজেলা হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে আছি। অথচ একই ক্যাডারের অন্য অনেককে সরাসরি সহকারী অধ্যাপক করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “কোনো সাবজেক্টে সরাসরি সহকারী অধ্যাপক নেওয়া হয়, আবার কোনো ক্ষেত্রে জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে আটকে রাখা হয়। এর ফলে ক্যাডারের ভেতরেই বৈষম্য তৈরি হচ্ছে। এমনকি ডেন্টাল বিভাগের মতো কিছু বিষয়ে ৬ষ্ঠ গ্রেডের পর্যাপ্ত পদই নেই।”
সংগঠনের আরেক নেতা চিকিৎসক বশির আহম্মেদ খান বলেন, “বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের জন্য পদোন্নতি মানেই শুধু স্বীকৃতি, এর সঙ্গে কোনো বাড়তি অর্থ বরাদ্দ বা বেতন বৃদ্ধির বিষয় নেই। অথচ বছরের পর বছর আমরা প্রাপ্য স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।”
স্বাস্থ্যখাতে সংকট বাড়ছে
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, প্রতি বছর নতুন মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়লেও শিক্ষক বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে না। এর ফলে চিকিৎসা শিক্ষায় গুণগত মানও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
চিকিৎসক বশির বলেন, “দেশের প্রায় সাত হাজার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এক পদে ১০-১৫ বছর ধরে আটকে আছেন। সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক পদে যারা আছেন, তারাও পরবর্তী পদে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেও বছরের পর বছর অপেক্ষা করছেন।”
ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির দাবি
সংগঠনের নেতারা দাবি করেন, প্রচলিত পদসৃষ্টির নিয়ম মেনে চললে সংকট নিরসন সম্ভব নয়। তাই তারা বিদ্যমান জট কমাতে ভূতাপেক্ষ (ব্যাকডেটেড) সুপারনিউমারারি পদোন্নতির দাবি জানিয়েছেন।
চিকিৎসক মির্জা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যাতে যথাযথ স্বীকৃতি পান, সেজন্য দ্রুত পদোন্নতি দিতে হবে। আমরা আশাবাদী, সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।”
চিকিৎসকদের কলম বিরতির কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে স্বাস্থ্যসেবায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, “আমরা বারবার দাবি জানিয়েও শুধু আশ্বাস পেয়েছি, এবার আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।”
সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আগামী মাস থেকে দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ফলে স্বাস্থ্যসেবায় বড় ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।