ঢাকার পরিকল্পনা কমিশনে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম সড়ক টানেলটি মূলত সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ব্যক্তিগত স্বার্থে নির্মিত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) পরিকল্পনা কমিশনে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারায়। সেখানে তেমন কিছু নেই। নিজের এলাকায় যাওয়ার জন্য তিনি কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প নেন।”
তিনি আরও বলেন, “আরও ১০ বছর পরে এই টানেল হলে ভালো হত। তখন হয়তো কর্ণফুলীর ওপারে অনেক কিছু তৈরি হতো।”
‘লোকসানি প্রকল্পে’ পরিণত টানেল
প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ টানেল ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু প্রত্যাশিত যান চলাচল না থাকায় এটি এখন ‘লোকসানি প্রকল্পে’ পরিণত হয়েছে।
প্রকল্পের তথ্যানুযায়ী, প্রথম বছরে প্রতিদিন গড়ে ১৮,৪৮৫টি গাড়ি টানেল ব্যবহার করবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে প্রতিদিন গড়ে মাত্র ৩,৯১০টি গাড়ি চলাচল করছে। ফলে টোল আদায়ে রক্ষণাবেক্ষণ খরচের এক-তৃতীয়াংশও ওঠছে না।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “টানেল এলাকায় ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাত তারকা হোটেল করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অপচয়। আমরা চাই, সরকারের অর্থ যেন সঠিকভাবে ব্যবহার হয়, অপচয় যেন না হয়।”
মেগা প্রকল্প নিয়ে ‘চুরির বন্দোবস্ত’
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নেওয়া মেগা প্রকল্পগুলো পুনর্বিবেচনার কথা বলছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রেস সচিব বলেন, “প্রতিটি প্রকল্পের খরচ ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল, যাতে চুরির ব্যবস্থা করা যায়।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “গতকাল দেখলাম, আওয়ামী লীগের এক নেত্রী জান্নাত আরা হেনরীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। তিনি কোনো বড় শিল্পপতি নন। তাহলে বুঝুন, কী পরিমাণ চুরি হয়েছে।”
জ্বালানি খাতে ‘ডাকাতির বন্দোবস্ত’
জ্বালানি খাতেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“এটি ছিল একদম রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ডাকাতি। আমরা এখন ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে’ নীতিতে যেতে চাই। বিনিয়োগ এমন হতে হবে, যা বৈশ্বিক পরিবর্তনের সঙ্গে মানানসই।”
তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে মনোযোগ দেওয়ার এখনই সময়।
কর ব্যবস্থা ও অর্থনীতির চিত্র
রাজস্ব আদায়ের নিম্নহার নিয়ে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে কর-জিডিপি হার কত ছিল, আর এখন কত? ক্ষমতা ছাড়ার পর এটি নেমে এসেছে ৭.৩ শতাংশে। পৃথিবীর কয়টি দেশে এত কম?”
তিনি আরও বলেন, “যে দেশে কর আদায় কম, সে দেশে বিনিয়োগ কীভাবে হবে? উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া সম্ভব কীভাবে?”
অন্তর্বর্তী সরকার এখন অর্থের অপচয় রোধ করতে এবং অর্থনীতি পুনর্গঠনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে তিনি জানান।
ঢাকার পরিকল্পনা কমিশনে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম সড়ক টানেলটি মূলত সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ব্যক্তিগত স্বার্থে নির্মিত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) পরিকল্পনা কমিশনে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারায়। সেখানে তেমন কিছু নেই। নিজের এলাকায় যাওয়ার জন্য তিনি কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প নেন।”
তিনি আরও বলেন, “আরও ১০ বছর পরে এই টানেল হলে ভালো হত। তখন হয়তো কর্ণফুলীর ওপারে অনেক কিছু তৈরি হতো।”
‘লোকসানি প্রকল্পে’ পরিণত টানেল
প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ টানেল ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু প্রত্যাশিত যান চলাচল না থাকায় এটি এখন ‘লোকসানি প্রকল্পে’ পরিণত হয়েছে।
প্রকল্পের তথ্যানুযায়ী, প্রথম বছরে প্রতিদিন গড়ে ১৮,৪৮৫টি গাড়ি টানেল ব্যবহার করবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে প্রতিদিন গড়ে মাত্র ৩,৯১০টি গাড়ি চলাচল করছে। ফলে টোল আদায়ে রক্ষণাবেক্ষণ খরচের এক-তৃতীয়াংশও ওঠছে না।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “টানেল এলাকায় ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাত তারকা হোটেল করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অপচয়। আমরা চাই, সরকারের অর্থ যেন সঠিকভাবে ব্যবহার হয়, অপচয় যেন না হয়।”
মেগা প্রকল্প নিয়ে ‘চুরির বন্দোবস্ত’
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নেওয়া মেগা প্রকল্পগুলো পুনর্বিবেচনার কথা বলছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রেস সচিব বলেন, “প্রতিটি প্রকল্পের খরচ ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল, যাতে চুরির ব্যবস্থা করা যায়।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “গতকাল দেখলাম, আওয়ামী লীগের এক নেত্রী জান্নাত আরা হেনরীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। তিনি কোনো বড় শিল্পপতি নন। তাহলে বুঝুন, কী পরিমাণ চুরি হয়েছে।”
জ্বালানি খাতে ‘ডাকাতির বন্দোবস্ত’
জ্বালানি খাতেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“এটি ছিল একদম রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ডাকাতি। আমরা এখন ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে’ নীতিতে যেতে চাই। বিনিয়োগ এমন হতে হবে, যা বৈশ্বিক পরিবর্তনের সঙ্গে মানানসই।”
তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে মনোযোগ দেওয়ার এখনই সময়।
কর ব্যবস্থা ও অর্থনীতির চিত্র
রাজস্ব আদায়ের নিম্নহার নিয়ে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে কর-জিডিপি হার কত ছিল, আর এখন কত? ক্ষমতা ছাড়ার পর এটি নেমে এসেছে ৭.৩ শতাংশে। পৃথিবীর কয়টি দেশে এত কম?”
তিনি আরও বলেন, “যে দেশে কর আদায় কম, সে দেশে বিনিয়োগ কীভাবে হবে? উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া সম্ভব কীভাবে?”
অন্তর্বর্তী সরকার এখন অর্থের অপচয় রোধ করতে এবং অর্থনীতি পুনর্গঠনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে তিনি জানান।