শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে মূলধারা থেকে বের করার লক্ষ্যে ‘সুকৌশলে’ নিয়োগে ভিন্নতা রাখার অভিযোগ
ফেইসবুকে লেখালেখির কারণে বিসিএস ২৫ ক্যাডারের ১৩ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রতিবাদ এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আজ (২ মার্চ) ২৫ ক্যাডার কর্মকর্তারা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবেন। পাশাপাশি তারা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নিজ নিজ দপ্তরের সামনে কালো ব্যাজ পরে ব্যানারসহ অবস্থান করবেন।
শনিবার রাজধানীর খামারবাড়িতে অবস্থিত কৃষি তথ্য সার্ভিসের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিষদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ আরিফ হোসেন। এ সময় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি ফেইসবুকে লেখালেখির মতো ‘তুচ্ছ’ কারণে ২৫ ক্যাডারের ১৩ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে সভায় বলা হয়, একই ধরনের কাজ প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বৈষম্যপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন ক্যাডার ২৫ ক্যাডারের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
সভায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক মুহম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে ২৫টি ক্যাডারের পক্ষ থেকেই পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং উপসচিব পদে কোটা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছিল। সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকেও সিভিল সার্ভিসে পেশাদারিত্বকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে।
‘অথচ জন দাবিকে উপেক্ষা’ করে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ‘ক্ষমতাধর একটি গোষ্ঠীর নিরঙ্কুশ ক্ষমতা’ আরও বৃদ্ধির প্রয়াস লক্ষ্য করা গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই রিপোর্ট পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে এবং প্রশাসনিক ফ্যাসিজম আরও শক্তিশালী হবে।’
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডারবহির্ভূত করার প্রস্তাব থেকে সরে এসে ‘সুকৌশলে’ নিয়োগের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা রাখা হয়েছে দাবি করে মফিজুর রহমান বলেন, যেন ধীরে ধীরে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে মূলধারা থেকে বের করা যায়। এছাড়াও পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের বিষয় সংস্কার
প্রস্তাব না রাখা এবং পরিসংখ্যান ক্যাডারকে ‘অযৌক্তিকভাবে সার্ভিসের বহির্ভূত’ করার সুপারিশ করা হয়েছে। এর ফলে এসব সেক্টরে মেধাবীরা কম আকৃষ্ট হবে এবং এসব সেক্টর মেধাশূন্য হয়ে পড়বে বলে তিনি মনে করেন।
সভায় আরও বলা হয়, কোনো ব্যক্তির মেধা যাচাইয়ের অন্যতম মাপকাঠি হচ্ছে গাণিতিক দক্ষতা। অথচ গণিতকে বাদ দিয়ে অন্যান্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে মুখস্ত করার প্রবণতাকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে; যা যথাযথভাবে মেধা মূল্যায়নের অন্তরায়। এছাড়া বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও জেলা পরিষদকে বিলুপ্ত করে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি, বাস্তবতাবিবর্জিত প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থার প্রস্তাব জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের অন্তরায়।
এছাড়াও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের পক্ষ থেকে ‘কৃত্য পেশাভিত্তিক’ মন্ত্রণালয় (ক্যাডার যার মন্ত্রণালয় তার) বাস্তবায়ন, উপসচিব পদে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, সব ক্যাডারের সমতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারসহ সব ক্যাডারকে একই কমিশনের আওতায় রাখা, পরিবার পরিকল্পনা ও পরিসংখ্যান ক্যাডারকে সার্ভিসে অব্যাহত রাখা, সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিসে প্রবেশের পর শুধু প্রশাসন ক্যাডারের জন্য আগের সার্ভিসে ফেরার সুবিধার প্রস্তাব বাতিল, জেলা কমিশনারকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব দেয়ার প্রস্তাব বাতিল, ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ এর পরিবর্তে ‘ভূমি সার্ভিস’ বা ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা সার্ভিস’ নামকরণ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে ‘মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়’ অথবা ‘সরকারি কর্মচারী ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়’ হিসেবে নামকরণসহ বিভিন্ন প্রস্তাব করা হয়।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে মূলধারা থেকে বের করার লক্ষ্যে ‘সুকৌশলে’ নিয়োগে ভিন্নতা রাখার অভিযোগ
শনিবার, ০১ মার্চ ২০২৫
ফেইসবুকে লেখালেখির কারণে বিসিএস ২৫ ক্যাডারের ১৩ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রতিবাদ এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আজ (২ মার্চ) ২৫ ক্যাডার কর্মকর্তারা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবেন। পাশাপাশি তারা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নিজ নিজ দপ্তরের সামনে কালো ব্যাজ পরে ব্যানারসহ অবস্থান করবেন।
শনিবার রাজধানীর খামারবাড়িতে অবস্থিত কৃষি তথ্য সার্ভিসের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিষদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ আরিফ হোসেন। এ সময় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি ফেইসবুকে লেখালেখির মতো ‘তুচ্ছ’ কারণে ২৫ ক্যাডারের ১৩ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে সভায় বলা হয়, একই ধরনের কাজ প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বৈষম্যপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন ক্যাডার ২৫ ক্যাডারের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
সভায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক মুহম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে ২৫টি ক্যাডারের পক্ষ থেকেই পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং উপসচিব পদে কোটা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছিল। সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকেও সিভিল সার্ভিসে পেশাদারিত্বকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে।
‘অথচ জন দাবিকে উপেক্ষা’ করে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ‘ক্ষমতাধর একটি গোষ্ঠীর নিরঙ্কুশ ক্ষমতা’ আরও বৃদ্ধির প্রয়াস লক্ষ্য করা গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই রিপোর্ট পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে এবং প্রশাসনিক ফ্যাসিজম আরও শক্তিশালী হবে।’
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডারবহির্ভূত করার প্রস্তাব থেকে সরে এসে ‘সুকৌশলে’ নিয়োগের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা রাখা হয়েছে দাবি করে মফিজুর রহমান বলেন, যেন ধীরে ধীরে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে মূলধারা থেকে বের করা যায়। এছাড়াও পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের বিষয় সংস্কার
প্রস্তাব না রাখা এবং পরিসংখ্যান ক্যাডারকে ‘অযৌক্তিকভাবে সার্ভিসের বহির্ভূত’ করার সুপারিশ করা হয়েছে। এর ফলে এসব সেক্টরে মেধাবীরা কম আকৃষ্ট হবে এবং এসব সেক্টর মেধাশূন্য হয়ে পড়বে বলে তিনি মনে করেন।
সভায় আরও বলা হয়, কোনো ব্যক্তির মেধা যাচাইয়ের অন্যতম মাপকাঠি হচ্ছে গাণিতিক দক্ষতা। অথচ গণিতকে বাদ দিয়ে অন্যান্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে মুখস্ত করার প্রবণতাকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে; যা যথাযথভাবে মেধা মূল্যায়নের অন্তরায়। এছাড়া বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও জেলা পরিষদকে বিলুপ্ত করে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি, বাস্তবতাবিবর্জিত প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থার প্রস্তাব জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের অন্তরায়।
এছাড়াও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের পক্ষ থেকে ‘কৃত্য পেশাভিত্তিক’ মন্ত্রণালয় (ক্যাডার যার মন্ত্রণালয় তার) বাস্তবায়ন, উপসচিব পদে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, সব ক্যাডারের সমতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারসহ সব ক্যাডারকে একই কমিশনের আওতায় রাখা, পরিবার পরিকল্পনা ও পরিসংখ্যান ক্যাডারকে সার্ভিসে অব্যাহত রাখা, সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিসে প্রবেশের পর শুধু প্রশাসন ক্যাডারের জন্য আগের সার্ভিসে ফেরার সুবিধার প্রস্তাব বাতিল, জেলা কমিশনারকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব দেয়ার প্রস্তাব বাতিল, ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ এর পরিবর্তে ‘ভূমি সার্ভিস’ বা ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা সার্ভিস’ নামকরণ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে ‘মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়’ অথবা ‘সরকারি কর্মচারী ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়’ হিসেবে নামকরণসহ বিভিন্ন প্রস্তাব করা হয়।