সোমবার লালমাটিয়ায় কলেজ শিক্ষার্থীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কুশপুতুল পুড়িয়ে তার বক্তব্যের ক্ষোভ জানান -সংবাদ
রাজধানীর লালমাটিয়ায় প্রকাশ্যে ধূমপান করা নিয়ে দুই তরুণীকে লাঞ্ছনার ঘটনার পর ও দেশজুড়ে চলা মব নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার নারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
সোমবার আসাদগেট এলাকায় আড়ংয়ের পেছনে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ ব্যানারে একদল বিক্ষোভকারী লালমাটিয়ায় ওই ঘটনার স্থানে প্রতিবাদ জানান। পর জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন তারা।
সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আদ্রিতা রায় বলেন, ‘আমাদের দুই বোন মবের হাতে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। শুধু এই ঘটনাই নয়, ৫ আগস্টের পর্ব থেকে দেশজুড়ে ছিনতাই, ডাকাতি, খুন, মবের ঘটনা ঘটেই চলেছে। এখনও তা থামছে না।
আদ্রিতা রায় আরও বলেন, ‘আমরা যারা গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলাম আমাদের কিছু আশা-আকাক্সক্ষা ছিল। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর আমাদের বিন্দুমাত্র নিরাপত্তা রাষ্ট্র, উপদেষ্টারা নিশ্চিত করতে পারেনি।’
প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লামিয়া ইসলাম বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার নারীরা যা করেছেন তা অপরাধ হলে সর্বোচ্চ সিভিল অফেন্স হয়। কিন্তু তাদের শারীরিক নির্যাতন করার ঘটনা একটি ক্রিমিনাল অফেন্স (ফৌজদারি অপরাধ)। একজন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কীভাবে একটা ক্রিমিনাল অফেন্সকে জাস্টিফাই করেন?’
‘একটা ক্রিমিনাল অফেন্সকে তারা কীভাবে জাস্টিফাই করে একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে, সেটা আসলে আমাদের মাথায় আসে না। এ ধরনের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং এ ধরনের গভর্নমেন্ট বডির কাছে আমরা নারীরা নিরাপদ বোধ করছি না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে তার
(স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার) পদত্যাগ চাচ্ছি। যদি এটার ব্যতিক্রম ঘটে, আমরা অবশ্যই সেই সচিবালয়ের ইট খুলে নিয়ে আসব। আমরা ঘরে বসে থাকার জন্য জন্মাইনি। আমরা রাষ্ট্র পরিবর্তন করেছি, আমরা আওয়ামী লীগের মতো সরকারের পতন ঘটিয়েছি। আমরা এ সরকারেরও পতন করিয়ে ছাড়ব। আমাদের জন্য নিরাপদ রাষ্ট্র বানিয়ে ছাড়ব।’
সমাবেশের পর বিক্ষোভ করেন ক্ষুব্ধ নারী শিক্ষার্থী-জনতা। এ সময় নানা স্লোগান দেন। তাদের হাতে ‘স্লাটশেমিং বন্ধ করতে হবে’, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি, নিপীড়কের রাজনীতি’, ‘আমার দেশ, আমার রাস্তা, আমার অধিকার’, ‘নারীর বেলায় আইন দেখায়, পুরুষের বেলায় আইন কোথায়?’ ইত্যাদি লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
পরে তারা মিছিলসহকারে লালমাটিয়া এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে জড়ো হন জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়। সেখানে তারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
শনিবার লালমাটিয়ায় দুই তরুণীর প্রকাশ্যে ধূমপান নিয়ে বয়স্ক একজনের ‘আপত্তি’ থেকে ‘বাকবিতণ্ডা’ ও মানুষ জড়ো হওয়া নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে যায়। সেখানে ‘মব’ তৈরি করে দুই নারীর ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এক নারীকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশের মতে, লালমাটিয়ায় আড়ংয়ের পাশের একটি চায়ের দোকানে দুই তরুণী চা-সিগারেট খাচ্ছিলেন। তখন পাশ দিয়ে যাওয়া একজন বয়স্ক ব্যক্তি তাদের সিগারেট খাওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়ে তাদের চলে যেতে বলেন। এ নিয়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে তরুণীদের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই ব্যক্তির গায়ে চা ছুড়ে মারেন একজন।
সেখানে লোকজন জড়ো হয়ে দুই তরুণীর ওপর চড়াও হলে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুই তরুণীকে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়।
এর পরদিন মিরপুরে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘দুই নারীর ওপর হামলার বিষয়ে আমি যতটুকু জানছি ওনারা নাকি সিগারেট খাইতেছিল। ওই সময় কিছু লোক নাকি নামাজ পড়তে যাইতেছিল। এ সময় ওনারা (লোকেরা) বাধা দেয়ায় তাদের ওপর চা ছুড়ে মারছে।’
সোমবার লালমাটিয়ায় কলেজ শিক্ষার্থীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কুশপুতুল পুড়িয়ে তার বক্তব্যের ক্ষোভ জানান -সংবাদ
সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫
রাজধানীর লালমাটিয়ায় প্রকাশ্যে ধূমপান করা নিয়ে দুই তরুণীকে লাঞ্ছনার ঘটনার পর ও দেশজুড়ে চলা মব নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার নারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
সোমবার আসাদগেট এলাকায় আড়ংয়ের পেছনে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ ব্যানারে একদল বিক্ষোভকারী লালমাটিয়ায় ওই ঘটনার স্থানে প্রতিবাদ জানান। পর জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন তারা।
সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আদ্রিতা রায় বলেন, ‘আমাদের দুই বোন মবের হাতে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। শুধু এই ঘটনাই নয়, ৫ আগস্টের পর্ব থেকে দেশজুড়ে ছিনতাই, ডাকাতি, খুন, মবের ঘটনা ঘটেই চলেছে। এখনও তা থামছে না।
আদ্রিতা রায় আরও বলেন, ‘আমরা যারা গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলাম আমাদের কিছু আশা-আকাক্সক্ষা ছিল। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর আমাদের বিন্দুমাত্র নিরাপত্তা রাষ্ট্র, উপদেষ্টারা নিশ্চিত করতে পারেনি।’
প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লামিয়া ইসলাম বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার নারীরা যা করেছেন তা অপরাধ হলে সর্বোচ্চ সিভিল অফেন্স হয়। কিন্তু তাদের শারীরিক নির্যাতন করার ঘটনা একটি ক্রিমিনাল অফেন্স (ফৌজদারি অপরাধ)। একজন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কীভাবে একটা ক্রিমিনাল অফেন্সকে জাস্টিফাই করেন?’
‘একটা ক্রিমিনাল অফেন্সকে তারা কীভাবে জাস্টিফাই করে একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে, সেটা আসলে আমাদের মাথায় আসে না। এ ধরনের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং এ ধরনের গভর্নমেন্ট বডির কাছে আমরা নারীরা নিরাপদ বোধ করছি না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে তার
(স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার) পদত্যাগ চাচ্ছি। যদি এটার ব্যতিক্রম ঘটে, আমরা অবশ্যই সেই সচিবালয়ের ইট খুলে নিয়ে আসব। আমরা ঘরে বসে থাকার জন্য জন্মাইনি। আমরা রাষ্ট্র পরিবর্তন করেছি, আমরা আওয়ামী লীগের মতো সরকারের পতন ঘটিয়েছি। আমরা এ সরকারেরও পতন করিয়ে ছাড়ব। আমাদের জন্য নিরাপদ রাষ্ট্র বানিয়ে ছাড়ব।’
সমাবেশের পর বিক্ষোভ করেন ক্ষুব্ধ নারী শিক্ষার্থী-জনতা। এ সময় নানা স্লোগান দেন। তাদের হাতে ‘স্লাটশেমিং বন্ধ করতে হবে’, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি, নিপীড়কের রাজনীতি’, ‘আমার দেশ, আমার রাস্তা, আমার অধিকার’, ‘নারীর বেলায় আইন দেখায়, পুরুষের বেলায় আইন কোথায়?’ ইত্যাদি লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
পরে তারা মিছিলসহকারে লালমাটিয়া এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে জড়ো হন জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়। সেখানে তারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
শনিবার লালমাটিয়ায় দুই তরুণীর প্রকাশ্যে ধূমপান নিয়ে বয়স্ক একজনের ‘আপত্তি’ থেকে ‘বাকবিতণ্ডা’ ও মানুষ জড়ো হওয়া নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে যায়। সেখানে ‘মব’ তৈরি করে দুই নারীর ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এক নারীকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশের মতে, লালমাটিয়ায় আড়ংয়ের পাশের একটি চায়ের দোকানে দুই তরুণী চা-সিগারেট খাচ্ছিলেন। তখন পাশ দিয়ে যাওয়া একজন বয়স্ক ব্যক্তি তাদের সিগারেট খাওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়ে তাদের চলে যেতে বলেন। এ নিয়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে তরুণীদের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই ব্যক্তির গায়ে চা ছুড়ে মারেন একজন।
সেখানে লোকজন জড়ো হয়ে দুই তরুণীর ওপর চড়াও হলে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুই তরুণীকে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়।
এর পরদিন মিরপুরে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘দুই নারীর ওপর হামলার বিষয়ে আমি যতটুকু জানছি ওনারা নাকি সিগারেট খাইতেছিল। ওই সময় কিছু লোক নাকি নামাজ পড়তে যাইতেছিল। এ সময় ওনারা (লোকেরা) বাধা দেয়ায় তাদের ওপর চা ছুড়ে মারছে।’