বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, ভারতীয় ভিসা বিষয়ক সিদ্ধান্তের এখতিয়ার শুধুমাত্র ভারত সরকারের। তিনি বলেন, ভারতীয় সরকার যেকোনো কারণে ভিসা ইস্যু না করতে চাইলে, সেটি তাদের সার্বভৌম অধিকার। তবে বাংলাদেশ আশা করছে, ভারত তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে এবং লোকজনের জন্য ভিসার সুযোগ বাড়াবে।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সেসময় ভারতীয় ভিসা জটিলতা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তৌহিদ হোসেন বলেন, “এমন খবর ভারতীয় পক্ষ থেকেই আসবে। কারণ, ভিসা জটিলতা বাংলাদেশ থেকে সৃষ্টি হয়নি।”
ভারতীয় সরকারের ভিসা নীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “যে কোন দেশ কাউকে ভিসা না দিলে, বা কোনো গোষ্ঠীকে ভিসা না দিলে, সে বিষয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা যায় না। এটি একটি দেশের সিদ্ধান্ত। আমাদের আশা, ভারত তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে এবং কার্যক্রম বাড়াবে, যাতে বাংলাদেশি নাগরিকরা সহজে ভিসা পেতে পারে।”
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অনেক নাগরিক ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। বিশেষত, ক্যান্সার, হৃদরোগ, কিডনি রোগ এবং প্রজনন স্বাস্থ্য সহ নানা চিকিৎসার জন্য ভারত সরকারের হাসপাতালে আসেন বাংলাদেশের নাগরিকরা। তবে, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি, তারপরও অনুমান করা হয় যে, প্রতি বছর বহু বাংলাদেশি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান।
ভারত সরকারের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশিদের জন্য প্রায় ১৬ লাখ ভিসা ইস্যু করা হয়েছিল, যার মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ ছিল মেডিকেল ভিসা। অনেক বাংলাদেশি ভ্রমণ ভিসায় ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আসেন, ফলে চিকিৎসা গ্রহণকারী বাংলাদেশিদের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
এছাড়া, ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশিদের জন্য ১৫ ক্যাটাগরিতে মোট ৮ লাখ ভিসা ইস্যু করা হয়েছে, যার মধ্যে ২ লাখ ছিল মেডিকেল ভিসা। তবে, গত কয়েক মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে, ভারত সরকার মেডিকেল ও জরুরি ভিসা ছাড়া অন্য ভিসা প্রদান বন্ধ রেখেছে এবং মেডিকেল ভিসাও সীমিত আকারে দিচ্ছে।
এছাড়া, বর্তমানে ভারতে ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক চাপের কারণে মেডিকেল ভিসার আবেদনকারীদেরও ভিসা আবেদন জমা দিতে প্রয়োজনীয় অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া কঠিন হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে ইতিবাচক বার্তা দেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক সবসময় ভালো থাকবে। আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, এবং অর্থনৈতিকভাবে এত ঘনিষ্ঠ যে আমরা একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। সেই সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হতে পারে না।”
মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, “মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, তবে এসব অপপ্রচারের ফলস্বরূপ। অপপ্রচারের উত্স কে, সেটা বিচার করা উচিত অন্যদের। তবে এই অপপ্রচারগুলির কারণে কিছু ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে, যা আমরা এখন উত্তরণের চেষ্টা করছি।”
তৌহিদ হোসেন এই বিষয়ে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য আমাদের অবস্থান প্রতিফলিত করে। আমরা সবসময় বলেছি, আমরা ভালো কর্মসম্পর্ক চাই, পারস্পরিক আদানপ্রদান ও মর্যাদার ভিত্তিতে সম্পর্ক রাখতে চাই। আমাদের এই অবস্থান কখনোই পরিবর্তিত হবে না।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাংলাদেশে ইউএসএআইডির মাধ্যমে ২৯ মিলিয়ন ডলার খরচের বিষয়ে করা মন্তব্য সম্পর্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, এটি কোনো প্রভাব ফেলবে না বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ওপর।
তৌহিদ হোসেন বলেন, “যে মন্তব্যটি করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কোনো কারণ আমি দেখি না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুধুমাত্র একটি মন্তব্য করেছেন, তিনি কাউকে অভিযুক্ত করেননি এবং কোনো বিস্তারিতও দেননি। আমরা এই বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখেছি, বাংলাদেশে ইউএসএআইডির টাকা যথাযথভাবে এসেছে এবং কোনো অনিয়ম হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা খোঁজ নিয়েছি যে, ইউএসএআইডির অর্থ কোথায় গিয়েছে এবং তা কোন প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে। আমরা যা জানতে পেরেছি, এসব টাকা মার্কিন একটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছিল, যা বাংলাদেশের বিভিন্ন এনজিওর সাথে কাজ করে, যারা গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে।”
তৌহিদ হোসেন বলেন, “এই টাকাগুলো যথাযথভাবে এসেছে, আর যদি দুই ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানকে টাকা দেওয়া হয়েছিল, তা সহজেই জানানো যেত।”
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানানোর প্রশ্নে বলেন, “এটি উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য নয়, এটা একটি মন্তব্য করা হয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, এর কোনো ভিত্তি নেই। তাই এটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করার প্রয়োজন নেই।”
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ভারতের ভিসা ইস্যু এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, ভারতীয় সরকারের সিদ্ধান্তের ওপরই সব কিছু নির্ভরশীল। একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না। তিনি আরও নিশ্চিত করেছেন যে, ইউএসএআইডির মাধ্যমে বাংলাদেশে আগত ২৯ মিলিয়ন ডলার যথাযথভাবে ব্যবহার হচ্ছে এবং কোনো অনিয়মের শঙ্কা নেই।
মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, ভারতীয় ভিসা বিষয়ক সিদ্ধান্তের এখতিয়ার শুধুমাত্র ভারত সরকারের। তিনি বলেন, ভারতীয় সরকার যেকোনো কারণে ভিসা ইস্যু না করতে চাইলে, সেটি তাদের সার্বভৌম অধিকার। তবে বাংলাদেশ আশা করছে, ভারত তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে এবং লোকজনের জন্য ভিসার সুযোগ বাড়াবে।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সেসময় ভারতীয় ভিসা জটিলতা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তৌহিদ হোসেন বলেন, “এমন খবর ভারতীয় পক্ষ থেকেই আসবে। কারণ, ভিসা জটিলতা বাংলাদেশ থেকে সৃষ্টি হয়নি।”
ভারতীয় সরকারের ভিসা নীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “যে কোন দেশ কাউকে ভিসা না দিলে, বা কোনো গোষ্ঠীকে ভিসা না দিলে, সে বিষয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা যায় না। এটি একটি দেশের সিদ্ধান্ত। আমাদের আশা, ভারত তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে এবং কার্যক্রম বাড়াবে, যাতে বাংলাদেশি নাগরিকরা সহজে ভিসা পেতে পারে।”
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অনেক নাগরিক ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। বিশেষত, ক্যান্সার, হৃদরোগ, কিডনি রোগ এবং প্রজনন স্বাস্থ্য সহ নানা চিকিৎসার জন্য ভারত সরকারের হাসপাতালে আসেন বাংলাদেশের নাগরিকরা। তবে, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি, তারপরও অনুমান করা হয় যে, প্রতি বছর বহু বাংলাদেশি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান।
ভারত সরকারের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশিদের জন্য প্রায় ১৬ লাখ ভিসা ইস্যু করা হয়েছিল, যার মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ ছিল মেডিকেল ভিসা। অনেক বাংলাদেশি ভ্রমণ ভিসায় ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আসেন, ফলে চিকিৎসা গ্রহণকারী বাংলাদেশিদের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
এছাড়া, ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশিদের জন্য ১৫ ক্যাটাগরিতে মোট ৮ লাখ ভিসা ইস্যু করা হয়েছে, যার মধ্যে ২ লাখ ছিল মেডিকেল ভিসা। তবে, গত কয়েক মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে, ভারত সরকার মেডিকেল ও জরুরি ভিসা ছাড়া অন্য ভিসা প্রদান বন্ধ রেখেছে এবং মেডিকেল ভিসাও সীমিত আকারে দিচ্ছে।
এছাড়া, বর্তমানে ভারতে ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক চাপের কারণে মেডিকেল ভিসার আবেদনকারীদেরও ভিসা আবেদন জমা দিতে প্রয়োজনীয় অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া কঠিন হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে ইতিবাচক বার্তা দেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক সবসময় ভালো থাকবে। আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, এবং অর্থনৈতিকভাবে এত ঘনিষ্ঠ যে আমরা একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। সেই সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হতে পারে না।”
মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, “মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, তবে এসব অপপ্রচারের ফলস্বরূপ। অপপ্রচারের উত্স কে, সেটা বিচার করা উচিত অন্যদের। তবে এই অপপ্রচারগুলির কারণে কিছু ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে, যা আমরা এখন উত্তরণের চেষ্টা করছি।”
তৌহিদ হোসেন এই বিষয়ে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য আমাদের অবস্থান প্রতিফলিত করে। আমরা সবসময় বলেছি, আমরা ভালো কর্মসম্পর্ক চাই, পারস্পরিক আদানপ্রদান ও মর্যাদার ভিত্তিতে সম্পর্ক রাখতে চাই। আমাদের এই অবস্থান কখনোই পরিবর্তিত হবে না।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাংলাদেশে ইউএসএআইডির মাধ্যমে ২৯ মিলিয়ন ডলার খরচের বিষয়ে করা মন্তব্য সম্পর্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, এটি কোনো প্রভাব ফেলবে না বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ওপর।
তৌহিদ হোসেন বলেন, “যে মন্তব্যটি করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কোনো কারণ আমি দেখি না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুধুমাত্র একটি মন্তব্য করেছেন, তিনি কাউকে অভিযুক্ত করেননি এবং কোনো বিস্তারিতও দেননি। আমরা এই বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখেছি, বাংলাদেশে ইউএসএআইডির টাকা যথাযথভাবে এসেছে এবং কোনো অনিয়ম হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা খোঁজ নিয়েছি যে, ইউএসএআইডির অর্থ কোথায় গিয়েছে এবং তা কোন প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে। আমরা যা জানতে পেরেছি, এসব টাকা মার্কিন একটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছিল, যা বাংলাদেশের বিভিন্ন এনজিওর সাথে কাজ করে, যারা গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে।”
তৌহিদ হোসেন বলেন, “এই টাকাগুলো যথাযথভাবে এসেছে, আর যদি দুই ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানকে টাকা দেওয়া হয়েছিল, তা সহজেই জানানো যেত।”
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানানোর প্রশ্নে বলেন, “এটি উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য নয়, এটা একটি মন্তব্য করা হয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, এর কোনো ভিত্তি নেই। তাই এটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করার প্রয়োজন নেই।”
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ভারতের ভিসা ইস্যু এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, ভারতীয় সরকারের সিদ্ধান্তের ওপরই সব কিছু নির্ভরশীল। একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না। তিনি আরও নিশ্চিত করেছেন যে, ইউএসএআইডির মাধ্যমে বাংলাদেশে আগত ২৯ মিলিয়ন ডলার যথাযথভাবে ব্যবহার হচ্ছে এবং কোনো অনিয়মের শঙ্কা নেই।