দেশে ছয় মাস ধরে তথ্য কমিশন নেই। এমন উদাহরণ বাংলাদেশেই প্রথম। বিশ্বে আর কোথাও এমন নজির পাওয়া যাবে না। তথ্য কমিশন কার্যকরে অন্তর্বর্তী সরকার উদাসীন। তারা এটি কার্যকরে ‘আগ্রহ’ দেখাচ্ছে না, বলে উল্লেখ করেছে তথ্য অধিকার ফোরাম।
বিদ্যমান আইনে এখনও কেন তথ্য কমিশন গঠন হয়নি এর জবাব সরকারকে দিতে বলছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেছেন, ‘৬ মাসের বেশি সময় তথ্য কমিশন নেই; এটা অত্যন্ত বিব্রতকর একটা
বিষয়। বাংলাদেশকে নামিত করার দায়টা কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপরেই বর্তায়। কারণ কমিশন নেই, এটা সরকারের অজানা নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবং কমিশন গঠনের দায়িত্ব সরকারের, সেটাও সরকারের অজানা নয়। বিদ্যমান আইনে কেন তথ্য কমিশন গঠন হল না, এর জবাব সরকারকে দিতে হবে। আমরা মনে করি, অনতিবলম্বে সে দায়িত্বটা সরকারের পালন করা উচিত।’
বৃহস্পতিবার ঢাকার ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে তথ্য অধিকার ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন ইফতেখারুজ্জামান। ২০০৯ সালের মার্চে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করা হয়। ওই বছরের জুলাইয়ে সাবেক সচিব এম আজিজুর রহমানকে প্রধান তথ্য কমিশনার করে তিন সদস্যের তথ্য কমিশন গঠন করে সরকার।
আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পালাবদলের পর গত ১০ সেপ্টেম্বর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময় নিয়োগ পাওয়া প্রধান তথ্য কমিশনার আবদুল মালেককে অব্যাহতি দেয়া হয়। একই সঙ্গে অব্যাহিত দেয়া হয় তথ্য কমিশনার শহীদুল আলমকেও।
টিআইবি প্রধান বলছেন, তথ্য কমিশনার হিসেবে এমন ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে; যারা পেশাগত জীবনে তথ্য প্রকাশের পরিপন্থি অবস্থানে ছিলেন না।
তিনি আরও বলেন, ‘নিবন্ধনপ্রাপ্ত, লাইসেন্সপ্রাপ্ত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান তথ্য অধিকার আইনের অধীন রাখার প্রস্তাব করছি। অর্থাৎ রাজনৈতিক দলও এ আইনের আওতাভুক্ত হোক; সেটা আমরা চাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ফোরামের সদস্য ও এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান তথ্য অধিকার আইনের সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘তথ্য কমিশনকে সাংবিধানিক সংস্থা করার প্রস্তাব করছি আমরা। এটা নিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি যে, তারাও যেন তাদের প্রস্তাবে এটা রাখে।’
তথ্য অধিকার আইন সংস্কারের সুপারিশ- সরকারে অংশীদারত্ব রয়েছে এমন সব প্রতিষ্ঠানকে তথ্য অধিকার আইনে যুক্ত করা। আইনে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আওতা বাড়ানো। সরকারের কিছু মন্ত্রণালয় বিভাগ বা কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত বা অধীনস্থ কোনো অধিদপ্তর, পরিদপ্তর বা দপ্তরের আওতাধীন ইউনিয়ন কার্যালয় থাকায় সেগুলোকে তথ্য প্রদান ইউনিট করতে হবে। নোট শিটকে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় আনা। তথ্য দেয়ার অনুরোধ রাখার অনধিক ২০ দিনের মধ্যে তথ্য দিতে হবে। এর সঙ্গে একাধিক তথ্য প্রদান ইউনিট বা কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা থাকলে অনধিক ৩০ দিনের মধ্যে দিতে হবে। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোনো কারণে অপারগ হলে এর কারণ ১০ দিনের মধ্যে অনুরোধকারীকে অবহিত করতে হবে। কমিশনের নাম তথ্য কমিশন বাংলাদেশ করতে হবে। তথ্য কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা হবে। তথ্য কমিশনার হতে হলে তাকে বাংলাদেশের একক নাগরিক হতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি পদে অন্যূন ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। প্রধান তথ্য কমিশনার বা তথ্য কমিশনারদের পদ শূন্য হলে সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে নিয়োগ দিতে হবে।
তথ্য অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক শাহীন আলম বলেন, ‘আমরা এ সরকারকে বলছি; অবিলম্বে তথ্য কমিশন পুর্নগঠন করতে হবে এবং এই তথ্য কমিশন যেন সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন কমিশন হয়।’
বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫
দেশে ছয় মাস ধরে তথ্য কমিশন নেই। এমন উদাহরণ বাংলাদেশেই প্রথম। বিশ্বে আর কোথাও এমন নজির পাওয়া যাবে না। তথ্য কমিশন কার্যকরে অন্তর্বর্তী সরকার উদাসীন। তারা এটি কার্যকরে ‘আগ্রহ’ দেখাচ্ছে না, বলে উল্লেখ করেছে তথ্য অধিকার ফোরাম।
বিদ্যমান আইনে এখনও কেন তথ্য কমিশন গঠন হয়নি এর জবাব সরকারকে দিতে বলছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেছেন, ‘৬ মাসের বেশি সময় তথ্য কমিশন নেই; এটা অত্যন্ত বিব্রতকর একটা
বিষয়। বাংলাদেশকে নামিত করার দায়টা কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপরেই বর্তায়। কারণ কমিশন নেই, এটা সরকারের অজানা নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবং কমিশন গঠনের দায়িত্ব সরকারের, সেটাও সরকারের অজানা নয়। বিদ্যমান আইনে কেন তথ্য কমিশন গঠন হল না, এর জবাব সরকারকে দিতে হবে। আমরা মনে করি, অনতিবলম্বে সে দায়িত্বটা সরকারের পালন করা উচিত।’
বৃহস্পতিবার ঢাকার ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে তথ্য অধিকার ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন ইফতেখারুজ্জামান। ২০০৯ সালের মার্চে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করা হয়। ওই বছরের জুলাইয়ে সাবেক সচিব এম আজিজুর রহমানকে প্রধান তথ্য কমিশনার করে তিন সদস্যের তথ্য কমিশন গঠন করে সরকার।
আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পালাবদলের পর গত ১০ সেপ্টেম্বর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময় নিয়োগ পাওয়া প্রধান তথ্য কমিশনার আবদুল মালেককে অব্যাহতি দেয়া হয়। একই সঙ্গে অব্যাহিত দেয়া হয় তথ্য কমিশনার শহীদুল আলমকেও।
টিআইবি প্রধান বলছেন, তথ্য কমিশনার হিসেবে এমন ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে; যারা পেশাগত জীবনে তথ্য প্রকাশের পরিপন্থি অবস্থানে ছিলেন না।
তিনি আরও বলেন, ‘নিবন্ধনপ্রাপ্ত, লাইসেন্সপ্রাপ্ত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান তথ্য অধিকার আইনের অধীন রাখার প্রস্তাব করছি। অর্থাৎ রাজনৈতিক দলও এ আইনের আওতাভুক্ত হোক; সেটা আমরা চাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ফোরামের সদস্য ও এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান তথ্য অধিকার আইনের সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘তথ্য কমিশনকে সাংবিধানিক সংস্থা করার প্রস্তাব করছি আমরা। এটা নিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি যে, তারাও যেন তাদের প্রস্তাবে এটা রাখে।’
তথ্য অধিকার আইন সংস্কারের সুপারিশ- সরকারে অংশীদারত্ব রয়েছে এমন সব প্রতিষ্ঠানকে তথ্য অধিকার আইনে যুক্ত করা। আইনে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আওতা বাড়ানো। সরকারের কিছু মন্ত্রণালয় বিভাগ বা কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত বা অধীনস্থ কোনো অধিদপ্তর, পরিদপ্তর বা দপ্তরের আওতাধীন ইউনিয়ন কার্যালয় থাকায় সেগুলোকে তথ্য প্রদান ইউনিট করতে হবে। নোট শিটকে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় আনা। তথ্য দেয়ার অনুরোধ রাখার অনধিক ২০ দিনের মধ্যে তথ্য দিতে হবে। এর সঙ্গে একাধিক তথ্য প্রদান ইউনিট বা কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা থাকলে অনধিক ৩০ দিনের মধ্যে দিতে হবে। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোনো কারণে অপারগ হলে এর কারণ ১০ দিনের মধ্যে অনুরোধকারীকে অবহিত করতে হবে। কমিশনের নাম তথ্য কমিশন বাংলাদেশ করতে হবে। তথ্য কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা হবে। তথ্য কমিশনার হতে হলে তাকে বাংলাদেশের একক নাগরিক হতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি পদে অন্যূন ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। প্রধান তথ্য কমিশনার বা তথ্য কমিশনারদের পদ শূন্য হলে সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে নিয়োগ দিতে হবে।
তথ্য অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক শাহীন আলম বলেন, ‘আমরা এ সরকারকে বলছি; অবিলম্বে তথ্য কমিশন পুর্নগঠন করতে হবে এবং এই তথ্য কমিশন যেন সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন কমিশন হয়।’