ঢাকার বিভিন্ন শপিংমল ও আবাসিক এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের ‘অক্সিলারি ফোর্স’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, যারা পুলিশের মতোই গ্রেপ্তার ক্ষমতা পাবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার জানান, ঈদের সময় শপিংমলগুলো রাত পর্যন্ত খোলা থাকবে এবং পুলিশের স্বল্পতা রয়েছে। তাই মেট্রোপলিটন পুলিশ আইন অনুযায়ী তিনি অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স নিয়োগের ক্ষমতা প্রয়োগ করছেন। এই ফোর্সে শপিংমল ও আবাসিক এলাকার বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “তাদের হাতে একটি ব্যান্ড থাকবে, যেখানে লেখা থাকবে ‘সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা’। আইন অনুযায়ী তারা পুলিশের মতোই দায়িত্ব পালন করবেন এবং যে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবেন। একইসঙ্গে তারা পুলিশের মতো আইনগত সুরক্ষা উপভোগ করবেন।”
এক প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “যখন তিনি আমার দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন, তখন তিনি সিম্পলি পুলিশ অফিসার। পুলিশ অফিসার যে দায়িত্ব পালন করেন, তিনিও সেই একই দায়িত্ব পালন করবেন।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “যেমন ধরুন, বসুন্ধরা শপিংমলে হয়তো ৫০ জন নিরাপত্তাকর্মী আছেন। তাদের একজন নেতাকে আমরা অফিসিয়ালি অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়ে দেব।”
ডিএমপি কমিশনার ঈদ উপলক্ষে ঢাকা থেকে গ্রামে যাওয়া নাগরিকদের তাদের বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যেতে অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেন, “১৫ রোজার পর ঢাকাবাসীর অনেকে গ্রামে চলে যাবেন। আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নিলেও আপনারা দয়া করে বাড়ি ছাড়ার আগে নিজ উদ্যোগে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে যাবেন।”
তারাবির সময় বাড়ি ও দোকানের নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেন তিনি।
ঢাকার অপরাধ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “ঢাকায় বড় অপরাধের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। অন্য দেশের বড় শহরগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে এখানে অপরাধ কমই দেখা যাবে।”
তবে স্ট্রিট ক্রাইম কিছুটা বেড়েছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, “ইদানীং মোবাইল ফোন ছিনতাই বেশি হচ্ছে। কিশোর গ্যাং বা উঠতি বয়সের ছেলেরা বাস, প্রাইভেটকার বা মোটরবাইকের যাত্রীদের মোবাইল ফোন টেনে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এটি ৮০-৯০ শতাংশ স্ট্রিট ক্রাইমের মূল চিত্র।”
তিনি বলেন, “ঢাকায় প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আসা-যাওয়া করে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও নাগরিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ডিএমপি আপনাদের পাশে আছে এবং আমরা প্রতিটি অপরাধের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।”
ঘোষণা দিয়ে হিযবুত তাহরীরের মিছিল করা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ডিএমপি কমিশনার জানান, ডিবি (গোয়েন্দা পুলিশ) মূলত অপরাধীদের নিয়ে কাজ করে এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ তাদের প্রধান কাজ নয়।
তিনি বলেন, “যদিও আমরা আগে থেকে তাদের আটকাতে পারতাম, কিন্তু মসজিদের গেটে অনেক মুসল্লি থাকায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, কারণ এতে মুসল্লিদের ক্ষতি হতে পারত এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারত। তাই পরিকল্পিতভাবে তাদের বিচ্ছিন্ন করে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
তিনি জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অভিযান চলছে।
শুক্রবার ‘প্রবর্তনা’ এলাকায় বোমা হামলার বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “আমরা কাজ করছি এবং তদন্ত চলছে। ধৈর্য ধরুন, সব বেরিয়ে আসবে।”
মব জাস্টিসের বিষয়ে তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় আমরা মামলা নিয়েছি এবং আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করছি। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর অধিকার নেই আইন নিজের হাতে নেওয়ার। যদি কারো কাছে কোনো তথ্য থাকে, তাহলে পুলিশের কাছে দিন, আমরাই ব্যবস্থা নেব।”
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে টাকা ও স্বর্ণ লুটের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তারের তথ্যও দেন ডিএমপি কমিশনার।
তিনি বলেন, “ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ায় মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছিল। তাই ডিবিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছিল।”
তিনি জানান, “এ ঘটনায় মোট সাতজন জড়িত ছিল, যার মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ব্যবহৃত অস্ত্র, বিক্রিত স্বর্ণের টাকা ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। লিডার কাউসারসহ খলিল, ফরহাদ, সুমন, দুলাল চৌধুরী ও আমিনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “এই তদন্ত করতে গিয়ে আমরা আরও কিছু ডাকাত দলের খোঁজ পেয়েছি এবং শিগগিরই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।”
তিনি মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কোনো সংবাদ অতিরিক্ত প্রচার না করার অনুরোধ জানান, যা জনমনে অযথা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে।
শনিবার, ০৮ মার্চ ২০২৫
ঢাকার বিভিন্ন শপিংমল ও আবাসিক এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের ‘অক্সিলারি ফোর্স’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, যারা পুলিশের মতোই গ্রেপ্তার ক্ষমতা পাবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার জানান, ঈদের সময় শপিংমলগুলো রাত পর্যন্ত খোলা থাকবে এবং পুলিশের স্বল্পতা রয়েছে। তাই মেট্রোপলিটন পুলিশ আইন অনুযায়ী তিনি অক্সিলারি পুলিশ ফোর্স নিয়োগের ক্ষমতা প্রয়োগ করছেন। এই ফোর্সে শপিংমল ও আবাসিক এলাকার বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “তাদের হাতে একটি ব্যান্ড থাকবে, যেখানে লেখা থাকবে ‘সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা’। আইন অনুযায়ী তারা পুলিশের মতোই দায়িত্ব পালন করবেন এবং যে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবেন। একইসঙ্গে তারা পুলিশের মতো আইনগত সুরক্ষা উপভোগ করবেন।”
এক প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “যখন তিনি আমার দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন, তখন তিনি সিম্পলি পুলিশ অফিসার। পুলিশ অফিসার যে দায়িত্ব পালন করেন, তিনিও সেই একই দায়িত্ব পালন করবেন।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “যেমন ধরুন, বসুন্ধরা শপিংমলে হয়তো ৫০ জন নিরাপত্তাকর্মী আছেন। তাদের একজন নেতাকে আমরা অফিসিয়ালি অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়ে দেব।”
ডিএমপি কমিশনার ঈদ উপলক্ষে ঢাকা থেকে গ্রামে যাওয়া নাগরিকদের তাদের বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যেতে অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেন, “১৫ রোজার পর ঢাকাবাসীর অনেকে গ্রামে চলে যাবেন। আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নিলেও আপনারা দয়া করে বাড়ি ছাড়ার আগে নিজ উদ্যোগে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে যাবেন।”
তারাবির সময় বাড়ি ও দোকানের নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেন তিনি।
ঢাকার অপরাধ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “ঢাকায় বড় অপরাধের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। অন্য দেশের বড় শহরগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে এখানে অপরাধ কমই দেখা যাবে।”
তবে স্ট্রিট ক্রাইম কিছুটা বেড়েছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, “ইদানীং মোবাইল ফোন ছিনতাই বেশি হচ্ছে। কিশোর গ্যাং বা উঠতি বয়সের ছেলেরা বাস, প্রাইভেটকার বা মোটরবাইকের যাত্রীদের মোবাইল ফোন টেনে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এটি ৮০-৯০ শতাংশ স্ট্রিট ক্রাইমের মূল চিত্র।”
তিনি বলেন, “ঢাকায় প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আসা-যাওয়া করে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও নাগরিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ডিএমপি আপনাদের পাশে আছে এবং আমরা প্রতিটি অপরাধের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।”
ঘোষণা দিয়ে হিযবুত তাহরীরের মিছিল করা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ডিএমপি কমিশনার জানান, ডিবি (গোয়েন্দা পুলিশ) মূলত অপরাধীদের নিয়ে কাজ করে এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ তাদের প্রধান কাজ নয়।
তিনি বলেন, “যদিও আমরা আগে থেকে তাদের আটকাতে পারতাম, কিন্তু মসজিদের গেটে অনেক মুসল্লি থাকায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, কারণ এতে মুসল্লিদের ক্ষতি হতে পারত এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারত। তাই পরিকল্পিতভাবে তাদের বিচ্ছিন্ন করে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
তিনি জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অভিযান চলছে।
শুক্রবার ‘প্রবর্তনা’ এলাকায় বোমা হামলার বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “আমরা কাজ করছি এবং তদন্ত চলছে। ধৈর্য ধরুন, সব বেরিয়ে আসবে।”
মব জাস্টিসের বিষয়ে তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় আমরা মামলা নিয়েছি এবং আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করছি। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর অধিকার নেই আইন নিজের হাতে নেওয়ার। যদি কারো কাছে কোনো তথ্য থাকে, তাহলে পুলিশের কাছে দিন, আমরাই ব্যবস্থা নেব।”
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে টাকা ও স্বর্ণ লুটের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তারের তথ্যও দেন ডিএমপি কমিশনার।
তিনি বলেন, “ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ায় মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছিল। তাই ডিবিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছিল।”
তিনি জানান, “এ ঘটনায় মোট সাতজন জড়িত ছিল, যার মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ব্যবহৃত অস্ত্র, বিক্রিত স্বর্ণের টাকা ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। লিডার কাউসারসহ খলিল, ফরহাদ, সুমন, দুলাল চৌধুরী ও আমিনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “এই তদন্ত করতে গিয়ে আমরা আরও কিছু ডাকাত দলের খোঁজ পেয়েছি এবং শিগগিরই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।”
তিনি মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কোনো সংবাদ অতিরিক্ত প্রচার না করার অনুরোধ জানান, যা জনমনে অযথা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে।