নারী নিপীড়নের প্রতিবাদ ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবিতে রাজধানীতে লাঠি মিছিল -সোহরাব আলম
শিক্ষার্থীরা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে জড়ো হলে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সাধারণ জনতাও। পরে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা আদালত চত্বরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের বাধা দেয় ও শান্ত করার চেষ্টা চালায়। সদর থানার ওসি আয়ুব আলী বলেন, এক পর্যায়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মাগুরা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বায়োজিদ হোসেন বলেন, এই শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তারা বিক্ষুব্ধ। যে কারণে কলেজের শিক্ষার্থীরা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে প্রতিবাদ জানাতে এসেছেন। তাদের সঙ্গে সাধারণ জনগণও যোগ দিয়েছেন। তারা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানান।
পরে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন। বেলা আড়াইটার পর তারা শহরের ভায়না মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা তিনটার দিকে ভায়নার মোড় গিয়ে দেখা যায়, গোলচত্বর ঘিরে অবস্থান নিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। তারা ধর্ষণের বিচার চেয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। তারা বলেন, উচ্চ আদালত এই মামলার বিচারের জন্য ১৮০ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন। এটা তারা প্রত্যাখ্যান করছেন। তারা এ ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের মৃত্যুদ- চান। আর এই বিচার নিশ্চিত না হলে তারা ঘরে ফিরবেন না।
এ সময় মাগুরা থেকে ঢাকা, যশোর ও ঝিনাইদহ অভিমুখী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে
পড়েন দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটের যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকেরা। কয়েক পরিবহন শ্রমিক বলেন, রমজানের সময় প্রচ- গরমে যানজটের কারণে যাত্রীরা বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) এনে ভর্তি করা হয় এবং পরে শুক্রবার রাতে তাকে ভেন্টিলেশনে নেয়া হয়।
শনিবার ঢাকা মেডিকেলে শিশুটির অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এরপর তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলেও সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে আনা হয়।
রবিবার সকালে শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে সিএমএইচে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেখানে তিনি শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। হাসপাতালে পরিদর্শন শেষে সেখানে দাঁড়িয়ে নারী হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর অবস্থান নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর শিশুর মা বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন শনিবার।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম জানান, এ মামলায় মামলার শিশুটির ভগ্নিপতি সজীব হোসেন (১৮) ও বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), সজিব শেখের অপ্রাপ্তবয়স্ক এক ভাই এবং তাদের মা জাবেদা বেগমকে (৪০) আসামি করা হয়েছে। চারজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আসামিদের তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানান জেলা পুলিশের কর্মকর্তা মিরাজুল ইসলাম। মেয়েটির মা সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ের এখনও জ্ঞান ফেরেনি।
নারী নিপীড়নের প্রতিবাদ ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবিতে রাজধানীতে লাঠি মিছিল -সোহরাব আলম
রোববার, ০৯ মার্চ ২০২৫
শিক্ষার্থীরা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে জড়ো হলে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সাধারণ জনতাও। পরে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা আদালত চত্বরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের বাধা দেয় ও শান্ত করার চেষ্টা চালায়। সদর থানার ওসি আয়ুব আলী বলেন, এক পর্যায়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মাগুরা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বায়োজিদ হোসেন বলেন, এই শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তারা বিক্ষুব্ধ। যে কারণে কলেজের শিক্ষার্থীরা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে প্রতিবাদ জানাতে এসেছেন। তাদের সঙ্গে সাধারণ জনগণও যোগ দিয়েছেন। তারা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানান।
পরে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন। বেলা আড়াইটার পর তারা শহরের ভায়না মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা তিনটার দিকে ভায়নার মোড় গিয়ে দেখা যায়, গোলচত্বর ঘিরে অবস্থান নিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। তারা ধর্ষণের বিচার চেয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। তারা বলেন, উচ্চ আদালত এই মামলার বিচারের জন্য ১৮০ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন। এটা তারা প্রত্যাখ্যান করছেন। তারা এ ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের মৃত্যুদ- চান। আর এই বিচার নিশ্চিত না হলে তারা ঘরে ফিরবেন না।
এ সময় মাগুরা থেকে ঢাকা, যশোর ও ঝিনাইদহ অভিমুখী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে
পড়েন দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটের যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকেরা। কয়েক পরিবহন শ্রমিক বলেন, রমজানের সময় প্রচ- গরমে যানজটের কারণে যাত্রীরা বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) এনে ভর্তি করা হয় এবং পরে শুক্রবার রাতে তাকে ভেন্টিলেশনে নেয়া হয়।
শনিবার ঢাকা মেডিকেলে শিশুটির অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এরপর তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলেও সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে আনা হয়।
রবিবার সকালে শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে সিএমএইচে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেখানে তিনি শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। হাসপাতালে পরিদর্শন শেষে সেখানে দাঁড়িয়ে নারী হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর অবস্থান নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর শিশুর মা বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন শনিবার।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম জানান, এ মামলায় মামলার শিশুটির ভগ্নিপতি সজীব হোসেন (১৮) ও বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), সজিব শেখের অপ্রাপ্তবয়স্ক এক ভাই এবং তাদের মা জাবেদা বেগমকে (৪০) আসামি করা হয়েছে। চারজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আসামিদের তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানান জেলা পুলিশের কর্মকর্তা মিরাজুল ইসলাম। মেয়েটির মা সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ের এখনও জ্ঞান ফেরেনি।