alt

জাতীয়

নারীর প্রতি সহিংসতা: বিক্ষোভে উত্তাল দেশ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ০৯ মার্চ ২০২৫

সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজপড়–য়া শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মী এবং নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ব্যক্তির শাস্তি দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন। এর মধ্যেই মাগুরায় একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। ওই শিশুর অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ সময় কেরানীগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে ‘দলবেঁধে ধর্ষণ’, শেরপুরে পাঁচ বছরের শিশুকে ‘ধর্ষণ’; গাজীপুরে

আট বছরের শিশুকে ‘ধর্ষণে’র সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা; যাদের বেশিরভাগই ছিলেন নারী শিক্ষার্থী।

রবিবার সকালেও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লাঠি মিছিল হয়েছে। ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে খুলনা, সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়েও। একই দিনে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ করেছেন। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সরব হচ্ছেন নানা শ্রেণীর মানুষ।

‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে রবিবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে লঠি মিছিল কর্মসূচি পালন করা হয়। বাঁশের ছোট ছোট লাঠি হাতে রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু করে ভিসি চত্বর, নীলক্ষেত, কাঁটাবন, শাহবাগ মোড় ঘুরে মিছিলটি আবার রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।

এই কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফাসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্য ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। মিছিলে ‘জান, মালের নিরাপত্তা দে/নইলে গদি ছেড়ে দে’, ‘খুন, ধর্ষণ, নিপীড়ন/রুখে দাঁড়াও জনগণ’, ‘অবিলম্বে ধর্ষকদের/বিচার করো করতে হবে’, ‘ধর্ষকরা ধর্ষণ করে/প্রশাসন কী করে?’, ‘বেগম রোকেয়া শিখিয়ে গেছে/লড়াই করে বাঁচতে হবে,’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়া হয়।

এই কর্মসূচি থেকে ধর্ষণসহ অব্যাহত নারী নিপীড়ন প্রতিরোধে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর অপসারণ এবং দ্রুত ট্রাইব্যুনালে সব ধর্ষণ-কা-ের বিচারসহ ৯ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

* স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগসহ ৯ দফা*

৯ দফা দাবি হলো জননিরাপত্তা দানে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দায় স্বীকার করে পদত্যাগ; সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, অবিলম্বে পাহাড়, সমতলসহ সারাদেশে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও নিপীড়নের সব ঘটনার বিচার নিশ্চিত এবং প্রয়োজনে ধর্ষণের ঘটনার বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে; সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন প্রতিরোধের আইনসমূহে প্রয়োজনীয় যৌক্তিক সংযোজন, বিয়োজন ও সংশোধন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ; ধর্ষণের মামলা নেয়া নিয়ে থানায় জটিলতা দূর করা; ভুক্তভোগী ও সাক্ষীকে সব ধরনের সুরক্ষা প্রদানের জন্য ২০১১ সালে পর্যালোচিত সাক্ষী সুরক্ষা আইন পুনরায় পর্যালোচনা ও প্রয়োগ করা; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা, স্লাটশেমিং এবং বরখাস্তের ঘটনা পুনঃতদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা; দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ স্লাটশেমিং করলে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সমন্বয়ে স্বাধীন যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর করা।

*মধ্যরাতে হল থেকে বেরিয়ে বিক্ষোভ*

দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে শনিবার মধ্যরাত ও রবিবার সকাল থেকে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা।

*ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়*

যৌন নিপীড়নের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা এ মিছিল শুরু করেন। তারপর একে একে যোগ দেন অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরা।

তারা ‘উই ওয়ান্ট উই ওয়ান্ট, জাস্টিস জাস্টিস’, ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে কবর দে’, ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। পরে রাত পৌনে ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বসে অবস্থান নেন। তারা ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনীম রিমি বলেন, ‘আজ আমরা এখানে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে রাজপথে নেমেছি। আমরা চাই একটা ধর্ষকও যেন আর মুক্ত না থাকে। আমরা এই নরপশুদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’

সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘এই যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তা অবিলম্বে আমরা বিলোপ চাই। আমরা চাই না কোনো অপরাধী বাইরে ঘুরে বেড়াক। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি অতিদ্রুত কার্যকর করা হোক।’ এর আগে সন্ধ্যা ৭টায় রোকেয়া হলের নারী শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের প্রকাশ্য বিচার চেয়ে মশাল মিছিল করেন।

*ঢাকা মেডিকেল কলেজ*

রবিবার দুপুর ১২টার দিকে ধর্ষকদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে মুখে লাল কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ করতে দেখা যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ছাত্রীদের। এ সময় তারা ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের ফাঁসি দে’, ‘হ্যাং দ্য রেপিস্ট, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দেন।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করা না পর্যন্ত ধর্ষকদের কেন বিচার শুরু হয় না, তা জানতে চান। অন্তর্বর্তী সরকার দলীয় সরকার না হওয়া সত্ত্বেও ধর্ষকদের শাস্তির ব্যবস্থা কেন করতে পারছে না, তা জানতে চান।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘প্রত্যেক ধর্ষিত বোনের পাশে আমরা আছি। তাদের ধর্ষণের বিচারের জন্য আমরা রাস্তায় নামব।’

ঢামেকের অধ্যাপক আবদুল ওয়াহাব তার বক্তব্যে বলেন, ‘যারা ধর্ষণ করে এবং যারা এদের মদদ দেয়, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’

*জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়*

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শনিবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটায় বিভিন্ন হল থেকে বেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জড়ো হয়। পরে একটি মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘোরে। এরপর রাত পৌনে ৩টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া নৃবিজ্ঞান বিভাগের নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘মাগুরাতে আট বছরের শিশু পর্যন্ত ধর্ষকের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। শনিবার গাজীপুরে তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে সে দৃশ্য নিজের স্মার্টফোনে ধারণ করে এক ইয়াবা আসক্ত তরুণ। এসব ঘটনার দৃশ্যমান বিচার না হওয়ার কারণে, ক্রমান্বয়ে ধর্ষণের মতো অপরাধ বেড়ে চলেছে।’

*শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি*

এদিকে শনিবার রাত আড়াইটার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে বেগম সিরাজুন্নেসা মুজিব হলের প্রভোস্ট গেট খোলার অনুমতি না দেয়ায় ছাত্রীদের প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করতে বাধা দেয় হলের নিরাপত্তাকর্মীরা। পরবর্তীতে ফটকের তালা ভেঙে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস; ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই; ‘ধর্ষকদের মৃত্যুদ-, কার্যকর করতে হবে’; ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে কবর দে’; ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ স্লোগান দিতে থাকেন।

মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী পলাশ বখতিয়ার বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা তারা ভোগ করে যাচ্ছে, কোনো দায়িত্ব তারা পালন করছে না। আমরা শাবিপ্রবি থেকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিতে চায়, যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিশু ধর্ষকদের বিচার নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে জাহাঙ্গীরকে কালকেই (আজ) পদত্যাগ করতে হবে। যে স্ফুলিঙ্গ শাবিপ্রবিতে শুরু হয়েছে, তা পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে গেছে। তাই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করাতে আমাদের ২৪ ঘণ্টাও সময় লাগবে না।’

*রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়*

রবিবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও অ্যাকাডেমিক ভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। তারা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের প্যারিস রোডে জড়ো হন। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের মহাসড়কে যান। সেখানে সাড়ে ১২টার পর্যন্ত তারা মহাসড়কে অবস্থান নেন।

মহাসড়ক অবরোধকালে ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকের ঠাঁই না’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ধর্ষকদের শাস্তি, মৃত্যু! মৃত্যু!’, ‘তুমি কে আমি কে, আছিয়া, আছিয়া’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত হয় চারপাশ।

আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘একটার পর একটা ধর্ষণ হয়ে যাচ্ছে। কুমিল্লার তনু থেকে শুরু করে আজকে আছিয়ার ধর্ষণ; কিন্তু আমরা কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে পাইনি। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধর্ষকের পরিপূর্ণ শাস্তি কার্যকর করতে পারেনি। এটা সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চরম ব্যর্থতা। আমি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলে দিতে চাইÑ আপনারা যদি ধর্ষকের শাস্তি দিতে না পারেন তাদের জনগণের হাতে ছেড়ে দেন। আমার মা-বোনের ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করব।’

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া আরেক শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘নারীদের নিরাপত্তা ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ দাবি যতদিন পূরণ হবে না ততদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ আন্দোলন চলমান থাকবে।’ এ সময় রোববার বেলা ১১টার সময় বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন তিনি।

এদিকে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বুদ্ধিজীবী চত্বরে এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

*খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়*

দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘটিত ধর্ষণের সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানানো হয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিক্ষোভের জন্য পূর্বঘোষিত কোনো কর্মসূচি ছিল না। হঠাৎ রাত তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের খান জাহান আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বাইরে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এরপর তাতে যোগ দেন খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ হল ও বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন হলের শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন চত্বর ও হল প্রদক্ষিণ করে হাদী চত্বরে জড়ো হন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া’, ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

হাদী চত্বরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, একটা ধর্ষকও যেন আর বাংলার মাটিতে মুক্ত না থাকে। এই নরপশুদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে আরও বড় কর্মসূচি পালন করার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

*আদালত চত্বর ঘেরাও ছাত্র-জনতার*

মাগুরায় আট বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে জেলা আদালত চত্বর ঘেরাও করেছে ছাত্র-জনতা।

বেলা ১১টা থেকে মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল ফটকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা আদালত চত্বরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের বাধা দেয় ও শান্ত করার চেষ্টা চালায়। সদর থানার ওসি আয়ুব আলী বলেন, এক পর্যায়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

মাগুরা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বায়োজিদ হোসেন বলেন, এই শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তারা বিক্ষুব্ধ। যে কারণে কলেজের শিক্ষার্থীরা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে প্রতিবাদ জানাতে এসেছেন। তাদের সঙ্গে সাধারণ জনগণও যোগ দিয়েছেন। তারা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানান।

*ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ*

মাগুরায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের মৃত্যুদ-ের দাবিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বেলা আড়াইটার পর তারা শহরের ভায়না মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এর আগে তারা মাগুরা জেলা আদালতের মূল ফটকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন।

বেলা তিনটার দিকে ভায়নার মোড় গিয়ে দেখা যায়, গোলচত্বর ঘিরে অবস্থান নিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। তারা ধর্ষণের বিচার চেয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় মাগুরা থেকে ঢাকা, যশোর ও ঝিনাইদহ অভিমুখী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটের যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকেরা।

*ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ*

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।শনিবার বিকেলে উপজেলার একটি গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার শিক্ষকের নাম মোজাম্মেল হক ওরফে মানিক (৫০)। তিনি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

এ ঘটনার রবিবার বেলা ১১টায় ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের দাবিতে ঠাকুরগাঁও শহরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা জেলা জজ ও দায়রা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নিয়ে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দেয়।

*বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়*

দেশব্যাপী ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রবিবার বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন।

ছবি

প্রবাসীদের গাড়িতে ডাকাতি, পুলিশসহ ৫ জন গ্রেপ্তার

শান্তিবাগে মুদি দোকানির দুই হাতের রগ কেটে দিলো কয়েকজন

মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবার মাথায় কুড়ালের কোপ

চোর ও ছিনতাইকারী সন্দেহে রাজধানীতে ৮ জনকে গণপিটুনি

মেট্রোরেলে নারী কোচে বাড়তি নিরাপত্তা দেয়া শুরু

ছবি

মার্কিন টেলিকম জায়ান্ট স্টারলিংকের সঙ্গে বাংলাদেশি কোম্পানি কাজ করবে

ছবি

এমপিওভুক্তির দাবিতে থালা হাতে ‘ভুখা মিছিল’

সশস্ত্র বাহিনীর ৮ স্থাপনার নাম বদল, আরও ১৬ নতুন নাম প্রস্তাব

মাগুরার শিশু ধর্ষণের বিচার ১৮০ দিনে শেষ করার নির্দেশ উচ্চ আদালতের

কেরানীগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২

ঠাকুরগাঁওয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার

নরসিংদীতে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ১

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কিশোরী মেয়ের নগ্ন ভিডিও করে ধর্ষণচেষ্টা, সৎবাবা গ্রেপ্তার

মাগুরার শিশুটিকে দেখলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, বললেন ‘সরকার তৎপর’

নারীর ওপর সহিংসতার প্রতিবাদ, অপশক্তির পুনর্বাসনের জন্য গণঅভ্যুত্থানে মানুষ রাস্তায় নামেনি : শিক্ষক নেটওয়ার্ক

যমুনায় বৈঠক: ‘মব’ ও ‘নৈরাজ্যের’ বিরুদ্ধে এখন থেকে ‘জিরো টলারেন্স’

ধর্ষণে জামিন নয়, তদন্ত ১৫ দিনে বিচার ৯০ দিনে, আইন সংশোধনের চিন্তা অন্তর্বর্তী সরকারের

ছবি

ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বর ঘেরাও, মহাসড়ক অবরোধ

ছবি

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ঢাবি-ঢামেকসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

মাগুরার শিশুর ছবি-ভিডিও সরানোর নির্দেশ হাইকোর্টের

ছবি

‘নৈরাজ্য ও মব জাস্টিস’ ঠেকাতে ‘কঠোর’ হবার ‘সিদ্ধান্ত’ সরকারের

ছবি

সশস্ত্র বাহিনীর আটটি স্থাপনার নাম পরিবর্তন, আরও ১৬টির প্রস্তাব

ছবি

যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দ্রুত আইন প্রণয়নের দাবি

ছবি

ধর্ষণ মামলার বিচার ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে: আইন উপদেষ্টা

ছবি

ঈদের আগেই সরকারি চাকরিজীবীরা বেতন-ভাতা পাবেন

ছবি

মাগুরার শিশুকে ধর্ষণের বিচার ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ

ছবি

আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে পাগলের আশ্রম

বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-মেঘালয় করিডোর চান সাংমা

বনশ্রীতে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি ও লুটের ঘটনায় ৬ ডাকাত গ্রেপ্তার

ঈদের আগে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ১০ দফা

পোশাক উছিলা, নারীরা প্রতিবাদ করলেই হামলার শিকার হচ্ছেন

দাবি পূরণের আশ্বাসে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি স্থগিত

ছবি

নারীদের কঠিন সময়ে উপদেষ্টাদের মুখ বন্ধ: মহিলা পরিষদ

শ্যামপুরে তরুণকে কুপিয়ে হত্যা

অবৈধ বালু ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তারের বিরোধ নিয়ে দুই ভাইসহ ৩ জন নিহত

পুরুষের মতো নারীদেরও সমান মর্যাদা, সুরক্ষা ও সুযোগ থাকা উচিত: তারেক রহমান

tab

জাতীয়

নারীর প্রতি সহিংসতা: বিক্ষোভে উত্তাল দেশ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ০৯ মার্চ ২০২৫

সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজপড়–য়া শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মী এবং নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ব্যক্তির শাস্তি দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন। এর মধ্যেই মাগুরায় একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। ওই শিশুর অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ সময় কেরানীগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে ‘দলবেঁধে ধর্ষণ’, শেরপুরে পাঁচ বছরের শিশুকে ‘ধর্ষণ’; গাজীপুরে

আট বছরের শিশুকে ‘ধর্ষণে’র সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা; যাদের বেশিরভাগই ছিলেন নারী শিক্ষার্থী।

রবিবার সকালেও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লাঠি মিছিল হয়েছে। ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে খুলনা, সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়েও। একই দিনে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ করেছেন। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সরব হচ্ছেন নানা শ্রেণীর মানুষ।

‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে রবিবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে লঠি মিছিল কর্মসূচি পালন করা হয়। বাঁশের ছোট ছোট লাঠি হাতে রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু করে ভিসি চত্বর, নীলক্ষেত, কাঁটাবন, শাহবাগ মোড় ঘুরে মিছিলটি আবার রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।

এই কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফাসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্য ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। মিছিলে ‘জান, মালের নিরাপত্তা দে/নইলে গদি ছেড়ে দে’, ‘খুন, ধর্ষণ, নিপীড়ন/রুখে দাঁড়াও জনগণ’, ‘অবিলম্বে ধর্ষকদের/বিচার করো করতে হবে’, ‘ধর্ষকরা ধর্ষণ করে/প্রশাসন কী করে?’, ‘বেগম রোকেয়া শিখিয়ে গেছে/লড়াই করে বাঁচতে হবে,’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়া হয়।

এই কর্মসূচি থেকে ধর্ষণসহ অব্যাহত নারী নিপীড়ন প্রতিরোধে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর অপসারণ এবং দ্রুত ট্রাইব্যুনালে সব ধর্ষণ-কা-ের বিচারসহ ৯ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

* স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগসহ ৯ দফা*

৯ দফা দাবি হলো জননিরাপত্তা দানে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দায় স্বীকার করে পদত্যাগ; সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, অবিলম্বে পাহাড়, সমতলসহ সারাদেশে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও নিপীড়নের সব ঘটনার বিচার নিশ্চিত এবং প্রয়োজনে ধর্ষণের ঘটনার বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে; সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন প্রতিরোধের আইনসমূহে প্রয়োজনীয় যৌক্তিক সংযোজন, বিয়োজন ও সংশোধন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ; ধর্ষণের মামলা নেয়া নিয়ে থানায় জটিলতা দূর করা; ভুক্তভোগী ও সাক্ষীকে সব ধরনের সুরক্ষা প্রদানের জন্য ২০১১ সালে পর্যালোচিত সাক্ষী সুরক্ষা আইন পুনরায় পর্যালোচনা ও প্রয়োগ করা; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা, স্লাটশেমিং এবং বরখাস্তের ঘটনা পুনঃতদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা; দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ স্লাটশেমিং করলে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সমন্বয়ে স্বাধীন যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর করা।

*মধ্যরাতে হল থেকে বেরিয়ে বিক্ষোভ*

দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে শনিবার মধ্যরাত ও রবিবার সকাল থেকে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা।

*ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়*

যৌন নিপীড়নের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা এ মিছিল শুরু করেন। তারপর একে একে যোগ দেন অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরা।

তারা ‘উই ওয়ান্ট উই ওয়ান্ট, জাস্টিস জাস্টিস’, ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে কবর দে’, ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। পরে রাত পৌনে ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বসে অবস্থান নেন। তারা ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনীম রিমি বলেন, ‘আজ আমরা এখানে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে রাজপথে নেমেছি। আমরা চাই একটা ধর্ষকও যেন আর মুক্ত না থাকে। আমরা এই নরপশুদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’

সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘এই যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তা অবিলম্বে আমরা বিলোপ চাই। আমরা চাই না কোনো অপরাধী বাইরে ঘুরে বেড়াক। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি অতিদ্রুত কার্যকর করা হোক।’ এর আগে সন্ধ্যা ৭টায় রোকেয়া হলের নারী শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের প্রকাশ্য বিচার চেয়ে মশাল মিছিল করেন।

*ঢাকা মেডিকেল কলেজ*

রবিবার দুপুর ১২টার দিকে ধর্ষকদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে মুখে লাল কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ করতে দেখা যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ছাত্রীদের। এ সময় তারা ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের ফাঁসি দে’, ‘হ্যাং দ্য রেপিস্ট, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দেন।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করা না পর্যন্ত ধর্ষকদের কেন বিচার শুরু হয় না, তা জানতে চান। অন্তর্বর্তী সরকার দলীয় সরকার না হওয়া সত্ত্বেও ধর্ষকদের শাস্তির ব্যবস্থা কেন করতে পারছে না, তা জানতে চান।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘প্রত্যেক ধর্ষিত বোনের পাশে আমরা আছি। তাদের ধর্ষণের বিচারের জন্য আমরা রাস্তায় নামব।’

ঢামেকের অধ্যাপক আবদুল ওয়াহাব তার বক্তব্যে বলেন, ‘যারা ধর্ষণ করে এবং যারা এদের মদদ দেয়, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’

*জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়*

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শনিবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটায় বিভিন্ন হল থেকে বেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জড়ো হয়। পরে একটি মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘোরে। এরপর রাত পৌনে ৩টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া নৃবিজ্ঞান বিভাগের নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘মাগুরাতে আট বছরের শিশু পর্যন্ত ধর্ষকের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। শনিবার গাজীপুরে তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে সে দৃশ্য নিজের স্মার্টফোনে ধারণ করে এক ইয়াবা আসক্ত তরুণ। এসব ঘটনার দৃশ্যমান বিচার না হওয়ার কারণে, ক্রমান্বয়ে ধর্ষণের মতো অপরাধ বেড়ে চলেছে।’

*শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি*

এদিকে শনিবার রাত আড়াইটার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে বেগম সিরাজুন্নেসা মুজিব হলের প্রভোস্ট গেট খোলার অনুমতি না দেয়ায় ছাত্রীদের প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করতে বাধা দেয় হলের নিরাপত্তাকর্মীরা। পরবর্তীতে ফটকের তালা ভেঙে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস; ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই; ‘ধর্ষকদের মৃত্যুদ-, কার্যকর করতে হবে’; ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে কবর দে’; ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ স্লোগান দিতে থাকেন।

মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী পলাশ বখতিয়ার বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা তারা ভোগ করে যাচ্ছে, কোনো দায়িত্ব তারা পালন করছে না। আমরা শাবিপ্রবি থেকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিতে চায়, যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিশু ধর্ষকদের বিচার নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে জাহাঙ্গীরকে কালকেই (আজ) পদত্যাগ করতে হবে। যে স্ফুলিঙ্গ শাবিপ্রবিতে শুরু হয়েছে, তা পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে গেছে। তাই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করাতে আমাদের ২৪ ঘণ্টাও সময় লাগবে না।’

*রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়*

রবিবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও অ্যাকাডেমিক ভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। তারা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের প্যারিস রোডে জড়ো হন। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের মহাসড়কে যান। সেখানে সাড়ে ১২টার পর্যন্ত তারা মহাসড়কে অবস্থান নেন।

মহাসড়ক অবরোধকালে ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকের ঠাঁই না’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ধর্ষকদের শাস্তি, মৃত্যু! মৃত্যু!’, ‘তুমি কে আমি কে, আছিয়া, আছিয়া’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত হয় চারপাশ।

আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘একটার পর একটা ধর্ষণ হয়ে যাচ্ছে। কুমিল্লার তনু থেকে শুরু করে আজকে আছিয়ার ধর্ষণ; কিন্তু আমরা কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে পাইনি। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধর্ষকের পরিপূর্ণ শাস্তি কার্যকর করতে পারেনি। এটা সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চরম ব্যর্থতা। আমি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলে দিতে চাইÑ আপনারা যদি ধর্ষকের শাস্তি দিতে না পারেন তাদের জনগণের হাতে ছেড়ে দেন। আমার মা-বোনের ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করব।’

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া আরেক শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘নারীদের নিরাপত্তা ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ দাবি যতদিন পূরণ হবে না ততদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ আন্দোলন চলমান থাকবে।’ এ সময় রোববার বেলা ১১টার সময় বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন তিনি।

এদিকে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বুদ্ধিজীবী চত্বরে এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

*খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়*

দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘটিত ধর্ষণের সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানানো হয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিক্ষোভের জন্য পূর্বঘোষিত কোনো কর্মসূচি ছিল না। হঠাৎ রাত তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের খান জাহান আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বাইরে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এরপর তাতে যোগ দেন খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ হল ও বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন হলের শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন চত্বর ও হল প্রদক্ষিণ করে হাদী চত্বরে জড়ো হন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া’, ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

হাদী চত্বরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, একটা ধর্ষকও যেন আর বাংলার মাটিতে মুক্ত না থাকে। এই নরপশুদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে আরও বড় কর্মসূচি পালন করার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

*আদালত চত্বর ঘেরাও ছাত্র-জনতার*

মাগুরায় আট বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে জেলা আদালত চত্বর ঘেরাও করেছে ছাত্র-জনতা।

বেলা ১১টা থেকে মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল ফটকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা আদালত চত্বরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের বাধা দেয় ও শান্ত করার চেষ্টা চালায়। সদর থানার ওসি আয়ুব আলী বলেন, এক পর্যায়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

মাগুরা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বায়োজিদ হোসেন বলেন, এই শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তারা বিক্ষুব্ধ। যে কারণে কলেজের শিক্ষার্থীরা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে প্রতিবাদ জানাতে এসেছেন। তাদের সঙ্গে সাধারণ জনগণও যোগ দিয়েছেন। তারা ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানান।

*ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ*

মাগুরায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের মৃত্যুদ-ের দাবিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বেলা আড়াইটার পর তারা শহরের ভায়না মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এর আগে তারা মাগুরা জেলা আদালতের মূল ফটকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন।

বেলা তিনটার দিকে ভায়নার মোড় গিয়ে দেখা যায়, গোলচত্বর ঘিরে অবস্থান নিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। তারা ধর্ষণের বিচার চেয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় মাগুরা থেকে ঢাকা, যশোর ও ঝিনাইদহ অভিমুখী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটের যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকেরা।

*ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ*

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।শনিবার বিকেলে উপজেলার একটি গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার শিক্ষকের নাম মোজাম্মেল হক ওরফে মানিক (৫০)। তিনি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

এ ঘটনার রবিবার বেলা ১১টায় ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের দাবিতে ঠাকুরগাঁও শহরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা জেলা জজ ও দায়রা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নিয়ে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দেয়।

*বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়*

দেশব্যাপী ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রবিবার বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন।

back to top