সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কর্মবিরতির কারণে সারাদেশের হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে । সকাল থেকে রোগীদের ভিড় বিভিন্ন হাসপাতালে।
বেলা ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, বহির্বিভাগের বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলছে। সেখানে বহির্বিভাগের বিভিন্ন বিভাগের সামনে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের ভিড় করতে দেখা গেছে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে বহির্বিভাগ পুরোপুরি বন্ধ থাকায় সেখানে রোগীদের জটলা তৈরি হয়েছে সকাল থেকেই। মোহাম্মদপুরের জরিনা খাতুন বলেন, "এক ঘণ্টা আগে আসছি। কিন্তু ডাক্তার নাই।" সাভারের হেমায়েতপুর থেকে পাইলসের সমস্যা নিয়ে আসা মজিবুর রহমানও বহির্বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় ফিরে যাচ্ছেন।
ফেনী থেকে ভাই আব্দুর রবকে নিয়ে এসেছেন জাহাঙ্গীর আলম। হুইল চেয়ারে করে ভাইকে নিয়ে প্রথমে এই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। "ওখান থেকে বলে দিল আউটডোরে আসতে। এখানে এসে দেখি সব বন্ধ। আমার ভাইয়ের ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা, নড়াচড়া করাই সমস্যা। এইখানে ডাক্তার নাই।"
তবে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান, ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটাল এবং শিশু হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালে দেরিতে হলেও বহির্বিভাগে রোগী দেখা শুরু হয়েছে।
ঢাকার ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে সকাল ৯টা থেকে বহির্বিভাগে রোগী দেখা শুরু করার কথা থাকলেও চিকিৎসকরা পৌনে ১০টা থেকে রোগী দেখতে শুরু করেন। এর ফলে বহির্বিভাগের সামনে রোগীদের ভিড় তৈরি হয়। আরিফুল ইসলাম নামে একজন রোগী বলেন, "সোয়া নয়টায় আসছি। আধা ঘণ্টা অপেক্ষায় ছিলাম। পৌনে ১০টায় ডাক্তার রোগী দেখা শুরু করেছেন।"
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান নিটোরে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানেও বহির্বিভাগে রোগী দেখছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, "আমাদের এখানে কার্যক্রম চলছে। আউটডোর খোলা। আসলে আমি আজকের কর্মসূচি সম্পর্কে জানি না।"
চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের এই কর্মবিরতির পেছনে রয়েছে পাঁচ দফা দাবি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না, রেজিস্টার্ড চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ স্বাধীনভাবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবে না, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্স কারিকুলাম সংস্কার, চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো তৈরি করা।
মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক নাদিম হোসাইন পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন এবং বুধবার সারাদেশের মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন। এদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশের ডাক দেওয়া হয় এবং সেখান থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিমুখে লংমার্চ করার পরিকল্পনা করা হয়।
এই কর্মবিরতির পেছনে রয়েছে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের দাবি। তারা সরকারি/বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পদ তৈরি, অবিলম্বে দশম গ্রেডে শুন্য পদে নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছে। পাশাপাশি তারা চার বছরের অ্যাকাডেমিক কোর্স বহাল রেখে কারিকুলাম সংশোধন ও ভাতাসহ এক বছরের ইন্টার্নশিপ, প্রস্তাবিত ‘অ্যালায়েড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড’ বাতিল করে ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ নামে বোর্ড গঠন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও বিএমঅ্যান্ডডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার সুযোগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।
বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কর্মবিরতির কারণে সারাদেশের হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে । সকাল থেকে রোগীদের ভিড় বিভিন্ন হাসপাতালে।
বেলা ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, বহির্বিভাগের বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলছে। সেখানে বহির্বিভাগের বিভিন্ন বিভাগের সামনে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের ভিড় করতে দেখা গেছে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে বহির্বিভাগ পুরোপুরি বন্ধ থাকায় সেখানে রোগীদের জটলা তৈরি হয়েছে সকাল থেকেই। মোহাম্মদপুরের জরিনা খাতুন বলেন, "এক ঘণ্টা আগে আসছি। কিন্তু ডাক্তার নাই।" সাভারের হেমায়েতপুর থেকে পাইলসের সমস্যা নিয়ে আসা মজিবুর রহমানও বহির্বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় ফিরে যাচ্ছেন।
ফেনী থেকে ভাই আব্দুর রবকে নিয়ে এসেছেন জাহাঙ্গীর আলম। হুইল চেয়ারে করে ভাইকে নিয়ে প্রথমে এই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। "ওখান থেকে বলে দিল আউটডোরে আসতে। এখানে এসে দেখি সব বন্ধ। আমার ভাইয়ের ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা, নড়াচড়া করাই সমস্যা। এইখানে ডাক্তার নাই।"
তবে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান, ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটাল এবং শিশু হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালে দেরিতে হলেও বহির্বিভাগে রোগী দেখা শুরু হয়েছে।
ঢাকার ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে সকাল ৯টা থেকে বহির্বিভাগে রোগী দেখা শুরু করার কথা থাকলেও চিকিৎসকরা পৌনে ১০টা থেকে রোগী দেখতে শুরু করেন। এর ফলে বহির্বিভাগের সামনে রোগীদের ভিড় তৈরি হয়। আরিফুল ইসলাম নামে একজন রোগী বলেন, "সোয়া নয়টায় আসছি। আধা ঘণ্টা অপেক্ষায় ছিলাম। পৌনে ১০টায় ডাক্তার রোগী দেখা শুরু করেছেন।"
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান নিটোরে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানেও বহির্বিভাগে রোগী দেখছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, "আমাদের এখানে কার্যক্রম চলছে। আউটডোর খোলা। আসলে আমি আজকের কর্মসূচি সম্পর্কে জানি না।"
চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের এই কর্মবিরতির পেছনে রয়েছে পাঁচ দফা দাবি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না, রেজিস্টার্ড চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ স্বাধীনভাবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবে না, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্স কারিকুলাম সংস্কার, চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো তৈরি করা।
মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক নাদিম হোসাইন পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন এবং বুধবার সারাদেশের মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন। এদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশের ডাক দেওয়া হয় এবং সেখান থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিমুখে লংমার্চ করার পরিকল্পনা করা হয়।
এই কর্মবিরতির পেছনে রয়েছে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের দাবি। তারা সরকারি/বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পদ তৈরি, অবিলম্বে দশম গ্রেডে শুন্য পদে নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছে। পাশাপাশি তারা চার বছরের অ্যাকাডেমিক কোর্স বহাল রেখে কারিকুলাম সংশোধন ও ভাতাসহ এক বছরের ইন্টার্নশিপ, প্রস্তাবিত ‘অ্যালায়েড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড’ বাতিল করে ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ নামে বোর্ড গঠন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও বিএমঅ্যান্ডডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার সুযোগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।