alt

জাতীয়

‘কড়াই বিলে’র ৫ শতাধিক গাছ কর্তন, জানে না বনবিভাগ

চিত্ত ঘোষ, দিনাজপুর : রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫

সম্প্রতি দিনাজপুরের কড়াই বিলে ‘নিয়মবহির্ভূতভাবে’ পাঁচ শতাধিক ফলদ ও বনজ গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে -সংবাদ

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দর্শনীয় স্থান ‘কড়াই বিলে’ নিয়মবহির্ভূতভাবে পাঁচ শতাধিক ফলদ ও বনজ গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে ‘বিরল থানা মুক্তিযোদ্ধা হাঁস-মুরগি ও পশু পালন খামার সমবায় সমিতি’র নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে। গাছ কেটে ফেলায় জৌলুস হারিয়েছে দর্শনীয় এই স্থানটি। দর্শনার্থীরাও মুখ ফিরিয়েছে।

সোমবার বিকেলে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর বাধার মুখে কেটে ফেলা গাছগুলো জব্দ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। গাছ কাটার ঘটনায় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বাদী হয়ে বিরল থানায় একটি মামলাও করেছেন।

দিনাজপুর শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে বিরল উপজেলার কড়াই বিল। জেলার ঐতিহাসিক রামসাগর, সুখসাগরের মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আরেকটি স্থান এই কড়াই বিল অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখর থাকত। ৫৬ একর আয়তনের বিলটি স্থানীয় মানুষের ধান ও মাছের বড় উৎস। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বিলের মাঝবরাবর প্রায় ২৮ একর (পাড়সহ) আয়তনের পুকুর খনন করা হয়। পাড়ে লাগানো হয় কয়েক হাজার ফলদ, বনজ, ঔষধি ও ফুলের গাছ। বিল ও পুকুরের সৌন্দর্য উপভোগ এবং অতিথি পাখিদের দেখতে ভিড় করতেন দর্শনার্থীরা। কাটা হয়েছে পাড়ের গাছগুলো। দর্শনার্থীরাও মুখ ফিরিয়েছেন।

বিরল থানা মুক্তিযোদ্ধা হাঁস-মুরগি ও পশু পালন খামার সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মিস্টার জর্জের নেতৃত্বে সমবায় সমিতি গঠন করে বিলটি সরকারের কাছে ইজারা নেন তারা। পরবর্তী সময়ে ১৯৭৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দিনাজপুরে আসলে ওই সমিতিতে অনুদান দেন এবং খালকাটা কর্মসূচির আওতায় এই পুকুর খনন করা হয়। পাড়ে লাগানো হয় ফলদ-বনজ ও ফুলের গাছ। সমিতির সদস্যরা পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। পরে মুক্তিযোদ্ধারা ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্থায়ীভাবে পুকুরের মালিকানা পায়। তবে কয়েক বছর পরে প্রশাসন ইজারা বা মালিকানা বাতিল করলে মুক্তিযোদ্ধারা আদালতে মামলা করেন। সেই মামলা এখনো চলমান। পুকুর ও গাছের ফল বিক্রি করে বিলের উন্নয়ন করাসহ ঈদে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোকে অনুদান দেয়া হয়ে থাকে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকালে বিল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পুকুরের পূর্ব-উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে এখনও আমসহ বিভিন্ন জাতের অর্ধশতাধিক গাছ রয়েছে। আম গাছগুলোতে মুকুলও ধরেছে। পুকুরের চারপাশের পাড় ভেঙে গেছে। একপাশে গাইডওয়াল দেয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় দুই বাসিন্দা বলেন, আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারাও একটা-দুইটা করে বড় বড় সব গাছ কেটে ফেলেছে। এখন যিনি দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি একবারেই এতগুলো গাছ কেটে ফেললেন। ছোটবেলায় বিলটাকে যা দেখেছিলাম, সেটা এখন নাই। কত পাখি আসত এই বিলে সব হারায় গেছে।’

বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মহসীন আলী বলেন, গাছ কাটতে হলে বন বিভাগকে অবহিত করার বিধি আছে। কিন্তু কড়াইবিলের গাছগুলো কাটার বিষয়ে আমাদের জানানো হয়নি। উপজেলা প্রশাসন থেকে আমাদের জানানো হলে ঘটনাস্থলে এসে গাছগুলো জব্দ করে থানা নিয়ে আসি।

এ বিষয়ে বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘যারা গাছ কেটেছে তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এই গাছগুলো খাস খতিয়ানের জমিতে। ভূমিসংক্রান্ত একটি মামলা চলমান আছে। তবে গাছ কাটার ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো আবেদন করা হয়নি। বিধিবহির্ভূতভাবে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার কারণে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

গাছ কাটার ঘটনায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, উপজেলার শংকরপুর মৌজায় ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত ৭০৪ নং দাগে ৫৬ দশমিক ১০ একর জমিতে কড়াই বিলের অবস্থান। সেখানে আম-কাঁঠালসহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে।সোমবার দুপুরে এজাহারনামীয়রাসহ কয়েকজন বাগান থেকে গাছ কেটে ট্রাক্টরে নিয়ে যাচ্ছিল। সংবাদ পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে আসেন এবং গাছগুলো জব্দ করেন। এর আগে একটি ট্রাক্টরে ৫৫টি আম গাছ নিয়ে গেলেও অবশিষ্ট ১৭০টি আম গাছ, দুটি কাঁঠালগাছ ও ১ হাজার ৪৮৯ ঘনফুট জ্বালানি কাঠ জব্দ করা হয়েছে।

গত ১৩ মার্চ দিনাজপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিরল থানা মুক্তিযোদ্ধা হাঁস-মুরগি ও পশু পালন খামার সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মকসেদ আলী মঙ্গলীয়া জানান, কড়াই বিল প্রকল্পটি সমবায়ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা কমিটি দ্বারা পরিচালিত। সেখানে পুকুর লিজ, গাছ লাগানো, গাছ বিক্রিসহ যাবতীয় কাজ-কর্ম বার্ষিক সাধারণ সভা ও ব্যবস্থাপনা কমিটির মতামতের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়ে থাকে। ১৯৭৫ সাল থেকে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে তারা চালাচ্ছেন। এখানে মুক্তিযোদ্ধারা সদস্য। এই গাছগুলো তাদের লাগানো। এগুলো আম্রপালি ও মল্লিকা জাতের আম গাছ। ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে ফল ধরে না। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এগুলো কেটে লিচু বাগান করবেন। গাছগুলো ঠিক সেই নিয়মেই বিক্রি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, তবে আমাদের অজ্ঞাত একটি ভুল হয়েছে। সেটি হলো উপজেলা প্রশাসনের বন বিভাগের একটি কমিটি রয়েছে। তাদের কাছ থেকে মূল্য নির্ধারণ ও গাছ বিক্রির অনুমতির প্রয়োজন ছিল। অজানার কারণে তা করা সম্ভব হয়নি।

ছবি

১৩ জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ, মঙ্গলবার থেকে কমতে পারে

প্রতারণা এড়াতে অ্যাপ থেকে টিকেট কেনার পরামর্শ রেল কর্তৃপক্ষের

‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ

সরকারি সাত কলেজ সমন্বয়ে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’

বাংলাদেশে ‘আন্তর্জাতিক মানের’ নির্বাচন চায় ইইউ, দেবে সহায়তা

এসএসসি চলাকালে ‘কোচিং সেন্টার বন্ধ’

ছবি

বদলি ইস্যু : খামারবাড়িতে সড়ক অবরোধ, যানজটে ভোগান্তি

সংবাদ সম্মেলন ধর্ষণকে ‘ধর্ষণ’ই বলতে হবে

ছবি

‘ডিএমপি কমিশনার বাস্তবে ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন’

সেদিন যা ঘটেছিল

ছবি

দ্রুত রায় কার্যকর চায় পরিবার

ছবি

বাংলাদেশে ‘বিনিয়োগ ও কারখানা স্থাপন’ প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে গুরুত্ব পাবে

ছবি

আবরার হত্যার রায়: ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন

ছবি

ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আহ্বান ইউআইএফ’র

ছবি

প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন

ছবি

দণ্ড দ্রুত কার্যকর চান আবরারের বাবা

ছবি

চার দিনের সফর শেষে ঢাকা ছাড়লেন জাতিসংঘ মহাসচিব

ছবি

আবরার হত্যা মামলা: হাই কোর্টে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন বহাল

রবিবার আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে ঢাবিতে ছুটি ঘোষণা

খামারবাড়ির কর্মকর্তাদের সংবাদ সম্মেলন, চাকরি বিধিমালা ‘লঙ্ঘন’: কর্তৃপক্ষ

৯০ দিনের মধ্যে রায় কার্যকর করতে হবে: জামায়াতে আমির

ধর্ষণের প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশি হামলা: ২১০ নাগরিকের বিবৃতি

‘মার্কিন কর্মকর্তা রোহিঙ্গা সহায়তা বন্ধ করতে চেয়েছিলেন’

ছবি

ভোলায় অকালেই ঝরে যাচ্ছে মেধাবী শিক্ষার্থীর স্বপ্ন

আরাকান আর্মি থেকে ২৬ জেলেকে ফেরত আনলো বিজিবি

ছবি

ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ চলছে, বন্ধ হচ্ছে না ধর্ষণ-নির্যাতন

ছবি

ঈদযাত্রা: দ্বিতীয় দিনে ৩০ মিনিটে ৭৩ লাখ হিট!

ছবি

রাজশাহীতে পদ্মা ও বাংলাবান্ধা ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ

গণপরিবহনে নারীদের সুরক্ষায় ‘হেল্প’ অ্যাপ চালু

পুলিশ সংস্কার আইন: তল্লাশি, গ্রেপ্তার, জিজ্ঞাসাবাদে কঠোর হচ্ছে আইন

গণমিছিল ‘স্থগিত’ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ আট সংগঠনের

ছবি

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা: ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় রবিবার

ছবি

সংস্কার, নির্বাচন: সাত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের বৈঠক

ছবি

বাংলাদেশকে আর্থিক ও রাজনৈতিক সহায়তা দিতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান

ছবি

জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর মিথ্যা প্রচার প্রতিহত করবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক কেন বুঝতে পারেননি বিএনপি মহাসচিব

tab

জাতীয়

‘কড়াই বিলে’র ৫ শতাধিক গাছ কর্তন, জানে না বনবিভাগ

চিত্ত ঘোষ, দিনাজপুর

সম্প্রতি দিনাজপুরের কড়াই বিলে ‘নিয়মবহির্ভূতভাবে’ পাঁচ শতাধিক ফলদ ও বনজ গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে -সংবাদ

রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দর্শনীয় স্থান ‘কড়াই বিলে’ নিয়মবহির্ভূতভাবে পাঁচ শতাধিক ফলদ ও বনজ গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে ‘বিরল থানা মুক্তিযোদ্ধা হাঁস-মুরগি ও পশু পালন খামার সমবায় সমিতি’র নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে। গাছ কেটে ফেলায় জৌলুস হারিয়েছে দর্শনীয় এই স্থানটি। দর্শনার্থীরাও মুখ ফিরিয়েছে।

সোমবার বিকেলে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর বাধার মুখে কেটে ফেলা গাছগুলো জব্দ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। গাছ কাটার ঘটনায় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বাদী হয়ে বিরল থানায় একটি মামলাও করেছেন।

দিনাজপুর শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে বিরল উপজেলার কড়াই বিল। জেলার ঐতিহাসিক রামসাগর, সুখসাগরের মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আরেকটি স্থান এই কড়াই বিল অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখর থাকত। ৫৬ একর আয়তনের বিলটি স্থানীয় মানুষের ধান ও মাছের বড় উৎস। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বিলের মাঝবরাবর প্রায় ২৮ একর (পাড়সহ) আয়তনের পুকুর খনন করা হয়। পাড়ে লাগানো হয় কয়েক হাজার ফলদ, বনজ, ঔষধি ও ফুলের গাছ। বিল ও পুকুরের সৌন্দর্য উপভোগ এবং অতিথি পাখিদের দেখতে ভিড় করতেন দর্শনার্থীরা। কাটা হয়েছে পাড়ের গাছগুলো। দর্শনার্থীরাও মুখ ফিরিয়েছেন।

বিরল থানা মুক্তিযোদ্ধা হাঁস-মুরগি ও পশু পালন খামার সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মিস্টার জর্জের নেতৃত্বে সমবায় সমিতি গঠন করে বিলটি সরকারের কাছে ইজারা নেন তারা। পরবর্তী সময়ে ১৯৭৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দিনাজপুরে আসলে ওই সমিতিতে অনুদান দেন এবং খালকাটা কর্মসূচির আওতায় এই পুকুর খনন করা হয়। পাড়ে লাগানো হয় ফলদ-বনজ ও ফুলের গাছ। সমিতির সদস্যরা পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। পরে মুক্তিযোদ্ধারা ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্থায়ীভাবে পুকুরের মালিকানা পায়। তবে কয়েক বছর পরে প্রশাসন ইজারা বা মালিকানা বাতিল করলে মুক্তিযোদ্ধারা আদালতে মামলা করেন। সেই মামলা এখনো চলমান। পুকুর ও গাছের ফল বিক্রি করে বিলের উন্নয়ন করাসহ ঈদে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোকে অনুদান দেয়া হয়ে থাকে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকালে বিল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পুকুরের পূর্ব-উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে এখনও আমসহ বিভিন্ন জাতের অর্ধশতাধিক গাছ রয়েছে। আম গাছগুলোতে মুকুলও ধরেছে। পুকুরের চারপাশের পাড় ভেঙে গেছে। একপাশে গাইডওয়াল দেয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় দুই বাসিন্দা বলেন, আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারাও একটা-দুইটা করে বড় বড় সব গাছ কেটে ফেলেছে। এখন যিনি দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি একবারেই এতগুলো গাছ কেটে ফেললেন। ছোটবেলায় বিলটাকে যা দেখেছিলাম, সেটা এখন নাই। কত পাখি আসত এই বিলে সব হারায় গেছে।’

বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মহসীন আলী বলেন, গাছ কাটতে হলে বন বিভাগকে অবহিত করার বিধি আছে। কিন্তু কড়াইবিলের গাছগুলো কাটার বিষয়ে আমাদের জানানো হয়নি। উপজেলা প্রশাসন থেকে আমাদের জানানো হলে ঘটনাস্থলে এসে গাছগুলো জব্দ করে থানা নিয়ে আসি।

এ বিষয়ে বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘যারা গাছ কেটেছে তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এই গাছগুলো খাস খতিয়ানের জমিতে। ভূমিসংক্রান্ত একটি মামলা চলমান আছে। তবে গাছ কাটার ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো আবেদন করা হয়নি। বিধিবহির্ভূতভাবে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার কারণে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

গাছ কাটার ঘটনায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, উপজেলার শংকরপুর মৌজায় ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত ৭০৪ নং দাগে ৫৬ দশমিক ১০ একর জমিতে কড়াই বিলের অবস্থান। সেখানে আম-কাঁঠালসহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে।সোমবার দুপুরে এজাহারনামীয়রাসহ কয়েকজন বাগান থেকে গাছ কেটে ট্রাক্টরে নিয়ে যাচ্ছিল। সংবাদ পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে আসেন এবং গাছগুলো জব্দ করেন। এর আগে একটি ট্রাক্টরে ৫৫টি আম গাছ নিয়ে গেলেও অবশিষ্ট ১৭০টি আম গাছ, দুটি কাঁঠালগাছ ও ১ হাজার ৪৮৯ ঘনফুট জ্বালানি কাঠ জব্দ করা হয়েছে।

গত ১৩ মার্চ দিনাজপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিরল থানা মুক্তিযোদ্ধা হাঁস-মুরগি ও পশু পালন খামার সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মকসেদ আলী মঙ্গলীয়া জানান, কড়াই বিল প্রকল্পটি সমবায়ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা কমিটি দ্বারা পরিচালিত। সেখানে পুকুর লিজ, গাছ লাগানো, গাছ বিক্রিসহ যাবতীয় কাজ-কর্ম বার্ষিক সাধারণ সভা ও ব্যবস্থাপনা কমিটির মতামতের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়ে থাকে। ১৯৭৫ সাল থেকে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে তারা চালাচ্ছেন। এখানে মুক্তিযোদ্ধারা সদস্য। এই গাছগুলো তাদের লাগানো। এগুলো আম্রপালি ও মল্লিকা জাতের আম গাছ। ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে ফল ধরে না। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এগুলো কেটে লিচু বাগান করবেন। গাছগুলো ঠিক সেই নিয়মেই বিক্রি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, তবে আমাদের অজ্ঞাত একটি ভুল হয়েছে। সেটি হলো উপজেলা প্রশাসনের বন বিভাগের একটি কমিটি রয়েছে। তাদের কাছ থেকে মূল্য নির্ধারণ ও গাছ বিক্রির অনুমতির প্রয়োজন ছিল। অজানার কারণে তা করা সম্ভব হয়নি।

back to top