বরগুনার বেতাগী উপজেলার ছোপখালী চরে পাখির মিলনমেলাসহ বিভিন্ন মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য -সংবাদ
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ও বিষখালী নদীর অব্যাহত ভাঙনে দিন দিন যখন দক্ষিনা এ জনপদ বিলীন হয়ে যাচ্ছে যে ঠিক সেই সময়ে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে জনমনে সীমাহীন আশা জাগিয়ে উপকূলীয় বরগুনার বেতাগীর বুকে নতুন নতুন জেগে ওঠা চর।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঝোপখালী গ্রামের বিষখালী নদীর মোহনায় অবস্থিত একটি চর। ‘ঝোপখালীর চর’ নামে এটি স্থানীয়দের মাঝে পরিচিত। ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী, উদ্ভিদ ও অণু জীবনের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এখানকার জীববৈচিত্র্য। এখানে রয়েছে নতুন নতুন পাখির অভায়ারান্য।
চরের ভেতরে এঁকেবেঁকে বয়ে গেছে ছোট-ছোট ৫-৭টি নালা। মৎস্য প্রজাতি ধ্বংসের মাঝেও এসব নালায় রয়েছে সুস্বাদু প্রজাতির মাছ। নদীর মাঝে জেগে ওঠায় জোয়ারের সময় চরটি পানিতে প্রায় পরিপূর্ণ থাকে। নৌকায় করে উপভোগ করা যায় এখানকার পাখির কলতাণ ও চরের সবুজের সমারোহ। যা সহজেই সবাইকে আকর্ষণ করে এবং সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেও উদ্যোগী ও উৎসাহী করে তোলে।
এ উপজেলায় এর চেয়ে ভালো পরিবেশ রয়েছে কিনা সন্দীহান। বিষখালী নদীর বুক চিরে আগামী দশকে এখানে আরও ভূমি জেগে ওঠার আশা করছে স্থানীয় অধিবাসীরা। নদীর অব্যাহত ভাঙনে এখনকার ব্যাপক পরিমাণ ভূমি যে ভাবে বিলীন হচ্ছে- তেমনিভাবে চারপাশে যে ভাবে চর জেগে উঠছে। যা নতুন ভূখন্ডের হাতছানি।
স্থানীয়রা জানায়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি ঋতু ও নদী বৈচিত্র্যর দক্ষিনের এ চরে সত্যিকারেই প্রকৃতিকে খুঁজে পাওয়া যায়। যারা ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। তার অনেকেই হয়তো জানেন না ঘুরে বেড়ানোর জন্য তার এলাকায় এমন একটি সুন্দর জায়গা রয়েছে।
তাহলে আর কোনো কথা নেই, যারা ঘুরতে চান তারা জোয়ার-ভাটায় যে কোনো সময়-সুযোগ বুঝে ঘুরতে আসতে পারেন এখানে। তবে ভাটার সময় বুঝে আসলে আরও ভালো হয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর্ষণে নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে পর্যটকরা এখানে আসতে পারেন কিছুটা হলেও প্রশান্তির খোঁজে।
দেড় লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত ১টি পৌরসভা সহ এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের সরকারের তালিকাভুক্ত ২৯৪ একর আয়তনের উল্লেখযোগ্য চরগুলোর মধ্যে চরবিবিচিনি (জমির পরিমাণ ৫৬ একর), ফুলতলা (জমির পরিমাণ ৬২ একর), ঝিল বুনিয়া (জমির পরিমাণ ১২ একর), কেওড়াবুনিয়া (জমির পরিমাণ ৯ একর), উত্তর ছোট মোকামিযা (জমির পরিমাণ ৪৫ একর), চরখালী (জমির পরিমাণ ২০ একর), ববদনী খালী চর (জমির পরিমাণ ২০ একর), কালিকাবাড়ির চর (জমির পরিমাণ ১০ একর) , ভোড়া গাবতলীর চর (৩৫ একর জমির পরিমাণ ) ও সর্বশেষ বিষখালীর নদীর মাঝে ২৫ একর আয়তনের জেগে ওঠা ‘ছোট ঝোপখালীর চর’। এসব চরের অধিকাংশই বেদখলে রয়েছে। তবে এসব চরের সমান ভূমিতে জনবসতি
গড়ে ওঠার পাশাপাশি এখানে চাষাবাদ, নতুন নতুন বনায়ন করতে পারলে নদীর ভাঙন কিছুটা রোধ পাবে। স্থানীয়দের দাবি এ জন্য প্রশাসনের উদ্যোগ জরুরি।
প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের জেলা সন্বয়কারী হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, ‘আমার গ্রামের বাড়ি ঘেষেই প্রচুর সম্ভবনাময় এ স্পটটি এখনো উন্মোচিত হয়নি। দেশ তো দুরের কথা এমনকি এলাকার মানুষের কাছেই অনেকটাই অজানা রয়েছে। তাই উন্মোচন জরুরি হয়ে পরেছে। এ জন্য উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসন সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী বলেন, পাখিদের আশ্রয়স্থল ঝোপখালী চরকে আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তুলতে উপজেলা প্রশাসন থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া অবৈধ দখলে থাকা খাস জমিগুলো উদ্ধার করে ভূমিহীনদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। ’
বেতাগী (বরগুনা): বরগুনার বেতাগী উপজেলার ছোপখালী চরে পাখির মিলন মেলাসহ বিভিন্ন মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য ।
বরগুনার বেতাগী উপজেলার ছোপখালী চরে পাখির মিলনমেলাসহ বিভিন্ন মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য -সংবাদ
বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ও বিষখালী নদীর অব্যাহত ভাঙনে দিন দিন যখন দক্ষিনা এ জনপদ বিলীন হয়ে যাচ্ছে যে ঠিক সেই সময়ে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে জনমনে সীমাহীন আশা জাগিয়ে উপকূলীয় বরগুনার বেতাগীর বুকে নতুন নতুন জেগে ওঠা চর।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঝোপখালী গ্রামের বিষখালী নদীর মোহনায় অবস্থিত একটি চর। ‘ঝোপখালীর চর’ নামে এটি স্থানীয়দের মাঝে পরিচিত। ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী, উদ্ভিদ ও অণু জীবনের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এখানকার জীববৈচিত্র্য। এখানে রয়েছে নতুন নতুন পাখির অভায়ারান্য।
চরের ভেতরে এঁকেবেঁকে বয়ে গেছে ছোট-ছোট ৫-৭টি নালা। মৎস্য প্রজাতি ধ্বংসের মাঝেও এসব নালায় রয়েছে সুস্বাদু প্রজাতির মাছ। নদীর মাঝে জেগে ওঠায় জোয়ারের সময় চরটি পানিতে প্রায় পরিপূর্ণ থাকে। নৌকায় করে উপভোগ করা যায় এখানকার পাখির কলতাণ ও চরের সবুজের সমারোহ। যা সহজেই সবাইকে আকর্ষণ করে এবং সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেও উদ্যোগী ও উৎসাহী করে তোলে।
এ উপজেলায় এর চেয়ে ভালো পরিবেশ রয়েছে কিনা সন্দীহান। বিষখালী নদীর বুক চিরে আগামী দশকে এখানে আরও ভূমি জেগে ওঠার আশা করছে স্থানীয় অধিবাসীরা। নদীর অব্যাহত ভাঙনে এখনকার ব্যাপক পরিমাণ ভূমি যে ভাবে বিলীন হচ্ছে- তেমনিভাবে চারপাশে যে ভাবে চর জেগে উঠছে। যা নতুন ভূখন্ডের হাতছানি।
স্থানীয়রা জানায়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি ঋতু ও নদী বৈচিত্র্যর দক্ষিনের এ চরে সত্যিকারেই প্রকৃতিকে খুঁজে পাওয়া যায়। যারা ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। তার অনেকেই হয়তো জানেন না ঘুরে বেড়ানোর জন্য তার এলাকায় এমন একটি সুন্দর জায়গা রয়েছে।
তাহলে আর কোনো কথা নেই, যারা ঘুরতে চান তারা জোয়ার-ভাটায় যে কোনো সময়-সুযোগ বুঝে ঘুরতে আসতে পারেন এখানে। তবে ভাটার সময় বুঝে আসলে আরও ভালো হয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর্ষণে নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে পর্যটকরা এখানে আসতে পারেন কিছুটা হলেও প্রশান্তির খোঁজে।
দেড় লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত ১টি পৌরসভা সহ এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের সরকারের তালিকাভুক্ত ২৯৪ একর আয়তনের উল্লেখযোগ্য চরগুলোর মধ্যে চরবিবিচিনি (জমির পরিমাণ ৫৬ একর), ফুলতলা (জমির পরিমাণ ৬২ একর), ঝিল বুনিয়া (জমির পরিমাণ ১২ একর), কেওড়াবুনিয়া (জমির পরিমাণ ৯ একর), উত্তর ছোট মোকামিযা (জমির পরিমাণ ৪৫ একর), চরখালী (জমির পরিমাণ ২০ একর), ববদনী খালী চর (জমির পরিমাণ ২০ একর), কালিকাবাড়ির চর (জমির পরিমাণ ১০ একর) , ভোড়া গাবতলীর চর (৩৫ একর জমির পরিমাণ ) ও সর্বশেষ বিষখালীর নদীর মাঝে ২৫ একর আয়তনের জেগে ওঠা ‘ছোট ঝোপখালীর চর’। এসব চরের অধিকাংশই বেদখলে রয়েছে। তবে এসব চরের সমান ভূমিতে জনবসতি
গড়ে ওঠার পাশাপাশি এখানে চাষাবাদ, নতুন নতুন বনায়ন করতে পারলে নদীর ভাঙন কিছুটা রোধ পাবে। স্থানীয়দের দাবি এ জন্য প্রশাসনের উদ্যোগ জরুরি।
প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের জেলা সন্বয়কারী হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, ‘আমার গ্রামের বাড়ি ঘেষেই প্রচুর সম্ভবনাময় এ স্পটটি এখনো উন্মোচিত হয়নি। দেশ তো দুরের কথা এমনকি এলাকার মানুষের কাছেই অনেকটাই অজানা রয়েছে। তাই উন্মোচন জরুরি হয়ে পরেছে। এ জন্য উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসন সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী বলেন, পাখিদের আশ্রয়স্থল ঝোপখালী চরকে আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তুলতে উপজেলা প্রশাসন থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া অবৈধ দখলে থাকা খাস জমিগুলো উদ্ধার করে ভূমিহীনদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। ’
বেতাগী (বরগুনা): বরগুনার বেতাগী উপজেলার ছোপখালী চরে পাখির মিলন মেলাসহ বিভিন্ন মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য ।