আওয়ামী লীগ ফেরানোর খায়েশ ‘বিপজ্জনক’: আসিফ মাহমুদ ৫৩ বছরে জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টা হয়েছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ফেইসবুকে পোস্ট দেয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও দিয়েছেন। নতুন দল এনসিপির আরেক নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীও ওই বিষয়ে ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট দেন। তবে পরে নাসীর পাটওয়ারী তা মুছে ফেলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেইসবুকে পোস্টে অভিযোগ করেছেন, ‘ভারতের পরিকল্পনায়’ ‘রিফাইন্ড’ আওয়ামী লীগ নামে আওয়ামী লীগকে ‘পুনর্বাসিত’ করার ষড়যন্ত্র চলছে।শুক্রবার মধ্যরাতে ফেইসবুকে এক পোস্টে তিনি এই অভিযোগ তোলেন।
হাসনাতের এই পোস্টের পর সামাজিক মাধ্যমে বেশ শোরগোল শুরু হয়। পরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আওয়ামী নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভও হয়েছে।
এর আগে ২০ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের সঙ্গে বৈঠকে জানান, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো প্রক্রিয়া সরকারের নেই। মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘দলের যেসব নেতার বিরুদ্ধে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাদের বাংলাদেশের আদালতে বিচার করা হবে।’
যা বললেন হাসনাত
আর শুক্রবার হাসনাত আবদুল্লাহ তার পোস্টে লিখেছেন, “১১ই মার্চ, দুপুর ২:৩০। কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরীন শারমিন, তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।”
তিনি আরও লেখেন, “আমিসহ আরও দুইজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১১ই মার্চ দুপুর ২:৩০এ। আমাদেরকে প্রস্তাব দেয়া হয় আসন সমঝোতার বিনিময়ে আমরা যেন এই প্রস্তাব মেনে নিই। আমাদের বলা হয়, ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এই প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে। একটি বিরোধী দল থাকার চেয়ে একটি দুর্বল আওয়ামী লীগসহ একাধিক বিরোধী দল থাকা ভালো।
হাসনাত আবদুল্লাহর দাবি অনুযায়ী, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ যাদের দিয়ে করা হবে, তারা এপ্রিল-মে থেকে শেখ পরিবারের অপরাধ স্বীকার করবে, হাসিনাকে অস্বীকার করবে এবং তারা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করবে এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই প্রস্তাব দেয়া হলে আমরা তৎক্ষণাৎ এর বিরোধিতা করি এবং জানাই যে, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে কাজ করুন। এর উত্তরে আমাদের বলা হয়, আওয়ামী লীগকে ফিরতে কোনো ধরনের বাধা দিলে দেশে যে সংকট সৃষ্টি হবে, তার দায়ভার আমাদের নিতে হবে।’
‘আওয়ামী লীগ মাস্ট কাম ব্যাক’
হাসনাত আরও লিখেছেন, “আলোচনার এক পর্যায়ে আমি বলি, ‘যেই দল এখনও ক্ষমা চায় নাই, অপরাধ স্বীকার করে নাই, সেই দলকে আপনারা কীভাবে ক্ষমা করে দিবেন!’ অপরপক্ষ থেকে রেগে গিয়ে উত্তর আসে, ‘ইউ পিপল নো নাথিং।’ ইউ ল্যাক উইজডোম এন্ড এক্সপিরিয়েন্স। উই আর ইন দিজ সার্ভিস ফর এটলিস্ট ফোর্টি ইয়ার্স। তোমার বয়সের থেকে বেশি। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ছাড়া ‘ইনক্লুসিভ’ ইলেকশন হবে না।
তিনি দাবি করেন, ‘আমি উত্তরে বলি, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো ইনক্লুসিভিটি হতে পারে না। আওয়ামী লীগকে ফেরাতে হলে আমাদের লাশের ওপর দিয়ে ফেরাতে হবে। আওয়ামী লীগ ফেরানোর চেষ্টা করা হলে যে সংকট তৈরি হবে, তার দায়ভার আপনাদের নিতে হবে।’ পরে মিটিং অসমাপ্ত রেখেই আমাদের চলে আসতে হয়।’
হাসনাত আবদুল্লাহ জুলাই আন্দোলনের সময়ও ক্যান্টনমেন্ট ও এজেন্সির চাপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের দিনগুলোতে জনগণের স্রোতে ক্যান্টনমেন্ট আর এজেন্সির সকল প্রেসক্রিপশন আমরা উড়িয়ে দিয়েছিলাম। আজ আবারও যদি আপনাদের সমর্থন পাই, রাজপথে আপনাদের পাশে পাই তবে আবারও এই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের ভারতীয় ষড়যন্ত্রও আমরা উড়িয়ে দিতে পারবো।’
তিনি শেষে বলেন, ‘আসুন, সকল যদি কিন্তু পাশে রেখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারলে জুলাই ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আমাদের শহীদদের রক্ত আমরা বৃথা হতে দিবো না। ৫ আগস্টের পরের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কামব্যাকের আর কোনো সুযোগ নাই। বরং আওয়ামী লীগকে অবশ্যই নিষিদ্ধ হতেই হবে।’
আওয়ামী লীগ ফেরানোর খা?য়েশ ‘বিপজ্জনক’
শুক্রবার দুপুরে ফেইসবুকে এক পোস্টে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া মন্তব্য করেছেন, আওয়ামী লীগকে ফেরানোর খায়েশ ‘বিপজ্জনক’ ব?লে মন্তব্য করেছেন।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আমরা কবে থেকে জার্মানি, ইতালির থেকে বেশি ইনক্লুসিভ ডেমোক্র্যাটিক হয়ে গেলাম? গণহত্যার বছর না পেরোতেই আওয়ামী লীগকে ফেরানোর খায়েশ বিপজ্জনক।’ ওইদিন বিকেলে তিনি ফেইসবুকে
আরেক?টি পো?স্টে বলেন, ‘নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, অনিশ্চয়তা তৈরি হবে এসব শঙ্কার কথা বলে কেউ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে জনতার ঐক্যে ফাটল ধরাতে আসবেন না।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্পষ্টভাবে বারবার বলছেন, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হবে। আমি নিশ্চয়তা দিতে চাই, সরকার এই কথা রাখবে। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই।’
আসিফ মাহমুদ আরও দাবি করেন, ‘গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ শুধু জাতীয়ভাবে নয়, আন্তর্জাতিকভাবে ইউএন রিপোর্টের মাধ্যমেও স্বীকৃত।’
বিএনপি-জামায়াত নিয়ে যা বললেন নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী *
এনসিপির আরেক নেতা নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী ফেইসবুকে এক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘গত ৫৩ বছরে জামায়াতে ইসলামীকে বারংবার রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। জেনারেল জিয়ার হাত ধরেই এই অবৈধ কাজ সম্পন্ন হয়। সেনা-জনতার অভ্যুত্থানের ফসল লুটকারী জিয়া জনগণের অভিপ্রায় তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে এই অবৈধ শক্তিকে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়।’
’২৪-এর ছাত্র নাগরিকদের গণঅভ্যুত্থানকে ৫ আগস্ট ক্যান্টনমেন্টের সেই লুটেরা এবং তাদের জায়েজকৃত অবৈধ বাচ্চাদের হাতে তুলে দেয়ার প্রচেষ্টা চালায়। সেদিন ছাত্রদের ঐতিহাসিক ভূমিকার কারণে তারা পিছিয়ে আসে। কিন্তু তারা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখে’, উল্লেখ করেন তিনি।
‘বর্তমানে তারা (ক্যান্টনমেন্টের ষড়যন্ত্রকারীরা) দেশের ছাত্র নাগরিকদের গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করার অভিপ্রায়ে ২৪-এর খুনি হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে’ বলেও লেখেন তিনি।
তবে পরে তিনি ওই পোস্ট ডিলিট করেন।
নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী পোস্ট দেয়ার পরে সেই পোস্ট নিয়ে হাসনাত আর সারজিস ‘দ্বিমত’ পোষণ করেছেন। আর ওই দলের অনেকেই ওই পোস্টটি ডিলিট করতে বা মুছে দিতে পোস্ট দিয়েছেন।
নাসীরের স্ট্যাটাস নিয়ে যে মন্তব্য করলেন সারজিস-হাসনাত:
বিএনপি, জামায়াত ও ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তার স্ট্যাটাসের দ্বিমত জানিয়ে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ।
স্ট্যাটাসের মন্তব্যের ঘরে সারজিস আলম লেখেন, ‘আপনার বক্তব্যের এক অংশের সঙ্গে অন্য অংশ কনফ্লিক্ট করে। আর আপনার উদ্দেশ্য যদি এটা হয় যে, ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা আবার বাংলাদেশবিরোধী শক্তির সঙ্গে লড়াই করব, তবে আপনার বক্তব্য ঐক্যবদ্ধ করার চেয়ে ঐক্য বিনষ্ট করতে বেশি সহযোগিতা করবে।’
সেই স্ট্যাটাসের সঙ্গে ‘দ্বিমত’ জানিয়ে মন্তব্যের ঘরে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, ‘দ্বিমত জানাই রাখলাম।’
আওয়ামী লীগ ফেরানোর খায়েশ ‘বিপজ্জনক’: আসিফ মাহমুদ ৫৩ বছরে জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টা হয়েছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ফেইসবুকে পোস্ট দেয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও দিয়েছেন। নতুন দল এনসিপির আরেক নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীও ওই বিষয়ে ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট দেন। তবে পরে নাসীর পাটওয়ারী তা মুছে ফেলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেইসবুকে পোস্টে অভিযোগ করেছেন, ‘ভারতের পরিকল্পনায়’ ‘রিফাইন্ড’ আওয়ামী লীগ নামে আওয়ামী লীগকে ‘পুনর্বাসিত’ করার ষড়যন্ত্র চলছে।শুক্রবার মধ্যরাতে ফেইসবুকে এক পোস্টে তিনি এই অভিযোগ তোলেন।
হাসনাতের এই পোস্টের পর সামাজিক মাধ্যমে বেশ শোরগোল শুরু হয়। পরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আওয়ামী নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভও হয়েছে।
এর আগে ২০ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের সঙ্গে বৈঠকে জানান, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো প্রক্রিয়া সরকারের নেই। মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘দলের যেসব নেতার বিরুদ্ধে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাদের বাংলাদেশের আদালতে বিচার করা হবে।’
যা বললেন হাসনাত
আর শুক্রবার হাসনাত আবদুল্লাহ তার পোস্টে লিখেছেন, “১১ই মার্চ, দুপুর ২:৩০। কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরীন শারমিন, তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।”
তিনি আরও লেখেন, “আমিসহ আরও দুইজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১১ই মার্চ দুপুর ২:৩০এ। আমাদেরকে প্রস্তাব দেয়া হয় আসন সমঝোতার বিনিময়ে আমরা যেন এই প্রস্তাব মেনে নিই। আমাদের বলা হয়, ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এই প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে। একটি বিরোধী দল থাকার চেয়ে একটি দুর্বল আওয়ামী লীগসহ একাধিক বিরোধী দল থাকা ভালো।
হাসনাত আবদুল্লাহর দাবি অনুযায়ী, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ যাদের দিয়ে করা হবে, তারা এপ্রিল-মে থেকে শেখ পরিবারের অপরাধ স্বীকার করবে, হাসিনাকে অস্বীকার করবে এবং তারা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করবে এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই প্রস্তাব দেয়া হলে আমরা তৎক্ষণাৎ এর বিরোধিতা করি এবং জানাই যে, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে কাজ করুন। এর উত্তরে আমাদের বলা হয়, আওয়ামী লীগকে ফিরতে কোনো ধরনের বাধা দিলে দেশে যে সংকট সৃষ্টি হবে, তার দায়ভার আমাদের নিতে হবে।’
‘আওয়ামী লীগ মাস্ট কাম ব্যাক’
হাসনাত আরও লিখেছেন, “আলোচনার এক পর্যায়ে আমি বলি, ‘যেই দল এখনও ক্ষমা চায় নাই, অপরাধ স্বীকার করে নাই, সেই দলকে আপনারা কীভাবে ক্ষমা করে দিবেন!’ অপরপক্ষ থেকে রেগে গিয়ে উত্তর আসে, ‘ইউ পিপল নো নাথিং।’ ইউ ল্যাক উইজডোম এন্ড এক্সপিরিয়েন্স। উই আর ইন দিজ সার্ভিস ফর এটলিস্ট ফোর্টি ইয়ার্স। তোমার বয়সের থেকে বেশি। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ছাড়া ‘ইনক্লুসিভ’ ইলেকশন হবে না।
তিনি দাবি করেন, ‘আমি উত্তরে বলি, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো ইনক্লুসিভিটি হতে পারে না। আওয়ামী লীগকে ফেরাতে হলে আমাদের লাশের ওপর দিয়ে ফেরাতে হবে। আওয়ামী লীগ ফেরানোর চেষ্টা করা হলে যে সংকট তৈরি হবে, তার দায়ভার আপনাদের নিতে হবে।’ পরে মিটিং অসমাপ্ত রেখেই আমাদের চলে আসতে হয়।’
হাসনাত আবদুল্লাহ জুলাই আন্দোলনের সময়ও ক্যান্টনমেন্ট ও এজেন্সির চাপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের দিনগুলোতে জনগণের স্রোতে ক্যান্টনমেন্ট আর এজেন্সির সকল প্রেসক্রিপশন আমরা উড়িয়ে দিয়েছিলাম। আজ আবারও যদি আপনাদের সমর্থন পাই, রাজপথে আপনাদের পাশে পাই তবে আবারও এই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের ভারতীয় ষড়যন্ত্রও আমরা উড়িয়ে দিতে পারবো।’
তিনি শেষে বলেন, ‘আসুন, সকল যদি কিন্তু পাশে রেখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারলে জুলাই ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আমাদের শহীদদের রক্ত আমরা বৃথা হতে দিবো না। ৫ আগস্টের পরের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কামব্যাকের আর কোনো সুযোগ নাই। বরং আওয়ামী লীগকে অবশ্যই নিষিদ্ধ হতেই হবে।’
আওয়ামী লীগ ফেরানোর খা?য়েশ ‘বিপজ্জনক’
শুক্রবার দুপুরে ফেইসবুকে এক পোস্টে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া মন্তব্য করেছেন, আওয়ামী লীগকে ফেরানোর খায়েশ ‘বিপজ্জনক’ ব?লে মন্তব্য করেছেন।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আমরা কবে থেকে জার্মানি, ইতালির থেকে বেশি ইনক্লুসিভ ডেমোক্র্যাটিক হয়ে গেলাম? গণহত্যার বছর না পেরোতেই আওয়ামী লীগকে ফেরানোর খায়েশ বিপজ্জনক।’ ওইদিন বিকেলে তিনি ফেইসবুকে
আরেক?টি পো?স্টে বলেন, ‘নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, অনিশ্চয়তা তৈরি হবে এসব শঙ্কার কথা বলে কেউ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে জনতার ঐক্যে ফাটল ধরাতে আসবেন না।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্পষ্টভাবে বারবার বলছেন, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হবে। আমি নিশ্চয়তা দিতে চাই, সরকার এই কথা রাখবে। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই।’
আসিফ মাহমুদ আরও দাবি করেন, ‘গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ শুধু জাতীয়ভাবে নয়, আন্তর্জাতিকভাবে ইউএন রিপোর্টের মাধ্যমেও স্বীকৃত।’
বিএনপি-জামায়াত নিয়ে যা বললেন নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী *
এনসিপির আরেক নেতা নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী ফেইসবুকে এক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘গত ৫৩ বছরে জামায়াতে ইসলামীকে বারংবার রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। জেনারেল জিয়ার হাত ধরেই এই অবৈধ কাজ সম্পন্ন হয়। সেনা-জনতার অভ্যুত্থানের ফসল লুটকারী জিয়া জনগণের অভিপ্রায় তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে এই অবৈধ শক্তিকে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়।’
’২৪-এর ছাত্র নাগরিকদের গণঅভ্যুত্থানকে ৫ আগস্ট ক্যান্টনমেন্টের সেই লুটেরা এবং তাদের জায়েজকৃত অবৈধ বাচ্চাদের হাতে তুলে দেয়ার প্রচেষ্টা চালায়। সেদিন ছাত্রদের ঐতিহাসিক ভূমিকার কারণে তারা পিছিয়ে আসে। কিন্তু তারা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখে’, উল্লেখ করেন তিনি।
‘বর্তমানে তারা (ক্যান্টনমেন্টের ষড়যন্ত্রকারীরা) দেশের ছাত্র নাগরিকদের গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করার অভিপ্রায়ে ২৪-এর খুনি হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে’ বলেও লেখেন তিনি।
তবে পরে তিনি ওই পোস্ট ডিলিট করেন।
নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী পোস্ট দেয়ার পরে সেই পোস্ট নিয়ে হাসনাত আর সারজিস ‘দ্বিমত’ পোষণ করেছেন। আর ওই দলের অনেকেই ওই পোস্টটি ডিলিট করতে বা মুছে দিতে পোস্ট দিয়েছেন।
নাসীরের স্ট্যাটাস নিয়ে যে মন্তব্য করলেন সারজিস-হাসনাত:
বিএনপি, জামায়াত ও ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তার স্ট্যাটাসের দ্বিমত জানিয়ে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ।
স্ট্যাটাসের মন্তব্যের ঘরে সারজিস আলম লেখেন, ‘আপনার বক্তব্যের এক অংশের সঙ্গে অন্য অংশ কনফ্লিক্ট করে। আর আপনার উদ্দেশ্য যদি এটা হয় যে, ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা আবার বাংলাদেশবিরোধী শক্তির সঙ্গে লড়াই করব, তবে আপনার বক্তব্য ঐক্যবদ্ধ করার চেয়ে ঐক্য বিনষ্ট করতে বেশি সহযোগিতা করবে।’
সেই স্ট্যাটাসের সঙ্গে ‘দ্বিমত’ জানিয়ে মন্তব্যের ঘরে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, ‘দ্বিমত জানাই রাখলাম।’