সাংবাদিকদের সুরক্ষা, গণমাধ্যমে মালিকানা, ন্যূনতম বেতন, এবং শিক্ষানবিশকালসহ ২০টি সুপারিশ করেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন।
শনিবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদের নেতৃত্বে অন্যান্য সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।
গণমাধ্যম সুরক্ষা এবং সাংবাদিকদের জন্য আইন প্রণয়ন
কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ জানিয়েছেন, “সাংবাদিকদের নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে থাকে এবং সেসব থেকে সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।” কমিশন সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছে।
মালিকানা সংস্কার: পাবলিক লিস্টেড কোম্পানির প্রস্তাব
কমিশন সাংবাদিকদের মালিকানার বিষয়ে সুপারিশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, বড় এবং মধ্যম আকারের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা উচিত। কামাল আহমেদ বলেন, “গণমাধ্যমের মালিকানা একক হাতে কেন্দ্রীভূত থাকলে সেটি ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহৃত হয়। পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি হলে জনগণের স্বার্থ বেশি প্রতিফলিত হবে।”
সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন স্কেল
কমিশন সাংবাদিকদের জন্য সরকারি প্রথম শ্রেণির (নবম গ্রেড) ন্যূনতম বেতন স্কেল প্রস্তাব করেছে। কামাল আহমেদ জানান, “এটি সাংবাদিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করবে এবং পেশাগত মান উন্নয়ন করবে।”
শিক্ষানবিশকাল: সাংবাদিকদের জন্য এক বছরের প্রশিক্ষণ
কমিশন সুপারিশ করেছে, সাংবাদিকদের জন্য এক বছরের শিক্ষানবিশকাল রাখা উচিত, যাতে তারা পেশাগতভাবে প্রস্তুত হতে পারেন। এর মাধ্যমে সাংবাদিকরা উন্নত প্রশিক্ষণ পাবেন এবং পেশাগত দক্ষতা অর্জন করবেন।
গণমাধ্যমের সংকট এবং সংকট মোকাবিলায় সুপারিশ
কমিশন তাদের প্রতিবেদনে গণমাধ্যমের সংকটের কারণগুলো চিহ্নিত করে এবং সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের সুপারিশ করেছে। কামাল আহমেদ বলেন, “গণমাধ্যম দীর্ঘদিন ধরে সংকটের মধ্যে ছিল, যা তাদের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করেছে। কমিশন সেই সংকট সমাধানে সুপারিশ করেছে।”
সরকারের নির্বাহী আদেশে সুপারিশ বাস্তবায়ন সম্ভব
কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ জানিয়েছেন, অনেক সুপারিশ সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নযোগ্য। তিনি বলেন, “এই সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত হলে সাংবাদিকদের কাজের পরিবেশ উন্নত হবে এবং গণমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠতা ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে।”
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে ৯ সদস্য ছিলেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, দ্য ফিন্যানসিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সচিব আখতার হোসেন খান, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন ওনার্সের (অ্যাটকো) প্রতিনিধি সৈয়দ আবদাল আহমেদ, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী ফাহিম আহমেদ, মিডিয়া সাপোর্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক জিমি আমির, দ্য ডেইলি স্টারের বগুড়া জেলা প্রতিনিধি মোস্তফা সবুজ এবং দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর টিটু দত্ত গুপ্ত অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে একাধিক সংস্কার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর মধ্যে অক্টোবরে রাষ্ট্রের ছয়টি খাত—সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ সংস্কার এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কারের জন্য কমিশন গঠন করা হয়। তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হয়, এবং জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ৫ ফেব্রুয়ারি জমা হয়।
নভেম্বরের ১৮ তারিখে দ্বিতীয় ধাপে গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী বিষয়ক এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এর মধ্যে ‘স্থানীয় সরকার সংস্কার’ কমিশনের প্রতিবেদন ২২ ফেব্রুয়ারি জমা পড়েছে, এবং এখন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হল।
শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
সাংবাদিকদের সুরক্ষা, গণমাধ্যমে মালিকানা, ন্যূনতম বেতন, এবং শিক্ষানবিশকালসহ ২০টি সুপারিশ করেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন।
শনিবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদের নেতৃত্বে অন্যান্য সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।
গণমাধ্যম সুরক্ষা এবং সাংবাদিকদের জন্য আইন প্রণয়ন
কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ জানিয়েছেন, “সাংবাদিকদের নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে থাকে এবং সেসব থেকে সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।” কমিশন সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছে।
মালিকানা সংস্কার: পাবলিক লিস্টেড কোম্পানির প্রস্তাব
কমিশন সাংবাদিকদের মালিকানার বিষয়ে সুপারিশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, বড় এবং মধ্যম আকারের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা উচিত। কামাল আহমেদ বলেন, “গণমাধ্যমের মালিকানা একক হাতে কেন্দ্রীভূত থাকলে সেটি ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহৃত হয়। পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি হলে জনগণের স্বার্থ বেশি প্রতিফলিত হবে।”
সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন স্কেল
কমিশন সাংবাদিকদের জন্য সরকারি প্রথম শ্রেণির (নবম গ্রেড) ন্যূনতম বেতন স্কেল প্রস্তাব করেছে। কামাল আহমেদ জানান, “এটি সাংবাদিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করবে এবং পেশাগত মান উন্নয়ন করবে।”
শিক্ষানবিশকাল: সাংবাদিকদের জন্য এক বছরের প্রশিক্ষণ
কমিশন সুপারিশ করেছে, সাংবাদিকদের জন্য এক বছরের শিক্ষানবিশকাল রাখা উচিত, যাতে তারা পেশাগতভাবে প্রস্তুত হতে পারেন। এর মাধ্যমে সাংবাদিকরা উন্নত প্রশিক্ষণ পাবেন এবং পেশাগত দক্ষতা অর্জন করবেন।
গণমাধ্যমের সংকট এবং সংকট মোকাবিলায় সুপারিশ
কমিশন তাদের প্রতিবেদনে গণমাধ্যমের সংকটের কারণগুলো চিহ্নিত করে এবং সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের সুপারিশ করেছে। কামাল আহমেদ বলেন, “গণমাধ্যম দীর্ঘদিন ধরে সংকটের মধ্যে ছিল, যা তাদের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করেছে। কমিশন সেই সংকট সমাধানে সুপারিশ করেছে।”
সরকারের নির্বাহী আদেশে সুপারিশ বাস্তবায়ন সম্ভব
কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ জানিয়েছেন, অনেক সুপারিশ সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নযোগ্য। তিনি বলেন, “এই সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত হলে সাংবাদিকদের কাজের পরিবেশ উন্নত হবে এবং গণমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠতা ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে।”
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে ৯ সদস্য ছিলেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, দ্য ফিন্যানসিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সচিব আখতার হোসেন খান, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন ওনার্সের (অ্যাটকো) প্রতিনিধি সৈয়দ আবদাল আহমেদ, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী ফাহিম আহমেদ, মিডিয়া সাপোর্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক জিমি আমির, দ্য ডেইলি স্টারের বগুড়া জেলা প্রতিনিধি মোস্তফা সবুজ এবং দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর টিটু দত্ত গুপ্ত অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে একাধিক সংস্কার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর মধ্যে অক্টোবরে রাষ্ট্রের ছয়টি খাত—সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ সংস্কার এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কারের জন্য কমিশন গঠন করা হয়। তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হয়, এবং জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ৫ ফেব্রুয়ারি জমা হয়।
নভেম্বরের ১৮ তারিখে দ্বিতীয় ধাপে গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী বিষয়ক এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এর মধ্যে ‘স্থানীয় সরকার সংস্কার’ কমিশনের প্রতিবেদন ২২ ফেব্রুয়ারি জমা পড়েছে, এবং এখন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হল।