সামনে ঈদ। রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে চলছে কেনাকাটার ধুম। ফুটপাতেও উপচেপড়া ভিড়। ছবিটি নিউমার্কেট এলাকার -সংবাদ
খাবারের নামে বিষ কিনে খাচ্ছি কিনা তা ভেবে দেখতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমএউ) প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে এক আলোচনায় তিনি এই কথা বলেন।
শনিবার বিএমইউর মিডিয়া শাখা থেকে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খাদ্যের মোড়কে ফ্রন্ট প্যাকেটে লেবেলিং নিশ্চিত জরুরি। লবণ, ট্রান্সফ্যাট হলো হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ক্যান্সারের অন্যতম কারণ।
অতিরিক্ত চিনি, লবণ, ট্রান্সফ্যাট হলো অসংক্রমণ রোগের অন্যতম কারণ। এসডিজির লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে অসংক্রমণ রোগজনিত মৃত্যু ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনতে হবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার খাদ্যের ফ্রন্ট প্যাকেটে লেবেলিং-এ চিনি, লবণ, ট্রান্সফ্যাট পরিমাণ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। মোড়কজাত খাদ্যে ফ্রন্ট প্যাকেটে লেবেলিংসংক্রান্ত তথ্য, অসংক্রামক রোগ কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে।
সে লক্ষ্য পূরণে শুক্রবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনফারেন্স হলে বিএমইউ ও সেন্টার ফর ল অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্স-সিএলসিএ যৌথভাবে আয়োজিত স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মোড়কজাত খাদ্যের উপাদানসংক্রান্ত তথ্য নিশ্চিত এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ওই সভায় জনস্বাস্থ্য এবং ভোক্তার অধিকার রক্ষায় ফ্রন্ট প্যাকেটে লেবেলিংসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়।
সভায় অন্য বক্তারা বলেছেন, দ্রব্যের মোড়কে চিনি, লবণ, স্যাচুরেটেড ফ্যাট ইত্যাদির মাত্রা সুস্পষ্টভাবে লেখার ব্যবস্থা থাকা জরুরি। যাতে নিরক্ষর ক্রেতারাও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্য চিহ্নিত করতে পারে। খাদ্যে কোন দ্রব্যের মাত্রা কতটুকু হবে, কীভাবে হবে এবং কোনো কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনুমোদন ও বাস্তবায়নে নিয়মিত মনিটরিং, সমন্বয় এবং প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় সেন্টার ফর ল অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্সের প্যাকেজিং এবং লেবেলিংবিষয়ক গবেষণায় দেখা যায়, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় এবং চিপসে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সতর্কবাণী নেই। প্যাকেটে মোটিভেশনাল বিভিন্ন শব্দের উপস্থিতি রয়েছে।
মার্কেটিংসংক্রান্ত তথ্যে দেখা যায়, প্রায় শতভাগ দোকানে চিপস এবং অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয়ের বিজ্ঞাপন রয়েছে। শতকরা ৭০ ভাগ দোকানি অতিরিক্ত বিক্রির জন্য কমিশন পায়। ৫২ শতাংশ দোকানে ব্র্যান্ডের ফ্রিজ এবং ৩৬ শতাংশ দোকানে সাইনবোর্ড রয়েছে।
প্রো-ভিসি ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা জরুরি। আমাদের দেশে রোগ বাড়ছে। তাই রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তায় নিশ্চিতে সচেতনতার পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সভায় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ্ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আতিকুর হক সভাপতিত্বে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ সভায় বক্তব্য দেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী বলেন, সরকার মোড়কজাত খাবারে চিনি, লবণ ট্রান্সফ্যাটবিষয়ক তথ্য যুক্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেকুজ্জামান রুমেল বলেন, গবেষণায় পাওয়া গেছে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত কিছু পানীয়তে দাঁতের ক্ষতি হয় এমন সব উপাদান পাওয়া গেছে।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য ড. মোহাম্মদ সোয়েব বলেন, নিরাপদ খাদ্য আইন একটি শক্তিশালী আইন। এ আইনের আলোকে মোড়কজাত প্রবিধানমালা করা হয়েছে। তবে আমাদের গবেষণায় দেখা যায়, অনেক ব্যবসায়ী এ বিধিমালা মেনে চলছেন না।
ফ্রন্ট প্যাকেটে লেবেলিং করার বিষয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সংবিধানে জনস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য মানুষের মৌলিক অধিকার।
সামনে ঈদ। রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে চলছে কেনাকাটার ধুম। ফুটপাতেও উপচেপড়া ভিড়। ছবিটি নিউমার্কেট এলাকার -সংবাদ
শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
খাবারের নামে বিষ কিনে খাচ্ছি কিনা তা ভেবে দেখতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমএউ) প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে এক আলোচনায় তিনি এই কথা বলেন।
শনিবার বিএমইউর মিডিয়া শাখা থেকে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খাদ্যের মোড়কে ফ্রন্ট প্যাকেটে লেবেলিং নিশ্চিত জরুরি। লবণ, ট্রান্সফ্যাট হলো হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ক্যান্সারের অন্যতম কারণ।
অতিরিক্ত চিনি, লবণ, ট্রান্সফ্যাট হলো অসংক্রমণ রোগের অন্যতম কারণ। এসডিজির লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে অসংক্রমণ রোগজনিত মৃত্যু ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনতে হবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার খাদ্যের ফ্রন্ট প্যাকেটে লেবেলিং-এ চিনি, লবণ, ট্রান্সফ্যাট পরিমাণ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। মোড়কজাত খাদ্যে ফ্রন্ট প্যাকেটে লেবেলিংসংক্রান্ত তথ্য, অসংক্রামক রোগ কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে।
সে লক্ষ্য পূরণে শুক্রবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনফারেন্স হলে বিএমইউ ও সেন্টার ফর ল অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্স-সিএলসিএ যৌথভাবে আয়োজিত স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মোড়কজাত খাদ্যের উপাদানসংক্রান্ত তথ্য নিশ্চিত এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ওই সভায় জনস্বাস্থ্য এবং ভোক্তার অধিকার রক্ষায় ফ্রন্ট প্যাকেটে লেবেলিংসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়।
সভায় অন্য বক্তারা বলেছেন, দ্রব্যের মোড়কে চিনি, লবণ, স্যাচুরেটেড ফ্যাট ইত্যাদির মাত্রা সুস্পষ্টভাবে লেখার ব্যবস্থা থাকা জরুরি। যাতে নিরক্ষর ক্রেতারাও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্য চিহ্নিত করতে পারে। খাদ্যে কোন দ্রব্যের মাত্রা কতটুকু হবে, কীভাবে হবে এবং কোনো কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনুমোদন ও বাস্তবায়নে নিয়মিত মনিটরিং, সমন্বয় এবং প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় সেন্টার ফর ল অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্সের প্যাকেজিং এবং লেবেলিংবিষয়ক গবেষণায় দেখা যায়, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় এবং চিপসে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সতর্কবাণী নেই। প্যাকেটে মোটিভেশনাল বিভিন্ন শব্দের উপস্থিতি রয়েছে।
মার্কেটিংসংক্রান্ত তথ্যে দেখা যায়, প্রায় শতভাগ দোকানে চিপস এবং অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয়ের বিজ্ঞাপন রয়েছে। শতকরা ৭০ ভাগ দোকানি অতিরিক্ত বিক্রির জন্য কমিশন পায়। ৫২ শতাংশ দোকানে ব্র্যান্ডের ফ্রিজ এবং ৩৬ শতাংশ দোকানে সাইনবোর্ড রয়েছে।
প্রো-ভিসি ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা জরুরি। আমাদের দেশে রোগ বাড়ছে। তাই রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তায় নিশ্চিতে সচেতনতার পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সভায় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ্ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আতিকুর হক সভাপতিত্বে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ সভায় বক্তব্য দেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী বলেন, সরকার মোড়কজাত খাবারে চিনি, লবণ ট্রান্সফ্যাটবিষয়ক তথ্য যুক্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেকুজ্জামান রুমেল বলেন, গবেষণায় পাওয়া গেছে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত কিছু পানীয়তে দাঁতের ক্ষতি হয় এমন সব উপাদান পাওয়া গেছে।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য ড. মোহাম্মদ সোয়েব বলেন, নিরাপদ খাদ্য আইন একটি শক্তিশালী আইন। এ আইনের আলোকে মোড়কজাত প্রবিধানমালা করা হয়েছে। তবে আমাদের গবেষণায় দেখা যায়, অনেক ব্যবসায়ী এ বিধিমালা মেনে চলছেন না।
ফ্রন্ট প্যাকেটে লেবেলিং করার বিষয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সংবিধানে জনস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য মানুষের মৌলিক অধিকার।