দুই ‘শহীদের’ নামে দুই ঘাটের নামকরণের প্রস্তাব এম সাখাওয়াত হোসেনের সামুদ্রিক ফেরি চালুর মূল কৃতিত্ব আমাদের প্রধান উপদেষ্টার: ফাওজুল কবির খান
বিগত ৫০ বছরে চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে যাতায়াতের জন্য নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে না ওঠাকে ‘লজ্জার’ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
সমবার সন্দ্বীপে ফেরি উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘সন্দ্বীপের মানুষ এতদিন কাদা মাড়িয়ে ডিঙি নৌকায় আর বোটে করে কেন সমুদ্র পারাপার করতে হবে? সন্দ্বীপ দেশের অন্যতম উপকূলীয় দ্বীপ। কিন্তু ৫০ বছরের মধ্যেও কেন নিরাপদ যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি, কী লজ্জার কথা! সন্দ্বীপের সঙ্গে আজ নিরাপদ যোগাযোগ স্থাপিত হলো। কেন এতদিন হয়নি, সেটা লজ্জার। এ লজ্জা থেকে বাঁচলাম। কলঙ্ক থেকে আজ মুক্ত হলাম।’
দুপুরে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর আগে সকাল ৯টায় সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া থেকে সমুদ্রপথের প্রথম ফেরি ছেড়ে যায় সন্দ্বীপের গুপ্তছড়ার উদ্দেশে। এক ঘণ্টার যাত্রায় ফেরিটি দ্বীপে পৌঁছালে ফেরিঘাটে হাজারখানেক মানুষ একে স্বাগত জানায়।
‘শুধু সন্দ্বীপের জন্য না পুরো চট্টগ্রামের জন্য আজ আনন্দের দিন’ মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বাধীনতার মাসে আপনাদের এ সুখবর দিতে পেরে আমি আনন্দিত। সন্দ্বীপের এ অগ্রযাত্রা আজ শুরু হলো, আরও সুন্দর হবে। এভাবে সব অঞ্চলের সুষম উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে এটাই প্রত্যাশা।’
তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে সন্দ্বীপের প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। সন্দ্বীপে ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ায় এখন থেকে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সবাই নিরাপত্তার সাথে সাগর পারাপার হতে পারবে।’
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সন্দ্বীপকে নৌবন্দর ঘোষণা, কুমিরা ও গুপ্তছড়া ঘাট উন্মুক্ত, ঢাকা-কুমিরা বাস চালু, ফেরিঘাট এলাকায় সড়ক নির্মাণ এবং নৌপথ নিয়মিত ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে সন্দ্বীপবাসীর দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমে আসবে বলে সরকার প্রধান প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
দুই ঘাটের নামকরণ
সমাবেশে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘দুটি ঘাটের নাম কাল থেকে জুলাই আন্দোলনে সন্দ্বীপের শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকত ও সাইমুন হোসেন মাহিনের নামে নামকরণের প্রস্তাব
করছি। বাংলাদেশের কোনো উন্নয়নই ফলপ্রসূ হবে না যদি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ উন্নত না হয়। এখানে ফেরি চলাচলের আগে নৌঘাট দখলমুক্ত করতে হয়েছে। সমুদ্র উপকূল হওয়ায় ফেরি চালু করা দুরূহ ছিল।’
সামুদ্রিক ফেরি
সন্দ্বীপের সন্তান সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘এই ফেরি চালুর মূল কৃতিত্ব আমাদের প্রধান উপদেষ্টার। গত আগস্টে প্রথম উনাকে মহিলাদের কাদা মাটি পেরিয়ে পারাপারের কথা বলি। তিনি বলেন, এটা হতে পারে না। অবশ্যই সমাধান করতে হবে। এটি একটি দুরূহ প্রকল্প কারণ বাংলাদেশে সামুদ্রিক ফেরি চলাচলের অভিজ্ঞতা নেই।”
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা।
দুই ‘শহীদের’ নামে দুই ঘাটের নামকরণের প্রস্তাব এম সাখাওয়াত হোসেনের সামুদ্রিক ফেরি চালুর মূল কৃতিত্ব আমাদের প্রধান উপদেষ্টার: ফাওজুল কবির খান
সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
বিগত ৫০ বছরে চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে যাতায়াতের জন্য নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে না ওঠাকে ‘লজ্জার’ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
সমবার সন্দ্বীপে ফেরি উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘সন্দ্বীপের মানুষ এতদিন কাদা মাড়িয়ে ডিঙি নৌকায় আর বোটে করে কেন সমুদ্র পারাপার করতে হবে? সন্দ্বীপ দেশের অন্যতম উপকূলীয় দ্বীপ। কিন্তু ৫০ বছরের মধ্যেও কেন নিরাপদ যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি, কী লজ্জার কথা! সন্দ্বীপের সঙ্গে আজ নিরাপদ যোগাযোগ স্থাপিত হলো। কেন এতদিন হয়নি, সেটা লজ্জার। এ লজ্জা থেকে বাঁচলাম। কলঙ্ক থেকে আজ মুক্ত হলাম।’
দুপুরে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর আগে সকাল ৯টায় সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া থেকে সমুদ্রপথের প্রথম ফেরি ছেড়ে যায় সন্দ্বীপের গুপ্তছড়ার উদ্দেশে। এক ঘণ্টার যাত্রায় ফেরিটি দ্বীপে পৌঁছালে ফেরিঘাটে হাজারখানেক মানুষ একে স্বাগত জানায়।
‘শুধু সন্দ্বীপের জন্য না পুরো চট্টগ্রামের জন্য আজ আনন্দের দিন’ মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বাধীনতার মাসে আপনাদের এ সুখবর দিতে পেরে আমি আনন্দিত। সন্দ্বীপের এ অগ্রযাত্রা আজ শুরু হলো, আরও সুন্দর হবে। এভাবে সব অঞ্চলের সুষম উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে এটাই প্রত্যাশা।’
তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে সন্দ্বীপের প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। সন্দ্বীপে ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ায় এখন থেকে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সবাই নিরাপত্তার সাথে সাগর পারাপার হতে পারবে।’
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সন্দ্বীপকে নৌবন্দর ঘোষণা, কুমিরা ও গুপ্তছড়া ঘাট উন্মুক্ত, ঢাকা-কুমিরা বাস চালু, ফেরিঘাট এলাকায় সড়ক নির্মাণ এবং নৌপথ নিয়মিত ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে সন্দ্বীপবাসীর দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমে আসবে বলে সরকার প্রধান প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
দুই ঘাটের নামকরণ
সমাবেশে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘দুটি ঘাটের নাম কাল থেকে জুলাই আন্দোলনে সন্দ্বীপের শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকত ও সাইমুন হোসেন মাহিনের নামে নামকরণের প্রস্তাব
করছি। বাংলাদেশের কোনো উন্নয়নই ফলপ্রসূ হবে না যদি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ উন্নত না হয়। এখানে ফেরি চলাচলের আগে নৌঘাট দখলমুক্ত করতে হয়েছে। সমুদ্র উপকূল হওয়ায় ফেরি চালু করা দুরূহ ছিল।’
সামুদ্রিক ফেরি
সন্দ্বীপের সন্তান সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘এই ফেরি চালুর মূল কৃতিত্ব আমাদের প্রধান উপদেষ্টার। গত আগস্টে প্রথম উনাকে মহিলাদের কাদা মাটি পেরিয়ে পারাপারের কথা বলি। তিনি বলেন, এটা হতে পারে না। অবশ্যই সমাধান করতে হবে। এটি একটি দুরূহ প্রকল্প কারণ বাংলাদেশে সামুদ্রিক ফেরি চলাচলের অভিজ্ঞতা নেই।”
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা।