alt

জাতীয়

অনন্তলোকে সন্জীদা খাতুন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

‘অল্পে তুষ্ট সহজ সরল জীবনের এই সার্থকতায় আমি ধন্য হয়েছি’ ২০২৩ সালের জন্মবার্ষিকীর দিনে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন সন্জীদা খাতুন

বাঙালি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সভাপতি সন্জীদা খাতুন আর নেই। ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকাল ৩টার পর তার মৃত্যু হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তার ছেলে পার্থ তানভীর নভেদ জানিয়েছেন আজ বেলা সাড়ে ১২টায় ছায়ানটে তার শেষ দেখা মিলবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতীয় অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেনের মেয়ে সন্জীদা খাতুনের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল। তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।

জীবনের ৯২ বছর পূর্ণ করার মাত্র দশ দিন আগে তিনি বিদায় নিলেন। সন?জীদা খাতুন এমন এক সময়ে চলে গেলেন, যখন বাঙালির চিরায়ত উৎসব হয়ে ওঠা পহেলা বৈশাখের বাকি আর মাত্র তিন সপ্তাহ। রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ উৎসবে আর কখনো তাকে দেখা যাবে না।

সন?জীদা খাতুন পড়েছেন কামরুন্নেসা স্কুল, ইডেন কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শান্তি নিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করে ১৯৭৮ সালে সেখান থেকেই পিএইচডি করেন। দীর্ঘদিন অধ্যাপনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে তিনি অবসর নেন।

সন্জীদা খাতুনের লেখার একটি বড় অংশ জুড়ে আছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ব্যাপক পরিসরে জনমানসে কবিগুরুকে পৌঁছে দেয়ার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় শুদ্ধ সংগীতের চর্চার পাশাপাশি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় ছিলেন সন্জীদা খাতুন, তখন সহযোদ্ধাদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘মিনু আপা’ নামে।

গবেষক মফিদুল হকের ভাষায়, ‘সন্জীদা আপার জীবন পরিক্রমা আর বাংলাদেশের জাতীয় জাগরণ হাতে হাত ধরে চলেছে। সত্যিকার অর্থে একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে।’

‘সন্জীদা আপা এক বিস্ময় জাগানিয়া ব্যক্তিত্ব‘ মন্তব্য করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মুফিদুল হক বলেন, ‘এমন কথা খুব বেশি মানুষের ক্ষেত্রে বলা যায় না, কিন্তু তার সম্পর্কে উচ্চকণ্ঠে বলা যায়।’

গত শতকের ষাটের দশকের শুরুর দিকে বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি নিবেদিত প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সন্জীদা খাতুন। তার তত্ত্বাবধানে ছায়ানট এখন বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান, যা শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও নৃত্যের প্রসারে কাজ করছে।

ছায়ানটের পাশাপাশি জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদেরও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। প্রচলিত ধারার বাইরে ভিন্নধর্মী শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নালন্দার সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। এশিয়াটিক সোসাইটির সাম্মানিক ফেলোও ছিলেন তিনি।

একাধারে শিল্পী, লেখক, গবেষক, সংগঠক, সংগীতজ্ঞ ও শিক্ষক সন্জীদা খাতুন ভারত সরকারের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন।

একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কারে (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত) ভূষিত সন্জীদা ১৬টি বই লিখেছেন।

‘সাংস্কৃতিক মুক্তিসংগ্রাম’ বইটি তার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, বাঙালির সাংস্কৃতিক সংগ্রামের প্রামাণ্য ইতিবৃত্ত এবং মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক তার একান্ত ভাবনাগুচ্ছ ধারণ করেছে।

দুই খ-ের ‘আমার রবীন্দ্রনাথ’ ধারণ করেছে সন্জীদা খাতুনের রবীন্দ্রযাপন, বাঙালি জীবন, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে রবীন্দ্রনাথের অবদান, রবীন্দ্রকবিতা, রবীন্দ্রসংগীত এবং রবীন্দ্রভাবনার দশ দিগন্ত নিয়ে নানা স্বাদের রচনা? একই সঙ্গে শান্তিনিকেতন, শিলাইদহ, পতিসরসহ বিভিন্ন রবীন্দ্রতীর্থ নিয়ে লেখকের স্মৃতি ও অবলোকনও স্থান পেয়েছে ‘আমার রবীন্দ্রনাথ’ এ।

সন্জীদা খাতুন রচিত বইয়ের মধ্যে আরো রয়েছে ‘রবীন্দ্রসঙ্গীতের ভাবসম্পদ’, ‘রবীন্দ্রনাথের হাতে হাত রেখে’, ‘রবীন্দ্রনাথ: তার আকাশ ভরা কোলে’, ‘রবীন্দ্রনাথ: বিবিধ সন্ধান’, ‘তোমারি ঝরনাতলার নির্জনে’, ‘রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য’, ‘রবীন্দ্রনাথ এবং রবীন্দ্রনাথ’, ‘রবীন্দ্রসঙ্গীত: মননে লালনে’, ‘রবীন্দ্র-বিশ্বাসে মানব-অভ্যুদয়’।

রবীন্দ্র বিষয়ক তার সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে আছে ‘রইল তাঁহার বাণী: রইল ভরা সুরে’, ‘গীতবিতান: তথ্য ও ভাবসন্ধান’, ‘সার্ধশততম জন্মবর্ষে রবীন্দ্রনাথ’।

২০২৩ সালে ৯০তম জন্মবার্ষিকীর দিনে ‘নবতিপূর্ণা’ শিরোনামে এক অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পড়ে শুনিয়েছিলেন সন্জীদা খাতুন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘অল্পে তুষ্ট সহজ সরল জীবনের এই সার্থকতায়

আমি ধন্য হয়েছি।’ বাঙালির সাংস্কৃতিক পরিম-লে কিংবদন্তিতুল্য, গবেষকের চোখে বিস্ময় জাগানিয়া ব্যক্তিত্ব ছিলেন সন্জীদা খাতুন, যার জীবন কেটেছে বাঙালির আত্ম পরিচয়ের সুলুক সন্ধানে।

জিয়াউলের ১০০ বিঘা জমি জব্দ ও ৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

মডেল মেঘনার জামিন নাকচ

ছবি

নাগলিঙ্গমের সুবাসে বিমোহিত বিটিআরআই প্রাঙ্গণ

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে ৬৬৩ জনের পদোন্নতি এবং ৩৬৩ জনকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় না চড়তে ডিএনসিসি প্রশাসকের অনুরোধ

পাচারের টাকায় দুবাইয়ে সম্পত্তি: নাফিজ সরাফতসহ ৭৮ ব্যক্তির তথ্য চেয়েছে দুদক

তিন উপজেলায় বিএনপির গৃহবিবাদ: ৮ মাসে ১০ কর্মী খুন

ছবি

এলাকার কলেজে পড়লেই পারতে, গেটআউট: জবি শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রার

ছবি

রানা প্লাজা ধসের ১২ বছর: স্বজনদের আহাজারি থামেনি, সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের দাবি

‘বাবার ভুলের জন্য দুঃখিত’ ঠিকাদারি লাইসেন্স নিয়ে মুখ খুললেন উপদেষ্টা আসিফ

ছবি

বাংলাদেশ পুনর্গঠনে ইউনূসকে সহায়তার আশ্বাস কাতারের প্রধানমন্ত্রীর

ছবি

অপহরণের আট দিন পর মুক্তি পেলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী

১৫ বিচারকের সম্পদের তথ্য চেয়েছে দুদক

আন্দোলনের মুখে কুয়েট উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত

ছবি

ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ ঘোষণা পাকিস্তানের, উত্তেজনা দুই দেশের মধ্যে

ঢাকা সফর স্থগিত হলো পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ছবি

অতি দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ, এ বছরও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা না আসার শঙ্কা

ছবি

নারীর প্রতি সহিংসতার তথ্যভাণ্ডার: চালু হলো ‘ভাউ ট্র্যাকার’ ওয়েবসাইট

ছবি

ঢাকা সফর স্থগিত হলো পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ছবি

শিক্ষার্থীদের কল্পনার জগতে ডুব দিয়ে ‘তিন-শূন্য মানুষ’ হওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

প্রমাণ ছাড়াই টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ন্যায়বিচার লঙ্ঘনের অভিযোগ আইনজীবীদের

ছবি

কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবার সমন্বয় চায় সরকার

ছবি

১৫ বিচারকের তথ্য চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে দুদকের চিঠি

ছবি

গণতন্ত্রের ঘাটতি ও দুর্বল শাসন কাঠামোই ফ্যাসিবাদের জন্ম দিয়েছে: আলী রীয়াজ

ছবি

নির্বাচনের আগে নিজ ক্ষমতার ভেতরে সংস্কার করবে ইসি: সিইসি

ছবি

গণতন্ত্রের ঘাটতি থেকেই ফ্যাসিবাদ : আলী রীয়াজ

ছবি

‘বাবার ভুলের জন্য দুঃখিত’—ঠিকাদারি লাইসেন্স নিয়ে মুখ খুললেন উপদেষ্টা আসিফ

ছবি

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে বাংলাদেশ করছে তিন দিনের শোক

ছবি

রানা প্লাজা ধস: বিচারহীনতার এক যুগ

ছবি

কুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতি, অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জনগণের কাছে যান: তারেক রহমান

নির্বাচনে একক প্রার্থী দিতে ‘একমত’ ৫ ইসলামী দল

ছবি

২০ বছর ধরে ঘুমে সৌদির যুবরাজ

বাজারে সিন্ডিকেটের কবলে পণ্য, কৃষকের উৎপাদন খরচই উঠছে না

ছবি

মেহের আফরোজ শাওনকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা

গ্রেপ্তারের পূর্বানুমতি: ডিএমপির নির্দেশনা ৩ মাসের জন্য স্থগিত

tab

জাতীয়

অনন্তলোকে সন্জীদা খাতুন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

‘অল্পে তুষ্ট সহজ সরল জীবনের এই সার্থকতায় আমি ধন্য হয়েছি’ ২০২৩ সালের জন্মবার্ষিকীর দিনে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন সন্জীদা খাতুন

মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

বাঙালি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সভাপতি সন্জীদা খাতুন আর নেই। ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকাল ৩টার পর তার মৃত্যু হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তার ছেলে পার্থ তানভীর নভেদ জানিয়েছেন আজ বেলা সাড়ে ১২টায় ছায়ানটে তার শেষ দেখা মিলবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতীয় অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেনের মেয়ে সন্জীদা খাতুনের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল। তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।

জীবনের ৯২ বছর পূর্ণ করার মাত্র দশ দিন আগে তিনি বিদায় নিলেন। সন?জীদা খাতুন এমন এক সময়ে চলে গেলেন, যখন বাঙালির চিরায়ত উৎসব হয়ে ওঠা পহেলা বৈশাখের বাকি আর মাত্র তিন সপ্তাহ। রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ উৎসবে আর কখনো তাকে দেখা যাবে না।

সন?জীদা খাতুন পড়েছেন কামরুন্নেসা স্কুল, ইডেন কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শান্তি নিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করে ১৯৭৮ সালে সেখান থেকেই পিএইচডি করেন। দীর্ঘদিন অধ্যাপনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে তিনি অবসর নেন।

সন্জীদা খাতুনের লেখার একটি বড় অংশ জুড়ে আছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ব্যাপক পরিসরে জনমানসে কবিগুরুকে পৌঁছে দেয়ার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় শুদ্ধ সংগীতের চর্চার পাশাপাশি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় ছিলেন সন্জীদা খাতুন, তখন সহযোদ্ধাদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘মিনু আপা’ নামে।

গবেষক মফিদুল হকের ভাষায়, ‘সন্জীদা আপার জীবন পরিক্রমা আর বাংলাদেশের জাতীয় জাগরণ হাতে হাত ধরে চলেছে। সত্যিকার অর্থে একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে।’

‘সন্জীদা আপা এক বিস্ময় জাগানিয়া ব্যক্তিত্ব‘ মন্তব্য করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মুফিদুল হক বলেন, ‘এমন কথা খুব বেশি মানুষের ক্ষেত্রে বলা যায় না, কিন্তু তার সম্পর্কে উচ্চকণ্ঠে বলা যায়।’

গত শতকের ষাটের দশকের শুরুর দিকে বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি নিবেদিত প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সন্জীদা খাতুন। তার তত্ত্বাবধানে ছায়ানট এখন বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান, যা শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও নৃত্যের প্রসারে কাজ করছে।

ছায়ানটের পাশাপাশি জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদেরও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। প্রচলিত ধারার বাইরে ভিন্নধর্মী শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নালন্দার সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। এশিয়াটিক সোসাইটির সাম্মানিক ফেলোও ছিলেন তিনি।

একাধারে শিল্পী, লেখক, গবেষক, সংগঠক, সংগীতজ্ঞ ও শিক্ষক সন্জীদা খাতুন ভারত সরকারের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন।

একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কারে (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত) ভূষিত সন্জীদা ১৬টি বই লিখেছেন।

‘সাংস্কৃতিক মুক্তিসংগ্রাম’ বইটি তার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, বাঙালির সাংস্কৃতিক সংগ্রামের প্রামাণ্য ইতিবৃত্ত এবং মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক তার একান্ত ভাবনাগুচ্ছ ধারণ করেছে।

দুই খ-ের ‘আমার রবীন্দ্রনাথ’ ধারণ করেছে সন্জীদা খাতুনের রবীন্দ্রযাপন, বাঙালি জীবন, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে রবীন্দ্রনাথের অবদান, রবীন্দ্রকবিতা, রবীন্দ্রসংগীত এবং রবীন্দ্রভাবনার দশ দিগন্ত নিয়ে নানা স্বাদের রচনা? একই সঙ্গে শান্তিনিকেতন, শিলাইদহ, পতিসরসহ বিভিন্ন রবীন্দ্রতীর্থ নিয়ে লেখকের স্মৃতি ও অবলোকনও স্থান পেয়েছে ‘আমার রবীন্দ্রনাথ’ এ।

সন্জীদা খাতুন রচিত বইয়ের মধ্যে আরো রয়েছে ‘রবীন্দ্রসঙ্গীতের ভাবসম্পদ’, ‘রবীন্দ্রনাথের হাতে হাত রেখে’, ‘রবীন্দ্রনাথ: তার আকাশ ভরা কোলে’, ‘রবীন্দ্রনাথ: বিবিধ সন্ধান’, ‘তোমারি ঝরনাতলার নির্জনে’, ‘রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য’, ‘রবীন্দ্রনাথ এবং রবীন্দ্রনাথ’, ‘রবীন্দ্রসঙ্গীত: মননে লালনে’, ‘রবীন্দ্র-বিশ্বাসে মানব-অভ্যুদয়’।

রবীন্দ্র বিষয়ক তার সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে আছে ‘রইল তাঁহার বাণী: রইল ভরা সুরে’, ‘গীতবিতান: তথ্য ও ভাবসন্ধান’, ‘সার্ধশততম জন্মবর্ষে রবীন্দ্রনাথ’।

২০২৩ সালে ৯০তম জন্মবার্ষিকীর দিনে ‘নবতিপূর্ণা’ শিরোনামে এক অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পড়ে শুনিয়েছিলেন সন্জীদা খাতুন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘অল্পে তুষ্ট সহজ সরল জীবনের এই সার্থকতায়

আমি ধন্য হয়েছি।’ বাঙালির সাংস্কৃতিক পরিম-লে কিংবদন্তিতুল্য, গবেষকের চোখে বিস্ময় জাগানিয়া ব্যক্তিত্ব ছিলেন সন্জীদা খাতুন, যার জীবন কেটেছে বাঙালির আত্ম পরিচয়ের সুলুক সন্ধানে।

back to top