শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় হাজারো মানুষ শেষ বিদায় জানিয়েছে সর্বজন শ্রদ্ধেয় সংস্কৃতিসেবী সনজীদা খাতুনকে। সনজীদা খাতুনকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে সমবেত হয়েছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ সর্বস্তরের মানুষ।
গতকাল বেলা আড়াইটায় সনজীদা খাতুনের কফিন শহীদ মিনারে নেয়া হয়। অশ্রু, গান, কবিতা ও ফুলে তাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। এ সময় ‘আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে’সহ বেশ কয়েকটি গান পরিবেশন করেছেন শিল্পীরা। তাকে শেষবারের মতো দেখতে হাজির হয়েছিলেন অনেকে।
এর আগে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল সকাল থেকেই ছায়ানট ভবনে ভিড় করেন শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। তাদের দীর্ঘ লাইন ছায়ানট ভবন ছাড়িয়ে ধানম-ি ২৭ নম্বরে গিয়ে ঠেকে।
শিল্পীদের কণ্ঠে গান, অন্যদিকে সারিবদ্ধভাবে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন। ছায়ানটের উঠানে আসা হাজারো মানুষের চোখে জল। কেউ কেউ কেঁদেছেন অঝোর ধারায়। শান্তা ইসলাম নামে একজন বললেন, ‘তিনি আমার শিক্ষক। আমি গান শিখেছি তার কাছে। বাংলা সংস্কৃতিকে ভালোবাসতে শিখেছি তার কাছে।’ সংগীতশিল্পী খুরশীদ আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলা সংগীত অঙ্গনের নক্ষত্র তিনি। সারাজীবন তিনি ছায়ানটের জন্য নিবেদিত ছিলেন। স্পষ্টভাষী, আদর্শের সঙ্গে আপস করেননি।’
নাট্যজন ম. হামিদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘সনজীদা খাতুন আমাদেরকে শিখিয়েছেন দেশকে ভালোবাসতে। নিজের সংস্কৃতিকে ভালোবাসতে। অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশে, বাংলাদেশকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে তিনি আমাদেরকে বাঙালি হওয়া শিখিয়েছেন। তার মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষক ও চিত্রশিল্পী আবুল বারক আলভী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘সনজীদা খাতুনের বোন আমাদের চারুকলা এক ব্যাচ সিনিয়র ছিল। সেই সূত্রে ছাত্র অবস্থা থেকেই তাকে চিনতাম। পরে চারুকলায় অনেক অনুষ্ঠানে আমরা তাকে নিয়েছি। তিনি আমাদের নানা সাংস্কৃতিক কাজে পরামর্শ দিয়েছেন, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’
ছায়ানটে সনজীদা খাতুনের শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষ হয় ‘আগুনের পরশমণি’ এবং সর্বশেষে জাতীয় সংগীত গেয়ে। ছায়ানটের সহসভাপতি মফিদুল হক বলেন, ‘রমনার বটমূলে এখন যে বর্ষবরণ কোটি বাঙালির আবেগে জায়গা নিয়েছে, তার পেছনের মানুষটি সনজীদা খাতুন। সারাদেশে ছুটে বেড়িয়েছেন। গান শিখিয়েছেন, শিক্ষকতা করেছেন। গবেষণা করেছেন। মানুষকে ভালোবেসেছেন। তিনি অতুলনীয় কর্মগুণেই সবার মাঝে থাকবেন।’
ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ, কণ্ঠশীলন, সুরের ধারা, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, ঢাকা থিয়েটার, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন,
রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থাসহ বিভিন্ন সংগঠন। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবেও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অনেকে।
শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম, চলচ্চিত্র শিক্ষক মানজারে হাসিন মুরাদ, নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক, সংগীতশিল্পী অদিতি মহসিন, শাহীন সামাদ, বুলবুল ইসলাম, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজীদ, নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা, আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যেপাধ্যায়, অধ্যাপক শফি আহমেদ, নাট্যনির্দেশক নায়লা আজাদ নূপুর, চন্দনা মজুমদার, গবেষক সাইমন জাকারিয়া, চলচ্চিত্র সংগঠক বেলায়াত হোসেন মামুন, ত্রপা মজুমদার। ছায়ানটের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও এসেছিলেন শ্রদ্ধা জানাতে।
ছায়ানট ভবনে তার সহকর্মী, সহযোদ্ধা আর শিক্ষার্থীদের চোখে জল, কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ-লালনের গান বিদায় জানানো হয়। যে গানকে সঙ্গী করে বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে বর্ণাঢ্য এক জীবন কাটিয়েছেন সনজীদা খাতুন। তিনি ছিলেন ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং সর্বশেষ সভাপতি।
বেলা সোয়া ১টার দিকে সনজীদা খাতুনের মরদেহ ছায়ানট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে রওনা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন অধ্যাপনায় যুক্ত ছিলেন সনজীদা খাতুন।
বেলা আড়াইটায় তার কফিন নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ তাকে শেষ বিদায় জানাবে।
শহীদ মিনারে সন্?জীদা খাতুনের পুত্রবধূ ও রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী লাইসা আহমদ লিসা বলেন, ‘তিনি আজকে বিদায় নিচ্ছেন। কিন্তু তার দেখানো পথ ও তার শক্তি যেন ধারণ করতে পারি। এগিয়ে যেতে পারি। যারা সমবেত হয়েছেন এবং তার প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
ছায়ানটে ‘মিনু আপা’ বলে পরিচিতি রয়েছে সন্?জীদা খাতুনের। প্রিয় মিনু আপাকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করলেন আবৃত্তিকার ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রথম আলোকে জানান, খুলনা থেকে ঢাকায় আসার পর থেকেই ছায়ানটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। সন্?জীদা খাতুনের হাত ধরে ১৯৭৬ সালে রমনার অশ্বত্থতলায় নববর্ষ অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
তরুণ বয়স থেকেই সন্?জীদা খাতুন যুক্ত হয়েছেন আন্দোলন-সংগ্রামে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে তার ছিল অগ্রগণ্য ভূমিকা। ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাকে সবাই চেনেন। এছাড়া শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু এড়িয়ে সংগঠক, সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবেও তার অবদান অসামান্য।
ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তিনি বটবৃক্ষ ছিলেন, আমাদের ছায়া দিতেন। সেই ছায়াটা সরে গেল। ১৯৭১ সালে উনাকে কলকাতায় ধর্মতলা স্ট্রিটে দেখেছি। বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থার প্রধান সংগঠকদের একজন ছিলেন তিনি।’ সর্বশেষে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে ইতি টানা হয়েছে।
এদিন সন্?জীদা খাতুনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), মণি সিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, প্রথম আলো, উদীচী, বাংলাদেশ নজরুল সংগীত সংস্থা, কণ্ঠশীলনসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন।
সন্?জীদা খাতুনকে শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে গিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু, অভিনেতা নির্দেশক তারিক আনাম খান, নৃত্যশিল্পী শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ, অভিনেতা ঝুনা চৌধুরী, অভিনেত্রী আফসানা মিমি, সংগীতশিল্পী ফারহিন খান জয়িতাসহ অনেকে।
বক্তব্য শেষে ‘আছে দুঃখ আছে মৃত্যু’ গেয়ে শোনান লিসা। গানটি গাইতে গিয়ে গলা ধরে আসে তার। সন্?জীদা খাতুনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংগীতশিল্পী লুভা নাহিদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাজার হাজার ছেলেমেয়ের মাঝে শিক্ষার আলোটা ছড়িয়ে গেছেন তিনি। এটা অনেক বড় পাওয়া।’
সাবেক সংসদ সদস্য ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নাতনী আরমা দত্ত সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘সনজীদা খাতুন বাঙালি সংস্কৃতির জন্য আজন্ম কাজ করেছেন। তিনি সারা পৃথিবীতেই বাঙালিকে উচুঁ স্থানে নিয়ে যেতে কাজ করেছেন। আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পথ ধরে তিনি আলো বিলিয়েছেন। সেই আলোতে আমরা আলোকিত হয়েছি।’
বাঙালির সাংস্কৃতিক পরিম-লে কিংবদন্তিতুল্য, গবেষকদের চোখে বিস্ময় জাগানিয়া ব্যক্তিত্ব সনজীদা খাতুনকে একক কোনো বৈশিষ্ট্যে বাধতে পারেননি কেউই; একাধারে শিল্পী, লেখক, গবেষক, সংগঠক, সংগীতজ্ঞ ও শিক্ষক হিসেবে তিনি নিজের দক্ষতার পরিচয় রেখে গেছেন।
ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯১ বছর বয়সে গত মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় জীবনের এই বিপুল যাত্রা সাঙ্গ করেন সনজীদা খাতুন।
সাংস্কৃতিক সংগঠক রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘সনজীদা খাতুন এক বর্ণাঢ্য জীবন কাটিয়েছেন। শুদ্ধসংগীতের প্রসারে তিনি সারাদেশে কাজ করেছেন, অসংখ্য মানুষের মধ্যে বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করেছেন। যারা তার সংস্পর্শে এসেছেন, তারা আলোকিত হয়েছেন।’
শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন সনজীদা খাতুনের প্রতিষ্ঠিত ছায়ানট, নালন্দা, কণ্ঠশীলনসহ দেশের অগ্রগণ্য প্রায় সব সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা। তিনি চলে গেলেন এমন সময়ে, যখন বাঙালি বৈশাখ বরণে নানা প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই ষাটের দশক থেকে বাংলা বর্ষবরণ নাগরিক পরিম-ল থেকে বিশ্ব দরবারে ছড়িয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন সনজীদা খাতুন।
তার মরদেহ ঘিরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বসন্তের গান ‘ঝরা পাতা গো’ গেয়ে শোনাচ্ছিলেন শিল্পীরা। শেষযাত্রার এই আয়োজনে ‘তুমি যে সুরের আগুন’, ‘আমি মারের সাগর পাড়ি দেব’, ‘মান্ষু ছাড়া ক্ষ্যাপারে তুই মূল হারাবি’, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’, ‘সম্মুখে শান্তিপারাবার’, নজরুলের ‘শুভ্র সমুজ্জ্বল হে চির নির্মল’সহ বেশ কিছু গান গেয়ে ছায়ানটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিদায় জানান তাদের গুরুকে। এই গানের শুদ্ধ সুর তারা সনজীদা খাতুনের কাছেই শিখেছেন।
বেলা সোয়া ১টার দিকে সনজীদা খাতুনের মরদেহ ছায়ানট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে রওনা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন অধ্যাপনায় যুক্ত ছিলেন সনজীদা খাতুন। বেলা আড়াইটায় তার কফিন নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ তাকে শেষ বিদায় জানাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতীয় অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেনের মেয়ে সনজীদা খাতুনের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল। পড়েছেন ঢাকার কামরুন্নেসা স্কুল, ইডেন কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শান্তি নিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করে ১৯৭৮ সালে সেখান থেকেই পিএইচডি করেন। দীর্ঘদিন অধ্যাপনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে তিনি অবসর নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় শুদ্ধ সংগীতের চর্চার পাশাপাশি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন সনজীদা খাতুন। গান ছিল তার আত্মপরিচয়ের অন্বেষণ। তার তত্ত্বাবধানেই ছায়ানট এখন বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান, যা শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যের প্রসারে কাজ করছে।
একুশে পদক, বাংলা অ্যাকাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কারে (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত) ভূষিত সনজীদা ১৬টি বই লিখেছেন।
তার লেখার একটি বড় অংশ জুড়ে আছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ব্যাপক পরিসরে জনমানসে কবিগুরুকে পৌঁছে দেয়ার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার। ‘সাংস্কৃতিক মুক্তিসংগ্রাম’ বইটি তার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, বাঙালির সাংস্কৃতিক সংগ্রামের প্রামাণ্য ইতিবৃত্ত এবং মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক তার একান্ত ভাবনাগুচ্ছ ধারণ করেছে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান শেষে সনজীদা খাতুনের মরদেহ ফিরিয়ে নেয়া হয় হাসপাতালের হিমঘরে। পরের আনুষ্ঠানিকতা কী হবে, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।
গত মঙ্গলবার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন সন্?জীদা খাতুন। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫
শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় হাজারো মানুষ শেষ বিদায় জানিয়েছে সর্বজন শ্রদ্ধেয় সংস্কৃতিসেবী সনজীদা খাতুনকে। সনজীদা খাতুনকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে সমবেত হয়েছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ সর্বস্তরের মানুষ।
গতকাল বেলা আড়াইটায় সনজীদা খাতুনের কফিন শহীদ মিনারে নেয়া হয়। অশ্রু, গান, কবিতা ও ফুলে তাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। এ সময় ‘আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে’সহ বেশ কয়েকটি গান পরিবেশন করেছেন শিল্পীরা। তাকে শেষবারের মতো দেখতে হাজির হয়েছিলেন অনেকে।
এর আগে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল সকাল থেকেই ছায়ানট ভবনে ভিড় করেন শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। তাদের দীর্ঘ লাইন ছায়ানট ভবন ছাড়িয়ে ধানম-ি ২৭ নম্বরে গিয়ে ঠেকে।
শিল্পীদের কণ্ঠে গান, অন্যদিকে সারিবদ্ধভাবে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন। ছায়ানটের উঠানে আসা হাজারো মানুষের চোখে জল। কেউ কেউ কেঁদেছেন অঝোর ধারায়। শান্তা ইসলাম নামে একজন বললেন, ‘তিনি আমার শিক্ষক। আমি গান শিখেছি তার কাছে। বাংলা সংস্কৃতিকে ভালোবাসতে শিখেছি তার কাছে।’ সংগীতশিল্পী খুরশীদ আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলা সংগীত অঙ্গনের নক্ষত্র তিনি। সারাজীবন তিনি ছায়ানটের জন্য নিবেদিত ছিলেন। স্পষ্টভাষী, আদর্শের সঙ্গে আপস করেননি।’
নাট্যজন ম. হামিদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘সনজীদা খাতুন আমাদেরকে শিখিয়েছেন দেশকে ভালোবাসতে। নিজের সংস্কৃতিকে ভালোবাসতে। অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশে, বাংলাদেশকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে তিনি আমাদেরকে বাঙালি হওয়া শিখিয়েছেন। তার মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষক ও চিত্রশিল্পী আবুল বারক আলভী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘সনজীদা খাতুনের বোন আমাদের চারুকলা এক ব্যাচ সিনিয়র ছিল। সেই সূত্রে ছাত্র অবস্থা থেকেই তাকে চিনতাম। পরে চারুকলায় অনেক অনুষ্ঠানে আমরা তাকে নিয়েছি। তিনি আমাদের নানা সাংস্কৃতিক কাজে পরামর্শ দিয়েছেন, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’
ছায়ানটে সনজীদা খাতুনের শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষ হয় ‘আগুনের পরশমণি’ এবং সর্বশেষে জাতীয় সংগীত গেয়ে। ছায়ানটের সহসভাপতি মফিদুল হক বলেন, ‘রমনার বটমূলে এখন যে বর্ষবরণ কোটি বাঙালির আবেগে জায়গা নিয়েছে, তার পেছনের মানুষটি সনজীদা খাতুন। সারাদেশে ছুটে বেড়িয়েছেন। গান শিখিয়েছেন, শিক্ষকতা করেছেন। গবেষণা করেছেন। মানুষকে ভালোবেসেছেন। তিনি অতুলনীয় কর্মগুণেই সবার মাঝে থাকবেন।’
ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ, কণ্ঠশীলন, সুরের ধারা, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, ঢাকা থিয়েটার, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন,
রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থাসহ বিভিন্ন সংগঠন। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবেও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অনেকে।
শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম, চলচ্চিত্র শিক্ষক মানজারে হাসিন মুরাদ, নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক, সংগীতশিল্পী অদিতি মহসিন, শাহীন সামাদ, বুলবুল ইসলাম, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজীদ, নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা, আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যেপাধ্যায়, অধ্যাপক শফি আহমেদ, নাট্যনির্দেশক নায়লা আজাদ নূপুর, চন্দনা মজুমদার, গবেষক সাইমন জাকারিয়া, চলচ্চিত্র সংগঠক বেলায়াত হোসেন মামুন, ত্রপা মজুমদার। ছায়ানটের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও এসেছিলেন শ্রদ্ধা জানাতে।
ছায়ানট ভবনে তার সহকর্মী, সহযোদ্ধা আর শিক্ষার্থীদের চোখে জল, কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ-লালনের গান বিদায় জানানো হয়। যে গানকে সঙ্গী করে বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে বর্ণাঢ্য এক জীবন কাটিয়েছেন সনজীদা খাতুন। তিনি ছিলেন ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং সর্বশেষ সভাপতি।
বেলা সোয়া ১টার দিকে সনজীদা খাতুনের মরদেহ ছায়ানট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে রওনা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন অধ্যাপনায় যুক্ত ছিলেন সনজীদা খাতুন।
বেলা আড়াইটায় তার কফিন নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ তাকে শেষ বিদায় জানাবে।
শহীদ মিনারে সন্?জীদা খাতুনের পুত্রবধূ ও রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী লাইসা আহমদ লিসা বলেন, ‘তিনি আজকে বিদায় নিচ্ছেন। কিন্তু তার দেখানো পথ ও তার শক্তি যেন ধারণ করতে পারি। এগিয়ে যেতে পারি। যারা সমবেত হয়েছেন এবং তার প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
ছায়ানটে ‘মিনু আপা’ বলে পরিচিতি রয়েছে সন্?জীদা খাতুনের। প্রিয় মিনু আপাকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করলেন আবৃত্তিকার ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রথম আলোকে জানান, খুলনা থেকে ঢাকায় আসার পর থেকেই ছায়ানটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। সন্?জীদা খাতুনের হাত ধরে ১৯৭৬ সালে রমনার অশ্বত্থতলায় নববর্ষ অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
তরুণ বয়স থেকেই সন্?জীদা খাতুন যুক্ত হয়েছেন আন্দোলন-সংগ্রামে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে তার ছিল অগ্রগণ্য ভূমিকা। ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাকে সবাই চেনেন। এছাড়া শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু এড়িয়ে সংগঠক, সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবেও তার অবদান অসামান্য।
ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তিনি বটবৃক্ষ ছিলেন, আমাদের ছায়া দিতেন। সেই ছায়াটা সরে গেল। ১৯৭১ সালে উনাকে কলকাতায় ধর্মতলা স্ট্রিটে দেখেছি। বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থার প্রধান সংগঠকদের একজন ছিলেন তিনি।’ সর্বশেষে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে ইতি টানা হয়েছে।
এদিন সন্?জীদা খাতুনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), মণি সিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, প্রথম আলো, উদীচী, বাংলাদেশ নজরুল সংগীত সংস্থা, কণ্ঠশীলনসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন।
সন্?জীদা খাতুনকে শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে গিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু, অভিনেতা নির্দেশক তারিক আনাম খান, নৃত্যশিল্পী শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ, অভিনেতা ঝুনা চৌধুরী, অভিনেত্রী আফসানা মিমি, সংগীতশিল্পী ফারহিন খান জয়িতাসহ অনেকে।
বক্তব্য শেষে ‘আছে দুঃখ আছে মৃত্যু’ গেয়ে শোনান লিসা। গানটি গাইতে গিয়ে গলা ধরে আসে তার। সন্?জীদা খাতুনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংগীতশিল্পী লুভা নাহিদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাজার হাজার ছেলেমেয়ের মাঝে শিক্ষার আলোটা ছড়িয়ে গেছেন তিনি। এটা অনেক বড় পাওয়া।’
সাবেক সংসদ সদস্য ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নাতনী আরমা দত্ত সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘সনজীদা খাতুন বাঙালি সংস্কৃতির জন্য আজন্ম কাজ করেছেন। তিনি সারা পৃথিবীতেই বাঙালিকে উচুঁ স্থানে নিয়ে যেতে কাজ করেছেন। আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পথ ধরে তিনি আলো বিলিয়েছেন। সেই আলোতে আমরা আলোকিত হয়েছি।’
বাঙালির সাংস্কৃতিক পরিম-লে কিংবদন্তিতুল্য, গবেষকদের চোখে বিস্ময় জাগানিয়া ব্যক্তিত্ব সনজীদা খাতুনকে একক কোনো বৈশিষ্ট্যে বাধতে পারেননি কেউই; একাধারে শিল্পী, লেখক, গবেষক, সংগঠক, সংগীতজ্ঞ ও শিক্ষক হিসেবে তিনি নিজের দক্ষতার পরিচয় রেখে গেছেন।
ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯১ বছর বয়সে গত মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় জীবনের এই বিপুল যাত্রা সাঙ্গ করেন সনজীদা খাতুন।
সাংস্কৃতিক সংগঠক রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘সনজীদা খাতুন এক বর্ণাঢ্য জীবন কাটিয়েছেন। শুদ্ধসংগীতের প্রসারে তিনি সারাদেশে কাজ করেছেন, অসংখ্য মানুষের মধ্যে বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করেছেন। যারা তার সংস্পর্শে এসেছেন, তারা আলোকিত হয়েছেন।’
শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন সনজীদা খাতুনের প্রতিষ্ঠিত ছায়ানট, নালন্দা, কণ্ঠশীলনসহ দেশের অগ্রগণ্য প্রায় সব সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা। তিনি চলে গেলেন এমন সময়ে, যখন বাঙালি বৈশাখ বরণে নানা প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই ষাটের দশক থেকে বাংলা বর্ষবরণ নাগরিক পরিম-ল থেকে বিশ্ব দরবারে ছড়িয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন সনজীদা খাতুন।
তার মরদেহ ঘিরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বসন্তের গান ‘ঝরা পাতা গো’ গেয়ে শোনাচ্ছিলেন শিল্পীরা। শেষযাত্রার এই আয়োজনে ‘তুমি যে সুরের আগুন’, ‘আমি মারের সাগর পাড়ি দেব’, ‘মান্ষু ছাড়া ক্ষ্যাপারে তুই মূল হারাবি’, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’, ‘সম্মুখে শান্তিপারাবার’, নজরুলের ‘শুভ্র সমুজ্জ্বল হে চির নির্মল’সহ বেশ কিছু গান গেয়ে ছায়ানটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিদায় জানান তাদের গুরুকে। এই গানের শুদ্ধ সুর তারা সনজীদা খাতুনের কাছেই শিখেছেন।
বেলা সোয়া ১টার দিকে সনজীদা খাতুনের মরদেহ ছায়ানট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে রওনা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন অধ্যাপনায় যুক্ত ছিলেন সনজীদা খাতুন। বেলা আড়াইটায় তার কফিন নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ তাকে শেষ বিদায় জানাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতীয় অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেনের মেয়ে সনজীদা খাতুনের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল। পড়েছেন ঢাকার কামরুন্নেসা স্কুল, ইডেন কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শান্তি নিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করে ১৯৭৮ সালে সেখান থেকেই পিএইচডি করেন। দীর্ঘদিন অধ্যাপনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে তিনি অবসর নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় শুদ্ধ সংগীতের চর্চার পাশাপাশি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন সনজীদা খাতুন। গান ছিল তার আত্মপরিচয়ের অন্বেষণ। তার তত্ত্বাবধানেই ছায়ানট এখন বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান, যা শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যের প্রসারে কাজ করছে।
একুশে পদক, বাংলা অ্যাকাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কারে (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত) ভূষিত সনজীদা ১৬টি বই লিখেছেন।
তার লেখার একটি বড় অংশ জুড়ে আছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ব্যাপক পরিসরে জনমানসে কবিগুরুকে পৌঁছে দেয়ার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার। ‘সাংস্কৃতিক মুক্তিসংগ্রাম’ বইটি তার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, বাঙালির সাংস্কৃতিক সংগ্রামের প্রামাণ্য ইতিবৃত্ত এবং মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক তার একান্ত ভাবনাগুচ্ছ ধারণ করেছে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান শেষে সনজীদা খাতুনের মরদেহ ফিরিয়ে নেয়া হয় হাসপাতালের হিমঘরে। পরের আনুষ্ঠানিকতা কী হবে, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।
গত মঙ্গলবার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন সন্?জীদা খাতুন। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।