রাজধানী শান্তিনগর কাঁচাবাজার থেকে ২ কেজি মিনিকেট চাল (প্রতি কেজি ৯০ টাকা) আর এককেজি কাঁচা পেঁপে কেজি ৫০ টাকা দরে কিনে মেসে ফিরছিলেন কর্মজীবী হৃদয়। বাজারে পণ্যের দাম নিয়ে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘দাম বেশি! করার কিচ্ছু নাই।’ ‘যা আয় হয়, তা দিয়ে চলে কোনোরকম,’ জানান হৃদয়।
মিনিকেট চালের দাম যাচাই করতে ওই বাজারের খুচরা বিক্রেতা নুরুল আলম সিদ্দিক সংবাদকে বলেন, ‘আমার কাছে দুই ধরনের মিনিকেট চাল আছে। একটা মিনিকেট বিক্রি করছি কেজি ৯০ টাকা। আর একটা মিনিকেট চাল আছে এরফান ব্র্যান্ডের, সেটা বিক্রি করছি কেজি ৯৬ টাকা।’
শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারভেদে, মান ও ব্র্যান্ডভেদে খুচরা বাজারে মিনিকেট নামক চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি ৮৫ থেকে ৯৬ টাকায়। বিআর আটাশজাতের চাল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা আর মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকায়। এছাড়া মানভেদে পোলাওয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়।
শান্তিনগর বাজারে সদাই করেও শান্তি মেলেনি আরেক ক্রেতা আক্তার হোসেনের। একটি গ্যারেজে চাকরি করেন তিনি। বাজারে পণ্যের দামের
বিষয়ে কথা হলে সংবাদকে তিনি বলেন, ‘সবকিছুর (পণ্যের) দাম বাড়তি! এই দেশে শান্তি নেই! এই দেশে আর শান্তি হবে না! ক্যামনে হবে কন?’
পণ্যের দাম কমতে পারে কী? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আরে না, না-না, না। কী ভাবে সম্ভব? সম্ভব না। আরও খারাপ হইবো।’ সংসার/পরিবার কেমন চলছে? জবাবে তিনি বলেন, ‘খুব কষ্ট দাদা। বেতন পাই বিশ হাজার টাকা। আর আজকে (বর্তমান) চলতে গেলে মাসে পঁয়ত্রিশ-চল্লিশ হাজার টাকা লাগে। বাসাভাড়া, খাওয়া-দাওয়া, ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা মিলে পঁয়ত্রিশ হাজার টাকার নিচে হয়-ই-না।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আগেই ভালো ছিলাম।’
ঈদের আগই আরেক দফা বেড়েছে মুরগির দাম। কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা। বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, সোনালি জাতের মুরগিও কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা আর দেশি মুরগি কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি ৭০০ টাকায়। আর আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা আর খাসির মাংস ১২০০ টাকায়।
তবে সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারে গরুর মাংসের কেজি ৮০০ টাকা বিক্রি হলেও রাজধানীর কারওরান বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকায়।
ঈদ উপলক্ষে বেচা-বিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে সেগুনবাগিচা কাঁচা বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা খোকন সংবাদকে বলেন, ‘কেজি আসটোশো (৮০০) টাকা। বেচা-বিক্রি কম, বাজার ঠা-া!’
বিক্রি কম হওয়ার কারণ কী? জবাবে তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে মানুষজন দ্যাশে (নিজ গ্রামে, জন্মস্থানে) গেছে।’ একই কারণে বিক্রি কম হওয়ার কথা সংবাদকে জানিয়েছেন রাজধানী কাওরান বাজারের রাকিব জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা রাকিব।
‘সাদা এলাচ কেজি ৫০০০ টাকা, কালো এলাচ ২৮০০ টাকা, গোলমরিচ ১২০০ টাকা, লং ১৪০০ টাকা, জিরা ৬৮০ টাকা আর দারুচিনি ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন,’ বলে জানান রাকিব।
রাজধারীর কাঁচাবাজারগুলোতে বেড়েছে সবজির দাম। একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। এছাড়া গোল বেগুন-করলা-ঢেড়স-ঝিঙ্গা-কচুরলতি-সাজনা কেজি ১০০ টাকার উপর। তবে, আলু পাওয়া যাচ্ছে কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারে সবজি বিক্রেতা রাসেল সংবাদকে বলেন, ‘শুক্রবারই লম্বা বেগুন বিক্রি করছি কেজি ১০০ টাকা। আজ (শুক্রবার) বিক্রি করছি ১৪০ টাকা।’
চৈত্রের প্রখর রোদে ভর দুপুরে আড়তের ফেলে দেয়া সবজি কুড়িয়ে এনে তা রাজধানীর কারওয়ান বাজারের চৌ মাথায় প্লাস্টিকের বস্তা বিছিয়ে বিক্রি করছেন পঞ্চাশোর্দ্ধ নারী মনি বেগম। তিনি থাকেন মহাখালী সাততলা বস্তিতে। রাত তিনটায় সেহেরি খেয়ে কারওয়ান বাজারে আসেন। তার ভাষায়, আগের মতো মাল আর পাওয়া যায় না। আয়ও আগের মতো হয় না। এ বছরটা এ রকমই যাচ্ছে।
শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
রাজধানী শান্তিনগর কাঁচাবাজার থেকে ২ কেজি মিনিকেট চাল (প্রতি কেজি ৯০ টাকা) আর এককেজি কাঁচা পেঁপে কেজি ৫০ টাকা দরে কিনে মেসে ফিরছিলেন কর্মজীবী হৃদয়। বাজারে পণ্যের দাম নিয়ে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘দাম বেশি! করার কিচ্ছু নাই।’ ‘যা আয় হয়, তা দিয়ে চলে কোনোরকম,’ জানান হৃদয়।
মিনিকেট চালের দাম যাচাই করতে ওই বাজারের খুচরা বিক্রেতা নুরুল আলম সিদ্দিক সংবাদকে বলেন, ‘আমার কাছে দুই ধরনের মিনিকেট চাল আছে। একটা মিনিকেট বিক্রি করছি কেজি ৯০ টাকা। আর একটা মিনিকেট চাল আছে এরফান ব্র্যান্ডের, সেটা বিক্রি করছি কেজি ৯৬ টাকা।’
শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারভেদে, মান ও ব্র্যান্ডভেদে খুচরা বাজারে মিনিকেট নামক চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি ৮৫ থেকে ৯৬ টাকায়। বিআর আটাশজাতের চাল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা আর মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকায়। এছাড়া মানভেদে পোলাওয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়।
শান্তিনগর বাজারে সদাই করেও শান্তি মেলেনি আরেক ক্রেতা আক্তার হোসেনের। একটি গ্যারেজে চাকরি করেন তিনি। বাজারে পণ্যের দামের
বিষয়ে কথা হলে সংবাদকে তিনি বলেন, ‘সবকিছুর (পণ্যের) দাম বাড়তি! এই দেশে শান্তি নেই! এই দেশে আর শান্তি হবে না! ক্যামনে হবে কন?’
পণ্যের দাম কমতে পারে কী? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আরে না, না-না, না। কী ভাবে সম্ভব? সম্ভব না। আরও খারাপ হইবো।’ সংসার/পরিবার কেমন চলছে? জবাবে তিনি বলেন, ‘খুব কষ্ট দাদা। বেতন পাই বিশ হাজার টাকা। আর আজকে (বর্তমান) চলতে গেলে মাসে পঁয়ত্রিশ-চল্লিশ হাজার টাকা লাগে। বাসাভাড়া, খাওয়া-দাওয়া, ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা মিলে পঁয়ত্রিশ হাজার টাকার নিচে হয়-ই-না।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আগেই ভালো ছিলাম।’
ঈদের আগই আরেক দফা বেড়েছে মুরগির দাম। কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা। বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, সোনালি জাতের মুরগিও কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা আর দেশি মুরগি কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি ৭০০ টাকায়। আর আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা আর খাসির মাংস ১২০০ টাকায়।
তবে সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারে গরুর মাংসের কেজি ৮০০ টাকা বিক্রি হলেও রাজধানীর কারওরান বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকায়।
ঈদ উপলক্ষে বেচা-বিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে সেগুনবাগিচা কাঁচা বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা খোকন সংবাদকে বলেন, ‘কেজি আসটোশো (৮০০) টাকা। বেচা-বিক্রি কম, বাজার ঠা-া!’
বিক্রি কম হওয়ার কারণ কী? জবাবে তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে মানুষজন দ্যাশে (নিজ গ্রামে, জন্মস্থানে) গেছে।’ একই কারণে বিক্রি কম হওয়ার কথা সংবাদকে জানিয়েছেন রাজধানী কাওরান বাজারের রাকিব জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা রাকিব।
‘সাদা এলাচ কেজি ৫০০০ টাকা, কালো এলাচ ২৮০০ টাকা, গোলমরিচ ১২০০ টাকা, লং ১৪০০ টাকা, জিরা ৬৮০ টাকা আর দারুচিনি ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন,’ বলে জানান রাকিব।
রাজধারীর কাঁচাবাজারগুলোতে বেড়েছে সবজির দাম। একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। এছাড়া গোল বেগুন-করলা-ঢেড়স-ঝিঙ্গা-কচুরলতি-সাজনা কেজি ১০০ টাকার উপর। তবে, আলু পাওয়া যাচ্ছে কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারে সবজি বিক্রেতা রাসেল সংবাদকে বলেন, ‘শুক্রবারই লম্বা বেগুন বিক্রি করছি কেজি ১০০ টাকা। আজ (শুক্রবার) বিক্রি করছি ১৪০ টাকা।’
চৈত্রের প্রখর রোদে ভর দুপুরে আড়তের ফেলে দেয়া সবজি কুড়িয়ে এনে তা রাজধানীর কারওয়ান বাজারের চৌ মাথায় প্লাস্টিকের বস্তা বিছিয়ে বিক্রি করছেন পঞ্চাশোর্দ্ধ নারী মনি বেগম। তিনি থাকেন মহাখালী সাততলা বস্তিতে। রাত তিনটায় সেহেরি খেয়ে কারওয়ান বাজারে আসেন। তার ভাষায়, আগের মতো মাল আর পাওয়া যায় না। আয়ও আগের মতো হয় না। এ বছরটা এ রকমই যাচ্ছে।