বিপুল বকেয়ার কারণে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) যে টানাপড়েন চলছিল, তা অনেকটাই ‘কেটে গেছে’। অল্প অল্প করে বকেয়ার পাশাপাশি নিয়মিত বিল পরিশোধের ফলে আদানি গ্রুপ এখন বাংলাদেশের চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)।
পিডিবির সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আদানি পাওয়ারকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বিল পরিশোধ করা হতো প্রতিমাসে গড়ে ২০-৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনা বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে বিল পরিশোধও বেড়েছে আগের চেয়ে। আদানিকে নিয়মিত অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে এবং বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। আদানির মধ্যেও কোনো উদ্বেগ নেই।’
ভারতের ঝাড়খন্ডে অবস্থিত আদানির দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দিনে দেড় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করার সক্ষমতা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮৫ কোটি ডলারের বকেয়া আদায়ে গত ৩১ অক্টোবর একটি ইউনিট বন্ধ করে দেয় আদানি। অবশ্য এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমানোর পাশাপাশি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু শীতে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় বাংলাদেশও এ নিয়ে অতটা আগ্রহ দেখায়নি।
এখন চাহিদা বাড়তে থাকায় আদানিও বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়িয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী গড়ে প্রায় ১৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি।
বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিপিডিবি সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মাসে গড়ে আদানি পাওয়ারের বিল আসে কমবেশি ৭০-৭৫ মিলিয়ন ডলার। আর গত অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে আদানি পাওয়ারকে গড়ে ৮৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হচ্ছে। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট মাসের বিলের পাশাপাশি
প্রদেয় বকেয়া বিলও রয়েছে। ছয় মাস ধরেই আদানি পাওয়ারকে এভাবে নিয়মিত বিলের পাশাপাশি কিছু পরিমাণে বকেয়াও পরিশোধ করা হচ্ছে। চলতি মার্চেও আদানি পাওয়ারকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ ৯৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি বিল পরিশোধ করেছে বিপিডিবি।
চলতি গ্রীষ্মে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। আদানিও এখন ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে গত দুই সপ্তাহ ধরে সর্বোচ্চ পরিমাণ বিদ্যুৎ কিনেছে বিপিডিবি।
আদানি গ্রুপের তথ্যমতে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত পিডিবির কাছে তাদের বকেয়া ছিল ৭৫ কোটি মার্কিন ডলারের মতো। পরে জানুয়ারিতে আরও কিছু বিল পরিশোধ করায় বকেয়ার পরিমাণ এখন কমেছে। যদিও পিডিবির হিসাবে ডিসেম্বরে বকেয়া ছিল প্রায় ৬৫ কোটি ডলার। কারণ বিলে কয়লার দাম নিয়ে বিরোধ আছে। চুক্তিতে উল্লিখিত সূত্র অনুসারে কয়লার দাম হিসাব করছে আদানি গ্রুপ আর কয়লার প্রকৃত দাম ধরে বিল হিসাব করছে পিডিবি।
আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় একই বছরের জুনে। বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর আগেই কেন্দ্রটির কয়লার দাম ও চুক্তির শর্ত নিয়ে দেশ-বিদেশে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। একপর্যায়ে পিডিবির পক্ষ থেকে আদানিকে কয়লার চড়া দাম দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর দাম কমাতে রাজি হয় তারা। পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে কম দামে কয়লা সরবরাহের প্রতিশ্রুতিও দেয় ভারতীয় এই ব্যবসায়ী গ্রুপ। কিন্তু এরপরও তারা কয়লার দাম বেশি ধরছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
বিপুল বকেয়ার কারণে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) যে টানাপড়েন চলছিল, তা অনেকটাই ‘কেটে গেছে’। অল্প অল্প করে বকেয়ার পাশাপাশি নিয়মিত বিল পরিশোধের ফলে আদানি গ্রুপ এখন বাংলাদেশের চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)।
পিডিবির সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আদানি পাওয়ারকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বিল পরিশোধ করা হতো প্রতিমাসে গড়ে ২০-৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনা বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে বিল পরিশোধও বেড়েছে আগের চেয়ে। আদানিকে নিয়মিত অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে এবং বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। আদানির মধ্যেও কোনো উদ্বেগ নেই।’
ভারতের ঝাড়খন্ডে অবস্থিত আদানির দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দিনে দেড় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করার সক্ষমতা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮৫ কোটি ডলারের বকেয়া আদায়ে গত ৩১ অক্টোবর একটি ইউনিট বন্ধ করে দেয় আদানি। অবশ্য এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমানোর পাশাপাশি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু শীতে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় বাংলাদেশও এ নিয়ে অতটা আগ্রহ দেখায়নি।
এখন চাহিদা বাড়তে থাকায় আদানিও বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়িয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী গড়ে প্রায় ১৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি।
বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিপিডিবি সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মাসে গড়ে আদানি পাওয়ারের বিল আসে কমবেশি ৭০-৭৫ মিলিয়ন ডলার। আর গত অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে আদানি পাওয়ারকে গড়ে ৮৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হচ্ছে। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট মাসের বিলের পাশাপাশি
প্রদেয় বকেয়া বিলও রয়েছে। ছয় মাস ধরেই আদানি পাওয়ারকে এভাবে নিয়মিত বিলের পাশাপাশি কিছু পরিমাণে বকেয়াও পরিশোধ করা হচ্ছে। চলতি মার্চেও আদানি পাওয়ারকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ ৯৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি বিল পরিশোধ করেছে বিপিডিবি।
চলতি গ্রীষ্মে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। আদানিও এখন ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে গত দুই সপ্তাহ ধরে সর্বোচ্চ পরিমাণ বিদ্যুৎ কিনেছে বিপিডিবি।
আদানি গ্রুপের তথ্যমতে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত পিডিবির কাছে তাদের বকেয়া ছিল ৭৫ কোটি মার্কিন ডলারের মতো। পরে জানুয়ারিতে আরও কিছু বিল পরিশোধ করায় বকেয়ার পরিমাণ এখন কমেছে। যদিও পিডিবির হিসাবে ডিসেম্বরে বকেয়া ছিল প্রায় ৬৫ কোটি ডলার। কারণ বিলে কয়লার দাম নিয়ে বিরোধ আছে। চুক্তিতে উল্লিখিত সূত্র অনুসারে কয়লার দাম হিসাব করছে আদানি গ্রুপ আর কয়লার প্রকৃত দাম ধরে বিল হিসাব করছে পিডিবি।
আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় একই বছরের জুনে। বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর আগেই কেন্দ্রটির কয়লার দাম ও চুক্তির শর্ত নিয়ে দেশ-বিদেশে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। একপর্যায়ে পিডিবির পক্ষ থেকে আদানিকে কয়লার চড়া দাম দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর দাম কমাতে রাজি হয় তারা। পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে কম দামে কয়লা সরবরাহের প্রতিশ্রুতিও দেয় ভারতীয় এই ব্যবসায়ী গ্রুপ। কিন্তু এরপরও তারা কয়লার দাম বেশি ধরছে বলে অভিযোগ রয়েছে।