২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত বগুড়া-৪, বগুড়া-৬ ও ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনে উপনির্বাচনে কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম নিজেকে সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে বিজয়ী ঘোষণার জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে দাবি জানিয়েছেন। নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে তিনি এ দাবি জানান।

হিরো আলম ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘যেহেতু ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে। হিরো আলম(কে) ঢাকা ১৭, বগুড়া ৪ ও ৬ আসনের এমপি পদ ফিরিয়ে দেয়া হোক, আমি তো অনেক নির্যাতিত হয়েছি।’ পরে আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে অনেকেই বনে-জঙ্গলে ঘুরেছে। সে সময় আমি নির্বাচন করেছি। ইশরাক যদি মেয়র হয়, তাহলে আমাকে এক দিনের জন্য

হলেও এমপি দিতে হবে।’ হিরো আলমের ভাষায়, ‘সংসদের মেয়াদ থাক না থাক, অন্তত জনগণের রায়কে সম্মান জানিয়ে ইসি নির্বাচনী ফলাফল জালিয়াতি করে দেশবাসীর সঙ্গে যে তামাশা করেছিল, আমাকে বিজয়ী ঘোষণা করে জাতির সঙ্গে তামাশার অবসান হোক।’

২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এ রায় দেন। এরপর আশরাফুল হোসেন (হিরো আলম) ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত ওই তিন আসনের উপনির্বাচনে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণার দাবি জানান।

আশরাফুল হোসেন (হিরো আলম) ২০২৩ সালের ২৩ জুলাই অনুষ্ঠিত ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একতারা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোটগ্রহণের দিন তার ওপর হামলা হয়। পরে তিনি ভোট বাতিল চেয়ে ইসিতে লিখিত অভিযোগ করেন।

এ ছাড়া, ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আশরাফুল হোসেন। এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত নৌকার প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনকে ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে বগুড়া-৬ আসনে নৌকার প্রার্থী ও বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান বিজয়ী হন।

হিরো আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘নির্বাচনী এলাকার ভোটার থেকে শুরু করে দেশবাসী খুব ভালো করেই অবগত আছেন, ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ এবং ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের হারিয়ে বিপুল ভোটে আমি বিজয়ী হয়েছিলাম। কিন্তু তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন কমিশনকে চাপ দিয়ে ফলাফল ছিনতাই করে শেখ হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট প্রার্থীদের অবৈধভাবে বিজয়ী ঘোষণা করে। ফল ছিনতাইয়ের প্রতিবাদ জানিয়ে ইসিতে লিখিত অভিযোগ করেও ন্যায়বিচার পাইনি। উল্টো প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করতে গিয়ে হামলার শিকার হতে হয়েছে।’

হিরো আলম আরও বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও বিএনপি নেতা ইশরাকের ফল ছিনতাইয়ের অভিযোগ ছিল। আদালতের নির্দেশে তাকে পাঁচ বছর পর বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। এখন ঢাকা-১৭, বগুড়া-৪ ও ৬ আসনে সংসদ সদস্য পদে ছিনতাই হওয়া ফলও নির্বাচন কমিশন থেকে ফিরিয়ে দেয়া হোক।’