যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদেশি বিনিয়োগ ধরে রাখতে এবং রপ্তানি স্থিতিশীল রাখতে সরকারের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। শনিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) কার্যালয়ে এক বৈঠকে তারা এ সুপারিশ করেন।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির প্রভাব এবং আসন্ন ঢাকা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন নিয়ে আলোচনা হয়।
‘শুল্ক থাকলে বিনিয়োগে অনাগ্রহ’
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, “চীনের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের পর আমরা ভেবেছিলাম দেশে বিনিয়োগ বাড়বে। কিন্তু এখন আমাদের পণ্যের ওপরও বাড়তি শুল্ক বসানো হয়েছে। এত শুল্ক থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আর বাংলাদেশে আগ্রহ দেখাবেন না।”
বিকেএমইএ ও অন্যান্য ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রতিনিধিরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
নতুন শুল্কে তৈরি পোশাক খাতে ধাক্কার আশঙ্কা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি শতাধিক দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে সম্পূরক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে বাংলাদেশি পণ্য এখন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্কসহ গড়ে মোট ৫২ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হচ্ছে, যা আগে ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ।
২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যার মধ্যে ৭৩৪ কোটি ডলারই ছিল তৈরি পোশাক। নতুন শুল্ক কাঠামোর ফলে তৈরি পোশাক খাত বড় ধরনের প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৈঠকে উপস্থিত সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকনোমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, “সরকারের উচিত এখনই ইতিবাচক বার্তা দেওয়া। ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক শূন্য করেছে। এমন উদাহরণ আমাদের সামনে রয়েছে।”
তবে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের জন্য শুল্ক শূন্য করা সম্ভব নয় বলেও তিনি মত দেন। তবে কীভাবে দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, সে বিষয়ে সুপারিশ দিয়েছেন বলেও জানান।
ব্যবসায়ীদের এই উদ্বেগের প্রেক্ষিতে শনিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জরুরি বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন আহমেদ, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং বিডার চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা।
বৈঠকের আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।”
তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে বিডার চেয়ারম্যান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং তাদের সুপারিশগুলো প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরা হবে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে এবং তিনি আশাবাদী যে আলোচনার মাধ্যমে এই সংকটের একটি ইতিবাচক সমাধান সম্ভব হবে।
শনিবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদেশি বিনিয়োগ ধরে রাখতে এবং রপ্তানি স্থিতিশীল রাখতে সরকারের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। শনিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) কার্যালয়ে এক বৈঠকে তারা এ সুপারিশ করেন।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির প্রভাব এবং আসন্ন ঢাকা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন নিয়ে আলোচনা হয়।
‘শুল্ক থাকলে বিনিয়োগে অনাগ্রহ’
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, “চীনের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের পর আমরা ভেবেছিলাম দেশে বিনিয়োগ বাড়বে। কিন্তু এখন আমাদের পণ্যের ওপরও বাড়তি শুল্ক বসানো হয়েছে। এত শুল্ক থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আর বাংলাদেশে আগ্রহ দেখাবেন না।”
বিকেএমইএ ও অন্যান্য ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রতিনিধিরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
নতুন শুল্কে তৈরি পোশাক খাতে ধাক্কার আশঙ্কা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি শতাধিক দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে সম্পূরক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে বাংলাদেশি পণ্য এখন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্কসহ গড়ে মোট ৫২ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হচ্ছে, যা আগে ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ।
২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যার মধ্যে ৭৩৪ কোটি ডলারই ছিল তৈরি পোশাক। নতুন শুল্ক কাঠামোর ফলে তৈরি পোশাক খাত বড় ধরনের প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৈঠকে উপস্থিত সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকনোমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, “সরকারের উচিত এখনই ইতিবাচক বার্তা দেওয়া। ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক শূন্য করেছে। এমন উদাহরণ আমাদের সামনে রয়েছে।”
তবে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের জন্য শুল্ক শূন্য করা সম্ভব নয় বলেও তিনি মত দেন। তবে কীভাবে দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, সে বিষয়ে সুপারিশ দিয়েছেন বলেও জানান।
ব্যবসায়ীদের এই উদ্বেগের প্রেক্ষিতে শনিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জরুরি বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন আহমেদ, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং বিডার চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা।
বৈঠকের আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।”
তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে বিডার চেয়ারম্যান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং তাদের সুপারিশগুলো প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরা হবে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে এবং তিনি আশাবাদী যে আলোচনার মাধ্যমে এই সংকটের একটি ইতিবাচক সমাধান সম্ভব হবে।