রাজনৈতিক দলের বাইরে সাধরণ নাগরিকদের মতামত নিতে শিগগিরই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জরিপের কাজ শুরু করার কথা বলেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজ।
সোমবার বিকালে জাতীয় সংসদের এলডি হলে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সঙ্গে আলোচনার শুরুতে তিনি বলেন, "আমরা আশা করছি রাজনৈতিক দলের বাইরেও সাধরণ নাগরিকদের অংশগ্রহণের পথ উন্মোচন করতে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আমরা শিগগিরই চেষ্টা করব। এর বাইরেও সবার মতামত নেওয়ার জন্য আমরা একটা জরিপ করব।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করে। রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্য ধরে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর একীভূত সুপারিশ চূড়ান্ত করার পাশাপাশি এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির জন্য কাজ করছে ঐকমত্য কমিশন।
সংশ্লিষ্ট কমিশনগুলোর প্রতিবেদনে আসা গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর ১৩ মার্চের মধ্যে মতামত জানাতে ৩৮টি দলকে অনুরোধ জানিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। তার মধ্যে নয়টি দল এখনো তাদের মতামত দেয়নি।
আলী রীয়াজ বলেন, "২৯ টি রাজনৈতিক দলের মতামত পেয়েছি, তারই পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। ঈদের আগে চারটি রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা হয়, বিরতি দিয়ে আজকে আবার আলোচনা শুরু করেছি। আশা করি মে মাসের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ রাজনৈতিক দল ও জোটগত ভাবে পথম পর্যায়ের সংলাপ শেষ হবে।
"পরবর্তী পর্যায়ে আমরা দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করতে পারব। সে ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য দেখব, বাইরেও কিছু কিছু বিষয়ে ভিন্ন মত আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে। তা নিয়ে মের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আলোচনা করতে পারব বলে আশা করছি। কমিশনের লক্ষ্য হল, জুলাই মাসের মধ্যে যে নির্ধারিত সময় আছে, তার মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে পারি।"
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার কাজ এগিয়ে নিয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর এবং ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্য ঠিক করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
কমিশনের কাজে রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, "জাতীয় ঐকমত্য কমিশন মনে করে, ঐকমত্যটা জাতীয় হতে হবে। শুধু কোনো সমাজের বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর, বিশেষ কোনো অংশের প্রতিনিধিত্ব না করে, রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন, এর বাইরেও যারা আছেন তাদের মতামত আমরা নিতে চাই। সেই পথ আমরা খুব শিগ্রই শুরু করব। আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা হচ্ছে সকলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। যাতে করে সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে মননিবেশ করতে পারি।"
সোমবার বিকাল ৩টার পরপর জাতীয় সংসদের এলডি হলে এবি পার্টির সঙ্গে কমিশনের বৈঠক শুরু হয়। এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে ১০ সদস্যদের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেন।
বৈঠকের শুরুতে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, "সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১০৮টি বিষয়ে একমত পোষণ করে গত ১৭ মার্চ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে মতামত দিয়েছে এবি পার্টি। এতে ৩২টি সুপারিশের বিষয়ে দ্বিমত এবং ২৬টি বিষয়ে আংশিক একমত জানিয়েছি।
‘স্প্রেড শিটে’ (ছক আকারে) মতামত চাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমাদের কাছে এমসিকিউ মনে হয়নি, কারণ এখানে সব ধরনের মতামত দেওয়ার সুযোগ ছিল। তাই এটাকে খাটো করে দেখার সুযোগ নাই। ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব আমাদের পছন্দ হয়েছে। যেসব বিষয়ে দ্বিমত এবং আংশিকভাবে একমত, সেসব বিষয়ে আজকে আলোচনা হতে পারে।”
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জাতীয় সংকট নিরসনে আনুষ্ঠানিক আলোচনার বাইরেও ‘পর্দার অন্তরালে’ আলোচনা করতে হবে।
“অনেক বিষয়ে আমরা হয়ত একমত হইনি। কিন্তু ভবিষ্যতে সংলাপের মাধ্যমে একমত হব। অথবা আমাদের মতামতের ভিক্তিতে আপনাদের মতামত প্রত্যাহার করে, একটি জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছাব। আমাদের দলে অবস্থান নমনীয়। আমাদের মতামতের উপরই যে আমরা স্থির থাকব তা না, যৌক্তিকতার আলোকে যে কোনো আলোচনাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এটা আমাদের নীতিগত অবস্থান।
"অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের বাইরেও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে তৎপরতা চালাতে হবে, কারণ একটা মত মানুষে নিয়ে আশার মত কঠিক কাজ কিছু হতে পারে না।"
তিনি বলেন, "তার পরেও আমরা আশাবাদী, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সফল হবে, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। সঠিক দিক নির্দেশনায় চলবে।"
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করে। এতে সহসভাপতি হিসেবে আছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
কমিশনের সদস্য হিসেবে রয়েছেন- জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।
প্রথম দল হিসেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে ১৮ মার্চ বসেছিল কমিশন, এর ধারাবাহিকতায় এবি পার্টির সঙ্গে আলোচনা সারল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫
রাজনৈতিক দলের বাইরে সাধরণ নাগরিকদের মতামত নিতে শিগগিরই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জরিপের কাজ শুরু করার কথা বলেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজ।
সোমবার বিকালে জাতীয় সংসদের এলডি হলে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সঙ্গে আলোচনার শুরুতে তিনি বলেন, "আমরা আশা করছি রাজনৈতিক দলের বাইরেও সাধরণ নাগরিকদের অংশগ্রহণের পথ উন্মোচন করতে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আমরা শিগগিরই চেষ্টা করব। এর বাইরেও সবার মতামত নেওয়ার জন্য আমরা একটা জরিপ করব।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করে। রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্য ধরে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর একীভূত সুপারিশ চূড়ান্ত করার পাশাপাশি এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির জন্য কাজ করছে ঐকমত্য কমিশন।
সংশ্লিষ্ট কমিশনগুলোর প্রতিবেদনে আসা গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর ১৩ মার্চের মধ্যে মতামত জানাতে ৩৮টি দলকে অনুরোধ জানিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। তার মধ্যে নয়টি দল এখনো তাদের মতামত দেয়নি।
আলী রীয়াজ বলেন, "২৯ টি রাজনৈতিক দলের মতামত পেয়েছি, তারই পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। ঈদের আগে চারটি রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা হয়, বিরতি দিয়ে আজকে আবার আলোচনা শুরু করেছি। আশা করি মে মাসের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ রাজনৈতিক দল ও জোটগত ভাবে পথম পর্যায়ের সংলাপ শেষ হবে।
"পরবর্তী পর্যায়ে আমরা দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করতে পারব। সে ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য দেখব, বাইরেও কিছু কিছু বিষয়ে ভিন্ন মত আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে। তা নিয়ে মের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আলোচনা করতে পারব বলে আশা করছি। কমিশনের লক্ষ্য হল, জুলাই মাসের মধ্যে যে নির্ধারিত সময় আছে, তার মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে পারি।"
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার কাজ এগিয়ে নিয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর এবং ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্য ঠিক করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
কমিশনের কাজে রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, "জাতীয় ঐকমত্য কমিশন মনে করে, ঐকমত্যটা জাতীয় হতে হবে। শুধু কোনো সমাজের বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর, বিশেষ কোনো অংশের প্রতিনিধিত্ব না করে, রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন, এর বাইরেও যারা আছেন তাদের মতামত আমরা নিতে চাই। সেই পথ আমরা খুব শিগ্রই শুরু করব। আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা হচ্ছে সকলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। যাতে করে সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে মননিবেশ করতে পারি।"
সোমবার বিকাল ৩টার পরপর জাতীয় সংসদের এলডি হলে এবি পার্টির সঙ্গে কমিশনের বৈঠক শুরু হয়। এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে ১০ সদস্যদের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেন।
বৈঠকের শুরুতে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, "সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১০৮টি বিষয়ে একমত পোষণ করে গত ১৭ মার্চ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে মতামত দিয়েছে এবি পার্টি। এতে ৩২টি সুপারিশের বিষয়ে দ্বিমত এবং ২৬টি বিষয়ে আংশিক একমত জানিয়েছি।
‘স্প্রেড শিটে’ (ছক আকারে) মতামত চাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমাদের কাছে এমসিকিউ মনে হয়নি, কারণ এখানে সব ধরনের মতামত দেওয়ার সুযোগ ছিল। তাই এটাকে খাটো করে দেখার সুযোগ নাই। ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব আমাদের পছন্দ হয়েছে। যেসব বিষয়ে দ্বিমত এবং আংশিকভাবে একমত, সেসব বিষয়ে আজকে আলোচনা হতে পারে।”
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জাতীয় সংকট নিরসনে আনুষ্ঠানিক আলোচনার বাইরেও ‘পর্দার অন্তরালে’ আলোচনা করতে হবে।
“অনেক বিষয়ে আমরা হয়ত একমত হইনি। কিন্তু ভবিষ্যতে সংলাপের মাধ্যমে একমত হব। অথবা আমাদের মতামতের ভিক্তিতে আপনাদের মতামত প্রত্যাহার করে, একটি জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছাব। আমাদের দলে অবস্থান নমনীয়। আমাদের মতামতের উপরই যে আমরা স্থির থাকব তা না, যৌক্তিকতার আলোকে যে কোনো আলোচনাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এটা আমাদের নীতিগত অবস্থান।
"অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের বাইরেও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে তৎপরতা চালাতে হবে, কারণ একটা মত মানুষে নিয়ে আশার মত কঠিক কাজ কিছু হতে পারে না।"
তিনি বলেন, "তার পরেও আমরা আশাবাদী, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সফল হবে, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। সঠিক দিক নির্দেশনায় চলবে।"
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করে। এতে সহসভাপতি হিসেবে আছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
কমিশনের সদস্য হিসেবে রয়েছেন- জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।
প্রথম দল হিসেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে ১৮ মার্চ বসেছিল কমিশন, এর ধারাবাহিকতায় এবি পার্টির সঙ্গে আলোচনা সারল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।