নতুন বছরের সূচনায় রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত হলো বৈচিত্র্যময় ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। বিভিন্ন রঙ ও রূপে সজ্জিত হাজারো মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেন—কেউ প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড হাতে, কেউবা সেজেছেন গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পোশাকে। সঙ্গে ছিলেন পাহাড়ি ও সমতলের জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাও।
বিগত বছরগুলোর ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ এবছর ফিরে পেয়েছে তার পুরোনো নাম—‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। আয়োজকরা একে ‘নাম পরিবর্তন’ নয়, বরং ‘নাম পুনরুদ্ধার’ বলেই অভিহিত করছেন।
শোভাযাত্রাটি শুরু হয় শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে। শাহবাগ, টিএসসি, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর হয়ে তা ঘুরে আসে পুনরায় চারুকলায়। শোভাযাত্রায় অংশ নেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানসহ আরও অনেকে।
এক ফেইসবুক পোস্টে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লেখেন, “এই ভূখণ্ডে নতুন বছর আসে কেবল বাঙালির জন্য—এই উৎসব তাই কেবল বাঙালির প্রাণের উৎসব—এই ক্ষুদ্রতা থেকে মুক্তি ঘটুক, এই প্রত্যয়ে এই আনন্দ শোভাযাত্রা। চাকমা, মারমা, গারো, বাঙালি—সবাই মিলেই আজ মেতেছে উৎসবে।”
এ বছরের শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য ছিল: ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। সেই বার্তা নিয়েই বিভিন্ন মোটিফ ও শিল্পকর্মের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হয় সাম্প্রতিক বিশ্ব পরিস্থিতির, বিশেষ করে ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে।
‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ নামে একটি বিশাল মুখাকৃতি ছিল শোভাযাত্রার মুখ্য আকর্ষণ। এটি ভোররাতে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হলেও আয়োজকেরা একদিনেই নতুন করে সেটি নির্মাণ করে শোভাযাত্রায় শামিল করেন। নতুন প্রতিকৃতিটির উচ্চতা ছিল ১৬ ফুট।
এছাড়াও ৭টি বড়, ৭টি মাঝারি এবং ৭টি ছোট মোটিফসহ অসংখ্য শিল্পকর্ম ছিল শোভাযাত্রায়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল বাঘ, ইলিশ, শান্তির পায়রা, পালকি, তরমুজের ফালি এবং পানির বোতলের মোটিফ—যা গত জুলাইয়ে নিহত আন্দোলনকারী মুগ্ধকে স্মরণ করায়।
ফিলিস্তিনি সংহতির প্রতীক হিসেবে রাখা হয় তরমুজের ফালি। চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম বলেন, “ফিলিস্তিনিদের কাছে তরমুজ প্রতিরোধ ও অধ্যবসায়ের প্রতীক। এর রঙ ফিলিস্তিনের পতাকার সঙ্গে মিল থাকায় এটি দীর্ঘদিন ধরে তাদের সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।”
এবারের শোভাযাত্রায় অংশ নেয় বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন (বামবা)। কৃষক, সাধু, বাউল, নারী ফুটবলার—সবার অংশগ্রহণে শোভাযাত্রা হয়ে ওঠে আরো প্রাণবন্ত। নবপ্রাণ আন্দোলনের তত্ত্বাবধানে ছিল বাউলদের পরিবেশনা।
আয়োজকরা জানান, এবারের আয়োজন ছিল আরও বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক। মোট ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিসহ দেশের নানা প্রান্তের মানুষ, সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন দেশের অতিথিরা শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
নববর্ষ উপলক্ষে নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে স্থাপন করা হয় সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে।
সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
নতুন বছরের সূচনায় রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত হলো বৈচিত্র্যময় ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। বিভিন্ন রঙ ও রূপে সজ্জিত হাজারো মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেন—কেউ প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড হাতে, কেউবা সেজেছেন গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পোশাকে। সঙ্গে ছিলেন পাহাড়ি ও সমতলের জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাও।
বিগত বছরগুলোর ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ এবছর ফিরে পেয়েছে তার পুরোনো নাম—‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। আয়োজকরা একে ‘নাম পরিবর্তন’ নয়, বরং ‘নাম পুনরুদ্ধার’ বলেই অভিহিত করছেন।
শোভাযাত্রাটি শুরু হয় শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে। শাহবাগ, টিএসসি, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর হয়ে তা ঘুরে আসে পুনরায় চারুকলায়। শোভাযাত্রায় অংশ নেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানসহ আরও অনেকে।
এক ফেইসবুক পোস্টে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লেখেন, “এই ভূখণ্ডে নতুন বছর আসে কেবল বাঙালির জন্য—এই উৎসব তাই কেবল বাঙালির প্রাণের উৎসব—এই ক্ষুদ্রতা থেকে মুক্তি ঘটুক, এই প্রত্যয়ে এই আনন্দ শোভাযাত্রা। চাকমা, মারমা, গারো, বাঙালি—সবাই মিলেই আজ মেতেছে উৎসবে।”
এ বছরের শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য ছিল: ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। সেই বার্তা নিয়েই বিভিন্ন মোটিফ ও শিল্পকর্মের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হয় সাম্প্রতিক বিশ্ব পরিস্থিতির, বিশেষ করে ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে।
‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ নামে একটি বিশাল মুখাকৃতি ছিল শোভাযাত্রার মুখ্য আকর্ষণ। এটি ভোররাতে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হলেও আয়োজকেরা একদিনেই নতুন করে সেটি নির্মাণ করে শোভাযাত্রায় শামিল করেন। নতুন প্রতিকৃতিটির উচ্চতা ছিল ১৬ ফুট।
এছাড়াও ৭টি বড়, ৭টি মাঝারি এবং ৭টি ছোট মোটিফসহ অসংখ্য শিল্পকর্ম ছিল শোভাযাত্রায়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল বাঘ, ইলিশ, শান্তির পায়রা, পালকি, তরমুজের ফালি এবং পানির বোতলের মোটিফ—যা গত জুলাইয়ে নিহত আন্দোলনকারী মুগ্ধকে স্মরণ করায়।
ফিলিস্তিনি সংহতির প্রতীক হিসেবে রাখা হয় তরমুজের ফালি। চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম বলেন, “ফিলিস্তিনিদের কাছে তরমুজ প্রতিরোধ ও অধ্যবসায়ের প্রতীক। এর রঙ ফিলিস্তিনের পতাকার সঙ্গে মিল থাকায় এটি দীর্ঘদিন ধরে তাদের সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।”
এবারের শোভাযাত্রায় অংশ নেয় বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন (বামবা)। কৃষক, সাধু, বাউল, নারী ফুটবলার—সবার অংশগ্রহণে শোভাযাত্রা হয়ে ওঠে আরো প্রাণবন্ত। নবপ্রাণ আন্দোলনের তত্ত্বাবধানে ছিল বাউলদের পরিবেশনা।
আয়োজকরা জানান, এবারের আয়োজন ছিল আরও বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক। মোট ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিসহ দেশের নানা প্রান্তের মানুষ, সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন দেশের অতিথিরা শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
নববর্ষ উপলক্ষে নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে স্থাপন করা হয় সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে।