ছয় দফা দাবি আদায়ে কারিগরি শিক্ষার্থীদের জোট ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ’ শনিবার‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি পালন করে -সংবাদ
ছয় দফা দাবি আদায়ে আজ দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ‘মহাসমাবেশ’ করবেন কারিগরি শিক্ষার্থীদের জোট ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’। তারা শনিবার, (১৯ এপ্রিল) দুপুরে ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি শেষে তেজগাঁওয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে এ ঘোষণা দেন।
একই দাবিতে ও কুমিল্লায় কর্মসূচিতে ‘হামলা’র প্রতিবাদে শনিবার মানববন্ধন করেছে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা ইনস্টিটিউটের মূল ফটকের নামফলক লাল কাপড়ে ঢেকে দেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘মামা থেকে মাস্টার, মামাবাড়ির আবদার’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ডুয়েট যদি একটা হয়, ডিপ্লোমারা যাবে কই’ এবং ‘কারিগরিতে নন টেক, চলবে না চলবে না’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মাশফিক ইসলাম দেওয়ান জানান, ছয় দফা দাবি আদায়, কুমিল্লায় কর্মসূচিতে হামলা ও ফ্যাসিবাদী শক্তি যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বানচাল করার চেষ্টা করছে তারই প্রতিবাদে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন।
আজ শিক্ষার্থীদের ‘মহাসমাবেশ’:
রোববার (আজ) দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে একযোগে মহাসমাবেশ হবে জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘মহাসমাবেশের’ লক্ষ্য ছয় দফা দাবির বিষয়টি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। এ কর্মসূচি চলাকালে কোনো ধরনের জনদুর্ভোগ সৃষ্টি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছয় দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী জোবায়ের পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা রাজপথ ছেড়ে দেবো। কুমিল্লার ভাইদের ওপর হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করুন, তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করুন। আমরা আলোচনায় বসতে আগ্রহী’।
কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মাশফিক ইসলাম দেওয়ান বলেন, ‘এ সরকার আমাদের সরকার, শিক্ষার্থীদের সরকার, বিপ্লবীদের সরকার। এ সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত। কারিগরি শিক্ষা সেক্টরে যে বৈষম্য আছে, আমরা চাই সরকার তা দূর করুক’।
ছয় দফা দাবি আদায়ে গত বৃস্পতিবার মশাল মিছিল এবং শুক্রবার মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে গণমিছিল করেন বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। বৃস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে সন্তুষ্ট না হয়ে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এর আগে বুধবার একই দাবিতে তারা ঢাকার তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা, মোহাম্মদপুর, মিরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেন। রাজধানীজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোগান্তি পোহাতে হয় মানুষজনকে।
ছয় দফা দাবি
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি হলো জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন,
মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত করতে হবে।
দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যে কোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।
তৃতীয়ত, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (দশম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।
ষষ্ঠ দাবি হলো- পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস এবং ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ আসনে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
ছয় দফা দাবি আদায়ে কারিগরি শিক্ষার্থীদের জোট ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ’ শনিবার‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি পালন করে -সংবাদ
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
ছয় দফা দাবি আদায়ে আজ দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ‘মহাসমাবেশ’ করবেন কারিগরি শিক্ষার্থীদের জোট ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’। তারা শনিবার, (১৯ এপ্রিল) দুপুরে ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি শেষে তেজগাঁওয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে এ ঘোষণা দেন।
একই দাবিতে ও কুমিল্লায় কর্মসূচিতে ‘হামলা’র প্রতিবাদে শনিবার মানববন্ধন করেছে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা ইনস্টিটিউটের মূল ফটকের নামফলক লাল কাপড়ে ঢেকে দেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘মামা থেকে মাস্টার, মামাবাড়ির আবদার’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ডুয়েট যদি একটা হয়, ডিপ্লোমারা যাবে কই’ এবং ‘কারিগরিতে নন টেক, চলবে না চলবে না’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মাশফিক ইসলাম দেওয়ান জানান, ছয় দফা দাবি আদায়, কুমিল্লায় কর্মসূচিতে হামলা ও ফ্যাসিবাদী শক্তি যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বানচাল করার চেষ্টা করছে তারই প্রতিবাদে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন।
আজ শিক্ষার্থীদের ‘মহাসমাবেশ’:
রোববার (আজ) দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে একযোগে মহাসমাবেশ হবে জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘মহাসমাবেশের’ লক্ষ্য ছয় দফা দাবির বিষয়টি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। এ কর্মসূচি চলাকালে কোনো ধরনের জনদুর্ভোগ সৃষ্টি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছয় দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী জোবায়ের পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা রাজপথ ছেড়ে দেবো। কুমিল্লার ভাইদের ওপর হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করুন, তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করুন। আমরা আলোচনায় বসতে আগ্রহী’।
কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মাশফিক ইসলাম দেওয়ান বলেন, ‘এ সরকার আমাদের সরকার, শিক্ষার্থীদের সরকার, বিপ্লবীদের সরকার। এ সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত। কারিগরি শিক্ষা সেক্টরে যে বৈষম্য আছে, আমরা চাই সরকার তা দূর করুক’।
ছয় দফা দাবি আদায়ে গত বৃস্পতিবার মশাল মিছিল এবং শুক্রবার মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে গণমিছিল করেন বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। বৃস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে সন্তুষ্ট না হয়ে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এর আগে বুধবার একই দাবিতে তারা ঢাকার তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা, মোহাম্মদপুর, মিরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেন। রাজধানীজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোগান্তি পোহাতে হয় মানুষজনকে।
ছয় দফা দাবি
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি হলো জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন,
মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত করতে হবে।
দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যে কোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।
তৃতীয়ত, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (দশম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।
ষষ্ঠ দাবি হলো- পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস এবং ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ আসনে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।