ভারতের কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ পর্যটককে হত্যার ঘটনার ধারাবাহিকতায় শনিবার (২৬/ ০৪/ ২০২৫) দ্বিতীয় দিনের মতো ভারত ও পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে গুলিবিনিময় হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর।
গত মঙ্গলবার ওই হামলার ঘটনা ঘটে কাশ্মীরে। ভারত সরকার দাবি করে, পাকিস্তানের মদদপুষ্ট জঙ্গীরা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে।
এরপর ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ, কূটনৈতিক ও নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানোসহ অনেকগুলো পদক্ষেপ ঘোষণা করে। এছাড়া সিন্ধুর নদীর জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে দেয়। তিব্বত থেকে আসা ওই নদের পানির ওপর পাকিস্তানের বিরাট সংখ্যক মানুষ নির্ভর করে। চুক্তি স্থগিত হলে পানিবঞ্চিত হবে পাকিস্তান। ভারতের এই পদক্ষেপকে যুদ্ধের শামিল হিসেবে অভিহিত করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানও এর প্রতিক্রিয়ায় একই রকম বেশ কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। ব্যবসাবাণিজ্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতে এই মুহূর্তে পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব তুঙ্গে। ক্ষমতাসীন বিজেপির অনেকেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নেয়ার জোরালো দাবি তুলেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও বলছে তারাও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেছেন নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তার দেশ প্রস্তুত রয়েছে। একই সঙ্গে তিনি পেহেলগামে হামলার আন্তর্জাতিক তদন্তও দাবি করেছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত আমরা গ্রহণ করবো। তিনি ভারতের অভিযোগকে গতানুগতিক দোষারোপের রাজনীতি হিসেবে অভিহিত করেন এবং বলেন, তা শেষ হওয়া উচিত।
এই পরিস্থিতি নিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।
এদিকে পেহেলগাম হামলার প্রেক্ষিতে ভারত রাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সহযোগিতার নীতি নিয়েছে বিরোধী কংগ্রেস। সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গে বলেছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি থাকার কথা সরকার স্বীকার করেছে এবং আমরা সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও একই কথা বলেছেন। বলেছেন, এখন এই ইস্যু রাজনীতিকীকরণের সময় নয়।
পাশাপাশি পেহেলগাম হামলায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। একই সঙ্গে চলছে পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশে পাঠানোর কাজও। এর মধ্যে উড়িষ্যা থেকে ১২ জনের ভিসা
বাতিল করে দেশে পাঠানোর প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন ওই রাজ্যের আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন। ভারত ইতোমধ্যেই পাকিস্তানের সব নাগরিকদের ভারতীয় ভিসা বাতিল করেছে।
পেহেলগাম হামলার পর ভারতের অনেক জায়গাতেই কাশ্মীরের অধিবাসীরা বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। কাশ্মীরের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘটা বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান নিয়ে পাঞ্জাবের গভর্নর গুলাব চান্দের সঙ্গে দেখা করেছেন কাশ্মীরের মূখ্যমন্ত্রী সাকিনা ইতু।
খেলা: টি-২০তে ৭ রানে ৮ উইকেট