alt

নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার অনন্তলোকে

সংবাদ ডেস্ক : রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’ পঙ্ক্তিমালার কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। গতকাল শনিবার রাতে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি বয়স্ক নিরাময় কেন্দ্রে তিনি মারা যান।

তার ভাতিজি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ‘স্থানীয় সময়ে রাত ৯টা ২০ মিনিট বাংলাদেশি সময় শনিবার রাত পৌনে একটায় মারা যান তার চাচা।

বার্লিনে কবির অত্যন্ত স্নেহভাজন, সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পী মাইন চৌধুরী পিটু বলেন, কবি দাউদ হায়দার গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক অসুস্থতাজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। সে কারণে বেশ কয়েক মাস জার্মানির বেশ কয়েকটি হাসপাতালেও চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে কবির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মাইন চৌধুরী বলেন, কবির মরদেহ বার্লিনেই দাফন করা হবে।

পরিবার জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন কবি দাউদ হায়দার। গত বছর ডিসেম্বরে বার্লিনের বাসার সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। তখন হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় দাউদ হায়দারের শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে এবং জ্ঞান ফিরলেও তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতেন না। পরে তাকে ‘কৃত্রিম কোমা’ থেকে সাধারণ কোমায় রাখা হয় এবং তার শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

গত জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে কবি দাউদ হায়দারকে বার্লিন থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে গ্রাইফভাল্ডার শহরে নিউরোলজি বা স্নায়বিক পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। চিকিৎসকেরা তখন জানিয়েছিলেন, সেখানে তাকে অনেকটা সময় থাকতে হবে। কিছুটা সুস্থ হয় উঠলে দাউদ হায়দারকে গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে বার্লিনের শ্যোনেবের্গ ক্লিনিকে স্থানান্তরিত করা হয়।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন দাউদ হায়দার। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, লেখক ও সাংবাদিক। দাউদ হায়দারের প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে জন্মই আমার আজন্ম পাপ, সংগস অব ডেস্পেয়ার, এই শাওনে এই পরবাসে, আমি পুড়েছি জ্বালা ও আগুনে, এলোন ইন ডার্কনেস অ্যান্ড আদার পোয়েমস ইত্যাদি।

সত্তরের দশকের শুরুর দিকে দাউদ হায়দার দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্না’ এই শিরোনামে তার একটি কবিতা ‘সংবাদ’ পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছিল। কবিতাটি লেখার ‘অপরাধে’ ১৯৭৪ সালের ১১ মার্চ গ্রেপ্তার হন। তার বিরুদ্ধে আদালতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য মামলা করা হয়। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

ওই বছরেরই ২১ মে দাউদ হায়দারকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়। প্রথম তিনি ১৩ বছর কলকাতায় ছিলেন। পরে জার্মানির নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের সহযোগিতায় ১৯৮৬ সালের ২২ জুলাই জার্মানি পৌঁছান। তখন থেকেই তিনি জার্মানির বার্লিন শহরে বসবাস করছিলেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর দাউদ হায়দারই প্রথম লেখক, যাকে লেখালেখির কারণে নির্বাসনে যেতে হয়। ৫০ বছর ধরে কবি দাউদ হায়দার নির্বাসনে ছিলেন। এই সময়ে তিনি আর কখনোই দেশে ফিরতে পারেননি। বাংলাদেশের কোনো সরকার এই কবিকে ফিরিয়ে আনার কোনো উদ্যোগও নেয়নি।

নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট দু’টি আইন সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন

নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গোৎসব: ডিএমপি কমিশনার

ছবি

পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতীতে নদীর বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ছবি

কাঁটাতারে ঝুলে মারা যাওয়া সেই ফেলানীর ছোট ভাই এখন বর্ডারগার্ড

ডেঙ্গু: আরও ৬ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬৪৭ জন

৪ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসকে নতুন সরকারের প্রধান হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়: নাহিদ ইসলাম

ছবি

কুমিল্লায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৪টি মাজারে হামলা, আগুন

ছবি

জুলাই আন্দোলনের ঘটনায় রামপুরায় হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ: পাঁচ আসামির বিচার শুরু

ছবি

সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিসের আবেদন

ছবি

সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

টিআইবির প্রশ্ন: ভবিষ্যৎ মন্ত্রীদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কেনায় অতি আগ্রহ কেন?

ছবি

নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি: ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ আখ্যায়িত করে অপমানিত করা হয়েছে

ছবি

জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ

ছবি

আমি যে কাজ করেছি তা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনদিন হয় নি: সিলেটে আসিফ নজরুল

ছবি

অগ্রণী ব্যাংকে শেখ হাসিনার দুটি লকার জব্দ

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ৬২২

ছবি

মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জাতিসংঘে যাচ্ছেন ফখরুল-তাহের-আখতার

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে চারটি পদ্ধতির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

ছবি

ডেমু ট্রেন কেনায় রাষ্ট্রের ক্ষতি, দুদকের মামলা

ছবি

বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের প্রধান বিচারপতির বৈঠক

ছবি

ট্রাইব্যুনাল: নাহিদের সাক্ষ্য বুধবার, মাহমুদুর রহমানের জেরা শুরু

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন

ছবি

ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা: বাংলাদেশ-ভারতের ভৌগোলিক নৈকট্য ও আন্তঃনির্ভতা নতুন সুযোগে রূপান্তরের সম্ভাবনা

ছবি

ধর্মীয় উৎসবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নয়, সমান নাগরিক অধিকারের বাংলাদেশ চান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস

ছবি

ভুয়া প্রমাণিত হলে জুলাই যোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলায় নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য বুধবার

ছবি

জুলাই আন্দোলন: ইনু-নূরসহ ৯ আসামির ভার্চুয়াল হাজিরা

ছবি

বাংলাদেশে উষ্ণায়নের প্রভাব: কর্মদিবস নষ্ট, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যে বড় ক্ষতি

ছবি

এলডিসি থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দিতে কাজ করছে সরকার: বাণিজ্য সচিব

ছবি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২ দফা জরুরি নির্দেশনা

ছবি

দুর্গাপূজা প্রস্তুতি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

ছবি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অতিরিক্ত মহাপরিচালকদের দপ্তর বদল, একজনকে ওএসডি

ছবি

ফিলিস্তিনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাল বাংলাদেশ

ছবি

আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ছাড়াল ৩৮ হাজার

tab

নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার অনন্তলোকে

সংবাদ ডেস্ক

রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’ পঙ্ক্তিমালার কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। গতকাল শনিবার রাতে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি বয়স্ক নিরাময় কেন্দ্রে তিনি মারা যান।

তার ভাতিজি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ‘স্থানীয় সময়ে রাত ৯টা ২০ মিনিট বাংলাদেশি সময় শনিবার রাত পৌনে একটায় মারা যান তার চাচা।

বার্লিনে কবির অত্যন্ত স্নেহভাজন, সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পী মাইন চৌধুরী পিটু বলেন, কবি দাউদ হায়দার গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক অসুস্থতাজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। সে কারণে বেশ কয়েক মাস জার্মানির বেশ কয়েকটি হাসপাতালেও চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে কবির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মাইন চৌধুরী বলেন, কবির মরদেহ বার্লিনেই দাফন করা হবে।

পরিবার জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন কবি দাউদ হায়দার। গত বছর ডিসেম্বরে বার্লিনের বাসার সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। তখন হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় দাউদ হায়দারের শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে এবং জ্ঞান ফিরলেও তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতেন না। পরে তাকে ‘কৃত্রিম কোমা’ থেকে সাধারণ কোমায় রাখা হয় এবং তার শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

গত জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে কবি দাউদ হায়দারকে বার্লিন থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে গ্রাইফভাল্ডার শহরে নিউরোলজি বা স্নায়বিক পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। চিকিৎসকেরা তখন জানিয়েছিলেন, সেখানে তাকে অনেকটা সময় থাকতে হবে। কিছুটা সুস্থ হয় উঠলে দাউদ হায়দারকে গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে বার্লিনের শ্যোনেবের্গ ক্লিনিকে স্থানান্তরিত করা হয়।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন দাউদ হায়দার। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, লেখক ও সাংবাদিক। দাউদ হায়দারের প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে জন্মই আমার আজন্ম পাপ, সংগস অব ডেস্পেয়ার, এই শাওনে এই পরবাসে, আমি পুড়েছি জ্বালা ও আগুনে, এলোন ইন ডার্কনেস অ্যান্ড আদার পোয়েমস ইত্যাদি।

সত্তরের দশকের শুরুর দিকে দাউদ হায়দার দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্না’ এই শিরোনামে তার একটি কবিতা ‘সংবাদ’ পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছিল। কবিতাটি লেখার ‘অপরাধে’ ১৯৭৪ সালের ১১ মার্চ গ্রেপ্তার হন। তার বিরুদ্ধে আদালতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য মামলা করা হয়। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

ওই বছরেরই ২১ মে দাউদ হায়দারকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়। প্রথম তিনি ১৩ বছর কলকাতায় ছিলেন। পরে জার্মানির নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের সহযোগিতায় ১৯৮৬ সালের ২২ জুলাই জার্মানি পৌঁছান। তখন থেকেই তিনি জার্মানির বার্লিন শহরে বসবাস করছিলেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর দাউদ হায়দারই প্রথম লেখক, যাকে লেখালেখির কারণে নির্বাসনে যেতে হয়। ৫০ বছর ধরে কবি দাউদ হায়দার নির্বাসনে ছিলেন। এই সময়ে তিনি আর কখনোই দেশে ফিরতে পারেননি। বাংলাদেশের কোনো সরকার এই কবিকে ফিরিয়ে আনার কোনো উদ্যোগও নেয়নি।

back to top