বিগত বছরগুলোতে জেল, গুম ও খুন হওয়া দলীয় নেতাকর্মীদের ক্ষতিপূরণ কে দেবে জানতে চেয়ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এছাড়া আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলে বিএনপির নেতাকর্মীদের ‘মিথ্যা মামলা’ দিয়ে হয়রানির অভিযোগ তুলে তাদের ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন তিনি। ‘ঐকমত্যের বাইরে সংস্কারের প্রয়োজন নেই’ বলেও মন্তব্য করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রোববার,(২৭ এপ্রিল ২০২৫) ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১৪ এর বিচারক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রাজধানীর শাহবাগ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় আমীর খসরুসহ পাঁচজনকে খালাস দেয়। রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপিকর্মীদের হয়রানির ক্ষতিপূরণের দাবির কথা বলেন তিনি।
এরপর বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মিত্রদল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) সঙ্গে বৈঠক করে দলটি। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশে তো আমরা বাকশাল করতে যাচ্ছি না। সবাইকে একমত হওয়ার চিন্তা বাকশালী চিন্তা, যেটা শেখ হাসিনার পিতা করেছিলেন।’ কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, বিভিন্ন দলের বিভিন্ন দর্শন, বিভিন্ন চিন্তা থাকবে, ভিন্নমত থাকবে। তাই ‘ঐকমত্যের বাইরে সংস্কারের প্রয়োজন নেই’ বলে মন্তব্য তার।
‘যেখানে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলোর বাইরে সংস্কার করার সুযোগ নাই’ এমন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘ঐকমত্যের বাইরে কিছু করতে হলে তা ডেমোক্র্যাটিক প্রসেসের (গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া) মাধ্যমে করতে হবে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে করতে হবে।’
রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে যে বিষয়গুলোতে
ঐকমত্য হয়েছে সে বিষয়গুলো জাতির সামনে তুলে ধরার দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘অলরেডি সবাই (সব রাজনৈতিক দল) তাদের প্রস্তাব সাবমিট করে দিয়েছে। অনেক দিন সময় চলে গেছে, আলোচনা শেষ।’ তিনি বলেন, ‘এটা (যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য) জানানোর জন্য এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগে না।’ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি বলব, জাতিকে জানান কোথায় ঐকমত্য হয়েছে, জাতি জানুক এবং ওই ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা সনদ সই করে দিয়ে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাই। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই।’
নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা না হওয়ায় জনগণের মধ্যে ‘সংশয় ও উদ্বেগের সৃষ্টি’ হয়েছে দাবি তার। যা আগামী দিনের নির্বাচন প্রক্রিয়ার জন্যে ভালো কিছু বয়ে আনবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। খসরু বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়ে আশ্বস্ত করতে হবে, জাতি গণতন্ত্রের দিকে যাচ্ছে, জাতি গণতন্ত্র ফিরে পেতে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের বাহক হচ্ছে নির্বাচন।’
বিশেষ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আমীর খসরু বলেন, ‘গণতন্ত্রের আন্দোলন যারা শুরু করেছে, তাদের কী হবে, ১৬ বছর ধরে যারা ত্যাগ শিকার করেছে তাদের ক্ষতিপূরণের কী হবে, তাদের জন্য তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না। তারা আজও অবহেলিত। এ বিষয়ে আমাদের সবার ভাবা দরকার।’ গত ১৫-১৬ বছর ধরে বিচারের নামে প্রহসন চলেছে বলেও অভিযোগ তার।
বিচার বিভাগ প্রসঙ্গে খসরু বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীন সচিবালয়ের দাবি প্রথম তুলেছে বিএনপি। কেউ না করলেও বিএনপি ক্ষমতায় এলে স্বাধীন সচিবালয় বাস্তবায়ন করবে। কারণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্র টিকতে পারে না, আমরা মুক্ত ও স্বাধীন বিচার বিভাগ চাই।’
২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব বাসচাপায় নিহত হন। এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে যড়যন্ত্রের অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ৫ আগস্ট বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন ডিবি পুলিশের তৎকালীন উপপরিদর্শক মো. শামীম আহমেদ।
তদন্ত শেষে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে তাদের বিচার শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত আদালত আসামিদের খালাস দেয়। ওই মামলায় খালাস পাওয়া অপর চারজন হলেন, ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমী, মো. রফিকুল ইসলাম নয়ন, হাবিবুর রহমান হাবিব এবং রবিউল ইসলাম রবি।
রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
বিগত বছরগুলোতে জেল, গুম ও খুন হওয়া দলীয় নেতাকর্মীদের ক্ষতিপূরণ কে দেবে জানতে চেয়ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এছাড়া আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলে বিএনপির নেতাকর্মীদের ‘মিথ্যা মামলা’ দিয়ে হয়রানির অভিযোগ তুলে তাদের ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন তিনি। ‘ঐকমত্যের বাইরে সংস্কারের প্রয়োজন নেই’ বলেও মন্তব্য করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রোববার,(২৭ এপ্রিল ২০২৫) ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১৪ এর বিচারক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রাজধানীর শাহবাগ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় আমীর খসরুসহ পাঁচজনকে খালাস দেয়। রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপিকর্মীদের হয়রানির ক্ষতিপূরণের দাবির কথা বলেন তিনি।
এরপর বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মিত্রদল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) সঙ্গে বৈঠক করে দলটি। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশে তো আমরা বাকশাল করতে যাচ্ছি না। সবাইকে একমত হওয়ার চিন্তা বাকশালী চিন্তা, যেটা শেখ হাসিনার পিতা করেছিলেন।’ কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, বিভিন্ন দলের বিভিন্ন দর্শন, বিভিন্ন চিন্তা থাকবে, ভিন্নমত থাকবে। তাই ‘ঐকমত্যের বাইরে সংস্কারের প্রয়োজন নেই’ বলে মন্তব্য তার।
‘যেখানে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলোর বাইরে সংস্কার করার সুযোগ নাই’ এমন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘ঐকমত্যের বাইরে কিছু করতে হলে তা ডেমোক্র্যাটিক প্রসেসের (গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া) মাধ্যমে করতে হবে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে করতে হবে।’
রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে যে বিষয়গুলোতে
ঐকমত্য হয়েছে সে বিষয়গুলো জাতির সামনে তুলে ধরার দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘অলরেডি সবাই (সব রাজনৈতিক দল) তাদের প্রস্তাব সাবমিট করে দিয়েছে। অনেক দিন সময় চলে গেছে, আলোচনা শেষ।’ তিনি বলেন, ‘এটা (যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য) জানানোর জন্য এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগে না।’ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি বলব, জাতিকে জানান কোথায় ঐকমত্য হয়েছে, জাতি জানুক এবং ওই ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা সনদ সই করে দিয়ে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাই। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নাই।’
নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা না হওয়ায় জনগণের মধ্যে ‘সংশয় ও উদ্বেগের সৃষ্টি’ হয়েছে দাবি তার। যা আগামী দিনের নির্বাচন প্রক্রিয়ার জন্যে ভালো কিছু বয়ে আনবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। খসরু বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়ে আশ্বস্ত করতে হবে, জাতি গণতন্ত্রের দিকে যাচ্ছে, জাতি গণতন্ত্র ফিরে পেতে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের বাহক হচ্ছে নির্বাচন।’
বিশেষ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আমীর খসরু বলেন, ‘গণতন্ত্রের আন্দোলন যারা শুরু করেছে, তাদের কী হবে, ১৬ বছর ধরে যারা ত্যাগ শিকার করেছে তাদের ক্ষতিপূরণের কী হবে, তাদের জন্য তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না। তারা আজও অবহেলিত। এ বিষয়ে আমাদের সবার ভাবা দরকার।’ গত ১৫-১৬ বছর ধরে বিচারের নামে প্রহসন চলেছে বলেও অভিযোগ তার।
বিচার বিভাগ প্রসঙ্গে খসরু বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীন সচিবালয়ের দাবি প্রথম তুলেছে বিএনপি। কেউ না করলেও বিএনপি ক্ষমতায় এলে স্বাধীন সচিবালয় বাস্তবায়ন করবে। কারণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্র টিকতে পারে না, আমরা মুক্ত ও স্বাধীন বিচার বিভাগ চাই।’
২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব বাসচাপায় নিহত হন। এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে যড়যন্ত্রের অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ৫ আগস্ট বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন ডিবি পুলিশের তৎকালীন উপপরিদর্শক মো. শামীম আহমেদ।
তদন্ত শেষে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে তাদের বিচার শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত আদালত আসামিদের খালাস দেয়। ওই মামলায় খালাস পাওয়া অপর চারজন হলেন, ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমী, মো. রফিকুল ইসলাম নয়ন, হাবিবুর রহমান হাবিব এবং রবিউল ইসলাম রবি।