নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন অনুসারে প্রস্তাবিত কয়েকটি সুপারিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন এক আইনজীবী। সেই সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
রোববার (৪ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী রওশন আলী এই রিট আবেদন দাখিল করেন। বিচারপতি ফাতেমা নজিব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চে চলতি সপ্তাহেই শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, কমিশনের প্রতিবেদনের একাদশ অধ্যায়ে সম্পত্তিতে পুরুষ ও নারীর সমান উত্তরাধিকারের যে সুপারিশ করা হয়েছে, তা পবিত্র কোরআনের সুরা নিসার পরিপন্থি। এছাড়া বহুবিবাহ নিষিদ্ধের প্রস্তাব ইসলামী শরিয়তের অনুমোদিত বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে দেওয়া ধর্মচর্চার অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে।
রিটকারীর ভাষ্য অনুযায়ী, “কমিশনের প্রতিবেদনে ‘মাই বডি, মাই চয়েজ’ স্লোগানকে অন্ধভাবে সমর্থন দিয়ে শরিয়তের সীমা লঙ্ঘনের চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি সেক্স ওয়ার্ককে বৈধ পেশা হিসেবে স্বীকৃতির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে, যা ইসলামি মূল্যবোধ ও সংবিধানের ২(ক) ও ২৬ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি।”
এছাড়া প্রতিবেদনে লিঙ্গ পরিচয় ও ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে ব্যবহৃত ভাষাকেও ‘ধর্মীয় বিশ্বাস ও শরিয়তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’ উল্লেখ করে রিটে দাবি করা হয়, সংশ্লিষ্ট সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে এবং ভবিষ্যতে ধর্মীয় ও পারিবারিক আইন সংস্কারে পরামর্শ দিতে সংবিধান বিশেষজ্ঞ, ইসলামি আইনজ্ঞ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠিত নারী সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর থেকেই কিছু ধর্মভিত্তিক দল এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে। হেফাজতে ইসলাম কমিশন বাতিলের দাবি জানায়, জামায়াতে ইসলাম বেশ কিছু সুপারিশকে ‘গর্হিত’ বলেও আখ্যা দেয়।
কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো হল–
• অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীদের জন্য বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
• অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০ সংশোধন করে সন্তানের ওপর নারীর জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
• পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত সরকারের জন্য বিভিন্ন ধর্মের পারিবারিক আইন সংশোধন করা এবং মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মীয় উত্তরাধিকার আইন সংশোধন করে নারীদের সম্পত্তিতে ৫০–৫০ ভাগ নিশ্চিত করা।
• সংসদীয় আসন বাড়িয়ে ৬০০ করে সেই আসন থেকে ৩০০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রেখে সরাসরি নির্বাচন।
• বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে ফৌজদারি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা।
• যে কোনো উপস্থাপনায় অহেতুক নারীর প্রসঙ্গ টেনে নারীবিদ্বেষী বয়ান, বক্তব্য ও ছবি পরিবেশন থেকে বিরত থাকা।
• শ্রম আইন সংশোধন করে যৌনকর্মীদের মর্যাদা ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা।
এর প্রেক্ষিতে গত শনিবার (৩ মে) হেফাজতে ইসলাম ঢাকা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবি তুলে ধরে। সমাবেশে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, “নারী সংস্কারের নামে ইসলাম ও কোরআনের বিধানকে কটাক্ষ করা হয়েছে।”
রোববার, ০৪ মে ২০২৫
নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন অনুসারে প্রস্তাবিত কয়েকটি সুপারিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন এক আইনজীবী। সেই সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
রোববার (৪ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী রওশন আলী এই রিট আবেদন দাখিল করেন। বিচারপতি ফাতেমা নজিব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চে চলতি সপ্তাহেই শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, কমিশনের প্রতিবেদনের একাদশ অধ্যায়ে সম্পত্তিতে পুরুষ ও নারীর সমান উত্তরাধিকারের যে সুপারিশ করা হয়েছে, তা পবিত্র কোরআনের সুরা নিসার পরিপন্থি। এছাড়া বহুবিবাহ নিষিদ্ধের প্রস্তাব ইসলামী শরিয়তের অনুমোদিত বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে দেওয়া ধর্মচর্চার অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে।
রিটকারীর ভাষ্য অনুযায়ী, “কমিশনের প্রতিবেদনে ‘মাই বডি, মাই চয়েজ’ স্লোগানকে অন্ধভাবে সমর্থন দিয়ে শরিয়তের সীমা লঙ্ঘনের চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি সেক্স ওয়ার্ককে বৈধ পেশা হিসেবে স্বীকৃতির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে, যা ইসলামি মূল্যবোধ ও সংবিধানের ২(ক) ও ২৬ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি।”
এছাড়া প্রতিবেদনে লিঙ্গ পরিচয় ও ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে ব্যবহৃত ভাষাকেও ‘ধর্মীয় বিশ্বাস ও শরিয়তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’ উল্লেখ করে রিটে দাবি করা হয়, সংশ্লিষ্ট সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে এবং ভবিষ্যতে ধর্মীয় ও পারিবারিক আইন সংস্কারে পরামর্শ দিতে সংবিধান বিশেষজ্ঞ, ইসলামি আইনজ্ঞ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠিত নারী সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর থেকেই কিছু ধর্মভিত্তিক দল এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে। হেফাজতে ইসলাম কমিশন বাতিলের দাবি জানায়, জামায়াতে ইসলাম বেশ কিছু সুপারিশকে ‘গর্হিত’ বলেও আখ্যা দেয়।
কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো হল–
• অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীদের জন্য বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
• অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০ সংশোধন করে সন্তানের ওপর নারীর জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
• পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত সরকারের জন্য বিভিন্ন ধর্মের পারিবারিক আইন সংশোধন করা এবং মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মীয় উত্তরাধিকার আইন সংশোধন করে নারীদের সম্পত্তিতে ৫০–৫০ ভাগ নিশ্চিত করা।
• সংসদীয় আসন বাড়িয়ে ৬০০ করে সেই আসন থেকে ৩০০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রেখে সরাসরি নির্বাচন।
• বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে ফৌজদারি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা।
• যে কোনো উপস্থাপনায় অহেতুক নারীর প্রসঙ্গ টেনে নারীবিদ্বেষী বয়ান, বক্তব্য ও ছবি পরিবেশন থেকে বিরত থাকা।
• শ্রম আইন সংশোধন করে যৌনকর্মীদের মর্যাদা ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা।
এর প্রেক্ষিতে গত শনিবার (৩ মে) হেফাজতে ইসলাম ঢাকা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবি তুলে ধরে। সমাবেশে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, “নারী সংস্কারের নামে ইসলাম ও কোরআনের বিধানকে কটাক্ষ করা হয়েছে।”