ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেছেন, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কারগুলো সম্পন্ন করা প্রয়োজন। আর প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ‘পর্যাপ্ত সময়’ দেয়া দরকার বলে তারা মনে করেন। তবে বাংলাদেশে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে ইউরোপীয় জোটের কোনো ‘চাপ’ নেই বলেও তিনি জানান।
সোমবার,(৫ এপ্রিল ২০২৫) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত ডিকাবের অনুষ্ঠানে মাইকেল মিলার এসব কথা বলেন।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কার এখন বড় সুযোগ এনে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন মাইকেল মিলার। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে, বলেন তিনি।
বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কোনো চাপ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন কখন হবে সে সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের। এক প্রশ্নের
জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমার বলা দরকার এ সিদ্ধান্ত (নির্বাচন কবে) বাংলাদেশের ব্যাপার। আমরা নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক পালাবদল দেখছি, যাতে একটি মাইলফলকে পৌঁছানো যায়। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন হিসেবে, সময়ের বিষয়ে আমাদের কোনো মতামত নেই এবং নির্দিষ্ট কোনো তারিখে ভোট আয়োজনে আমরা কাউকে চাপও দিচ্ছি না। আমরা মনে করি সংস্কার বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত সময় দরকার এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই। সুতরাং এক্ষেত্রে শ্বাস নেয়ার সুযোগ থাকা দরকার।’
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করবে বলে আমরা আশা করি।’
এক প্রশ্নের উত্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, নির্বাচনে সহায়তাও দিতে আগ্রহী ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে নির্বাচন কবে হবে, তা ঠিক করবে বাংলাদেশ সরকার।
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিচারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
রাখাইনে মানবিক করিডোর নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘উভয় পাশেই ভুক্তভোগীদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। সবাই যেন সমানভাবে ত্রাণসহায়তা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইইউতে পাচার হওয়া অর্থ যদি বর্তমান সরকার ফেরত আনতে চায়, তবে এ নিয়ে রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যথাযথ তথ্য-উপাত্ত নিয়ে যোগাযোগ করতে হবে।
ডিক্যাব টকে মাইকেল মিলার বলেন, ঐকমত্য কমিশন এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কতটা মতৈক্যে পৌঁছাতে পারে, তা দেখার অপেক্ষায় আছেন তারা।
মতৈক্য তৈরির চেষ্টায় এই কমিশন ‘কঠোর পরিশ্রম’ করছে মন্তব্য করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চাভিলাষী সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, সংস্কারগুলো খুবই স্পষ্টভাবে অগ্রাধিকারভিত্তিক এবং সুনির্দিষ্ট হবে। আমি যেভাবে বলেছি, এক্ষেত্রে আমাদের (ইইউ) অভিজ্ঞতা সহায়ক হতে পারে। এক্ষেত্রে আমাদের অর্থায়নেরও সুযোগ আছে, যা দিয়ে আমরা সহায়তা করতে পারি এবং পাশে দাঁড়ানোর রাজনৈতিক সদিচ্ছাও আছে।’
অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাজ করার প্রসঙ্গ ধরে তিনি বলেন, নির্বাচন যেন ‘আন্তর্জাতিক মানের’ হয়, সেই কার্যক্রম চলছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই নির্বাচন যাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় এবং ফলাফল পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য হয়। আমরা সেই সফলতার গল্প অংশ হতে চাই।’
মিলার বলেন, ‘নির্বাচন যারা পর্যবেক্ষণ করবে, সেই সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইইউ চুক্তি করছে। জনগণকে ভোট এবং নির্বাচন বিষয়ে সচেতন করতেও কাজ চলছে।’
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকা- নিয়ে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনকে সমর্থন করার কথা তুলে ধরে মাইকেল মিলার বলেন, ‘তাদের প্রতিবেদনে বিষয়গুলো খুব স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। পরবর্তী ধাপে যারা অপরাধে অভিযুক্ত, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দায়িত্ব বাংলাদেশের বিচারিক কর্তৃপক্ষের।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং এক্ষেত্রে জবাবদিহিতা লাগবে। আমি যখন এখনকার পরিস্থিতি এবং পরবর্তী ধাপে রাজনৈতিক রূপান্তরের দিকে তাকাই, তখন কোনো ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করতে হলে সাক্ষ্যপ্রমাণ লাগবে। যদি সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকে, তাহলে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আর বিচার যখন শুরু হবে, তাতে অকারণ দেরি করা ঠিক হবে না।’
মানবিক করিডোর প্রসঙ্গে
রাখাইনে মানবিক করিডোর নিয়ে এক প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, আন্তঃসীমান্ত সহায়তা পাঠানোর জন্য ‘সরকারগুলোর সম্মতি’ এবং মানুষের নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানবিক অংশীদার হিসেবে, শরণার্থীদের সহায়তার ক্ষেত্রে বাস্তববাদী থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। শরণার্থীরা এখানে থাকলে, আমরা তাদের প্রয়োজন এখানে মেটাব। তারা যদি সীমান্তের অপর প্রান্তে থাকে, তাহলে আমাদের দেখতে হবে কীভাবে ওই প্রান্তেও সহায়তা পাঠানো যায়। কেননা, এর মধ্য দিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি ভালো হতে পারে। এটা আন্তঃসীমান্ত সহায়তাও হতে পারে। আমরা আন্তঃসীমান্ত সহায়তা পৃথিবীর নানা স্থানে করেছি এবং এটা কাজ করতে পারে। তবে এটা কেবল তখনই কাজ করতে পারে, যখন দুইপ্রান্তের মানুষগুলো নিরাপদ থাকে এবং সরকারগুলো একমত হয়।’
ডিক্যাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিনের সভাপতিত্বে ডিক্যাব টকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন।
সোমবার, ০৫ মে ২০২৫
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেছেন, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কারগুলো সম্পন্ন করা প্রয়োজন। আর প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ‘পর্যাপ্ত সময়’ দেয়া দরকার বলে তারা মনে করেন। তবে বাংলাদেশে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে ইউরোপীয় জোটের কোনো ‘চাপ’ নেই বলেও তিনি জানান।
সোমবার,(৫ এপ্রিল ২০২৫) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত ডিকাবের অনুষ্ঠানে মাইকেল মিলার এসব কথা বলেন।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কার এখন বড় সুযোগ এনে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন মাইকেল মিলার। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে, বলেন তিনি।
বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কোনো চাপ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন কখন হবে সে সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের। এক প্রশ্নের
জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমার বলা দরকার এ সিদ্ধান্ত (নির্বাচন কবে) বাংলাদেশের ব্যাপার। আমরা নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক পালাবদল দেখছি, যাতে একটি মাইলফলকে পৌঁছানো যায়। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন হিসেবে, সময়ের বিষয়ে আমাদের কোনো মতামত নেই এবং নির্দিষ্ট কোনো তারিখে ভোট আয়োজনে আমরা কাউকে চাপও দিচ্ছি না। আমরা মনে করি সংস্কার বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত সময় দরকার এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই। সুতরাং এক্ষেত্রে শ্বাস নেয়ার সুযোগ থাকা দরকার।’
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করবে বলে আমরা আশা করি।’
এক প্রশ্নের উত্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, নির্বাচনে সহায়তাও দিতে আগ্রহী ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে নির্বাচন কবে হবে, তা ঠিক করবে বাংলাদেশ সরকার।
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিচারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
রাখাইনে মানবিক করিডোর নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘উভয় পাশেই ভুক্তভোগীদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। সবাই যেন সমানভাবে ত্রাণসহায়তা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইইউতে পাচার হওয়া অর্থ যদি বর্তমান সরকার ফেরত আনতে চায়, তবে এ নিয়ে রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যথাযথ তথ্য-উপাত্ত নিয়ে যোগাযোগ করতে হবে।
ডিক্যাব টকে মাইকেল মিলার বলেন, ঐকমত্য কমিশন এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কতটা মতৈক্যে পৌঁছাতে পারে, তা দেখার অপেক্ষায় আছেন তারা।
মতৈক্য তৈরির চেষ্টায় এই কমিশন ‘কঠোর পরিশ্রম’ করছে মন্তব্য করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চাভিলাষী সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, সংস্কারগুলো খুবই স্পষ্টভাবে অগ্রাধিকারভিত্তিক এবং সুনির্দিষ্ট হবে। আমি যেভাবে বলেছি, এক্ষেত্রে আমাদের (ইইউ) অভিজ্ঞতা সহায়ক হতে পারে। এক্ষেত্রে আমাদের অর্থায়নেরও সুযোগ আছে, যা দিয়ে আমরা সহায়তা করতে পারি এবং পাশে দাঁড়ানোর রাজনৈতিক সদিচ্ছাও আছে।’
অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাজ করার প্রসঙ্গ ধরে তিনি বলেন, নির্বাচন যেন ‘আন্তর্জাতিক মানের’ হয়, সেই কার্যক্রম চলছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই নির্বাচন যাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় এবং ফলাফল পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য হয়। আমরা সেই সফলতার গল্প অংশ হতে চাই।’
মিলার বলেন, ‘নির্বাচন যারা পর্যবেক্ষণ করবে, সেই সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইইউ চুক্তি করছে। জনগণকে ভোট এবং নির্বাচন বিষয়ে সচেতন করতেও কাজ চলছে।’
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকা- নিয়ে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনকে সমর্থন করার কথা তুলে ধরে মাইকেল মিলার বলেন, ‘তাদের প্রতিবেদনে বিষয়গুলো খুব স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। পরবর্তী ধাপে যারা অপরাধে অভিযুক্ত, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দায়িত্ব বাংলাদেশের বিচারিক কর্তৃপক্ষের।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং এক্ষেত্রে জবাবদিহিতা লাগবে। আমি যখন এখনকার পরিস্থিতি এবং পরবর্তী ধাপে রাজনৈতিক রূপান্তরের দিকে তাকাই, তখন কোনো ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করতে হলে সাক্ষ্যপ্রমাণ লাগবে। যদি সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকে, তাহলে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আর বিচার যখন শুরু হবে, তাতে অকারণ দেরি করা ঠিক হবে না।’
মানবিক করিডোর প্রসঙ্গে
রাখাইনে মানবিক করিডোর নিয়ে এক প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, আন্তঃসীমান্ত সহায়তা পাঠানোর জন্য ‘সরকারগুলোর সম্মতি’ এবং মানুষের নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানবিক অংশীদার হিসেবে, শরণার্থীদের সহায়তার ক্ষেত্রে বাস্তববাদী থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। শরণার্থীরা এখানে থাকলে, আমরা তাদের প্রয়োজন এখানে মেটাব। তারা যদি সীমান্তের অপর প্রান্তে থাকে, তাহলে আমাদের দেখতে হবে কীভাবে ওই প্রান্তেও সহায়তা পাঠানো যায়। কেননা, এর মধ্য দিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি ভালো হতে পারে। এটা আন্তঃসীমান্ত সহায়তাও হতে পারে। আমরা আন্তঃসীমান্ত সহায়তা পৃথিবীর নানা স্থানে করেছি এবং এটা কাজ করতে পারে। তবে এটা কেবল তখনই কাজ করতে পারে, যখন দুইপ্রান্তের মানুষগুলো নিরাপদ থাকে এবং সরকারগুলো একমত হয়।’
ডিক্যাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিনের সভাপতিত্বে ডিক্যাব টকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন।