চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আয়ে সামান্য উন্নতি হয়েছে। এই সময়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে মাত্র এক শতাংশেরও কম হারে বেড়ে ৩ দশমিক ০১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। আগের বছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ২ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। সোমবার,(৫ এপ্রিল ২০২৫) প্রকাশিত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এপ্রিলে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি দুটোই কমেছে
খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ যা মার্চে ছিল ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে রপ্তানি আয় ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেড়ে ৪০ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৬ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। এপ্রিল মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি ০ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে ২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২৪ সালের এপ্রিলে ছিল ২ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল মাসে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় ১০ শতাংশ বেড়ে ৩২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২৯ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। ওভেন পণ্যের রপ্তানি আয় ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর নিটওয়্যার পণ্যের রপ্তানি আয় হয়েছে ১৭ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি।
রপ্তানির মন্থর প্রবৃদ্ধি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে রপ্তানিকারকরা দীর্ঘ ঈদুল ফিতরের ছুটিকে দায়ী করেছেন।
অল্প কর্মদিবসের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ফলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়েছে। বিজিএমইএর সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, ‘দীর্ঘ ঈদের ছুটির কারণে পণ্য প্রস্তুতের জন্য আমাদের হাতে কর্মদিবস কম ছিল, ফলে চালানও কম হয়েছে। এ কারণেই গত মাসগুলোর তুলনায় রপ্তানি আয়ে ধীরগতি দেখা গেছে। তবে চলতি মাসে তা আবার স্বাভাবিক প্রবাহে ফিরে আসবে।’
রপ্তানিকারকরা আরও দাবি করেছেন, তারা চরম গ্যাস সংকটে ভুগেছেন, যা উৎপাদনে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। তারা সাম্প্রতিক মাসগুলোর মতো প্রবৃদ্ধি ফেরাতে গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কৃষিপণ্যের রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৮৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের ৮২৪ মিলিয়নের তুলনায় ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ বেশি। হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩৭৩ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় ১০ দশমিক ০৮ শতাংশ বেড়ে ৯৩২ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, আর প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি আয় ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৬ মিলিয়ন ডলার।
এছাড়া চামড়ার তৈরি জুতার রপ্তানিতে ২৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা আগের বছরের ৪৩২ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৪৫ মিলিয়ন ডলার। তবে চামড়াজাত অন্য পণ্যের রপ্তানি ৬ শতাংশ হ্রাস
পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৮০ মিলিয়ন ডলারে। পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমে ৬৮৫ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। হোম টেক্সটাইল খাতে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যেখানে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৭৪০ মিলিয়ন ডলার।
নন-লেদার ফুটওয়্যার খাত, যা দেশের একটি উদীয়মান খাত হিসেবে বিবেচিত, রপ্তানি আয়ে ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে ৪৪৬ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে যা আগের বছর ছিল ৩৪০ মিলিয়ন ডলার। ফার্মাসিউটিক্যালস খাত থেকে রপ্তানি আয় ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৭ মিলিয়ন ডলারে।
এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে
এপ্রিল মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ফের কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই সময়ে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ হারে, যা এর আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। সোমবার মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এসব তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিএস।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এপ্রিলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও কমেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ, যা মার্চে ছিল ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ ছিল। তবে টানা তিন মাস পর বেড়েছে সার্বিক মূল্যস্ফীতি। অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি এপ্রিলে কমে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ হয়েছে। মার্চে যা ছিল ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এর আগে মার্চে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ হয় যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। তবে টানা তিন মাস কমার পরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা বেড়ে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে পৌঁছায়। ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। মার্চ মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ হয় যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। গত বছরের নভেম্বরেও দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
বিবিএস জানায়, এপ্রিল মাসে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে আলু, ডাল, তেল, লবণ, মাছ, মাংস, সবজি ও মসলার দাম কমেছে। বিবিএসের হিসাবে বাড়িভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণ এবং বিবিধ সেবা খাতের মূল্যস্ফীতির হারও কমেছে।
বর্তমানে অর্থনীতির সবচেয়ে উদ্বেগজনক সূচক হলো মূল্যস্ফীতি। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না মজুরি। বিবিএসের হিসাবে, গত এপ্রিলে জাতীয় মজুরির হার হয় ৮ দশমিক ১৯। এর মানে হলো, মজুরি যত বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে জিনিসপত্রের দাম। গত মার্চের তুলনায় এপ্রিলে জাতীয় মজুরির হার কিছুটা বেড়েছে। তাই মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমেছে।
মজুরিনির্ভর বিশাল জনগোষ্ঠীর ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি পড়ে। গ্রাম-শহরনির্বিশেষে ১৪৫টি নিম্ন দক্ষতার পেশার মজুরির ওপর এই হিসাব করে থাকে বিবিএস। বিবিএস বলছে, দেশের প্রায় ৮৬ শতাংশ মানুষ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। এমন কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা ৬ কোটির মতো।
বর্তমানে অর্থনীতির অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমানো। দুই বছরের বেশি ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সাধারণ মানুষ উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ভুগছেন। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। এনবিআরও তেল, আলু, পেঁয়াজ, ডিমসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যে শুল্ক-কর কমিয়ে দেয়। বাজারে নিত্যপণ্যের আমদানিপ্রবাহ ঠিক রাখার চেষ্টা করা হয়। এর কিছুটা সুফলও মিলেছে।
সোমবার, ০৫ মে ২০২৫
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আয়ে সামান্য উন্নতি হয়েছে। এই সময়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে মাত্র এক শতাংশেরও কম হারে বেড়ে ৩ দশমিক ০১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। আগের বছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ২ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। সোমবার,(৫ এপ্রিল ২০২৫) প্রকাশিত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এপ্রিলে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি দুটোই কমেছে
খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ যা মার্চে ছিল ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে রপ্তানি আয় ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেড়ে ৪০ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৬ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। এপ্রিল মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি ০ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে ২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২৪ সালের এপ্রিলে ছিল ২ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল মাসে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় ১০ শতাংশ বেড়ে ৩২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২৯ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। ওভেন পণ্যের রপ্তানি আয় ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর নিটওয়্যার পণ্যের রপ্তানি আয় হয়েছে ১৭ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি।
রপ্তানির মন্থর প্রবৃদ্ধি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে রপ্তানিকারকরা দীর্ঘ ঈদুল ফিতরের ছুটিকে দায়ী করেছেন।
অল্প কর্মদিবসের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ফলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়েছে। বিজিএমইএর সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, ‘দীর্ঘ ঈদের ছুটির কারণে পণ্য প্রস্তুতের জন্য আমাদের হাতে কর্মদিবস কম ছিল, ফলে চালানও কম হয়েছে। এ কারণেই গত মাসগুলোর তুলনায় রপ্তানি আয়ে ধীরগতি দেখা গেছে। তবে চলতি মাসে তা আবার স্বাভাবিক প্রবাহে ফিরে আসবে।’
রপ্তানিকারকরা আরও দাবি করেছেন, তারা চরম গ্যাস সংকটে ভুগেছেন, যা উৎপাদনে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। তারা সাম্প্রতিক মাসগুলোর মতো প্রবৃদ্ধি ফেরাতে গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কৃষিপণ্যের রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৮৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের ৮২৪ মিলিয়নের তুলনায় ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ বেশি। হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩৭৩ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় ১০ দশমিক ০৮ শতাংশ বেড়ে ৯৩২ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, আর প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি আয় ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৬ মিলিয়ন ডলার।
এছাড়া চামড়ার তৈরি জুতার রপ্তানিতে ২৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা আগের বছরের ৪৩২ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৪৫ মিলিয়ন ডলার। তবে চামড়াজাত অন্য পণ্যের রপ্তানি ৬ শতাংশ হ্রাস
পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৮০ মিলিয়ন ডলারে। পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমে ৬৮৫ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। হোম টেক্সটাইল খাতে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যেখানে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৭৪০ মিলিয়ন ডলার।
নন-লেদার ফুটওয়্যার খাত, যা দেশের একটি উদীয়মান খাত হিসেবে বিবেচিত, রপ্তানি আয়ে ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে ৪৪৬ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে যা আগের বছর ছিল ৩৪০ মিলিয়ন ডলার। ফার্মাসিউটিক্যালস খাত থেকে রপ্তানি আয় ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৭ মিলিয়ন ডলারে।
এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে
এপ্রিল মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ফের কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই সময়ে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ হারে, যা এর আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। সোমবার মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এসব তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিএস।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এপ্রিলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও কমেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ, যা মার্চে ছিল ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ ছিল। তবে টানা তিন মাস পর বেড়েছে সার্বিক মূল্যস্ফীতি। অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি এপ্রিলে কমে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ হয়েছে। মার্চে যা ছিল ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ।
এর আগে মার্চে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ হয় যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। তবে টানা তিন মাস কমার পরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা বেড়ে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে পৌঁছায়। ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। মার্চ মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ হয় যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। গত বছরের নভেম্বরেও দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
বিবিএস জানায়, এপ্রিল মাসে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে আলু, ডাল, তেল, লবণ, মাছ, মাংস, সবজি ও মসলার দাম কমেছে। বিবিএসের হিসাবে বাড়িভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণ এবং বিবিধ সেবা খাতের মূল্যস্ফীতির হারও কমেছে।
বর্তমানে অর্থনীতির সবচেয়ে উদ্বেগজনক সূচক হলো মূল্যস্ফীতি। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না মজুরি। বিবিএসের হিসাবে, গত এপ্রিলে জাতীয় মজুরির হার হয় ৮ দশমিক ১৯। এর মানে হলো, মজুরি যত বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে জিনিসপত্রের দাম। গত মার্চের তুলনায় এপ্রিলে জাতীয় মজুরির হার কিছুটা বেড়েছে। তাই মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমেছে।
মজুরিনির্ভর বিশাল জনগোষ্ঠীর ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি পড়ে। গ্রাম-শহরনির্বিশেষে ১৪৫টি নিম্ন দক্ষতার পেশার মজুরির ওপর এই হিসাব করে থাকে বিবিএস। বিবিএস বলছে, দেশের প্রায় ৮৬ শতাংশ মানুষ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। এমন কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা ৬ কোটির মতো।
বর্তমানে অর্থনীতির অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমানো। দুই বছরের বেশি ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সাধারণ মানুষ উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ভুগছেন। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। এনবিআরও তেল, আলু, পেঁয়াজ, ডিমসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যে শুল্ক-কর কমিয়ে দেয়। বাজারে নিত্যপণ্যের আমদানিপ্রবাহ ঠিক রাখার চেষ্টা করা হয়। এর কিছুটা সুফলও মিলেছে।