বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাদ দিয়ে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’ নামে একটি নতুন আইন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। দীর্ঘ আলোচনা ও খসড়া পরিবর্তনের পর মঙ্গলবার ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। নতুন খসড়ায় সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ধর্মীয় উসকানিমূলক বক্তব্য বা কনটেন্ট, যা সহিংসতা উসকে দিতে পারে, তাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে রাখা হয়েছে। এছাড়া ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং অনলাইন জুয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী সাইবার জগতে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌন হয়রানিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বাদ দেওয়া নয়টি ধারা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব ধারাতেই ৯৫ শতাংশ মামলা হয়েছিল এবং এখন সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হবে।
বাতিল হওয়া ধারাগুলোর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, জাতীয় সংগীত ও পতাকা বিষয়ে কুৎসা রটনা, মানহানিকর তথ্য প্রচার, আইনশৃঙ্খলা অবনতিসহ আক্রমণাত্মক ও মিথ্যা তথ্য প্রকাশের ধারা। এসব ধারায় অনেক সাংবাদিকও ভুক্তভোগী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
কিছু ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। স্পিচ অফেন্স–সংক্রান্ত দুটি অপরাধ রাখা হয়েছে—নারী ও শিশুর প্রতি যৌন হয়রানিমূলক কনটেন্ট প্রকাশ ও হুমকি এবং ধর্মীয় ঘৃণা ছড়িয়ে সহিংসতা উসকে দেওয়া। ধর্মীয় ঘৃণার বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যাতে ভুল বোঝাবুঝি বা হয়রানি না হয়।
স্পিচ অফেন্স–সংক্রান্ত মামলায় রক্ষাকবচ রাখা হয়েছে। এসব মামলা আমলি আদালতে যাবে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারক মামলার সারবত্তা বিবেচনা করে তা বাতিল করতে পারবেন। কিছু ক্ষেত্রে এই অপরাধ আপসযোগ্য এবং জামিনযোগ্য করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাইবার অপরাধ করলেও তা শাস্তিযোগ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আইনে সাইবার নিরাপত্তা কাউন্সিলে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের রাখার বিধান রাখা হয়েছে। কোনো কনটেন্ট অপসারণের পর আদালতের অনুমতি নিতে হবে, এবং অপসারণ সম্পর্কে জনগণকে জানাতে হবে।
আইনের খসড়া তৈরিতে ২৫ বার পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং সর্বশেষ সুশীল সমাজের সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাইয়ের পর অধ্যাদেশ জারি হবে এবং আশা করা হচ্ছে এটি এই সপ্তাহের মধ্যেই কার্যকর হবে।
সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত সংশোধনী অনুমোদন
সাংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ–সংক্রান্ত আইন সংশোধনের প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এতে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের পথ সুগম হবে।
এছাড়া দেওয়ানি কার্যবিধি (সিপিসি) সংশোধনের প্রস্তাবও চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫
বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাদ দিয়ে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’ নামে একটি নতুন আইন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। দীর্ঘ আলোচনা ও খসড়া পরিবর্তনের পর মঙ্গলবার ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। নতুন খসড়ায় সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ধর্মীয় উসকানিমূলক বক্তব্য বা কনটেন্ট, যা সহিংসতা উসকে দিতে পারে, তাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে রাখা হয়েছে। এছাড়া ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং অনলাইন জুয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী সাইবার জগতে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌন হয়রানিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বাদ দেওয়া নয়টি ধারা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব ধারাতেই ৯৫ শতাংশ মামলা হয়েছিল এবং এখন সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হবে।
বাতিল হওয়া ধারাগুলোর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, জাতীয় সংগীত ও পতাকা বিষয়ে কুৎসা রটনা, মানহানিকর তথ্য প্রচার, আইনশৃঙ্খলা অবনতিসহ আক্রমণাত্মক ও মিথ্যা তথ্য প্রকাশের ধারা। এসব ধারায় অনেক সাংবাদিকও ভুক্তভোগী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
কিছু ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। স্পিচ অফেন্স–সংক্রান্ত দুটি অপরাধ রাখা হয়েছে—নারী ও শিশুর প্রতি যৌন হয়রানিমূলক কনটেন্ট প্রকাশ ও হুমকি এবং ধর্মীয় ঘৃণা ছড়িয়ে সহিংসতা উসকে দেওয়া। ধর্মীয় ঘৃণার বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যাতে ভুল বোঝাবুঝি বা হয়রানি না হয়।
স্পিচ অফেন্স–সংক্রান্ত মামলায় রক্ষাকবচ রাখা হয়েছে। এসব মামলা আমলি আদালতে যাবে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারক মামলার সারবত্তা বিবেচনা করে তা বাতিল করতে পারবেন। কিছু ক্ষেত্রে এই অপরাধ আপসযোগ্য এবং জামিনযোগ্য করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাইবার অপরাধ করলেও তা শাস্তিযোগ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আইনে সাইবার নিরাপত্তা কাউন্সিলে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের রাখার বিধান রাখা হয়েছে। কোনো কনটেন্ট অপসারণের পর আদালতের অনুমতি নিতে হবে, এবং অপসারণ সম্পর্কে জনগণকে জানাতে হবে।
আইনের খসড়া তৈরিতে ২৫ বার পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং সর্বশেষ সুশীল সমাজের সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাইয়ের পর অধ্যাদেশ জারি হবে এবং আশা করা হচ্ছে এটি এই সপ্তাহের মধ্যেই কার্যকর হবে।
সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত সংশোধনী অনুমোদন
সাংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ–সংক্রান্ত আইন সংশোধনের প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এতে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের পথ সুগম হবে।
এছাড়া দেওয়ানি কার্যবিধি (সিপিসি) সংশোধনের প্রস্তাবও চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।